প্রথম মেট্রোরেল ভ্রমন 🚇 || Metro Rail Journey...

in আমার বাংলা ব্লগ5 months ago
প্রথম মেট্রোরেল ভ্রমন 🚇

ছবিটি কেনভা দিয়ে তৈরি

গত শনিবার আমি অফিসের জরুরী একটি কাজে ঢাকা গিয়েছিলাম। আর সেদিনই হঠাৎ করে আমাকে মেট্রো রেলে উঠতে হয়েছিল। যাইহোক আমি ভ্রমনটি বেশ উপভোগ করেছিলাম। সেই চমৎকার ভ্রমন আজকে আপনাদের সাথে ভাগ করে নেয়ার জন্য উপস্থিত হলাম।

অফিস থেকে গত সপ্তাহে আমাকে জানানো হলো স্টোরের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য ঢাকা আসতে হবে। এদিকে আমার জোনে বেশ কাজের চাপ থাকলেও, অফিসের অর্ডার ছিল তাই শনিবার ঢাকা আমাদের হেড অফিসের উদ্দেশ্যে খুব ভোরবেলা রওনা করলাম। আমি যখন হেড অফিসে পৌছালাম তখন সকাল সাড়ে নয়টা বাজে। আমি প্রথমেই স্টোরে গিয়ে আমার গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো শুরু করলাম। মোটামুটি সাড়ে বারোটায় আমার সব কাজ শেষ হয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে অফিসের সিনিয়রদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে মিরপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম।

মিরপুরের দিকে যাওয়ার কারণটা হল আমার খালা ভীষণ অসুস্থ, যেহেতু ঢাকায় এসেছি তাই তাকে একবার দেখতে যাওয়াটা আমার দায়িত্বের মধ্যে পরে। মিরপুরে যাওয়ার চিন্তাটা যখন মাথায় এলো তখন আমার এক কলিগ আমাকে পরামর্শ দিলেন মতিঝিল মেট্রোরেল স্টেশন থেকে মিরপুরের দিকে আমি যেন মেট্রো রেল ভ্রমণ করে যাই। এতে সময় বাঁচবে এবং বেশ আনন্দদায়ক ভ্রমণ উপভোগ করতে পারবো। সত্যি বলতে সেদিন বাইরের পরিবেশ এতটাই গরম ছিল আমিও চিন্তা করলাম যদি মেট্রো রেলে যাওয়া যায় তাহলে বেশ আরামেই যাওয়া যাবে।

আমি পল্টন থেকে মতিঝিল মেট্রোরেল স্টেশনের দিকে রিকশা নিয়ে রওনা করলাম। ততক্ষণে গরমে আমার সিদ্ধ প্রায় অবস্থা। এতটাই অস্থির লাগছিল সেটা বলে বোঝাতে পারবো না। যাই হোক মতিঝিল স্টেশনটা দেখতে বাইরে থেকে আমার কাছে বেশ ভালই লাগছিল।

আমি খুব দ্রুত সিঁড়ি বেয়ে উপরে স্টেশনের দিকে উঠতে চেষ্টা করলাম। আপনারা হয়তো ছবিতে দেখতে পাচ্ছেন একজন মানুষের পিঠ ঘামে ভিজে রয়েছে, সত্যি বলতে আমার অবস্থাও ঠিক তার মতই ছিল।

আমি প্রথমেই টিকিট নেয়ার জন্য লাইনে দাড়ালাম দেখলাম মোটামুটি বেশ কিছু মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট সংগ্রহ করার চেষ্টা করছে। এরপর যখন মেট্রো রেলের টিকিটটা হাতে পেলাম তখন বেশ স্বস্তি অনুভব করলাম।

এরপর আমি বেশ কিছুটা সময় নিয়ে পুরো স্টেশনটি ঘুরে দেখলাম এবং ফটোগ্রাফি করার চেষ্টা করলাম। সত্যিই বেশ কিছু আর্কিটেকচারাল সৌন্দর্য দেখলাম, যা সত্যিই মনমুগ্ধকর।

এরপর এলো সেই কাঙ্ক্ষিত মুহূর্তটি যখন মেট্রোরেলের ইঞ্জিনটি ধীরে ধীরে আমাদের দিকে এগিয়ে আসছিল। আমি চেষ্টা করলাম বেশ কিছু চমৎকার ক্লোজ শট নেয়ার জন্য।

ট্রেন সামনে এসে মাত্র দাঁড়িয়েছে কিছুক্ষণের মধ্যে স্বয়ংক্রিয় দরজাটি আমাদের সামনে ভেতরে প্রবেশ করার জন্য খুলে গেল। আমি তাড়াতাড়ি ভেতরে প্রবেশ করে একটি সুবিধা জনক আসন বেছে নিলাম। তার ঠিক পরপরই খেয়াল করলাম হুড়মুড়িয়ে অসংখ্য মানুষ ট্রেনের ভেতরে প্রবেশ করছে। যখন ভেতরে প্রবেশ করলাম তখন আমার পুরো শার্ট গরমে ভিজে একদম একাকার হয়ে গেছে। ছবিতে নিশ্চয়ই দেখতে পাচ্ছেন আমার শরীর প্রচন্ড ঘেমে রয়েছে। যাইহোক কিছুক্ষণের মধ্যেই ট্রেনের এসি চলতে শুরু করল এবং বেশ শীতল হাওয়া শরীরটা জুড়িয়ে দিল।

এরপর আমাদের ট্রেন চলতে শুরু করল সত্যি বলতে আমার কাছে বেশ ভালো লাগছিল। কারণ একেতো ভেতরের ঠান্ডা পরিবেশ এবং বাইরে জানালা দিয়ে পুরো ঢাকা শহরে চমৎকার দৃশ্য দেখতে পাচ্ছিলাম। সত্যি বলতে এটা আমার কাছে একটা নতুন এবং আনন্দদায়ক ভ্রমণ অভিজ্ঞতা। আমি কখন যে মিরপুর পল্লবী স্টেশনে পৌঁছে গেলাম ঠিক বুঝতেই পারলাম না। মনে হতে লাগলো আমার জার্নিটা যদি আরো কিছুটা সময় দীর্ঘ হতো তাহলেও হয়তো মনে বিরক্তি আসতো না। যাই হোক দ্রুত ট্রেন থেকে নেমে আমার গন্তব্যস্থল মিরপুর রুপনগরের দিকে রওনা করলাম। তবে বেশ দারুন একটা আনন্দদায়ক ভ্রমণের স্মৃতি মনের ভিতর গেঁথে নিলাম।



Black and White Modern Company Presentation (1).gif

banner-abbVD.png

ছোট্ট পরিসরে পরিচিতি

আমি ইন্জিনিয়ার ইমরান হাসান। মেশিন নিয়ে পেশা আর ব্লগিং হলো নেশা। কাজ করি টেকনিক্যাল সাপোর্ট ইন্জিনিয়ার হিসেবে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। অবসর সময়ে ব্লগিং করি নিজের মনের খোরাক আর একটু পরিবারকে ভালো রাখার জন্য। আমি আবেগী, বড্ড জেদি, নিজেই নিজের রাজ্যের রাজা। কেউ কোথাও থেমে গেলে সেখান থেকে শুরু করতে ভালোবাসি। আমার শখ ছবি তোলা, বাগান করা আর নতুন জায়গায় ঘুরতে যাওয়া। মানুষকে আমি ভালোবাসি তাই মানুষ আমায় ভালোবাসে।

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 5 months ago 

মেট্রোরেল ভ্রমন করতে যাবো যাবো করে আর যাওয়া হচ্ছে না। তবে আমার চমৎকার অনূভুতি পড়ে মন চাইছে এখনি চলে যাই মেট্রোরেল ভ্রমন করতে। কয়েকদিন আগে বেশ গরম ছিলো। অফিসের কাজে ঢাকায় এসেছেন এর পরে কাজ শেষ করে খালার বাসায় গিয়েছেন জেনে ভালো লাগলো। আপনার খালার জন্য দোয়া রইল খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠবেন ইনশাআল্লাহ। সত্যি আপনার মেট্রোরেল ভ্রমন জার্নি দারুন ছিলো ভালো লাগলো। আমাদের সাথে ভাগাভাগি করে নেওয়ার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 5 months ago 

অনেকদিন আগে মেট্রোরেলে ভ্রমণের সুযোগ আমার হয়েছিল অনেক বেশি ইনজয় করেছিলাম সবাই মিলে। আর হা যেহেতু আপনার খালা অসুস্থ অবশ্যই দেখার দায়িত্বটা তো আছে। মেট্রোরেলে যাতায়াত করলে অনেকটা সময় বেঁচে যায় এবং ভেতরের পরিবেশ ঠান্ডা হওয়াতে ভ্রমণটা আরামদায়ক হয়।

 5 months ago 

প্রথমেই আপনার খালার জন্য সুস্থতা কামনা করছি।
আপনার প্রথম মেট্রোরেল ভ্রমনের অভিজ্ঞতা পড়ে ভীষণ ভালো লেগেছে। আমারও একদিন যাওয়ার ইচ্ছে ছিল কিন্তু কাজের চাপের কারণে সময় বের করতে পারিনি। যেহেতু অতিরিক্ত গরম ছিল তাই আপনার মেট্রোরেলের ভ্রমন আমি মনে করি উষ্ণতার মাঝে কেটেছে। আপনি মেট্রোরেলের ভ্রমনের পাশাপাশি আর্কিটেকচারাল সৌন্দর্য দেখেছেন, যা সত্যিই মনমুগ্ধকর।

 5 months ago 

দারুন একটি অনুভূতি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন ভাইয়া। অনেক অনেক ভালো লাগলো আপনার সুন্দর এই অনুভূতি পড়ে। যেখানে প্রথম মেট্রোরেল ভ্রমণের সুযোগ করে নিয়েছেন এবং সে ভ্রমণ বিষয়টা উপস্থাপন করেছেন আমাদের মাঝে। বেশ ভালো লাগলো তবে আমি যে কবে উঠতে পারব সেই চিন্তায় রয়েছি। দেখা যাক আমিও একদিন ভ্রমন করে আপনাদের মাঝে শেয়ার করব।

 5 months ago 

প্রথম মেট্রোরেল ভ্রমন জার্নিটি আপনার ভালো ই ছিল।আমার এখনো উঠা হয়নি।আপনি অফিসের কাজে ঢাকায় এসেছিলেন।এরপর কাজ শেষ করে খালাকে দেখতে গেলেন মেট্রো রেলে করে।আপনার অনুভূতি গুলো পড়ে ভালো লাগলো। ইনশা আল্লাহ একদিন আমিও যাব ভাবছি।

 5 months ago 

ভাইয়া আপনার প্রথম মেট্রোরেল ভ্রমন পোস্ট পড়ে বেশ ভালো লাগলো। আপনি বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে অনেক ঘেমে গিয়েছিলেন। যখন মেট্রোরেলের ভিতরে উঠলেন তারপর এসি তে পুরো শরীর ঠান্ডা হয়ে গেল। আর কখন যে আপনি মিরপুর স্টেশনে পৌঁছে গেলেন বুঝতে পারলেন না। সত্যি ভাইয়া এরকম ভালো লাগার জার্নি গুলো যদি একটু বেশিক্ষণ হয় তাহলে খুবই ভালো লাগে। যাইহোক আপনার সম্পূর্ণ পোস্ট পড়ে খুবই ভালো লাগলো ভাইয়া। এরকম সুন্দর একটি অনুভূতি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

 5 months ago 

আপনি মেট্রোরেল ভ্রমণ করার দারুন একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন ভাইয়া।অফিসের কাজে ঢাকায় এসে রেল ভ্রমণ করলেন এরপর খালার বাসায় গেলেন।আমার এখনো মেট্রোরেল ভ্রমণ হয়নি।ভালো লাগলো পোস্টটি।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.15
TRX 0.16
JST 0.028
BTC 67340.80
ETH 2419.68
USDT 1.00
SBD 2.35