নাটক রিভিউ: মিট মাই বয়ফ্রেন্ড। || Review of Exclusive drama called Meet my Boyfriend.
মিট মাই বয়ফ্রেন্ড |
---|
শুভরাত্রি আমার বাংলা ব্লগ পরিবার। সবার সুস্বাস্থ্য কামনা করে শুরু করছি আমার আজকের আয়োজন। আমি সবসময়ই চেষ্টা করি ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজন নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হতে, ঠিক তারই ধারাবাহিকতায় আজকে একটি নাটক রিভিউ নিয়ে পোস্ট করতে চলে এলাম। এই নাটকটি আমি গতকাল রাতে দেখেছিলাম এবং আমার কাছে এতটাই ভালো লেগেছে চিন্তা করলাম আপনাদের সাথে এই চমৎকার নাটকটি শেয়ার করি কারণ এর শিক্ষনীয় একটি দিক রয়েছে যা হয়তো অনেকে চোখ খুলে নিতে সক্ষম। তো চলুন আমাদের নাটকের রিভিউটি দেখে আসি।
নাটকের নাম: | মিট মাই বয়ফ্রেন্ড। |
---|---|
পরিচালনা: | হাসিব হোসেন রাখি। |
গল্প : | হাসিব হোসেন রাখি। |
অভিনয়ে:- | শামীম হোসেন সরকার, নিশাত প্রিয়ম, এনামুল হক হেলাল, হানিফ পালোয়ান এবং হৃদয় রাজ সহ আরো অনেকে।। |
ভাষা | বাংলা। |
শ্রেনী | সামাজিক ও শিক্ষা মূলক। |
দৈর্ঘ্য | ৪২ মিনিট। |
মুক্তিপায় | ০৩-০৩-২০২২ |
আমি নাটকটির সংক্ষিপ্ত গল্পটি লিখার চেষ্টা করছি।
মূলত শামীম হোসেন এই নাটকে একজন রিক্সাওয়ালার ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। তিনি একজন ভিন্নধর্মী এবং চালাক রিক্সাওয়ালা। নাটকের শুরুতেই দেখা যায় একজন যাত্রী তার রিক্সায় উঠে সিগারেট ধরায় এবং শামীম হোসেন খুব কৌশলে তার কাছ থেকে সিগারেট নিয়ে নিজেও সিগারেট খেতে খেতে রিক্সা চালায়। এরপর আরো একজন যাত্রী রিক্সায় উঠে তার সাথে ঝামেলা করলে তাকে উল্টো শিক্ষা দিয়ে দেয় সে।
এর পরের দৃশ্যে দেখা যায় নায়িকা নিশাত প্রিয়ম বয়ফ্রেন্ড নিয়ে ওর শামীম শামীম হোসেনের রিকশায় ওঠে এবং বিভিন্ন কারণে তার বয়ফ্রেন্ডের সাথে ঝগড়া করতে থাকে। এক পর্যায়ে সে অনেকটা রাগ করেই তার বয়ফ্রেন্ড কে বলে তুমি রিক্সাওয়ালার থেকেও খারাপ অর্থাৎ সে একজন রিক্সাওয়ালার সাথে তার বয়ফ্রেন্ডকে তুলনা করে। এই কথা শুনে তার বয়ফ্রেন্ড ভীষণ রাগ করে এবং একপর্যায়ে নিশাত প্রিয়ম তাকে রিকশা থেকে নেমে যেতে বলে। এরপর সে এটাও বলে তার সাথে প্রেম করার থেকে রিক্সাওয়ালার সাথে প্রেম করা অনেক ভালো। আর এই কথাগুলো রিক্সাওয়ালা শামীম হোসেন খুব গভীরভাবে শুনতে থাকে এবং মনে মনে খুশি হয়। সত্যি বলতে তার ভিতরে প্রেমের লাড্ডু ফুটতে থাকে।
এই দৃশ্যে প্রিয়ম তার বয়ফ্রেন্ডকে রিকশা থেকে নামিয়ে দেওয়ার পর একাই তার বাসায় পৌঁছায়। রিক্সাওয়ালাকে যখন সে টাকা দিতে যায় তখন রিক্সাওয়ালা শামীম তাকে সরাসরি প্রেমের প্রস্তাব দেয় এবং টাকা নিতে চায় না। শুরুতে প্রিয়ম হাসতে থাকে কারণ সে ভেবেছিল রিক্সাওয়ালা শামীম হয়তো ভুলভাল ইংরেজি বলছে। কিন্তু যখন শামীম সত্যিকার অর্থেই সে তাকে ভালোবাসে জানায় তখন প্রিয়ম ভীষন রেগে যায় এবং তাকে অনেকগুলো কড়া কথা শুনিয়ে দেয়।
তারপর প্রিয়ম যখন তার বান্ধবীকে নিয়ে একটি রেস্তোরায় খেতে যায় সেখানেও রিক্সাওয়ালা শামীম পৌঁছে যায় এবং তাদের খাবারের বিল দিয়ে দেয়। এতে প্রিয়ম আরো অনেক বেশি রেগে যায়। এরপর শামীম নায়িকা প্রিয়মের বাসার আশেপাশে সারাক্ষণই ঘুরঘুর করতে থাকে এবং প্রিয়মকে একনজর দেখার জন্য অস্থির হতে থাকে।
এক পর্যায়ে রিকশাওয়ালা শামীম আরও বেপরোয়া হয়ে যায় এবং প্রিয়ময়ের বাসায় তাকে এক পলক দেখার জন্য হানা দিতে থাকে। এদিকে প্রিয়ম শামীমকে সবদিক থেকে বোঝানোর জন্য চেষ্টা করে। তার সাথে রাগারাগি পর্যন্ত করে কিন্তু তারপরও সে বুঝতে না চাইলে তার কাছে হাতজোড় করে মিনতি পর্যন্ত করে। কিন্তু তবুও রিক্সাওয়ালা শামীমকে আটকানো যায় না সে বারবার প্রিয়মের বাসায় হানা দেয়।
এক পর্যায়ে রিকসাওয়ালা শামীমের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে প্রিয়ম বিষ খায়। এর পরের দৃশ্যে দেখা যায় রিক্সাওয়ালা শামীম প্রিয়মের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে এবং প্রিয়ম চোখ খুলে শামীমকে দেখতে পেয়ে আবারো কাকুতি-মিনতি করতে থাকে। এরপর প্রিয়মের বয়ফ্রেন্ড, বান্ধবী এবং বাবা সবাই একসাথে তার সামনে এসে হাজির হয়। মূলত প্রিয়ম সব মানুষকে ছোট করে দেখতো এবং সবাইকে রিক্সাওয়ালার সাথে তুলনা করতো ঠিক এই কারণে সবাই মিলে তাকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য রিক্সাওয়ালা শামীমকে অনুরোধ করে এই কাজের জন্য রাজি করে এবং শামীমের কিছু আর্থিক সমস্যা থাকায় সে তাদের কথায় রাজি হয়ে যায়।
এরপর প্রিয়মের বাবা তাকে বুঝিয়ে বলে পৃথিবীতে কোন মানুষ ছোট না এবং কোন পেশাও ছোট না। সে যেন কাউকে ছোট করে না দেখে এবং রিক্সাওয়ালার সাথে কখনো কাউকে তুলনা না করে। আসলে প্রিয়ম যে বিষ খেয়েছিল সেটা বিষ ছিল না সেখানে সামান্য পরিমাণে ঘুমের ওষুধ মেশানো ছিল। সবকিছু শুনে প্রিয়ম তার নিজের ভুল বুঝতে পারে এবং সবার কাছে ক্ষমা চায়।
এভাবেই নাটকটি সমাপ্ত হয়।
সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই। পৃথিবীতে কোন মানুষ কিংবা কোন কাজ ছোট নয়। কিন্তু তারপরও আমরা মানুষের মাঝে বিভিন্ন ভেদাভেদ সৃষ্টি করি এবং বিভিন্নভাবে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করি। এটা একদমই উচিত নয় এবং এগুলো এক ধরনের মনুষত্বহীনতার বহিঃপ্রকাশ ঘটায়। এই নাটকটিতে ঠিক সেই জিনিসটাই বোঝানো হয়েছে কখনো কোন মানুষকে ছোট করে দেখতে নেই হোক সে রিক্সাওয়ালা।
নাটকটি ভীষণ ভালো লেগেছে আমার কাছে। সত্যি বলতে বিনোদনে পরিপূর্ণ বিশেষ করে শামীম হোসেনের অভিনয় চোখে পরার মত। নাটক প্রেমীরা দেখে আসতে পারেন এই চমৎকার নাটকটি, আশাকরি ভালো লাগবে।
আমি ইন্জিনিয়ার ইমরান হাসান। মেশিন নিয়ে পেশা আর ব্লগিং হলো নেশা। কাজ করি টেকনিক্যাল সাপোর্ট ইন্জিনিয়ার হিসেবে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। অবসর সময়ে ব্লগিং করি নিজের মনের খোরাক আর একটু পরিবারকে ভালো রাখার জন্য। আমি আবেগী, বড্ড জেদি, নিজেই নিজের রাজ্যের রাজা। কেউ কোথাও থেমে গেলে সেখান থেকে শুরু করতে ভালোবাসি। আমার শখ ছবি তোলা, বাগান করা আর নতুন জায়গায় ঘুরতে যাওয়া। মানুষকে আমি ভালোবাসি তাই মানুষ আমায় ভালোবাসে।
https://steemitwallet.com/~witnesses
VOTE @bangla.witness as witness
OR
খুবই সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ প্রকাশ করেছেন আপনি। এই নাটকটি আমি কখনো দেখিনি। তবে আপনার প্রকাশিত এ রিভিউ থেকে যেভাবে নাটকটিকে বুঝতে পারলাম এই নাটকটি খুবই সুন্দর হবে বলে আমি আশা করি৷ আপনার দেওয়া এই লিংক থেকে আমি এই নাটকটি দেখে নেওয়ার চেষ্টা করব। অসংখ্য ধন্যবাদ এরকম সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ প্রকাশ করার জন্য৷
অনেক ধন্যবাদ ভাই চমৎকার মন্তব্যের জন্য।
নাটকটি বেশ দারুন, আশাকরি দেখলে ভালো লাগবে।
জ্বি। আমি এই নাটকটি দেখে নেওয়ার চেষ্টা।
আমার কমেন্টের প্রশংসা করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ৷
ভাইয়া আপনি খুব সুন্দর নাটকের রিভিউ দিয়েছেন। এই নাটক দেখা হয়নি কিন্তু আপনার রিভিউ পড়ে বুঝতে পারলাম খুব শিক্ষনীয় একটি নাটক। আমরা মানুষেরাই মানুষের মাঝে ভেদাভেদ সৃষ্টি করা। কিছু মোখশ ধারি বড় লোক আছে যারা গরীব মানুষকে মানুষ মনে করে না। যাই হোক খুব সুন্দর রিভিউ দিয়েছেন। এখনো দেখা হয়নি সময় পেলে অবশ্যই দেখবো। ধন্যবাদ।
https://twitter.com/emranhasan1989/status/1696224397173080314?t=p9bx4T2gfM3nPSm10UMDsQ&s=19
শামীম হাসান সরকার এর নাটকগুলো বর্তমানে খুবই ভালো হচ্ছে এবং এই নাটকগুলো অনেক রোমান্টিক এবং কমেডি হচ্ছে। যার কারণে নাটকগুলো দেখতে খুবই ভালো লাগে। আপনি খুবই সুন্দর একটি নাটক এর রিভিউ করলেন, নাটকটি আমার অনেক বেশি ভালো লেগেছে আর এই নাটকটি আমি দেখেছিলাম।
এধরনের নাটক গুলো আমি সবার আগে দেখার চেষ্টা করি। যদিও অনেক আগে নাটকটি দেখেছিলাম তবে আজকে আপনার রিভিউ দেখে ভীষণ ভালো লাগলো। সামীম এবং নিশাত প্রিয়ম এর অভিনয় জাস্ট অসাধারন লাগে। সামাজিক এবং শিক্ষা মূলক একটি গুলো থেকে অনেক কিছু শেখার রয়েছে। আপনার জন্য শুভ কামনা রইল ভালো।
ভাই আপনি আজকে যে নাটকটি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন এই নাটকটির কিছু অংশ আমি দেখেছি। সেই অংশটি হলো যখন নায়িকা তার বয়ফ্রেন্ডের সাথে ঝগড়া করে এবং রিক্সাওয়ালার সাথে তুলনা করে। নাটকের অংশ দেখে বুঝতে পেরেছিলাম নাটক বেশ সুন্দর। আপনার এই নাটক রিভিউ এর মধ্যে দিয়ে পুরোপুরি বুঝতে পারলাম। সুন্দর একটি নাটক আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন ধন্যবাদ আপনাকে।
ধন্যবাদ ভাই মন্তব্যের জন্য।
আমি নাটকটি ভীষণ উপভোগ করেছিলাম, তাইতো রিভিউ আকারে প্রকাশ করলাম।
ভাই আপনি আজকে আমাদের মাঝে দারুন একটি নাটক রিভিউ এর মাধ্যমে শেয়ার করেছেন । আপনার শেয়ার করা নাটকটি আমি অনেক আগেই দেখেছি আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছিল। আসলে মিট মাই বয়ফ্রেন্ড নাটকটি কিন্তু বেশ রোমান্টিক একটি নাটক। আসলে মেয়ের বাবা যখন বলেছিল কোন পেশার মানুষই পৃথিবীতে ছোট নয় আমার মনপ্রাণ স্পর্শ করেছিল এই কথাটি। ধন্যবাদ এত সুন্দর ভাবে নাটকটি রিভিউ এর মাধ্যমে শেয়ার করার জন্য।
অনেক ধন্যবাদ ভাই চমৎকার মন্তব্যের জন্য।
নাটকটির শিক্ষনীয় অংশটি দারুন ছিল।
মিট মাই বয়ফ্রেন্ড নাটকটার রিভিউ পোস্ট দারুণ লেগেছে। আসলে আমি নাটক দেখতে কেমন পছন্দ করি, আমার কাছে নাটকের রিভিউগুলো পড়তেও অনেক ভালো লাগে। আসলে এটা কিন্তু একেবারে সত্য কথা, কখনো কোন মানুষকে অথবা কোন কাজকে ছোট করে দেখা উচিত না। মানুষে মানুষে কখনো ভেদাভেদে সৃষ্টি করা একেবারে উচিত না। এই নাটকটা কিন্তু অনেক বেশি শিক্ষনীয় ছিল, যার মাধ্যমে আমরা শিক্ষা অর্জন করতে পারি।
এটা বেশ শিক্ষনীয় একটি নাটক, অনেকেই রয়েছেন যারা মানুষকে কথায় কথায় ছোট করে। সত্যি বলতে তাদের জন্য এই নাটকটি দেখা দরকার।
দারুন ছিল আপনার নাটক রিভিউ। তবে এই বয়সে মিট মাই বয়ফ্রেন্ড নাটকটা দেখে নিলেন। আপনার দেখতেছি মনের মধ্যে অনেক বেশি জুস আছে এখনো। এ ধরনের নাটক গুলো দেখতে খুবই ভালো লাগে। অনেক ধন্যবাদ খুব ভালো লেগেছে পুরো নাটক রিভিউ দেখে। আশা করি আরো সুন্দর সুন্দর নাটক রিভিউ দেখতে পাব।
হা হা 😄
এখন থেকে প্রতি সপ্তাহে একটি করে নাটক রিভিউ পাবেন।