নতুন প্রবীণদের নিয়ে আমার লেখা ছোট একটি গল্প - পর্ব ৩১

in #new2 months ago

শক্তি একত্র করে সে এক ছুটে উপরে তার ঘরে চলে এল। তার চোখ দিয়ে কখন পানি ঝরতে শুরু করেছে সে নিজেও জানে না। একটা মানুষের জীবনের দাম দুই লাখ টাকা! কাঁদতে কাঁদতে ক্লান্ত হয়ে সহস্রাব্দী তার ঘরের দরজার কাছেই বসে পড়ল। হঠাৎ ড্রেসিংটেবিলে সাজিয়ে রাখা সুন্দর সুন্দর বিলাসী সাজগোজের জিনিস দেখে তার সেগুলো এক টানে ভেঙে ফেলতে ইচ্ছা করল! ইশশ এই বাড়ির খাবারও যদি না খেয়ে মরা যেতো! সহস্রাব্দী সেই রাতে আর নিচে গেল না। কেউ জানল না সেই রাতে সে রক্তবমি করেছিল আর তার গায়ে জ্বর ছিল একশো চার ডিগ্রি । শতাব্দী আজকে দুপুরের দিকে বাড়ি এসেছে। অন্যান্য দিন এই সময় সহস্রাব্দী বাড়িতে থাকে না। কলেজ ছুটি হলে হাজার জায়গা ঘুরে, খেলে, লাফিয়ে তারপর বাড়ি ফিরে। কিন্তু ইদানিং সে বেশিরভাগ দিন ছুটির সাথে সাথে কলেজ থেকে ফিরে আসে। আজকেও এসেছিল। শতাব্দী বু এসেছে শুনে তার সাথে গল্প করতে তার ঘরে গেল সে। শতাব্দীর গায়ে অনেক দামী শাড়ি।

IMG_6605.jpg

শাড়ির দাম সহস্রাব্দী জানে না। কিন্তু দেখে দামী তা বুঝতে পারল । সাথে হালকা কিছু সুক্ষ্ম কাজের সোনার গহনা। শ্বশুরবাড়ি থেকে দিয়েছে। সব মিলিয়ে শতাব্দীর অনেক খুশি থাকার কথা ছিল। কিন্তু তাকে খুশি মনে হচ্ছে না। সহস্রাব্দী তার পাশে বসতে বসতে বলল, কী রে বু, কেমন আছিস? আছি রে ভালো । তুই? খুব ভালো । খুব ভালো? কেন রে? থাকবো না? আমার রাস্তা পরিষ্কার হয়ে গেল যে! এবার তো আমার বিয়ে! বিয়েই কি জীবনের সব? নয়? এইযে এরকম কত দামী দামী শাড়ি, গহনা পাবো! ভালো হবে না? আর পড়াশোনা করবি না? তুইও তো করতে পারলি না। কী হয়েছে তাতে? এইতো বেশ আছিস! শাড়ি, গহনাই সব না রে সহু ৷ কেন হবে না, বু?

সহস্রাব্দী বলবে বলবে করে এখনো তাদের বলে উঠতে পারেনি। পরীক্ষা শুরুর দুইদিন আগে এক সন্ধ্যায় যখন সবকিছু তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেল তখনই সে ঠিক করল আজই সে বাবা মাকে জানাবে। শতাব্দী বুবু বাড়িতে নেই। মা আর দাদীমা নিচের রান্নাঘরে। বাবাও তার ঘরে নেই। যুগটাও নিশ্চয়ই দাদীমার কাছে বসে দুষ্টুমি করছে। সহস্রাব্দী টলমল পায়ে উঠে দাঁড়াল। ধীর পায়ে সে নিচে নামতে লাগল । কিন্তু সিঁড়ির শেষ ধাপে এসে সে বসার ঘরে একজন বহিরাগতর গলা শুনতে পেল । এটা ওসি আঙ্কেলের গলা না? উনি বাবার সাথে দেখা করতে এসেছেন? সিঁড়ি থেকে বসার ঘর সরাসরি দেখা যায় না। কিন্তু কথাবার্তা শোনা যায়। সহস্রাব্দী রান্নাঘরের দিকে যেতে চাইছিল কিন্তু তখনই বাবার আর ওসি আঙ্কেলের কথা শুনে সে সেখানেই দাঁড়িয়ে পড়ল। তার মানে আপনি বলতে চাইছেন ছেলেটা মারা গেছে? হ্যাঁ সাদাব সাহেব । মাত্র বারো বছর বয়স ছিল তার। ওহ হো স্যার! তার বয়স দিয়ে আমার কাজ নেই!

কীভাবে মারা গেল তাই জানতে চাইছি। কীভাবে মারা গেল আপনি জানেন না? যেই ডাক্তার দেখিয়েছিল তার ভুল চিকিৎসার কারণে হতে পারে। না সাদাব সাহেব । আঙুলটা আপনার দিকে উঠছে । উঠছে তো আপনি আছেন কিসের জন্য? ব্যাপারটা মিটমাট করে ধামাচাপা দিতে পারছেন না? ছেলেটার পরিবার সেটা হতে দিচ্ছে না। তারা বিচার চায়। তো আমাকে এখন কী করতে বলছেন? আপনি আমাকে পাঁচ লাখ দিন। দুই লাখ আমি ওই পরিবারকে দিবো ক্ষতিপূরণ হিসেবে। তাতেও যদি পুরোটা সমাধান না হয়... উকিল সাহেবের সাথে আগে থেকে একটু কথা বলে রাখবেন। আপনি আমাকে উকিল রেডি রাখতে বলছেন? বলছি কারণ সাবধানের মার নেই তাই । তারপরেই দুইজন যাবতীয় খরচের হিসাব নিকাষ কষতে বসলেন । সহস্রাব্দী আর এক মুহূর্ত সেখানে দাঁড়াল না। তার ভগ্নপ্রায় শরীরের সমস্ত

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 68168.17
ETH 3256.43
USDT 1.00
SBD 2.67