গল্প:-বাবা ( শেষ পর্ব )

in আমার বাংলা ব্লগ11 months ago

হ্যালো সবাইকে

কেমন আছেন সবাই ?আশা করি ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি আল্লাহর রহমতে। আজকে আরও একটি নতুন পোস্ট নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। "বাবা" গল্প আজকে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব। আশা করি আপনাদের কাছে আমার এই পোস্টটি ভালো লাগবে।

B612_20231027_212829_724.jpg

মা বাবা যখন তাকে দেখতে আসে তখন তার শ্বশুর মশাই এবং সে তাড়াতাড়ি ঘর থেকে বেরিয়ে এসে শশুর মশাই বেয়াই বেয়ানের সাথে খুবই ভালোভাবে কথা বলছিল গল্প করছিল। পরবর্তীতে শ্বশুরমশাই তার ছেলের বউকে বলল তোমার বাবা-মার জন্য ভালো ভালো কিছু খাবার নিয়ে এসো। তখন সে তাড়াতাড়ি রান্না করে গিয়ে রান্না করতে থাকে তখন সে আর আপত্তি করেনি রান্না-বান্না করতে। এরপর সারাদিন থেকে যখন তার মা-বাবা চলে যাচ্ছিল তখন মেয়ে বলছিল যে আজকে রাত থেকে যেতে। তখন মা বলছিল তোদের ঘরে তো জায়গা নেই । দুটো মাত্র ঘর তোরা সবাই মিলে থাকিস আমরা কোথায় থাকবো। তার মা বলছিল যে বড় একটা ঘর কর আগে তারপর তোদের বাড়িতে এসে থাকবো। এই বলে তারা মেয়ের বাড়ি থেকে বিদায় নিল।

এই কথা শুনে মেয়ে তো খুবই খারাপ লাগলো যে মা বাবা এসেছে জায়গার অভাবে তারা রাতে থাকতে পারেনি। এরপর ছেলে অফিস থেকে আসার পর রাতে ছেলে আর ছেলের বউ অনেক ঝামেলা করছিল। ছেলের বউ বলছিল কয়েকদিনের মধ্যে বড় একটা বাড়ি নিতে নতুন। তখন ছেলে বলছিল এখন বাড়ির অনেক দাম এই মুহূর্তে এত তাড়াতাড়ি আমার পক্ষে বাড়ি নেওয়া সম্ভব না। তখন ছেলের বউ বলে উঠল আমার মা বাবা একটা রাতও থাকতে পারে না দুটো মাত্র রুম এক রুমে আমরা থাকি এক রুমে তোমার বাবা থাকে। তোমার বাবা ওই রুমটা দখল করে রেখেছে তোমার বাবা না থাকলে আমার মা বাবা এই রুমে থাকতে পারতো। আর ঝগড়ার মাঝখানে ছেলের বউ বলতে থাকে যে তোমার বাবাকে গিয়ে বৃদ্ধাশ্রমে দিয়ে আসো তাহলেই তো ঘরটা খালি হয়ে যায়।

এ কথা শুনে ছেলের প্রথমে তো অনেকটাই কষ্ট লেগেছে। পরে বউয়ের চাপে পড়ে সে বাবাকে বৃদ্ধাশ্রমে দিয়ে আসার জন্য রাজি হয়ে যায়। সকালবেলা সে বাবার সাথে কথা বলে তাকে বৃদ্ধাশ্রমে নিয়ে আসার জন্য রাজি করিয়ে ফেলে। বাবাও অসহায়ের মত বৃদ্ধাশ্রমে যেতে বাধ্য হয়। এদিকে দাদু বৃদ্ধাশ্রমে চলে যাওয়ার পর নাতি তো খুবই কান্নাকাটি করছিল দাদুকে দেখতে না পেয়ে। তখন বাচ্চাটি তার মাকে জিজ্ঞেস করেছিল দাদু কোথায়। তখন তার মা বলছিল একটা জায়গায় চলে গেছে আর কোনদিন আমাদের সাথে থাকবে না। আর বয়স হয়ে গেলে একটা সময় সেখানেই থাকতে হয় সবাইকে এই বলে ছেলের মা ছেলেকে বুঝাতে চাইছিল। তখন ছোট বাচ্চাটার মুখে অদ্ভুত কথা ফুটে। বাচ্চাটা বলে ওঠে তাহলে তোমরা যখন বৃদ্ধ হয়ে যাবে তখন কি আমাকে ছেড়ে ওই জায়গায় চলে যাবে আমাকে কি তখন একা থাকতে হবে।

এইসব শুনে তার মায়ের চোখ দিয়ে পানি চলে আসো। তখন মা বুঝতে পারে যে সে তার শ্বশুর মশায়ের সাথে কত বড় অন্যায় করেছে। সে বুঝতে পারে যে একটা সময় তো তাদের ওই অবস্থা হবে এখন যদি তারা তার শ্বশুর মশায়ের সাথে এরকম করে। ছেলের বউ ভুল বুঝতে পেরে শ্বশুর মশাই কে ফিরিয়ে আনার জন্য ছুটে যায়। এদিকে ছেলে তার বাবাকে বৃদ্ধাশ্রমে রাখতে গিয়ে যখন লোকজনের সাথে কথা বলে তখন একটা লোক তাকে বলে ওঠে। তোমার কত প্রশংসা শুনেছি তোমার বাবা তোমার অনেক প্রশংসা করেছে। আর সে কিনা তুমি তোমার বাবাকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে যেতে এসেছ। বৃদ্ধাশ্রমে যাওয়ার পর ছেলেটি এই বিষয়ে জানতে পারে যে সে তার বাবার আসল সন্তান না তার বাবা তাকে রাস্তায় কুড়িয়ে পেয়ে মানুষ করেছে।

এসব জানতে পেরে ছেলেটার মনটা আরো ভেঙে যাওয়ার পরে তার বাবাকে বৃদ্ধাশ্রম থেকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এদিকে তার নাতি আর ছেলের বউ চলে এসেছে তার শ্বশুর কে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে সবাই যখন ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য জোর করে তখন তার বাবা আবার বাড়িতে ফিরে যাওয়ার জন্য রাজি হয়। আর তারা আবার একই ভাবে একই সাথে সংসারে বসবাস করতে থাকে।এই ছিল আমার আজকের গল্পের শেষ পর্ব। আশা করি আপনাদের কাছে আমার এই গল্প ভালো লাগবে।

পোস্ট বিবরণ

শ্রেণীগল্প
ফটোগ্রাফার@fasoniya
ডিভাইসVivo Y15s
লোকেশনবাংলাদেশ


আমার পরিচয়

1664774022741.jpg

আমার নাম ফারজানা আক্তার সোনিয়া। আমি বাংলাদেশী।আমি বর্তমানে লেখাপড়া করি আমি একজন স্টুডেন্ট। আমি আর্ট করতে ভালোবাসি আর যখনই সময় পাই তখনই আর্ট করি।আমি ফটোগ্রাফি করতে খুবই ভালোবাসি । যখনই কোথাও খুব সুন্দর কিছু আমার চোখে পড়ে আমি ফটোগ্রাফি করে ফেলি। এছাড়াও আমি ক্রাফট তৈরি করে থাকি । বিভিন্ন ধরনের রান্না করে থাকি রান্না করতে অনেক পছন্দ করি। আমি আমার পরিবারের সবচেয়ে বড় মেয়ে । আমার ছোট ছোট দুইটা ভাই আছে। আমার অনেক স্বপ্ন রয়েছে যেগুলো স্টিমিট এ কাজ করে পূরণ করতে চাই।


1 (1).png

IMG-20221013-WA0015.jpg

Sort:  
 11 months ago 

গল্পের আগের পর্ব পড়েছিলাম।তাই শেষ পর্বটিও পড়ে নিলাম।ছেলের বউ নিজের ভুল বুঝতে পেরেছে জেনে অনেক ভালো লাগলো। শ্বশুরকে বৃদ্ধাশ্রম থেকে ফিরিয়ে আনলেন। এভাবে সকলের চোখ খুলে যাক।এমনটাই আশাকরি। ধন্যবাদ আপু সুন্দর গল্পটি শেয়ার করার জন্য।

 11 months ago 

আসলে ভালো লাগলো এই ভেবে যে অবশেষে ছেলে এবং ছেলের বউ যে তাদের ভুল বুঝতে পেরেছে। আসলে নিজের সন্তান না হওয়া স্বত্বেও ছেলেটি কে তার বাবা তো মানুষ করেছে। আর এই বৃদ্ধ বয়সে এসে বৃদ্ধাশ্রমে থাকার বিষয়টি সে কি করে মেনে নিতে পারবে? সব মিলিয়ে বেশ ভালোই লিখেছেন কিন্তু। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 11 months ago 

আসলে আমাদের সবারই বোঝা উচিত, আমরা সবাই ও একদিন এরকম একটা বয়সে আসব
তখন হয়তো আমাদের সন্তানরাও আমাদেরকে বৃদ্ধাশ্রমে ফেলে আসতে পারে। আর এই বিষয়টা সবশেষে ছেলের বউ বুঝতে পেরেছিল, যার কারণে শ্বশুর মশাইকে বৃদ্ধাশ্রম থেকে নিয়ে আসতে গিয়েছিল পরবর্তীতে। আর ছেলেটাও জানতে পেরেছিল সে তার বাবার আসল সন্তান না। সব মিলিয়ে পরবর্তীতে তারা আবারো একসাথে থাকছে এবং ভালোভাবে রয়েছে এটা শুনে ভালো লাগলো।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 60632.49
ETH 2366.53
USDT 1.00
SBD 2.56