নাটক রিভিউ: একজন ভালো মানুষ। || An exceptional Drama review post
শুভ রাত্রি আমার বাংলা ব্লগ পরিবার। সবার সুস্বাস্থ্য কামনা করে শুরু করছি আমার আজকের আয়োজন। ইদানিং একটু সময় পেলেই নাটক দেখতে ভালো লাগে। বাংলাদেশ বর্তমানে নাটকের দিক থেকে বেশ এগিয়ে গেছে, এক ঝাঁক দক্ষ অভিনয় শিল্পী প্রতিনিয়ত চমৎকার সব সামাজিক নাটক উপহার দিয়ে যাচ্ছেন। সত্যিই তাদের এই প্রচেষ্টাগুলো প্রশংসার দাবিদার। যাইহোক গতকাল হঠাৎ করেই ইউটিউব ঘাটতে গিয়ে একজন ভালো মানুষ নাটকটি দেখতে পাই। কেন যেন মনে হচ্ছিল এর ভেতর এমন কিছু পাবো যা ভালো লাগবে। সত্যি বলতে নাটকটি দেখার পর ভীষণ ভালো লেগেছে, আমি আমার নিজের জীবনের অনেক অধ্যায়ের সাথে এর চরম মিল পেয়েছি। যাইহোক আমি নাটকটি রিভিউ না করে থাকতে পারলাম না, কারন এখানে শেখার অনেক কিছু রয়েছে। তো চলুন নাটকটির মূল গল্পটি পড়ে আসি।
নাটকের নাম: | একজন ভালো মানুষ |
---|---|
পরিচালনা: | রুবেল হোসেন |
গল্প : | মেজবাহ উদ্দিন সুমন |
অভিনয়ে: | ফারহান আহমেদ জোভান, সাফা কবির |
ভাষা : | বাংলা |
শ্রেনী : | সামাজিক ও শিক্ষা মূলক |
দৈর্ঘ্য : | ৫৩ মিনিট |
মুক্তিপায় : | ১৮-০৫-২০২৩ |
নাটকের প্রথম দৃশ্যে দেখা যায় নায়ক জোভান ভীষণ এলোমেলো অবস্থায় পার্কের রাস্তায় একাকি হাঁটছে। এরপর পার্কের সেই জায়গাটায় বসে যেখানে তার প্রিয়তমাকে নিয়ে বসতো। হঠাৎ সে পূর্বের সময়গুলো কল্পনা করতে থাকে।
এখানে দেখা যায় নায়িকা তার জন্য বিভিন্ন ফ্লেভারের আইসক্রিম কিনে আনে, কিন্তু জোভান আইসক্রিম খেতে মানা করায় নায়িকা সব ছুরে ফেলে দেয়। এরপর নায়ক জোভান জানায় তার বাদাম খেতে ইচ্ছে করছে, তখন নায়িকা পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে বাদাম কিনে নেয় রাগ করে। এরপর দুজনে বাদাম খেতে থাকে।
হঠাৎ করেই একটা গরিব ছেলের ডাকে জোভান বাস্তবে ফিরে আসে। এরপর তাকে কিছু টাকা দিতে গিয়ে একটা হাত ঘড়ি বেরিয়ে আসে। এরপর আবারো সে কল্পনায় হারিয়ে যায়।
এবার দেখা যায় নায়ক নায়িকা একসাথে বসে একটি রেস্টুরেন্টে খাবার খাচ্ছে। হঠাৎ নায়িকা তার ব্যাগ থেকে একটা হাত ঘড়ি বের করে জোভানকে উপহার দেয় এবং জানায় এটা অনেক স্পেশাল একটা ঘড়ি। এরপর জোভান ঘড়িটার বিষয়ে অনলাইনে সার্চ দিয়ে দাম জানতে পারে পাঁচ লক্ষ টাকা। সে রিতিমত অবাক হয় এবং এটা নিতে অস্বীকৃতি জানায়। নায়িকা ভীষণ জেদি তাই সে এটাকে ছুড়ে ফেলে দেয়। নায়ক তার রাগ কমানোর জন্য তাড়াতাড়ি ঘড়িটি হাতে পরে নেয়।
এদিকে নায়িকা তার পছন্দের কথা তার বাবাকে জানায় এবং নায়িকার মামা জোভানের জন্য একটি চাকরির ব্যাবস্থা করে। নায়িকা খুশিতে আত্মহারা হয়ে যায়।
এই দৃশ্যে দেখা যায় নায়ক হেলমেট পরে পেঁয়াজ কাটছে, হঠাৎ করেই নায়িকার আবির্ভাব ঘটে। নায়িকা অনেক আনন্দের সাথে তার চাকরির বিষয়টি জানায় এবং একটি ভিজিটিং কার্ড দেয়। সে আরো বলে এই কার্ড দেখালেই তার চাকরি হয়ে যাবে।
এরপর জোভান খবর পায় তার বন্ধু চাকরি জোগাড় করতে না পারায় এবং সংসার খরচ সামলাতে পারছেনা তাই আত্মহত্যা করতে গিয়েছিল। জোভান ছুটে যায় তার কাছে এবং কার্ডটি তাকে দিয়ে বলে এটা দেখালেই তার চাকরি হবে। সে মূলত তার চাকরিটা তার বন্ধুকে দিয়ে দেয়। নায়িকা এতে ভীষণ ক্ষেপে যায় তার উপর।
এরপর নায়িকার বাবার সাথে নায়ক দেখা করতে যায়। তবে নায়িকার বাবা এমন কিছু প্রশ্ন করে যার উত্তর জোভান খুব সহজ করে দেয়। কিন্তু তার উত্তর পছন্দ হয়নি নায়িকার বাবার।
এই দৃশ্যে নায়কের চাচাতো বোন আসে তার প্রেমিক নিয়ে বিয়ে করার জন্য। এরপর সে তাদের টাকার অভাবের কথা জোভানকে জানায় আর জোভান তার হাতের ঘড়িটা তাকে দিয়ে দেয়। চাচাতো বোন আবেগ আপ্লুত হয়ে জোভানকে জড়িয়ে কাঁদতে থাকে। এই দৃশ্য নায়িকা দেখে ভুল বোঝে এবং ভীষণ কষ্ট পায়।
এরপর নায়িকা রাগ করে তার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় এবং এক পর্যায়ে নায়ককে অপমান করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। মূলত সে ভুল বুঝেছিল যে তার ঘড়িটা জোভান তার অন্য প্রমিকাকে দিয়েছে।
এরপর তার চাচতো বোন যে লোকটার কাছে ঘড়ি বিক্রি করেছিল জোভান তার কাছে যায় এবং তার কিডনি বিক্রি করে ঘড়িটি উদ্ধার করে। কিন্তু সে ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়ে।
এরপর জোভান অনেক খুঁজে নায়িকার ঠিকানা পায় এবং তার ঘড়ি ফেরত দেয়ার চেষ্টা করে। বাড়ির সামনে এসে তার সেই বন্ধুর দেখা পায় যাকে সে চাকরি দিয়ে জীবন বাঁচিয়েছিল। এরপর তার বন্ধু ভীষণ খুশি হয়ে তাকে ভেতরে নিয়ে যায় কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখা যায় তার বন্ধুর স্ত্রী হচ্ছে তার সেই প্রেয়সী।
এরপর জোভান সবকিছু বুঝতে পারে, সে তার ঘড়িটি তার বন্ধুকে উপহার দেয়। এদিকে তার চাচাতো বোন সব ঘটনা ওদের সামনে খুলে বলে, নায়িকা তার ভুল বুঝতে পারে এবং কষ্টে কাঁদতে থাকে।
শেষ দৃশ্যে দেখা যায় নায়ক এক পাহাড় সমান কষ্ট নিয়ে বেড়িয়ে যাচ্ছে আর নায়িকা উপর থেকে চেয়ে চেয়ে দেখছে অশ্রুশিক্ত নয়নে।
নাটকটি আমার কাছে ভীষণ ভালো লেগেছে কারন আমি এর সাথে বাস্তবতার মিল খুঁজে পেয়েছি। পৃথিবীতে ভালো মানুষগুলো ভীষণ কষ্ট পায় এবং পৃথিবীর সবাই তাদের ভুল বোঝে। আমি আমার নিজের জীবনের অনেক বিষয় এখানে সামঞ্জস্য পেয়েছি, উপকার করেছি কিন্তু ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি বারবার। সত্যিই ভালো মানুষেরা কষ্ট পায় সবসময়ই।
আমি ইন্জিনিয়ার ইমরান হাসান। মেশিন নিয়ে পেশা আর ব্লগিং হলো নেশা। কাজ করি টেকনিক্যাল সাপোর্ট ইন্জিনিয়ার হিসেবে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। অবসর সময়ে ব্লগিং করি নিজের মনের খোরাক আর একটু পরিবারকে ভালো রাখার জন্য। আমি আবেগী, বড্ড জেদি, নিজেই নিজের রাজ্যের রাজা। কেউ কোথাও থেমে গেলে সেখান থেকে শুরু করতে ভালোবাসি। আমার শখ ছবি তোলা, বাগান করা আর নতুন জায়গায় ঘুরতে যাওয়া। মানুষকে আমি ভালোবাসি তাই মানুষ আমায় ভালোবাসে।
https://steemitwallet.com/~witnesses
VOTE @bangla.witness as witness
OR
অনেকদিন হলো সাফা কবিরের নাটক দেখা হয় না, নাটকের নামটা দেখে খুব ভালো লাগলো এবং ঘটনাও খানিকটা ভালোই লাগিয়েছেন। আমি মাঝে মাঝেই মুভি নাটক ইত্যাদি দেখে থাকি আমার নাটক দেখার তালিকায় এই নামটাও যুক্ত থাকবে।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
একজন ভালো মানুষ নাটকটি আমি অনেক আগে দেখেছি। নাটকটিতে বাস্তবতা তুলে ধরা হয়েছে। ভালো মানুষ গুলো বিভিন্ন ভাবে কষ্ট পায়। নাটকটিতে জোভান এবং সাফা কবির চমৎকার অভিনয় করেছেন। আপনার রিভিউ দেখে নাটকটি আবারো দেখার ইচ্ছা হলো। ফ্রি টাইমে দেখে নিবো। আপনার জন্য শুভ কামনা রইল ভালো থাকবেন।
জোভানের এ নাটকটা দেখেছি, খুবই ভালো লেগেছিল আমার কাছেও। বিশেষ করে নাটকের গল্পটা ভালো ছিল। বিপদে যে পাশে থাকে সেই তো প্রকৃত বন্ধু। এমনই ছিল জোভান। তবে ভালোবাসার মানুষটিকে আর পাওয়া হয়নি
এই নাটকটি আমি এখনো দেখি নাই। তবে আপনার রিভিউ পড়ে নাটকটি দেখার আগ্রহ বেরে গেলো।আপনি ঠিকই বলেছেন। সমাজে ভালো মানুষের কোন দাম নাই। এবং ভালো মানুষ গুলোই অনেক কষ্ট উপভোগ করে।আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই পোস্ট টি শেয়ার করার জন্য।
পৃথিবীতে ভালো এবং সৎ মানুষের কোনো মূল্য নেই আর তারাই সবচেয়ে বেশি কষ্ট পায়। তবে খারাপ মানুষ গুলো বুক ফুলিয়ে হাঁটে। যাই হোক একদম বাস্তবধর্মী একটি নাটক রিভিউ দিয়েছেন। আপনার এই রিভিউ পড়ে অনেক ভালো লেগেছে। সত্যিই বর্তমানে বাংলা নাটক খুবই সুন্দর হয়। ধন্যবাদ এত সুন্দর নাটক রিভিউ দেওয়ার জন্য।
https://twitter.com/emranhasan1989/status/1715751232999182847?t=13wZZfLO7BIJt5ibj8Qycw&s=19
বেশ চমৎকার নাটক রিভিউ করেছেন ভাই। একজন ভালো মানুষ নাটকটি আমি দেখেছি। নাটকের চরিত্র সংলাপ সত্যি বেশ দারুন । বিশেষ করে নাটকের গল্পটি খুবই দুর্দান্ত। নাটকের মাঝে সমাজের কিছু বাস্তব চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। আসলে যে অন্যের উপকার করে সেই পরবর্তীতে কষ্ট পেয়ে থাকে। এতটাই প্রকৃতির নিয়ম। নাটকটি চমৎকার ভাবে আমাদের মাঝে রিভিউ করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।
জোভান ও সাফা কবিরের দারুন একটি নাটক আজকে আপনি আমাদের মাঝে রিভিউ করে দেখিয়েছেন ভাইজান। এরা দুইজন খুব সুন্দর ভাবে প্রেমের নাটক করে থাকে। আমিও প্রায় মাঝেমধ্যে ঈদের নাটক গুলো দেখে থাকি। যাইহোক আজকে নাটকটাও কিন্তু বেশ দুর্দান্ত ছিল। চেষ্টা করব আবারও নাটকটা দেখার জন্য।
একজন ভালো মানুষ নাটকটি আমার দেখা হয়নি ভাই। তবে নাটকটির নাম শুনে কেন জানি নাটকটি দেখার খুবই আগ্রহ জন্মে গেল। এজন্যই পুরো নাটকের রিভিউটি মনোযোগের সাথে পড়ে নিলাম। সত্যিই আমার নায়কের জন্য ভীষণ কষ্ট হচ্ছে, শেষমেষ তার কিডনি বিক্রি করে নায়িকার ৫ লক্ষ টাকা দামী ঘড়ি ফিরিয়ে দেয়ার জন্য। আর যখন ঘড়ি ফিরিয়ে দেওয়ার সময় পেল, তখন দেখে তার নায়িকা তার বন্ধুর ঘরের ঘরণী হয়ে গেছে। আর এই দৃশ্যটি সত্যি মর্মান্তিক। ভালো মানুষ সবসময় কষ্ট পায়, আপনি এই কথাটি ঠিকই বলেছেন ভাই। আমি জানি না আমি কতটুকু ভালো মানুষ, তবে আমিও মানুষের দ্বারা প্রতারিত হয়েছি বারবার। যাই হোক ভাই, সুন্দর একটি নাটক রিভিউ দেয়ার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
নাটকটি দেখার অনুরোধ রইল, কারন আপনি অনেক বাস্তবতা দেখতে পাবেন। আমি দেখে নিজের জীবনের সাথে অনেকটাই সামঞ্জস্য খুঁজে পেয়েছি।