জীবনে লক্ষ্যপূরণের মূল অস্ত্র হলো আত্মবিশ্বাস।
আসসালামু আলাইকুম। |
---|
আমার প্রিয় স্টিমিয়ান বন্ধুগণ কেমন আছেন আপনারা সকলে?
আপনাদের সকলের সুস্থতা কামনা করে আজকের পোস্ট শুরু করছি।
একই সাথে যেকোনো কর্মক্ষেত্রে কাজ করতে করতে একটা সময় কর্মক্ষেত্রটা একটা পরিবার তৈরি হয়ে যায়। কিন্তু কোনো কারণে সেই পরিবার থেকে দূরে থাকতে হলে, মনটা অনেক খারাপ হয়ে যায়।
দিনশেষে অনেক ইচ্ছে করে কিছু সময়ের জন্য পরিবারের মাঝে নিজের সুখ দুঃখের কথা গুলো ভাগ করে নিতে,কিন্তু যখন জীবন থেকে একটা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সুখ নামক জিনিস টা বিদায় নেয়,তখন প্রতিনিয়ত নিজের দুঃখের কথা গুলো বলতে নিজের মনের কাছেও অনেকটা খারাপ লাগে।
যার কারণে বর্তমানে আমার এমন অবস্থা হয়েছে যে, আমি দিনকে দিন নিজ পরিবার এবং আমার কর্মক্ষেত্রে তৈরি পরিবার থেকেও অনেকটা অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছি।
কিন্তু এতে একটা জিনিস অনুভব করলাম যে, নিজেকে এমন ভাবে সব জায়গা থেকে গুটিয়ে নেওয়ার ফলে আমি নিজেকে মানসিক ভাবে আরও বেশি কষ্ট দিচ্ছি।
সারাদিন একা একা থাকতে থাকতে শারীরিক ভাবে আমি যতটা না দূর্বল তার থেকে মানসিক ভাবে আরও বেশি দূর্বল এবং অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি।
আর এই বিষয়টা রিয়েলাইজ করতে হয়তো আমার অনেকটা বেশি সময় লেগে গিয়েছে।
গতকাল রাতে যখন ঘুমানোর জন্য বিছানায় গিয়ে শুয়ে পরলাম, এবং নিজের শারীরিক অসুস্থতার কথা চিন্তা করে ঘুম হচ্ছিল না, কিন্তু উল্টো দিকে তাকিয়ে দেখলাম আমার হাসবেন্ড অসুস্থ শরীর নিয়ে সারাদিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে এসে সবার সাথে হাসি মুখে সময় কাটিয়ে আরামে ঘুম দিচ্ছে।
তখন মনে কিছুটা সংকোচ নিয়েই তাকে ঘুম থেকে জাগিয়ে উঠালাম,এবং তাকে জিজ্ঞেস করলাম আচ্ছা তোমার তো আমার থেকেও অনেক বড় অসুখ ধরা পরেছে এবং ব্যবসায়িক দিক থেকেও অনেক ঝামেলার মধ্যে আছো।তারপরও সব কিছু হাসি মুখে চিন্তামুক্ত হবে কিভাবে সব কিছু ম্যানেজ করছো?
এই কথার উত্তরে সে আমাকে যা বললো তাতে বেশ অনেকটাই অবাক হলাম,তার উত্তর টা ছিল এমন-
আমি মনে করি আমার কোনো অসুখ হয় নি,কারণ যখনই মনে করবো আমার অসুখ হয়েছে,তখন জীবন থেকে দিনকে দিন সুখ নামক জিনিস টা হারিয়ে যাবে।
আমার শরীরে যে রোগ আক্রান্ত হয়েছে তার থেকে অনেক কঠিন কঠিন রোগে অনেকেই ভুগছেন,তাদের তুলনায় হয়তো আমার এই রোগ অনেকটাই নগন্য।
তারপরে আমি তাকে আরও একটা প্রশ্ন করলাম যে- তাহলে আমি কেন পারছি না?
তার প্রতিত্তোরে সে আমাকে কিছু প্রশ্ন করে আর তার সেই উত্তর গুলো দিতে গিয়ে আমার নিজের অনেক গুলো ভুল ধারণা এবং ভ্রান্ত চিন্তা অনেকটা দূর হয়ে গিয়েছে আলহামদুলিল্লাহ।
সে আমাকে প্রথম প্রশ্ন করে-
যখন তুমি প্রথমবার প্রেগন্যান্ট হয়েছিলে,তখন ডাক্তার তেমাকে ফুল বেড রেস্টে থাকতে বলেছিল, কিন্তু তারপর তুমি জেদ করে অনার্সের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা কেন দিয়েছিলে??
তার উত্তরে আমি বলি- নিজের এত বছরের কষ্ট বিফলে যেতে না দিয়ে সাফল্য অর্জনের জন্য।
তখন আমার হাসবেন্ড আমাকে বলে,আসলে তখন তোমার নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাসের অভাব ছিল না। যার জন্য তুমি সক্ষম হয়েছিলে। কিন্তু বর্তমানে তোমার মধ্যে আত্নবিশ্বাসের ঘাটতি রয়েছে এবং মনের মধ্যে ভয় বাসা বেঁধেছে যার জন্য তুমি নিজের লক্ষ্যে ফোকাস করতে পারছো না।
তার এই কথা গুলো শোনার পরে আমি বুঝতে পারলাম যে সত্যিই আমি নিজ আত্নবিশ্বাসের কারণে এতদিনে অনেকটা পিছিয়ে গিয়েছি নিজের লক্ষ থেকে।
আর যেহেতু আমি এখন সব ধরনের সাংসারিক কাজ থেকে বিরত আছি অর্থাৎ এটাই আমার জীবনের উপযুক্ত সময় নিজের পায়ে দাড়ানোর, কারণ আমার কাছে এখন অফুরন্ত সময় রয়েছে নিজের স্বপ্ন পূরণ করার জন্য।
আমার জীবনের অনেক বড় একটি স্বপ্ন হলো একজন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করা এবং স্টিমিট প্লাটফর্মের একজন সদস্য হিসেবে আজীবন কাজ করে যাওয়া।
ইনশাআল্লাহ আমি আজ থেকে আমার সময়ের যথাযথ মূল্যায়ন করে সামনের দিকে এগিয়ে যাবার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাবো।
আপনারাও আমার জন্য দোয়া করবেন আমি যেন আমার লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম হতে পারি।
আত্মবিশ্বাস থাকলে মানুষ অসাধ্যও সাধন করতে পারে। শরীর থাকলে রোগ ব্যাধি থাকবেই, তা নিয়ে অত দুশ্চিন্তা করলে তো চলবে না। আপনাদের দুজনের দ্রুত সুস্থতা কামনা করি।
অনেকদিন ধরে অসুস্থ এটা আপনার লেখা পড়ে আগেই জেনেছি। পরিবারের কাজকর্মও যে ঠিকমতো করতে পারেন না এটাও জেনেছি আপনার লেখা পড়েই।
স্টিমিট প্লাটফর্মেও কিছুটা অনিয়মিতভাবেই লেখা পোস্ট করেন এই অসুস্থতার কারণে।
তবে আজকে আপনি উপলব্ধি করলেন যে আপনি সবকিছু থেকে খানিকটা দূরে সরে যাচ্ছেন এবং এর কারনে মানসিক যন্ত্রনার সম্মুখীন হচ্ছেন।
আর তখনই আপনার হাসবেন্ড এর কথা মাথায় আসলো যে সেতো আরো বড় অসুখ নিয়ে হাসিমুখে কাজ করে যাচ্ছে।
ভাই আপনাকে একদম সঠিক কথা বলেছেন যে
আমরা আমাদের আত্মবিশ্বাসের মাধ্যমে অনেক কিছুই করতে সক্ষম।
আবার ফেরত আসুন ঘরে -বাইরে সবজায়গাতে পরিপূর্ণ আত্মবিশ্বাস নিয়ে এই কামনাই করি।
ভালো থাকবেন সব সময়।
আত্মবিশ্বাসহীন ব্যক্তি কখনও জীবনে সফলতা অর্জন করতে পারে না। আপনার হাসবেন্ডও আপনার মতো অসুস্থ তবুও সে সবকিছু কত সুন্দরভাবে ম্যানেজ করে কাজ করে যাচ্ছে। আসলেই তার চিন্তা ভাবনার প্রশংসা না করে পারছি না। আমাদের থেকেও অনেক খারাপ পরিস্থিতিতে অনেক মানুষ রয়েছে, তাহলে তারা যদি সেটাতে সন্তুষ্ট থাকতে পারে তাহলে আমরা কেন পারবো না।
সত্যিই ভালো লাগলো আপনার পোস্টটি পড়ে। ধন্যবাদ আপনাকে।
আত্মবিশ্বাস মানুষের বাঁচতে শেখায় আত্মবিশ্বাস মানুষের সম্মান বাড়ায় আত্মবিশ্বাস মানুষের জীবনকে আরো সুন্দরভাবে পরিচালনা করে।
আপনার নিজের প্রতি নিজের আত্মবিশ্বাস থাকলে এটাই আপনার মূল অস্ত্র জীবনের লক্ষ্য পৌঁছাতে হলে অবশ্যই সঠিক সিদ্ধান্ত এবং আত্মবিশ্বাসের প্রয়োজন রয়েছে।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ খুব সুন্দর একটি টপিক নিয়ে আমাদের মাঝে উপস্থাপনা করার জন্য আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল ভালো থাকবেন।