আমাদের গ্রীন অরন্য পার্ক ভ্রমন (পর্ব ০১)।

in আমার বাংলা ব্লগ8 months ago
আমাদের গ্রীন অরন্য পার্ক ভ্রমন

ছবিটি কেনভা দিয়ে তৈরি

শুভ রাত্রি আমার বাংলা ব্লগ পরিবার। সবার সুস্বাস্থ্য কামনা করে শুরু করছি আমার আজকের আয়োজন। আমি আজকে একটি ভ্রমণ পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি।
আমরা ভালুকায় যেখানে বসবাস করছি ঠিক তার পাশেই চমৎকার একটি পার্ক রয়েছে। এটার নাম হচ্ছে গ্রীন অরণ্য পার্ক। আপনারা হয়তো এই পার্কটির নাম শুনে থাকবেন, টিভি কিংবা ইউটিউবে অনেকেই এটা নিয়ে রিভিউ করেছে।

আমি এই পার্কটি সম্পর্কে বেশ আগে থেকেই শুনেছিলাম কিন্তু তেমন সময় সুযোগ হচ্ছিল না পরিবার নিয়ে ঘুরে আসার। এরপর তো হঠাৎ একদিন শুক্রবারে সিদ্ধান্ত নিলাম গ্রীন অরণ্য পার্কে ঘুরতে যাব।
শুক্রবারে আমার অফিস থাকলেও খুব বেশি চাপ থাকে না। কিন্তু সেদিন যখনই সিদ্ধান্ত নিলাম গ্রীন অরণ্য পার্কে যাব হঠাৎ করেই আমার বেশ কিছু অফিসের কাজ চলে আসে।
আসলে মনটা এতটাই খারাপ হলো যে পরিবার নিয়ে কোথাও ঘুরতে যাচ্ছি অথচ হুট করেই আমার অফিসের কাজ পড়ে গেছে। যাইহোক এই অবস্থায় আমি আমার কলিগকে আমার সমস্যাটি জানালাম কিন্তু সে নিজেও আরেকটি কাজের ঝামেলায় ছিল। এরপর অনেকটা নিরুপায় হয়ে আমি আমার অফিসের কাজ সারতে চলে গেলাম কিন্তু তখন আমার মন ভীষণ খারাপ ছিল। যাইহোক খুব দ্রুত আমার হাতের কাজ শেষ করে আবার বাসায় ফিরে এলাম।

এরপর খুব দ্রুত দুপুরের খাবার খেয়ে সবাইকে তৈরি হয়ে নিতে বললাম। আসলে আমাদের ইচ্ছে ছিল সকাল বেলায় গ্রীন অরণ্য পার্কে যাবো, আর সমস্ত দিনটি সুন্দরভাবে উপভোগ করব এবং দুপুরের খাবার বাইরে খাব। কিন্তু উপরওয়ালার ইচ্ছে হয়তো অন্যরকম ছিল। যাইহোক দুপুরের খাবার শেষ করেই আমরা খুব দ্রুত তৈরি হয়ে নিলাম এবং গ্রীন অরন্য পার্কের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। যদিও এই পার্কটি আমাদের এখান থেকে প্রায় ৪০ মিনিটের রাস্তা তবুও আমার কাছে মনে হচ্ছিল সময়টা একটু বেশি লেগেছে।

ছবি তোলার যন্ত্র:- রিয়েলমি সি-২৫
ছবির অবস্থান :- গ্রীন অরন্য পার্ক, ভালুকা, ময়মনসিংহ, বাংলাদেশ।

অবশেষে আমরা আমাদের কাঙ্ক্ষিত গ্রীন অরণ্য পার্কে এসে পৌছালাম। সত্যি বলতে আমার বাচ্চারা ভীষণ খুশি ছিল পার্কটির মূল ফটক দেখে। প্রথমেই এখানে আমরা কিছু সেলফি তুলে নিলাম।

ছবি তোলার যন্ত্র:- রিয়েলমি সি-২৫
ছবির অবস্থান :- গ্রীন অরন্য পার্ক, ভালুকা, ময়মনসিংহ, বাংলাদেশ।

মূল ফটকের বাইরে আল্লাহু লেখা খুব সুন্দর একটি স্থাপনা ছিল। সেখানে আমাদের বাচ্চা দুটোর ছবি উঠানোর চেষ্টা করলাম।

ছবি তোলার যন্ত্র:- রিয়েলমি সি-২৫
ছবির অবস্থান :- গ্রীন অরন্য পার্ক, ভালুকা, ময়মনসিংহ, বাংলাদেশ।

এটা হচ্ছে সেই কাঙ্ক্ষিত মুহূর্ত যখন আমি টিকিটগুলো হাতে পেলাম। সত্যি বলতে আমার বাচ্চারা অনেক বেশি আনন্দিত ছিল। আমি খুব দ্রুত টিকিট কেটে ওদের নিয়ে ভিতরে প্রবেশ করলাম।

ছবি তোলার যন্ত্র:- রিয়েলমি সি-২৫
ছবির অবস্থান :- গ্রীন অরন্য পার্ক, ভালুকা, ময়মনসিংহ, বাংলাদেশ।

মূল ফটক থেকে সামনে এগিয়েই হাতের ডানে প্রথমেই হচ্ছে কিডস জোন। এটা ছোট বাচ্চাদের জন্য একটা অসাধারণ খেলার জায়গা। যেখানে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ রকমের রাইড রয়েছে।

ছবি তোলার যন্ত্র:- রিয়েলমি সি-২৫
ছবির অবস্থান :- গ্রীন অরন্য পার্ক, ভালুকা, ময়মনসিংহ, বাংলাদেশ।

এই কিডস জোনের মূল প্রবেশদ্বারটা ভীষণ সুন্দর আমাদের ইলমা এটা দেখে এতটাই খুশি হয়েছিল। তবে আমরা যেহেতু সেখানে পৌঁছাতে অনেক দেরি করেছি তাই সেখানে আমি প্রবেশ করতে চাইনি। কারণ ওখানে ৫০ থেকে ৬০ ধরনের রাইড রয়েছে এবং ওগুলো ইলমা যদি উপভোগ করতে চায় তাহলে অনেক বেশি সময় নষ্ট হয়ে যাবে। তখন আমরা পুরো পার্কটা আর ঘুরে দেখতে পারবো না।
যখন আমি ইলমাকে বারণ করলাম ওখানে প্রবেশ করার জন্য। ঠিক তখনই তার ভীষণ মন খারাপ হয়ে যায় এবং সে অনেকটাই চুপচাপ হয়ে যায়। আমি কিন্তু পুরো বিষয়টা স্পষ্ট বুঝতে পারলাম।

ছবি তোলার যন্ত্র:- রিয়েলমি সি-২৫
ছবির অবস্থান :- গ্রীন অরন্য পার্ক, ভালুকা, ময়মনসিংহ, বাংলাদেশ।

এরপর ইলমার মন ভাল করার জন্য আমি সামনে থাকা চমৎকার একটি বসার জাগায় ওকে নিয়ে কিছু চমৎকার ছবি তুললাম। এতে করে আমি খেয়াল করলাম ইলমার মন আগে থেকে বেশ খানিকটা ভালো হয়েছে।

ছবি তোলার যন্ত্র:- রিয়েলমি সি-২৫
ছবির অবস্থান :- গ্রীন অরন্য পার্ক, ভালুকা, ময়মনসিংহ, বাংলাদেশ।

এবার দুজন শান্তশিষ্ঠ সুবোধ বাচ্চার ছবি নিলাম। ছবিতে ওনাদের যতটা শান্ত মনে হচ্ছে ওনারা তার থেকে তিনগুণ দুষ্ট 😄

ছবি তোলার যন্ত্র:- রিয়েলমি সি-২৫
ছবির অবস্থান :- গ্রীন অরন্য পার্ক, ভালুকা, ময়মনসিংহ, বাংলাদেশ।

আমি যখন বাচ্চাদের ছবি তুলছিলাম তখন আমার হোম ম্যানেজার বেশ মন খারাপ করে বসে ছিল। তাই চিন্তা করলাম তাকে নিয়ে কয়েকটি ছবি তুলি, হাজার হোক উনি তো হোম ম্যানেজার 🤪

ছবি তোলার যন্ত্র:- রিয়েলমি সি-২৫
ছবির অবস্থান :- গ্রীন অরন্য পার্ক, ভালুকা, ময়মনসিংহ, বাংলাদেশ।

এরপর বেশ খানিকটা সময় বাচ্চাদের দুষ্টুমি করার সুযোগ দিলাম। ছবিগুলোতে হয়তো স্পষ্ট বুঝতে পারছেন তারা ভীষণ দুষ্টুমি করেছে।

ছবি তোলার যন্ত্র:- রিয়েলমি সি-২৫
ছবির অবস্থান :- গ্রীন অরন্য পার্ক, ভালুকা, ময়মনসিংহ, বাংলাদেশ।

এরপর আমার ছোট্ট সেনাপতির বেশ কিছু স্টাইলিং ছবি তুললাম ছবিগুলো একটু ভালোভাবে খেয়াল করলে দেখবেন ও বিভিন্ন অ্যাঙ্গেল থেকে ছবিতে পোজ দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমি সত্যিই অবাক হয়ে গেলাম আমার সেনাপতির এই কর্মকাণ্ড দেখে। 😄

ছবি তোলার যন্ত্র:- রিয়েলমি সি-২৫
ছবির অবস্থান :- গ্রীন অরন্য পার্ক, ভালুকা, ময়মনসিংহ, বাংলাদেশ।

ছবি তোলা এখনকার মত সমাপ্তি টেনে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলাম। সামনের দৃশ্যগুলো এতটাই চমৎকার দেখাচ্ছিল আমাদের ভীষণ আগ্রহ ছিল সামনের দিকে ছুটে যাওয়ার। যাই হোক খুব চমৎকার কিছু আনন্দঘন মুহূর্ত নিয়ে সামনের পর্বটি আপনাদের সামনে খুব তাড়াতাড়ি উপস্থাপন করব ইনশাল্লাহ। আজকের মত সবার সুস্বাস্থ্য কামনা করে এখানেই বিদায় নিচ্ছি।



Black and White Modern Company Presentation (1).gif

banner-abbVD.png

ছোট্ট পরিসরে পরিচিতি

আমি ইন্জিনিয়ার ইমরান হাসান। মেশিন নিয়ে পেশা আর ব্লগিং হলো নেশা। কাজ করি টেকনিক্যাল সাপোর্ট ইন্জিনিয়ার হিসেবে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। অবসর সময়ে ব্লগিং করি নিজের মনের খোরাক আর একটু পরিবারকে ভালো রাখার জন্য। আমি আবেগী, বড্ড জেদি, নিজেই নিজের রাজ্যের রাজা। কেউ কোথাও থেমে গেলে সেখান থেকে শুরু করতে ভালোবাসি। আমার শখ ছবি তোলা, বাগান করা আর নতুন জায়গায় ঘুরতে যাওয়া। মানুষকে আমি ভালোবাসি তাই মানুষ আমায় ভালোবাসে।

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 8 months ago 

পরিবার নিয়ে গ্ৰীন অরন্য পার্কে ঘুরতে গিয়ে বেশ চমৎকার সময় অতিবাহিত করেছেন দেখে ভীষণ ভালো লাগলো। আসলেই আমরা যখন কোনো জায়গায় ঘুরতে যাওয়ার আগে হুট করে এমন অফিসের কাজ চলে আসে। তখন মন খারাপ হওয়াটাই স্বাভাবিক। যাইহোক হাতের কাজ শেষ করে তারপরে ও পরিবার নিয়ে ঘুরতে গিয়েছেন এটা জানতে পেরে ভীষণ খুশি হলাম। তবে আপনার ছোট্ট সেনাপতির ছবি তোলার স্টাইল আসলেই অনেক দুর্দান্ত ছিলো। ধন্যবাদ এতো সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য। আপনার পরিবারের শুভকামনা রইলো ভালো থাকবেন।

 8 months ago 

ভাইয়া আপনি পরিবারের সাথে গ্রীন অরন্য পার্ক ভ্রমন করেছেন। আর আজ আমাদের সাথে তা শেয়ার করেছেন। আশাকরি সুন্দর সময় অতিবাহিত করেছেন।শুক্রবার আপনার অফিসে কাজের চাপ কম থাকলেও এই শুক্রবার হঠাৎ কাজ পরে যাওয়াতে সকালে আর যেতে পারেননি।তারপরেও যেতে পেরেছেন এটা ই বা কম কি।সবাইকে খুব সুন্দর লাগছে।ছেলে-মেয়ে দুটো খুব সুন্দর সময় কাটিয়েছে দেখে ভালো লাগলো। বাচ্চারা চায় একটু ঘোরাঘুরি করতে।সবাইকে খুবই উৎফুল্ল লাগছে।

 8 months ago 

পরিবার নিয়ে গ্রীন অরন্য পার্ক ভ্রমন করতে গিয়েছেন দেখে খুশি হলাম। শত ব্যাস্ততার মাঝে ও পরিবারকে সময় দিচ্ছেন খুব ভালো। ইলমা এবং ইয়ান বাবু তো এমন ফাঁকা পরিবেশ পেলে ভীষণ খুশি হয়। পরিবারের সবাই মিলে সময়টাকে অনেক সুন্দর করে উপভোগ করেছেন। আপনাদের সুন্দর মুহূর্ত গুলো দেখে ভীষণ ভালো লাগলো। আপনাদের জন্য শুভ কামনা রইল ভালো থাকবেন।

 8 months ago 

মাঝে মাঝে আসলে অফিস থেকে এরকম অনাকাঙ্ক্ষিত কাজ চলে আসে যার কারণে মনটা অনেক বেশি খারাপ হয়ে যায়। যাইহোক অফিসের কাজ সেরে দ্রুত বাসায় এসে পরিবারকে নিয়ে অবশেষে গ্রীন অরণ্য পার্কে ঘুরতে গিয়েছিলেন জেনে খুবই ভালো লাগলো। বোঝাই যাচ্ছে অনেক সুন্দর একটা মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন, পরিবারকে নিয়ে ঘোরাঘুরির মাঝে এক অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করে। হোম ম্যানেজারের সাথে শেষ পর্যন্ত তাহলে ছবি তুলেছেন হাহাহা। যাইহোক দিনশেষে হোম ম্যানেজারের মনটা ভালো রাখাটা খুবই জরুরী বলে আমি মনে করি। ধন্যবাদ সুন্দর একটা মুহূর্ত আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 8 months ago 

আপনি গ্রীন অরন্য পার্ক ভ্রমন করার চমৎকার একটি পোস্ট উপহার দিলেন। আপনি শত ব্যস্ততার মধ্যে সময় বের করে ঘুরতে গিয়েছেন। আমি মনে করি পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে পারলে মনে শান্তি খুজে পাওয়া যায়। গ্রীন অরন্য পার্ক ভ্রমন এর সকল অনুভূতি গুছিয়ে উপস্থাপনা করেছেন। আপনার পোস্ট পড়ে আমার কাছে খুবই ভালো লাগলো। আপনার পরিবারের জন্য শুভকামনা রইল, আপনার পরিবারের সুস্বাস্থ্য কামনা করছি।

 8 months ago 

গ্রীন অরণ্য পার্ক আপনার কাছে প্রথম নামটি শুনলাম। আপনি অফিসের সমস্ত ঝামেলা মিটিয়ে পরিবারকে নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছেন এটাই অনেক। সেখানে গিয়ে আপনার বাচ্চারা অনেক বেশি আনন্দ করেছে। আসলে বাচ্চারে রাইডে উঠতে খুবই ভালোবাসে তাই ওদেরকে নিষেধ করলে ওদের খারাপ লাগে। তারপরও আপনি বুদ্ধি দিয়ে যে ইলমার মনটা ভালো করেছেন এজন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। শুভকামনা রইল।

Posted using SteemPro Mobile

 8 months ago 

কিছুদিন আগেই এই পার্ক।থেকে ঘুরে আসলাম।জায়গাট বাচ্চাদের জন্য বেশ সুন্দর। সব ব্যস্ততার মাঝেও যে আপনি পরিবারের জন্য সময় বের করেছেন তা দেখেই ভাল লাগছে।বাচ্চাদের দেখেই বোঝা যাচ্ছে তারা বেশ উপভোগ করছে। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মুহুর্ত গুলো আমাদের সাথে ভাগ করে নেওয়ার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 8 months ago 

এই পার্কের কিছু মুহূর্ত কিছুদিন আগেও দেখেছিলাম৷ আজকে আবার আপনার কাছ থেকে এই প্রথম পর্বের মাধ্যমে এই পার্কের অনেক কিছু জানতে পারলাম। খুব সুন্দরভাবে আপনি এই পর্বের মাধ্যমে অনেকগুলো বিষয় শেয়ার করেছেন৷ এখানে কাটানো মুহূর্তগুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। অসংখ্য ধন্যবাদ৷

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.16
JST 0.029
BTC 76511.74
ETH 3031.28
USDT 1.00
SBD 2.62