বাস্তব জীবনের গল্প: জীনের আছর || বিশেষ তদবির। (শেষ পর্ব)

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago
বাস্তব জীবনের গল্প: জীনের আছর
(শেষ পর্ব)

বাস্তব জীবনের গল্প জীনের আছর.jpg

ছবিটি পিক্সাবে থেকে নিয়ে কেনভা দ্বারা তৈরি

শুভ দুপুর আমার বাংলা ব্লগ পরিবার। সবার সুস্বাস্থ্য কামনা করে শুরু করছি। আজকে জীবনের একটি ভয়ঙ্কর রাতের গল্প নিয়ে হাজির হলাম। প্রথমেই বলি ভূত প্রেত এসব বিষয়ে আমি একদমই বিশ্বাসী নই। তবে জীন রয়েছে এটা আমি বিশ্বাস করি। তবে আজ থেকে বছর দুয়েক আগে একবার আমি নিজের চোখে একজন মানুষকে আছর করতে দেখেছি এবং তার আচরণ কেমন হয় সেটা বুঝেছি। এই গল্পের প্রথম পর্ব প্রকাশ করেছি, চাইলে দেখে আসতে পারেন। আজ শেষ পর্ব নিয়ে হাজির হলাম। তো চলুন শুরু করি।



রত্না আপু তার নিজের মধ্যে নেই আমরা স্পষ্ট বুঝতে পারছি। তিনি প্রতিনিয়ত হেসে চলেছেন, যা আমাদের কাছে একদমই অস্বাভাবিক লাগছে। এর মাঝে একবার শুধু মাত্র কথা বলেছেন সেটা হলো আমার কাছ থেকে আমার ছেলে মেয়েকে দূরে সরিয়ে রাখো সবাই। মা এমন একজন যে নিজে বিপদে থাকলেও ঠিকই সন্তানদের সুরক্ষিত রাখার চেষ্টা করে যান। সব বাচ্চাদের তার কাছ থেকে বেশ দূরে রাখা হয়েছে কারন সবাই বেশ ভয় পাচ্ছে।

মুরুব্বি চাচা যখন তার হাত জোড়ে চেপে ধরেছেন সাথে সাথেই দোয়া দরুদ পড়তে থাকেন। আশ্চর্য হলাম সবাই কারন তার হাসি অনেকটাই থেমে গেছে। চাচা অনেকক্ষন চুপচাপ দোয়া পড়ে চলেছেন, আর আমরা একটু দূরে দাঁড়িয়ে দেখছি। সত্যি বলতে আমি নিজেও ভীষণ ভয় পাচ্ছিলাম কারন কখনো এরকম পরিস্থিতির সম্মুখীন হইনি। এবার চাচা বললেন ও আজকে কোথাও গিয়েছিল, তখন আমরা বললাম পুরনো বাড়িতে ফল পাড়তে গিয়েছিল।

এবার চাচা বলতে শুরু করলেন সেখানে সে একটি খারাপ জীন দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে। তাই এরকম আচরণ করছে। এখন ফজরের আযান দেয়ার আগ পর্যন্ত আমি দোয়া দরুদ চালিয়ে যাবো। এটা বলার সাথে সাথে সে আবার জোরে হেসে উঠলো। আসলে পরিস্থিতিটা কতটা ভয়ের বলে বোঝানো যাবে না। যাক চাচা আবারো দোয়া দরুদ পড়তে শুরু করেছেন।

এভাবেই ফজরের আযান দেয়া পর্যন্ত চাচা দোয়া পড়তে থাকেন। আযানের পর রত্না আপু কেমন ক্লান্তিতে ঘুমিয়ে পরলেন। এদিকে তার সাথে একমাত্র আমার শাশুড়িকে রেখে সবাই নামাজ পড়ে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিলাম। তবে সবার মধেই ভয় আর উত্তেজনা কাজ করছিল। সকাল নয়টার দিকে সবাই আলোচনা করতে লাগলেন কি করা যায়, সে এভাবে থাকলে হয়তো বিপদ আবারো বাড়বে। পরে চাচা বললেন আমাদের বাড়ি থেকে দশ কিলোমিটার দূরে একজন ভালো হুজুর রয়েছেন তিনি এই সমস্যার ভালো তদবির দিতে পারবেন। রত্না আপুকে হুজুরের কাছে নিয়ে যেতে হবে।

আমরা তাকে সেই হুজুরের কাছে নিয়ে গেলাম, তবে এখন রত্না আপু কিছুটা স্বাভাবিক আচরণ করছেন। রাতের ব্যাপারে কিছু মনে আছে আবার কিছু মনে নেই। হুজুরের ওখানে যাওয়ার পর দেখলাম বেশ মানুষের ঢল, বেশ খানিকটা সময় অপেক্ষা করার পর তিনি আপুকে দেখেছেন। এরপর সব বর্ননা করলেন কি ঘটেছিল, মুরুব্বিরা বললেন তার বর্ননা ঠিক আছে। ওখানে সত্যিই এরকম কিছু জীন রয়েছে যারা মানুষকে বিরক্ত করে। ঐ গাছগুলো থেকে দূরে থাকতে বললেন সবাইকে। এরপর হুজুর বেশ কিছু তদবির করেছেন এবং সত্যিই আপু এখন স্বাভাবিক জীবন যাপন করছেন।

তার হয়তো সেই রাতের কথা মনে নেই, কিন্তু আমাদের সেই রাতের কথা সারাজীবন মনে থাকবে। আসলে মুরুব্বিরা যা বলেন আমাদের মেনে চলা উচিত। আপু যদি ঐ গাছগুলোর আশেপাশে না যেতেন হয়তো এই পরিস্থিতিতে পরতে হতো না আমাদের।

"সমাপ্ত"



Black and White Modern Company Presentation (1).gif

banner-abbVD.png


আমাদের উইটনেসকে সাপোর্ট করুন

"Please support Bangla Witness"

7258xSVeJbKkzXhyseBP4PYz11eBDT8sW2oR1a4vfVFS6JTrGU8e1FPUaNdHG5vjXyg2xthV78bDEmEVvKCQpyzX1kq8gAVzGsPp9GqJVRWxb6T9y35PZmQehnLjELdKKmnhdxQjDuny4.png

https://steemitwallet.com/~witnesses



VOTE @bangla.witness as witness

witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_vote.png

Sort:  
 3 years ago 

ভুত প্রেত আমি নিজেও বিশ্বাস করি না। তবে মহান আল্লাহ পাক আমাদের মানবজাতির সাথে সাথে জ্বীন জাতিকেও সৃষ্টি করেছেন।আর সেখানে ভালো এবং খারাপ উভয় ধরনের জ্বীন বিদ্যমান রয়েছে। পুরনো বাড়িতে গাছ থেকে ফল পাড়তে গিয়ে আপনার রত্না আপুর উপরে আছর করেছে। তিনি বেশ ভয়ানক একটা সময় পার করেছেন এবং আপনারা সেটা নিয়ে চোখেই দেখেছেন এ ব্যাপার গুলো আসলে খুব রোমাঞ্চকর। অবশেষে সেই জ্বিনের আছর কাটাতে পেরেছে এবং তিনি বর্তমানে স্বাভাবিক জীবন যাপন করছেন শুনে ভালই লাগলো।

 3 years ago 

জি ভাই এখন তিনি স্বাভাবিক জীবন যাপন করছেন এটাই সবথেকে বড় বিষয়। ধন্যবাদ ভাই সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 3 years ago 

আমাদের পৃথিবীতে এখনো এমন অনেক ঘটনা আছে যা ব‍্যাখাহীন। এরমধ্যে জীন অন‍্যতম। বিজ্ঞানীরা প্রমাণ করতে না পারলেও তার অস্তিত্ব আছে। রত্মা আপুর অবস্থা টা বুঝতে পারছি। এমনটা অনেকের ক্ষেএেই হয়ে থাকে। এবং এটা বেশ ভয়ের ও চিন্তার ব‍্যাপারও ছিল।

 3 years ago 

সত্যিই বেশ ভয়ের ব্যাপার ছিল। ভীষণ দুশ্চিন্তায় ছিলাম ঐ সময়টাতে। আমি এখন এগুলো বিশ্বাস করি। ধন্যবাদ তোমায় চমৎকার মন্তব্যের মাধ্যমে অনুপ্রাণিত করার জন্য।

 3 years ago 

রত্না আপুর যে অবস্থা হয়েছিল সেই অবস্থা সামনাসামনি দাঁড়িয়ে দেখতে কতটা ভয়ানক হবে তাই মনে মনে চিন্তা করছি ভাই। আপনি তো বেশ সাহসী মানুষ,কিছুটা ভয় পেলেও শেষ পর্যন্ত পুরো ঘটনাটি স্বচক্ষে দেখেছেন। যাইহোক হুজুরের কাছে নিয়ে গিয়ে বিশেষ তদবির করে রত্না আপু সুস্থ স্বাভাবিক জীবন পেয়েছে এটাই বড় কথা। জিনের আছড় নিয়ে দারুন একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।

 3 years ago 

ধন্যবাদ ভাই। সত্যিই ভীষণ ভয় পেয়েছিলাম ঐ সময়টাতে। তবুও আমরা সবকিছু সামলাতে পেরেছি এটাই বড় কথা।

 3 years ago 

সেই রাতের কথা হয়তো রত্না আপুর মনে নেই তবে সেই স্মৃতিগুলো কিন্তু সবার মনে থাকবে। আসলে এরকম ভয়ংকর পরিস্থিতির মধ্যে কখনো পড়া হয়নি। তবে আপনার অভিজ্ঞতার কথা জেনে অনেক কিছুই বুঝতে পারলাম। যাই হোক এখন উনি ভালো আছেন এটাই আল্লাহর কাছে লাখ লাখ শুকরিয়া।

 3 years ago 

জি আপু। আসলে এরকম অবস্থা আমিও প্রথম পরেছিলাম এবং অনেক কিছু বুঝতে পেরেছিলাম। তিনি এখন ভালো আছেন এটাই বড় বিষয়।

ঠিক এরকম একটা ঘটনা আমাদের গ্রামে আমার এক দিদির সাথে হয়েছিল। তাকে নাকি পেত্নীতে ধরেছিল। এরপর তো ঝাড়ফুক করানো হয় কিন্তু কোন লাভ হয়নি। পরবর্তীতে নাকি বাইরে থেকে হুজুর ডেকে এনে তার চিকিৎসা করা হয়, তারপর ঠিক হয়েছিল। এটা কতটা সত্য কিংবা মিথ্যা সেটা আমি জানিনা, তবে সেই সময় খুব ভয় পেয়েছিলাম ওটা দেখে। আপনার গল্পটা ভয়ংকর না হলেও পড়ে খুব মজা পেয়েছি ভাই।

 3 years ago 

এধরনের ঘটনা গুলো আগে যদিও বেশি দেখা যেতো। তবে এখন কম দেখা যায়। রত্না আপু পরে ভালো হয়েছে জেনে ভালো লাগলো। আপনার পোস্ট পরে ভালো লাগলো।

 3 years ago 

ছোটবেলায় এমন অনেক গল্প আমি আমার দাদির মুখ থেকে শুনেছিলাম। তাদের সময়ে নাকি এমন জাতীয় অনেক ঘটনা ঘটলো, তাই সে সমস্ত বিষয় আমাদের মাঝে তুলে ধরতো। আজকে আমি আপনার গল্প পড়ে সেই সমস্ত কথাগুলো স্মরণ করতে পারলাম। যাহোক অনেক সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন আপনি। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

 3 years ago 

ধন্যবাদ ভাই।
এটা নিজের চোখে দেখা বাস্তব ঘটনা।

Coin Marketplace

STEEM 0.09
TRX 0.29
JST 0.036
BTC 104742.69
ETH 3590.82
USDT 1.00
SBD 0.55