কিভাবে পরিকল্পনা করবেন নতুন বছরে || Some techniques of planning [10% @shy-fox]
আমরা একটা কথা প্রায়ই বলতে শুনি যে, লক্ষ্যহীন জীবন নাকি মাঝিহীন নৌকার মতো এবং এর কোন গন্তব্য থাকে না। কথাটি অনেকাংশে সত্য কিন্তু মাঝে মাঝে আমরা অন্য ভাবে চিন্তা করলে এই কথার মধ্যে কিছু বৈপরীত্য খুজে পাব। অনেকেই চিন্তা করেন জীবনের একটা লক্ষ্য থাকা দরকার এবং একটি নির্দিষ্ট সময় পরে আমরা আমাদেরকে কোথায় দেখতে চাই সেই পরিকল্পনা ছাড়া আমাদের পক্ষে এগিয়ে যাওয়া টা অনেক বেশী কষ্টকর তাই জীবনের দৌড়ে আমাদের লক্ষ্যমাত্রা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ আমাদের জন্য। লক্ষ্যমাত্রার ক্ষেত্রে কিছু ব্যাপার নিয়ে আজকের পোস্টে আমি আমার মতামত ব্যক্ত করার চেষ্টা করব।
আমরা যখন লক্ষ্যমাত্রার কথা বলি তখন সেই লক্ষ্যমাত্রার সাথে সময় নামক একটি বিষয় সহসাই চলে আসে। অর্থাৎ আমরা যদি লক্ষ্যমাত্রা স্থির করি তাহলে সেই লক্ষ্যমাত্রা কত দিনের কিংবা কত মাসের কিংবা কত বছরের সেটা আমাদেরকে আগে নির্ধারণ করতে হবে। কাউকে দেখবেন ৫০ বছরের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে আবার কাউকে দেখবেন প্রত্যেক বছর বছর লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করে পরিবর্তন করেন। যেহেতু এখন ডিসেম্বর মাস এবং একটি বছরের সমাপ্তি তাই অনেককেই আমরা দেখতে পাব আগামী বছরের জন্য লক্ষ্যমাত্রা স্থির করছেন এই সময়টাতে।
বাৎসরিক লক্ষ্যমাত্রার ক্ষেত্রে আমাদের অনেক বেশি স্পেসিফিক হওয়া উচিত কারণ আমাদেরকে নির্ধারণ করতে হবে যে, এক বছরে আমরা আসলে কি করতে চাই এবং নিজেকে কোথায় নিয়ে যেতে চাই। লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের ক্ষেত্রে আমি একটু ভিন্নভাবে চিন্তা করি এবং সে ভিন্ন চিন্তার বিষয় গুলো আজকে আপনাদের মাঝে শেয়ার করছি আশা করি আপনারা এর মাধ্যমে আপনাদের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।
Source: https://pixabay.com/photos/arm-hand-write-planner-planning-1284248/
মানুষের জীবনে সবথেকে নিশ্চিত বিষয় হচ্ছে মৃত্যু। যেকোনো শ্রেণী-পেশা, ধর্মবর্ণ গোত্র কিংবা আদর্শিক অনুসরণকারী মানুষ বিশ্বাস করে মৃত্যু নিশ্চিত এবং এই কথাটাই হচ্ছে চরম সত্য। আমরা ঠিকভাবে বলতে পারি না যে, আমরা পৃথিবীতে কতদিন বেঁচে থাকবো। আমরা আজকে মারা যেতে পারি কিংবা ১০ বছর পর অথবা ৫০ বছর পর। এই বিষয়টি আমাদের জন্য নির্ধারিত রয়েছে কিন্তু আমরা এটা আগে থেকে জানতে পারিনা। এ কারণে আমাদের পরিকল্পনাগুলো যখন দীর্ঘমেয়াদি হয় তখন সেই পরিকল্পনা হয়তো আমাদেরকে বিপদে ফেলতে পারে।
যেমনঃ আমরা হয়তোবা দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করে আস্তে আস্তে সামনের দিকে আগানোর চেষ্টা করলাম এবং অনেক কাজ অগোছালো অসমাপ্ত রেখে দিলাম এবং অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে কোন একদিন মারা গেলাম তখন আমাদের পরিবার অনেকাংশে বিপদে পড়তে পারে। তাই আমি মনে করি, আমাদের পরিকল্পনাগুলো হওয়া উচিত খুব সংক্ষিপ্ত এবং দৈনিক ভিত্তিক।প্রতিটি দিন আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিনের কাজ প্রতিদিন শেষ করা আমাদের জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
আমরা যদি খুব দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করি এবং সেই মোতাবেক শেষ করতে না পারি তাহলে আমাদের অনেক কিছুই অপূর্ণ থেকে যাবে। যেহেতু মৃত্যু নিশ্চিত এবং আমরা এর সময়কাল জানিনা তাই প্রত্যেকটা দিন আমাদের জন্য হতে পারে লক্ষ্যমাত্রার দিন। অর্থাৎ আমি মনে করি, প্রত্যেকটা দিনের জন্য আমাদের একটা লক্ষ্যমাত্রা থাকা উচিত এবং যদি আমরা সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারি তাহলে বলতে পারব আমরা ওই দিনের জন্য সফল। এভাবে করে আমরা আমাদের দিনগুলোকে অতিবাহিত করতে পারি।
Source: https://pixabay.com/photos/concept-man-papers-person-plan-1868728/
প্রত্যেক দিনের কাজের তালিকায় আমাদেরকে অবশ্যই ভালো কিছু কাজ রাখতে হবে যাতে করে প্রত্যেক দিনই আমরা কিছু না কিছু ভালো কাজ করতে পারি কারণ আগামী দিন আমাদের বেঁচে থাকার নিশ্চয়তা কেউ দেয় না। তাই প্রত্যেকটা দিনই আমাদের জন্য আমাদের দৈনন্দিন লেনদেন ক্লিয়ার করা, কিছু হলেওভালো কাজ করা, পেন্ডিং কাজগুলো সমাপ্ত করা উচিত।
দিনশেষে প্রত্যেক মানুষেরই একটি বাৎসরিক কিংবা দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা থাকে সেটাকে আমরা ভিশন বা মিশন এর মধ্যে ফেলতে পারি। কিন্তু সেই লক্ষ্যমাত্রাকে নিয়ে জীবন যাপন করতে গেলে আমরা হয়তোবা অন্যান্য কাজের ক্ষেত্রে অনেক ধীর গতিতে এগিয়ে যাব যেটা আমাদের জন্য হয়তো ক্ষতির কারণ হতে পারে তাই আমি মনে করি, কিছু ভিশন আমাদের থাকবে তারপরও আমাদের লক্ষ্যমাত্রা হওয়া উচিত প্রত্যেক দিনের জন্য যদিও আমরা এটা জানি যে, একটি দিনও আমাদের বেঁচে থাকার নিশ্চয়তা নেই তারপরও দৈনন্দিন ভাবে যখন আমরা লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এগিয়ে যাব তখন প্রত্যেকটি দিন আমাদের জন্য সফল দিন হবে এবং আমরা বলতে পারব আজকে একটি সফল দিন জীবন থেকে অতিবাহিত হয়েছে।
আমি আশা করি, আপনারা এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনাদের পরবর্তী বছরে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ ক্ষেত্রে বেশ কিছু সুনির্দিষ্ট দিক-নির্দেশনা পেয়ে গিয়েছেন এবং পোস্টটি পড়ে কেউ উপকৃত হতে পারলে তার জন্য শুভকামনা রইল।
এই পোস্টের সম্পূর্ন লিখা আমার নিজস্ব ও কোথায় থেকে কপি করা হয়নি। কোথাও হতে কোন তথ্য বা ছবি নিয়ে থাকলে সোর্স দেয়া হয়েছে
আমি কে
আমি সাইফুল বাংলাদেশ থেকে। পেশায় শিক্ষক, সাবেক ব্যাংকার। আমি আমার চিন্তাভাবনা এবং ধারণাগুলি ব্লগে শেয়ার করতে ভালবাসি। প্রকৃতির মাঝে ঘুরে বেড়ানো এবং ক্রিকেট খেলা আমার শখ। আমি সর্বদা একজন শিক্ষানবিস এবং সবার থেকে শিখতে চাই। আমি বিশ্বাস করি, আমার লেখা থেকে কেউ যদি উপকৃত হয় বা নতুন কিছু শিখতে পারে তবেই আমার লেখালেখি সার্থক। |
---|
ধন্যবাদ আপনাকে! খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি টপিক। নতুন বছর আসছে তাই আমরা সবাই পরিকল্পনা করছি কিভাবে আমাদের রুটিন তৈরি করা যায়। এত দীর্ঘ রুটিন না করে সংক্ষিপ্ত রুটিন করাই ভালো। এতে করে আমাদের জন্য সহজ হবে। অনেক সময় দীর্ঘ পরিকল্পনা করলে সেই অনুযায়ী কাজ করতে আমরা ব্যার্থ হয়ে পড়ি।
জি ভাই ঠিক বলেছেন
পরিকল্পনাবিহীন জীবন আর ব্রেক ছাড়া গাড়ি একই রকম। পরিকল্পনা ছাড়া কোন কিছুই করা উচিত নয়। সঠিক পরিকল্পনা আমাদেরকে সঠিক লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে সাহায্য করে। আপনার আর্টিকেলটি একটি সুন্দর গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উপর লেখা। পরিকল্পনার উপরে অনার্স এবং মাস্টার্সে বই রয়েছে। ধন্যবাদ।
জি, একদম ঠিক বলেছেন আপনি
ভাইয়া,প্রথমে আপনাকে ধন্যবাদ জানাই আপনি এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
ভাই আপনার লেখাটিতে আমি সহমত পোষণ করছি লক্ষ্যহীন জীবন মানে মাঝি হীন নৌকা। তবে আমাদের লক্ষ্য হতে হবে দীর্ঘ মেয়াদী না স্বল্পমেয়াদী কারণ আমরা প্রতিটা মানুষই জানি আমাদের মৃত্যু অনিবার্য।কখন আমাদের মৃত্যু হবে আমরা কোন মানুষই ভালো করে জানি না। তাই আমাদের লক্ষ্য পূরণের জন্য স্বল্প মেয়াদে করতে হবে। হ্যা ভাইয়া প্রতিদিন কাজের তালিকায় আমাদের ভালো কাজ গুলো রাখতে হবে।
ভাইয়া আপনার পোস্টটি পড়ে খুবই খুবই ভালো লেগেছে আমরা অনেকে আছি আমাদের লক্ষ্য গুলো নির্ধারন করতে পারি না তবে আপনার পোষ্ট যারাই পড়বে এবং আমিও খুবই উপকৃত হয়েছি।
ধন্যবাদ ভাইয়া এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন।
আপনি খুব চমৎকারভাবে বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন। আপনার মন্তব্যের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ
ভাইয়া আপনি আপনার পোস্টে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য বেশকিছু দিকনির্দেশনামূলক গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন। মানুষ মরণশীল। প্রতিটি মানুষকেই মৃত্যুবরণ করতে হবে। তাই নিজের কার্যকে সুসম্পন্ন করতে হলে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা করতে হবে আর এ পরিকল্পনা দীর্ঘমেয়াদী না করে স্বল্প মেয়াদের ভেতরে সুসম্পন্ন করার চেষ্টা করতে হবে। আর আমি আপনার এই মতামতের সাথে শতভাগ একমত।
ধন্যবাদ আপনাকে
খুব ভালো আর দরকারি একটি পোস্ট।
সত্যিই পরিকল্পনা ছাড়া কোন কাজ সফলভাবে করা সম্ভব নয়। আপনার পোস্টটি পড়তে পড়তেই কিছু পরিকল্পনা সামনে এলো। যাক সবমিলিয়ে খুব ভালো পোস্ট।
শুভ কামনা সবসময়ই রয়েছে ❣️
পরিকল্পনা গুলো সব সময় হওয়া উচিত সংক্ষিপ্ত। ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য
সাইফুল ভাই আমি আপনার একজন নিয়মিত পাঠক। পেশায় শিক্ষক বলেই আপনি হয়তো বিষয়গুলো অনেক সুন্দর করে বোঝাতে পারেন আসলেই মানুষের লক্ষ নির্ধারণ করা উচিত দৈনিক হারে কেননা আমরা আগামীকাল বেঁচে থাকবো কিনা তা কেউই জানিনা এভাবে প্রতিদিন এর লক্ষ্য অর্জনের মাধ্যমেই মাস এবং বছরের টার্গেট পূরণ করা সম্ভব।
প্রতিদিনের কাজ প্রতিদিন শেষ করা এবং প্রতিদিনের কাজ শেষ করে প্রতিদিন নিজের ভুলগুলোর জন্য অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমা চেয়ে রাতে ঘুমাতে যাওয়া উচিত এবং একটি দিন আমাদের জন্য একটি সফলতা হিসেবে নিয়ে কাজ করা ও পরিকল্পনা করা উচিত। ধন্যবাদ আপনার চমৎকার মন্তব্যের জন্য।