"আমার বাংলা ব্লগ" প্রতিযোগিতা - ৪৩ || প্রথম অনলাইন ইনকামের অভিজ্ঞতা - ৫০ টাকা মোবাইল রিচার্জ।
শুভ রাত্রি আমার বাংলা ব্লগ পরিবার। সবার সুস্বাস্থ্য কামনা করে শুরু করছি আমার আজকের আয়োজন। আজকের পোস্টটি একটু ব্যাতিক্রম হতে চলেছে কারন আজ আমি আমার প্রথম অনলাইন ইনকামের অভিজ্ঞতা বর্ননা করার মাধ্যমে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যাইহোক নিজের মতো করে গুছিয়ে লিখার চেষ্টা করবো আশাকরি আপনাদের ভালো লাগবে।
যখন এসএসসি পরীক্ষা দিলাম তারপর বেশ লম্বা একটা ছুটি ছিল, আর এই সময়টাতে আমি কম্পিউটারের উপর তিনমাসের বেসিক কোর্স করেছিলাম। কারন হলো কম্পিউটার শেখার আমার বেশ আগ্রহ ছিল, বলতে পারেন তথ্য প্রযুক্তি জিনিসটা আমার বেশ ভালো লাগে। কিন্তু নিজের কম্পিউটার কিংবা স্মার্টফোন না থাকায় কিছুই করতে পারতাম না। যখন ইন্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি হলাম তখন চতুর্থ বর্ষে ওঠার পর মোটামুটি মানের একটি ফোন হাতে পাই যেটা দিয়ে ইন্টারনেট ব্যবহার করা যেতো এবং ছোটখাটো কিছু গেমস সেখানে ছিল। বিশ্বাস করতে পারবেন না ইন্টারনেটে আমার প্রথম সার্চ ছিল কিভাবে অনলাইনে ইনকাম করা যায়।
এভাবেই চলছিলো দিনগুলো বিভিন্ন পিটিসি সাইটে কাজ করতাম যেখানে এড দেখে ইনকামের লোভনীয় বিজ্ঞাপন থাকতো কিন্তু একটা টাকাও তখন ইনকাম করতে পারিনি। তবে অনলাইন ইনকামের তীব্র বাসনা ভেতরটা কুড়ে কুড়ে খেতো। প্রথম স্মার্টফোন হাতে পাই ২০১৫ সালে এবং বিভিন্ন এনড্রয়েড এপস ব্যাবহার শুরু করলাম। সেই সময়টাতে ইন্টারনেটের বিভিন্ন প্যাকেজের দাম ছিল প্রচুর, তাই প্রথম বিপত্তি ছিল ইন্টারনেট কেনার। আমি শুরুতেই এই সমস্যার সমাধান বের করলাম আর তা হলো ভিপিএন ব্যাবহার করে ফ্রি ইন্টারনেট ব্যবহার করতাম। তাছাড়াও আরো কিছু বিষয় নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করতাম যেরকম হলো হ্যাকিং ট্রিকস।
হা হা 😄 ভয় পাবেন না, তেমন বড় ধরনের ক্ষতিকারক কিছু করতাম না। যাইহোক এই ফ্রি ইন্টারনেট ব্যাবহার করে অনেক খোঁজাখুঁজির পর একটি এপস্ খুঁজে পাই যার মাধ্যমে বিটকয়েন বা সাতোশি উপার্জন করা যেতো।
যে এপসটিতে কাজ করতাম এর প্রধান কাজ ছিল এড দেখার বিনিময়ে কিছু সাতোশি লাভ করা। আমি প্রথমে তেমন বিশ্বাস করতে পারিনি এটা আমাকে পেমেন্ট করবে। যখন আমার কয়েনবেজ একাউন্টে কিছু সাতোশি পেলাম আমি রিতিমত আনন্দে আত্মহারা। এবার চিন্তা শুরু হলো কয়েনবেজ থেকে কিভাবে কিছু টাকা তোলা যায়। অনেক চিন্তা ভাবনা করে বের করলাম মোবাইল রিচার্জের মাধ্যমে টাকা তোলা। একটি সাইটের মাধ্যমে কয়েনবেজ একাউন্টের সাথে সিনক্রোনাইজ করে প্রথম পঞ্চাশ টাকা মোবাইলে রিচার্জ নিলাম। কিন্তু সেখানে চার্জ ছিল অনেক বেশি, তাতে কি আমি যখন টাকাটা মোবাইলে পেলাম আমি যে কি হাতে পেলাম তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না। আমার এখনো মনে আছে সেই টাকা দিয়ে প্রথম মাকে ফোন করে বলেছিলাম মা আমি আজ প্রথম অনলাইন থেকে পঞ্চাশ টাকা উপার্জন করেছি। মা উল্টো বকা দিয়েছিলেন এই করে করে তোর চোখগুলো যাবে। আমি বলেছিলাম ধুরু মা কই তোমায় খুশির খবর জানালাম উল্টো আমায় বকা দিচ্ছো।
যাই হোক আমার ইদানিং অনেক কিছু মনে থাকে না, আমি সেই এপসের নামটা অনেক চেষ্টা করেও মনে আনতে পারিনি। যাইহোক পরবর্তী সময়ে আমি ডব্লিও পি এস সফ্টওয়্যার ব্যাবহার করে বিভিন্ন রাওটার হ্যাক করে অনেক এপস থেকে মোবাইল রিচার্জসহ বিকাশে টাকা তুলেছি । বলতে পারেন অন্যের রাউটার হ্যাক করার মধ্যে আমি একটা আনন্দ খুঁজে পেতাম 😄 নিজেকে সত্যিই তখন বুদ্ধিমান মনে হতো। যাইহোক এগুলোর টাকার পরিমাণ ছিলো একদমই কম। আমি স্টিমিটে ২০২০ সালে জয়েন করে উপার্জন করা শুরু করি কিন্তু ২০২১ সালে প্রথম বেশ বড় এমাউন্টের টাকা দিয়ে আমার পরিবারকে শপিং করে দেই। স্টীমিট আমার কাছে সবথেকে দামী অনলাইন কাজ তবে সেই প্রথম পঞ্চাশ টাকা পাওয়ার অনুভূতি আজো ভুলতে পারিনি।
আমি ইন্জিনিয়ার ইমরান হাসান। মেশিন নিয়ে পেশা আর ব্লগিং হলো নেশা। কাজ করি টেকনিক্যাল সাপোর্ট ইন্জিনিয়ার হিসেবে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। অবসর সময়ে ব্লগিং করি নিজের মনের খোরাক আর একটু পরিবারকে ভালো রাখার জন্য। আমি আবেগী, বড্ড জেদি, নিজেই নিজের রাজ্যের রাজা। কেউ কোথাও থেমে গেলে সেখান থেকে শুরু করতে ভালোবাসি। আমার শখ ছবি তোলা, বাগান করা আর নতুন জায়গায় ঘুরতে যাওয়া। মানুষকে আমি ভালোবাসি তাই মানুষ আমায় ভালোবাসে।
https://steemitwallet.com/~witnesses
VOTE @bangla.witness as witness
OR
ভাই আপনার অনলাইন থেকে ৫০ টাকা ইনকাম করার বিষয় টা সম্পূর্ণরূপে পড়লাম।যখন আপনি ইনকামের টাকা দিয়ে আপনার মায়ের কাছে ফোন করেছিলেন আপনার মা যখন আপনাকে এক ধরনের বকা দিয়েছিল বলা যায় এরপর আপনি যে রিয়েকশন দেখিয়েছিলেন এটা পড়ে আমার খুব হাসি পেয়েছিল। মানুষ যখন কোন কিছু করে সফলতা পায় তখন সে নিজের খুশিতে আত্মহারা হয়ে যায়। আপনার বিষয়টা ঠিক তেমনি ছিল ধন্যবাদ ভাই আপনাকে।
ধন্যবাদ ভাই। মা এখনো আমাকে বকাবকি করে মোবাইলে সারাক্ষণ টেপাটেপি করার জন্য। সত্যি বলতে মায়ের এই শাসন গুলো আমার এখনো ভালো লাগে।
Heres a free vote on behalf of @se-witness.
এস এস সি পরিক্ষার পর লম্বা ছুটি পেয়ে কম্পিউটার শিখেছেন খুব ভালো করেছেন। অনলাইন ইনকামের করে ৫০ টাকা মোবাইল রিচার্জ করে মা কে খুশির খবর জানিয়েছেন মা আবার উল্টো বকা দিয়েছে বিষয়টি বেশ মজার ছিলো। আপনার লেখা অনুভূতি গুলো পরে ভীষণ ভালো লাগলো। আপনার জন্য শুভ কামনা রইল ভালো থাকবেন।
ধন্যবাদ লিমন।
আসলে অনেক আগে থেকেই অনলাইন ইনকামের উপর বেশ আকর্ষণ ছিল।
এস এস সি দিয়ে কম্পিউটার কোর্স করলেন।আর অনলাইনের মাধ্যমে ৫০ টাকা ইনকাম করলেন জেনে ভীষণ ভালো লাগলো।মা কে বলে বকা খেয়েছেন, তাতে কি ইনকাম তো করতে পারলেন।আপনার অনুভূতি গুলো পড়ে খুব ভালো লাগলো ভাইয়া। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
ধন্যবাদ আপু।
আমার অনুভূতিগুলো পড়ে আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম।
আসলে সময়টাকে ব্যবহার করা অনেক ভালো। এসএসসি দেওয়ার পর সবার হাতে অনেক সময় থাকে। আর আপনি ওই সময়টাতে কম্পিউটার কোর্স করেছিলেন এটা জেনে ভালো লাগলো। অনলাইনের মাধ্যমে আপনি তাহলে সর্বপ্রথম ৫০ টাকা উপার্জন করেছিলেন এটা সত্যি আনন্দের ব্যাপার। নিজে যত কম টাকাই হোক না কেন উপার্জন করলে তার মধ্যে অনেক আনন্দ রয়েছে।
হ্যা সত্যিই সেই অল্প টাকা আমার কাছে অনেক মূল্যবান ছিল। সবথেকে বড় বিষয় আমি অনলাইনের মাধ্যমে উপার্জন করতে পেরেছিলাম।
জীবনে অনলাইন থেকে যত টাকাই ইনকাম করুন না কেন ভাই ঐ ৫০ টাকার ব্যাপারই ছিল আলাদা। আর ঐ অ্যাপস টার নামটা মনে করতে পারলেনই না হা হা। আপনার জার্নিটা আমার বেশ ভালো লেগেছে। তবে আপনার ভিপিএন ব্যবহার করে ফ্রি ইন্টারনেট ব্যবহার করার বিষয়টি ভালো লেগেছে।।
হ্যা ইদানিং অনেক কিছু মনে রাখতে পারিনা, তবুও তথ্য প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে চাই। তখনকার সময়ে ইন্টারনেটের এমবি খরচ বেশি হওয়ায় আমি বিভিন্ন ট্রিকস করে নেট চালাতাম।
https://twitter.com/emranhasan1989/status/1698041540311151055?t=O0bcWqQ8uWF26IzcYJrWiA&s=19
এসএসসি পরীক্ষার পর লম্বা ছুটি পেয়ে আপনি কম্পিউটার কোর্স করেছেন জেনে ভালো লাগলো। আসলে এই সময়টাতে সবাই কিছু না কিছু শিখ। যাই হোক আপনার সর্বপ্রথম অনলাইন ইনকাম ৫০ টাকা মোবাইল রিচার্জ পেয়েছেন জেনে আরো ভালো লাগছে। আসলে টাকার পরিমাণ কম হলেও নিজের প্রথম উপার্জন বলে কথা। আপনার মায়ের কাছে বলার পর আপনি যে বকা খেয়েছেন এটা কোন ব্যাপার না আসলে মা রা সব সময় বকাবকি করে তাতে তো আর আপনি থেমে থাকেননি সেই ৫০ টাকা থেকে শুরু করে এখন তো ভালই টাকা উপার্জন করছেন। যাইহোক ভাইয়া ভবিষ্যতে আরো ভালো টাকা উপার্জন করেন এই কামনা করি আপনার লেখাগুলো পড়ে খুব ভালো লাগলো।
ধন্যবাদ আপু পোস্টটি পড়ে চমৎকার মন্তব্য করার জন্য।
দোয়া করবেন যেন উপর ওয়ালা এই চমৎকার উপার্জনের উপর বরকত দান করেন।
তাহলে আপনাকে কি হ্যাকার বলা যাবে 😆 যেহেতু আপনি অন্যের রাউটার হ্যাক করতেন 😁
হা হা 😄
তা একটু আধটু বলতেই পারেন। আমি আসলে তথ্য প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে চেয়েছিলাম এবং বিভিন্ন বিষয়ে জানার চেষ্টা করতাম।