নতুন প্রবীণদের নিয়ে আমার লেখা ছোট একটি গল্প - পর্ব ০৬
আমার ডাক নাম মলিনা। বয়স ৫৯ বছর। সরকারি চাকুরে। বর্তমানে থাকি চাঁদপুরে। চাঁদপুরের একটি নামকরা দৈনিকে গত কয়েকবছর একজন কলাম লেখেন, যাকে আমি চিনি চল্লিশ বছর ধরে। গ্রামের অখ্যাত এক স্কুল থেকে দ্বিতীয় বিভাগে এসএসসিতে উত্তীর্ণ হয়েছি । আমি কালো, রোগা, দেখতে কুৎসিত বলে বাবা-মা আমাকে বিয়ে দিতে পারলেন না । একরকম বাধ্য হয়ে আমাকে কলেজে ভর্তি করানো হলো । আমাদের ছিল প্রচণ্ড অভাবের সংসার। বাবা ছোট কৃষক আর মা গৃহিণী। আমি মায়ের গায়ের রং পেয়েছি। সেজন্য আমার দাদীর অনেক দুঃখ ছিল । আমি টিউশনি করে পড়ার খরচ চালাতাম ৷ টিউশনি করতে গিয়ে পরিচয় হলো সেই কলাম লেখকের সাথে । তিনি আর আমি পাশাপাশি বাসায় টিউশনি করতাম। প্রতিদিন খুব সকালে গুয়াখোলা রোডে দু'জনের দেখা হতো ।
প্রায়ই এক সাথে টিউশানিতে ঢুকতাম আবার বের হতাম । একদিন প্রচণ্ড বৃষ্টিতে দু'জন আটকে পড়লাম। বৃষ্টি কমলে আমার আহ্বানে একই ছাতার নিচে আসলেন কলেজ পর্যন্ত । আচ্ছা এই লেখকের একটা নাম দেই । নাম দিলাম অনাবিল । অনাবিল আমার থেকে বছর দুয়েকের বড়। অনাবিল ছাত্র রাজনীতিতে খুবই সক্রিয়। মিছিল, মিটিং, পোস্টার, লিফলেট, পত্রিকা বিক্রি নিয়ে সারাদিন ব্যস্ত। প্রায়ই তাকে কলেজের মেয়েদের কমনরুমের সামনে দাঁড়িয়ে বক্তৃতা করতে দেখতাম । ছাত্র রাজনীতির গুরুত্ব তুলে ধরতেন। এক সময় অনাবিলকে আমার ভাল লেগে যায়। আমি নিজ থেকে তাকে প্রেমের প্রস্তাব দেই। আমি বুঝতে পারলাম না তিনি আমার প্রেমের প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন নাকি প্রত্যাখ্যান করেছেন। একটা সময় মনের অজান্তে আমি রাজনীতির সাথে যুক্ত হলাম। ছাত্ররা তখন সামরিক স্বৈরাচার এরশাদের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলেছিল। অনাবিল আমার প্রেমের প্রস্তাবে সাড়া দিল না । সাড়া দিতে চাইলো শারীরিকভাবে। আমার মন বিষিয়ে উঠলো ।