শনিবারের ফেরিওয়ালা (শেষ পর্ব)

হ্যালো সবাইকে

কেমন আছেন সবাই ?আশা করি ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি আল্লাহর রহমতে। আজকে আরও একটি নতুন পোস্ট নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। শনিবারের ফেরিওয়ালা গল্প আজকে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব। আশা করি আপনাদের কাছে আমার এই পোস্টটি ভালো লাগবে।

তারপর মাঝে মাঝে যখন আমাদের বাড়িতে আসি। এখন সেই শনিবারের ফেরিওয়ালা শনিবার দুপুর বেলা এখনো আসছে। আমার জীবনে অনেক পরিবর্তন এসেছে কিন্তু সেই শনিবারের ফেরিওয়ালা তার ধারাবাহিকতা বজায় রেখে প্রতি শনিবারে আসে হয়তো সে আগের থেকে অনেক বৃদ্ধ হয়েছে। সে আর আগের থেকে ঠিকঠাকভাবে হাঁটতে পারে না, সে জিনিসপত্রের পোটলি কাঁধে নিয়ে হাঁটতে তার অনেক কষ্ট হয়, সে এখন ঠিকভাবে চোখেও দেখতে পায় না। কিন্তু ফেরিওয়ালাদের কাছে একটা ডায়লগ থাকে তার সেই ডায়লগটা এখনো কানে বাজে। সে ডায়লগটা সে এখনো বলে হয়তো তার সেই ডায়লগ বলার ধরনটা একটু বদলেছে। গলাটা একটু নরম হয়েছে কিন্তু সে এখনো বলে যায় সেই ডায়লগ টা।

এইতো সেদিনের কথা কয়েক দিন হল বাড়িতে বেড়াতে এসেছি। বলতে খুবই খারাপ লাগে তবে বলতেই হয় এখন নিজের বাড়িতেও বেড়াতে আসতে হয়। এই শনিবারে সেই শনিবারে ফেরিওয়ালা টা আসলো একটা চিরুনির প্রয়োজন ছিল। ভাবলাম একটা চিরুনি কিনব শনিবার দুপুর বেলা একই সময় সেই শনিবারে ফেরিওয়ালা দাদু আসলো। ভাবলাম আজকে তার থেকে চিরুনিটা কেনা যাক। অনেক সময় হয়ে গিয়েছে অনেক কিছু পরিবর্তন হয়েছে অনেকদিন তার থেকে কিছু কেনা হয়নি। সেজন্য তাকে বললাম একটা চিরুনি কিনব আছে আপনার কাছে। সে কোন কিছু উত্তর না দিয়ে আমাকে জিজ্ঞেস করল কবে আসলি তুই শ্বশুরবাড়ি থেকে। এই কথাটা তার মুখ থেকে শুনে মনের ভেতর যেন একটা কেমন একটা লাগল। তারপরও মুখে উত্তর দিলাম কয়েকদিন আগে এসেছি।

এরপর তার থেকে একটা চিরুনি নিলাম। এত বছরের সেই পুরনো বাক্স হয়তো ছিড়ে গিয়েছে কিন্তু একই রয়েছে। তারও তো পরিবর্তন হয়েছে সেও পুরনো হয়েছে। তারপরও সেই ছোটবেলার ফেরিওয়ালা দাদুর এই বাকসা দেখে যেন সব স্মৃতি চোখের মধ্যে ভেসে উঠেছে। একটা চিরুনি নিলাম। তারপর জিজ্ঞেস করছিল আজকে কয় তারিখ রে আজকে বাংলা মাসের কয় তারিখ সেটা কি তুই জানিস। আমি বললাম আমার তো বাংলা মাস মনে থাকে না ফেরিওয়ালা দাদু বলে দেখ আমার মোবাইলে দেখ আমি তো চোখে দেখতে পাই না। মোবাইল আছে তাও কিছু বুঝতে পারি না তারপর দেখে তাকে তারিখটা জানালাম। তারপর চিরুনি কিনে তাকে টাকা দিলাম যাওয়ার সময় সে আবার জিজ্ঞেস করছিল কিছুদিন থাকবি নাকি আমি বললাম হ্যাঁ থাকব।

ছোটবেলা থেকে তার চোখে সামনে মানুষ হয়েছি। প্রতি সপ্তায় সে আসতো আমাকে দেখতো এভাবে আস্তে আস্তে তার পুরো জীবন কেটে গেল এবং তার চোখের সামনেই আমিও বড় হয়ে গেলাম। নতুন একটা জীবন হলো আমার সব পরিবর্তনই তার চোখের সামনে। আসলে কিছু কিছু সম্পর্কের জন্য সম্পর্কের নাম থাকার প্রয়োজন হয় না মনের মায়া মমতা থেকে অনেক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেদিন তার এই কথাবার্তা গুলো মনে হল তার সাথে যেন আমার কোন একটা সম্পর্ক রয়েছে ছোট থেকে সে আমাকে আসতে যেতে দেখছে তার থেকে জিনিস কেনা তার জিনিসপত্র অযথা দূরে থাকে বিরক্ত করা এগুলোর মধ্য দিয়ে যেন সম্পর্কটা গড়ে উঠেছে।

আমার নিজের দাদু মারা গিয়েছে অনেক আগে। কিন্তু কথা এখনো মনে পড়ে তার কথা মনে করে চোখ দিয়ে দু ফোটা পানি এখনো ফেলি। শনিবার আস্তে আস্তে এভাবে যেতে যেতে চোখের সামনে বিশটা বছর কেটে গেল সেটা বুঝতে পারিনি। যাইহোক বর্তমানের সম্পর্কের নামে যে সম্পর্ক গুলো রয়েছে তার খুবই অল্প সংখ্যক সম্পর্কই সবসময় থাকে। রক্তের সম্পর্ক ছাড়া অনেক সম্পর্ক রয়েছে যেগুলো সত্যিই অনেক আবেগময় সম্পর্ক। যাইহোক আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে এই বাস্তবিক গল্পটা।

আমার পরিচয়

আমার নাম ফারজানা আক্তার সোনিয়া। আমি বাংলাদেশী।আমি বর্তমানে লেখাপড়া করি আমি একজন স্টুডেন্ট। আমি আর্ট করতে ভালোবাসি আর যখনই সময় পাই তখনই আর্ট করি।আমি ফটোগ্রাফি করতে খুবই ভালোবাসি । যখনই কোথাও খুব সুন্দর কিছু আমার চোখে পড়ে আমি ফটোগ্রাফি করে ফেলি। এছাড়াও আমি ক্রাফট তৈরি করে থাকি । বিভিন্ন ধরনের রান্না করে থাকি রান্না করতে অনেক পছন্দ করি। আমি আমার পরিবারের সবচেয়ে বড় মেয়ে । আমার ছোট ছোট দুইটা ভাই আছে। আমার অনেক স্বপ্ন রয়েছে যেগুলো স্টিমিট এ কাজ করে পূরণ করতে চাই।