অতিথি পাখির গল্প( শেষ পর্ব )

in আমার বাংলা ব্লগlast year

হ্যালো সবাইকে

কেমন আছেন সবাই ?আশা করি ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি আল্লাহর রহমতে। আজকে আরও একটি নতুন পোস্ট নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। অতিথি পাখির গল্প আজকে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব। আশা করি আপনাদের কাছে আমার এই পোস্টটি ভালো লাগবে।

IMG-20230609-WA0000.jpg

এরপর দুই বন্ধু মিলে কোন ভাবে রাতটা পার করলো। সকালবেলা উঠেই বাইরে এলো এবং তাদের মামাকে ঘটনা বলল। ওদের মামাকে রাতের এই ঘটনাটা খুলে বলল দুজনে মিলে তখন মামা বলল এজন্যই তোমাদেরকে যাওয়ার সময় বারণ করে গিয়েছিলাম রাতে কোন শব্দ হলে যাতে তোমরা বাইরে না যাও। তারপরও যেহেতু তোমরা এই দৃশ্যটা দেখে ফেলেছ তাহলে শোনো তোমাদেরকে একটা গল্প বলি। এরপর তাদের মামা ওই লাঠির কাহিনীটি তাদেরকে বলতে লাগল। তাদের গ্রামে নাকি একজন পাহারাদার ছিল। পাহারাদার খুবই সৎ এবং সাহসী ব্যক্তি ছিল। আশেপাশে চার গ্রামের মানুষ তাকে খুবই ভালো জানতো এবং তার নামে অনেক বেশি সুনাম করতো।

আর সে গ্রামকে সারারাত খুবই দায়িত্বের সাথে পাহারা দিতেও ।সেই গ্রামে থাকাকালীন কোন চোর বা কোন মানুষেরই ক্ষতি হতো না। একদিন নাকি সেই পাহারাদার রাতের বেলা পাহারা দিতে দিতে তাদের গ্রামের জঙ্গলের দিকে চলে যায়। এবং গ্রামে জঙ্গলের ভিতর একটা নদী রয়েছে সেই নদীর উপর একটা সাঁকো রয়েছে সেই সাঁকো পার হতে গিয়ে সেই পাহারাদার সাঁকো থেকে পড়ে মারা যায়। সেই পাহারাদার মারা যাওয়ার পর থেকে তার শরীর এবং কোন কিছুই আর গ্রামবাসী খুঁজে পায়নি। পরে তারা খবর পেয়েছিল সে পাহারাদার নদীতে পড়ে মারা গিয়েছে। কিন্তু এই পাহারাদার মারা যাওয়ার পর তার এই দায়িত্ব সে ছাড়েনি তারা আত্মা প্রতিরাতেই গ্রাম পাহারা দিয়ে থাকে।

সেজন্যই রাতে গ্রামবাসী কোন শব্দ হলে বাইরে বের হয় না। তারা জানে পাহারাদারের আত্মা গ্রাম পাহারা দিচ্ছে আর এই বিষয়টা গ্রামবাসী ভয় পায় সেজন্য রাতের বেলা ঘর থেকে বের হয় না কোন শব্দ শুনে। এই বিষয়গুলো শুনে দুই বন্ধু খুবই আতঙ্কিত ছিল তবে তাদের গ্রামে ঘুরতে আসার আনন্দটা এই গল্পটা বা এই ঘটনাটা কোন কিছুই করতে পারেনি। মামার সাথে কথা বলার পর দুই বন্ধু মিলে বেরিয়েছে গ্রামে ঘুরতে। দুই বন্ধু পরিকল্পনা করছিল আজকে রাতের বেলা বেরবে গ্রামের সেই অসাধারণ সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য। রাতের বেলা জঙ্গলে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের অতিথি পাখির জীবজন্তু দেখবে।

আর যাওয়ার সময় সুরক্ষার জন্য তাদের মামার সেই বন্দুকটা নিয়ে যাবে। বন্দুক নেওয়ার কথা শুনে আরেক বন্ধু বলছিল না বন্দুক নেওয়া ঠিক হবে না কারণ আমাদের এখানে শিকার করাটা খুবই খারাপ হবে। এখন আরেক বন্ধু বলছিল শিকার কেন করব শুধু সুরক্ষার জন্য নিয়ে যাব। এভাবেই দুই বন্ধু কথোপকথন চালিয়ে যেতে থাকে আর দুপুর বেলা তারা খাওয়া দাওয়া করে সন্ধ্যার দিকে চুপিচুপি বেরিয়ে যায়। তারা কাউকে না জানিয়ে এবং তাদের মামাকে না জানিয়ে চুপি চুপি বেরিয়েছে এবং তাদের মামার বন্দুক চুরি করে নিয়ে আসে। বন্ধু বলছিল এটা কিন্তু তুই ঠিক করিস নি তোর মামার এত শখের বন্দুক চুরি করে নিয়ে এসেছিস না বলে। এ ধরনের কথোপকথন করতে করতে দুই বন্ধু মিলে গ্রামের ভিতর দিয়ে সেই জঙ্গলে চলে যায় এবং একটু হাঁটতে সেই নদীর কাছে চলে যায়।

সেখানে গিয়ে দাঁড়াতেই একজন বন্ধুর পরিবেশটা খুবই অস্বাভাবিক মনে হচ্ছিল। তবে চারদিকে সৌন্দর্য সুন্দর দুজনকে মোহিত করছিল। চাঁদের আলোয় নদীর পানি গুলো যেন চকচক করছিল। এই দেখে দুই বন্ধুর মহাখুশি এত সুন্দর সৌন্দর্য উপভোগ করতে পেরে। তারপর এক বন্ধুর মনটা কেমন যেন করছিল সে বলছিল আমাদের পাশ দিয়ে যেন খুব তাড়াতাড়ি কেউ হেঁটে গেল। আরেক বন্ধু বলছিল না এখানে অনেক বাতাস বাতাসের কারণে তোমার কাছে এরকম মনে হয়েছিল। এরপর আরেক বন্ধু বলছিল নদীটি পার হয়ে গেলে সেই পাশে অনেক ধরনের অতিথি পাখি আছে এবং বিভিন্ন ধরনের পাখি আছে সেখানে যাবে আর মধ্যে আরেকজন নিষেধ করে না গ্রামের এই অবস্থায় আমরা ওদিকে যাওয়া ঠিক হবে না।

এরপর তার বন্ধু হাতে থাকা বন্দুক টা কথা বলতে না বলতেই চালিয়ে দিল নদীর ওপারে জঙ্গলের দিকে। পাশের বন্ধু বলছিল আমি তোমাকে নিষেধ করেছিলাম গুলি চালাতে তারপরও তুমি চালিয়ে দিলে। এই নিয়ে তাদের মধ্যে কথোপকথন হচ্ছিল এরই মধ্যে নদী থেকে একটা অদৃশ্য আত্মা উঠে এলো। এবং কথা বলতে থাকলো তারা কেন অতিথি পাখিদের গায়ে গুলি চালিয়েছে এ বিষয়ে তাদের সাথে বিভিন্ন কথোপকথন করতে থাকলে এবং একটা সময় তাদের দুজনেরই গলা টিপে ধরল। কিন্তু তারা কিছুই দেখতে পারছে না শুধু তাদের মনে হচ্ছে তাদের কেউ গলা টিপে ধরেছে। এরপর তারা দুজনে মিলে অনেক ক্ষমা চাই তারপর তাদেরকে ছেড়ে দেয়। তারা দুজনেই অদৃশ্য আত্মার কাছে ক্ষমা চেয়ে বলে তারা আর কখনো গ্রামে শিকার করতে আসবে না। অতিথি পাখি শীতকালে তাদের এই এলাকায় অতিথি হয়ে আসে। তাদের এভাবে শিকার করা খুবই অন্যায়। এরপর দুই বন্ধু কোনমতে সে জঙ্গল থেকে প্রাণ নিয়ে বেছে ফিরে। এরপর থেকে তারা কখনোই আর ওই জঙ্গলে যায় না এবং শিকার করে না।

পোস্ট বিবরণ

শ্রেণীজেনারেল
ফটোগ্রাফার@fasoniya
ডিভাইসVivo Y15s
লোকেশনবাংলাদেশ


আমার পরিচয়

1664774022741.jpg

আমার নাম ফারজানা আক্তার সোনিয়া। আমি বাংলাদেশী।আমি বর্তমানে লেখাপড়া করি আমি একজন স্টুডেন্ট। আমি আর্ট করতে ভালোবাসি আর যখনই সময় পাই তখনই আর্ট করি।আমি ফটোগ্রাফি করতে খুবই ভালোবাসি । যখনই কোথাও খুব সুন্দর কিছু আমার চোখে পড়ে আমি ফটোগ্রাফি করে ফেলি। এছাড়াও আমি ক্রাফট তৈরি করে থাকি । বিভিন্ন ধরনের রান্না করে থাকি রান্না করতে অনেক পছন্দ করি। আমি আমার পরিবারের সবচেয়ে বড় মেয়ে । আমার ছোট ছোট দুইটা ভাই আছে। আমার অনেক স্বপ্ন রয়েছে যেগুলো স্টিমিট এ কাজ করে পূরণ করতে চাই।


1 (1).png

IMG-20221013-WA0015.jpg

Sort:  
 last year 

অতিথি পাখির গল্পের শেষ পর্ব বেশ ভালোই লাগলো পড়ে। প্রথম পর্ব টাও পড়া হয়েছিল। প্রথম পর্ব পড়ার পরে তো আমি অধিক আগ্রহে বসে ছিলাম এই পর্বটির জন্য। গ্রামের পাহারাদারের আত্মার কথা শুনে অনেক বেশি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। পাহারাদার এর মৃত্যু হওয়ার পরেও তিনি গ্রাম পাহারা দিচ্ছে। যখন রাতে ওই লাঠি তারা দেখল সকালে উঠে তাদের মামাকে সব কিছু বলল। এবং তিনি পাহারাদারের গল্পটা ওদেরকে বলে। সবকিছু জানার পরেও রাতে ঘোরাঘুরি করার জন্য বেরিয়ে পড়ে দুজনে আর ছেলেটি তার মামার বন্ধু চুরি করে। অতিথি পাখির গায়ে গুলি মারার কারণে ওই আত্মাটা তাদের দুজনের গলা চেপে ধরেছিল। অনেক ক্ষমা চাওয়ার পরে অবশেষে ছেড়েছিল। অতিথি পাখিগুলো গ্রামে আসে অতিথি হিসেবে। তাদেরকে এভাবে স্বীকার করা সত্যি একেবারেই উচিত না।

 last year 

প্রথম পর্বটি পড়ে শেষ পর্বের জন্য অধীর আগ্রহী ছিলেন শুনে খুশি হলাম। আমার এই গল্পটি পড়ে আপনার কাছে ভালো লেগেছে শুনে খুবই ভালো লাগলো। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

 last year 

এই গল্পটির প্রথম পর্ব পড়া হয়েছিল, আজকে শেষ পর্বটি পড়ে অনেক বেশি ভালো লেগেছে। অনেক ভয়ে ভয়ে এই গল্পটা পড়ছিলাম। শেষে কি হয়েছিল তা জানার জন্য অনেক বেশি আগ্রহী ছিলাম, তাই শেষ পর্যন্ত পড়েই ছেড়ে দিয়েছি। দুই বন্ধু সবকিছু জানার পরেও রাতের বেলায় সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য বের হয়েছিল এবং অতিথি পাখির গায়ে গুলি মারার কারণে অদৃশ্য সেই আত্মাটি তাদের গলা টিপে ধরে। এরপর তারা ক্ষমা চাওয়ার পরে ছেড়ে দিয়েছিল। সব মিলিয়ে খুব ভালো লাগলো আপনার সম্পূর্ণ গল্পটা পড়ে।

 last year 

গল্পটির প্রথম পর্ব পড়েছিলেন এবং শেষ পর্বটি পড়েও আপনার কাছে ভালো লেগেছে শুনে খুবই খুশি হলাম। ধন্যবাদ আপু আমার গল্পটি পড়ে সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.15
JST 0.030
BTC 58443.62
ETH 2524.10
USDT 1.00
SBD 2.34