তেলা মাথায় ঢালো তেল, শুকনো মাথায় ভাঙ্গো বেল।
শুকনো মাথায় ভাঙ্গো বেল |
---|
আজকের টাইটেলটা প্রবাদ বাক্য হলেও আজকের যুগে একদমই নেহাত বাস্তবতা। যার রয়েছে তাকে আরেকটু দেয়ার চেষ্টা সবাই করে যায়। আর যার বিপদ তাকে আরেকটু বিপদে ফেলে বেশ আনন্দ পায় এক শ্রেণীর মানুষ। আসলে এদের মানুষ বললে শব্দটার মুদ্রাদোষ হয়ে যাবে। যাইহোক মূল আলোচনায় ফিরে আসি।
ধরুন একটি পরিবারের দুটো ভাই এক ভাই বেশ পয়সা করি বানিয়ে ফেলেছে আর অপর ভাইটির নুন আনতে পান্তা ফুরোয় দশা। এখন আপনাদের ছোট্ট একটি প্রশ্ন করি বলুনতো কোন ভাইটির পরিবার থেকে সাপোর্ট পাওয়া প্রয়োজন? যারা চালাক মানুষ তারা উত্তর দেবেন যার টাকা বেশি তার আর যারা একটু গভীর চিন্তার অধিকারী তারা বলবে যার টাকা কিছুটা কম তাকে সাপোর্ট করা উচিত কারণ তার সত্যিই সহযোগিতা প্রয়োজন। কিন্তু বাস্তবিক অর্থে কি ঘটে তা আমাদের কারোর তা অগোচরে নেই।
দেখবেন সামর্থ্যবান ছেলেটা না চাইতেই সকল সুযোগ সুবিধা কিংবা আর্থিক একটা বড় সাপোর্ট পেতে থাকে। আবার দেখবেন খেতে গেলে বড় মাছের মাথাটা সেই ছেলের প্লেটে উঠবে যার খাবারের অভাব নেই। তুলনামূলক আর্থিক কম অবস্থাপন্ন ছেলেটির একমাত্র হা করে তাকিয়ে থাকা ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না।
অফিসে দশজন মানুষ কাজ করে এদের মধ্যে আটজন বসকে বেশ তেল মেরে চলে বাকী দুইজন শুধুমাত্র নিজের কাজকে সম্মান করে এবং একাগ্রতার সাথে কাজ করে চলেছে। কিন্তু বছর শেষে দেখা যায় এই দুজনের পদোন্নতি তো হয়নি বরং ইনক্রিমেন্ট সবার চেয়ে কম হয়েছে। ঐ যে জায়গা মতো তেল ঠিক মতো পরেনি তাই কোন কিছুই সন্তোষজনক হয়নি। আবার অফিসে কোন অনাকাঙ্ক্ষিত দূর্ঘটনা ঘটলে এই দুজনকে সবার আগে ডাকা হয় এবং বিভিন্নভাবে হেনস্থা করা হয়।
যাইহোক প্রতিনিয়ত এই তেলবাজীর জাদুকরী কেরামতি প্রসিদ্ধতা লাভ করেছে এবং তেলা মাথায় তেল দেয়ার রেওয়াজ সুদূরপ্রসারী বিসৃতি লাভ করেছে, সমাজের প্রতিটি স্তরে। আজকাল একজন মানুষকে বিচার করা হয় তার টাকা, প্রভাব, প্রতিপত্তি এবং বিশেষ তেলবাজীর আদলে।
যার এগুলো একটু কম রয়েছে তাকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা হয় এবং সমাজের বিভিন্ন জায়গা থেকে অপমান আর অপদস্থ করা হয়।
আমরা খাবারে তেল ব্যাবহার করে থাকি, বেশি তেল দিলে যেমন পেটের সমস্যা করতে পারে তেমনি অতিরিক্ত তেলবাজী এবং তেলের ব্যাবহার মারাত্মক বিপদ ডেকে আনতে পারে। একটা জিনিস মানুষ কেন বোঝেনা, যার মাথায় তেল রয়েছে তাকে আর একটু তেল দেয়া, এটা মূর্খতা ছাড়া আর কি হতে পারে? কারন তেল ধরে রাখতে না পেরে তেল ঠিক চুঁইয়ে চুঁইয়ে পরে যাবে। আবার মুড়ি মাখিয়ে খেতে গেলেও অতিরিক্ত তেল দেয়ার ফলে স্বাদটাই নষ্ট হয়ে যায়।
শুকনো মাথায় ভাঙ্গো বেল
এটা আরো মারাত্মক একটা ব্যাপার শুকনো মাথায় বেল ভেঙ্গে খাওয়ার চেষ্টা করা। মানে হলো ধরুন একটি মানুষ বিপদে পরেছে, এক শ্রেণীর মানুষ রয়েছে এই বিপদকে পুঁজি করে নতুন ব্যাবসা সাজিয়ে ফেলে। খুব সহজ ব্যাপার, বিপদে পরা মানুষকে আরো বিপদে ফেলে দাও, এবার চুপচাপ খেলা দেখতে থাকো। এই অসুস্থ মস্তিষ্কের মানুষেরা মানুষের পরিশ্রম আর কষ্টকে উপলব্ধি না করে তাকে বিপদের মুখে ঠেলে দিতে পিছপা হয় না। এ এক অদ্ভুত আনন্দ যা এই মানুষরূপী অমানুষেরা উপভোগ করতে থাকে।
পৃথিবীতে কোন অন্যায় কখনো চিরস্থায়ী হয় না এবং একসময় তা মাটির সাথে মিশে যায়।
তাই তেলা মাথায় তেল না দিয়ে নিজের বিবেক কাজে লাগিয়ে পরিবার পরিচালনা করা উচিত এবং বিপদগ্রস্ত মানুষকে বিপদে না ফেলে যতটা সম্ভব সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়া উচিত।
পৃথিবীতে পাপাচার তার ষোল কলা পূর্ণ করতে চলেছে, হয়তো ধ্বংস অতি নিকটে।
আমি ইন্জিনিয়ার ইমরান হাসান। মেশিন নিয়ে পেশা আর ব্লগিং হলো নেশা। কাজ করি টেকনিক্যাল সাপোর্ট ইন্জিনিয়ার হিসেবে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। অবসর সময়ে ব্লগিং করি নিজের মনের খোরাক আর একটু পরিবারকে ভালো রাখার জন্য। আমি আবেগী, বড্ড জেদি, নিজেই নিজের রাজ্যের রাজা। কেউ কোথাও থেমে গেলে সেখান থেকে শুরু করতে ভালোবাসি। আমার শখ ছবি তোলা, বাগান করা আর নতুন জায়গায় ঘুরতে যাওয়া। মানুষকে আমি ভালোবাসি তাই মানুষ আমায় ভালোবাসে।
https://steemitwallet.com/~witnesses
VOTE @bangla.witness as witness
OR
বাহ ভাইয়া,দারুণ কিছু বাস্তবতা তুলে ধরেছেন।এটা এখন সমাজে সচরাচর দেখা যাচ্ছে।যার আছে তাকে আরো দাও,ষোলো আনা থাকা সর্ত্বেও তাকে আরো দিতে থাকো,আর যার নেই তার দিকে তাকানোরও সময় নেই।এমন পরিস্থিতিগুলো আমরা প্রতিনিয়তই দেখে আসছি।ভালো লাগলো আপনার লেখাগুলো পড়ে।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
আসলে আমরা যদি একটু বিবেক দিয়ে বিবেচনা করে বলি তাহলে যার আর্থিক অবস্থা খারাপ তার সাপোর্ট বেশি দরকার। এবং যার খাবারের অভাব তাকে বেশি খাওয়ানো দরকার। কিন্তু কোন মেলা তে কিংবা কোন অনুষ্ঠানে কিংবা পারিবারিক খাবার-দাবারে দেখবেন। যারা বেশি টাকা ওয়ালা তাদেরকে সমাদর বেশি করে। আর তেল মারার কথা কি আর বলব। এটা আমাদের দেশে একটা রোগে পরিণত হয়ে গেছে। আসলে যেটা না করলে মানুষ পছন্দ করে না। যত তেল মাখামাখি হবে তত আপনার সমাদরও হবে। খুব সুন্দর মূল্যবান কথা গুলো আপনি শেয়ার করলে ভালো লাগলো।
ধন্যবাদ আপু।
এখনকার সময়ে মানুষকে টাকার ওজনে বিচার করা হয়। তাছাড়াও তেলবাজী তার সীমা ছাড়িয়েছে।
আপনি চমৎকার একটি বিষয় নিয়ে পোস্ট শেয়ার করলেন। সত্যিই ভাইয়া আমাদের সমাজে সব জায়গায় তেল মাথাতেই তেল দেয় সবাই।এই চিরন্তন বিষয়টি খুব সুন্দর ভাবে তুলে ধরেছেন এজন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। শুকনো মাথায় বেল ভাঙ্গার বিষয় টি ও দেখা যায় সমাজে।এটা ঠিক অন্যায় একদিন শেষ হয় ঠিকই।তাই সকলের উচিত বিবেক দিয়ে কাজ করা।এতে পরিবারের সাথে সাথে সমাজেরও কল্যান হবে।
বর্তমান পরিস্থিতি চিন্তা করলে এই তেল দেওয়ার বিষয়টি সব ক্ষেত্রেই দেখা যায়। হ্যাঁ এই উদাহরণটা একদম 100% সত্য, আপনি সততার সাথে কাজ করবেন আপনার পদ উন্নতি হবে না তবে আপনি আপনার বসকে একটু তেল মারবেন দেখবেন আপনার পদোন্নতি হয়ে গিয়েছে।
কঠোর ও তিক্ত কিছু বাস্তবতা তুলে ধরেছেন আজকের পোষ্টের মধ্যে। আসলে প্রচলিত সমাজে এরকম ঘটনা অহরহ দেখতে পাওয়া যায়। শুধু যে সমাজ তা কিন্তু নয়, বিশ্ব রাষ্ট্রব্যবস্থায়ও একই রকম বিষয়বস্তু লক্ষ্য করা যায়। যাইহোক আপনার কথার সাথে সহমত পোষণ করছি। ধন্যবাদ আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আসলে এই বাস্তবতা এমনভাবে ছড়িয়ে যাচ্ছে যা এখন রীতিমতো ভয়াবহ অবস্থা। প্রতিটি ক্ষেত্রে তেলবাজী না করলে এখন আশানুরূপ ফল পাওয়া যায় না। তবে সবকিছুর একটা সীমা রয়েছে।
ঠিক ভাই যথাযত বলেছেন ভাই।
ব্লগের টাইটেলটা পড়ে আমি একটু হেসেই পড়েছি ভাই। নেহাইত একটা বাস্তব কথা আপনি আজকে লিখেছেন। বর্তমান সময়ের মানুষগুলো এমনই। যখন আপনার অনেক কিছু থাকবে তখন আপনার পাশে সবাই রয়েছে। যখন আপনার কিছু থাকবেনা তখন কেউই পাশে থাকেনা। মানুষের বিবেক মারা গেছে ভাই। মানুষ এখন বিবেক খাটায় না, মানুষ এখন লোভের পুঁজি খাটায়। আপনার লেখার কথাগুলো এবং বর্তমান সময়ের পরিস্থিতির মধ্যে কোন তফাৎ নেই। আপনি যথার্থ লিখেছেন আপনার লেখায় স্যালুট জানায়।
ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
পোস্টটি পড়ে যথার্থ উপলব্ধি করার জন্য।
https://twitter.com/emranhasan1989/status/1740437735746511119?t=i8tX8fpGq3sCU_Dgpyz58w&s=19
বর্তমান সময়ে বেশিরভাগ মানুষ কাজের চেয়ে বসকে তেল দেয়ায় বেশি মনোযোগী। আবার বসরাও এই সব তেল দেয়া লোককেই বেশি পছন্দ করে। আবার এমন অনেক লোক রয়েছে যারা নিজেদের আত্মসম্মানবোধের কারণে বসকে তেল না দিয়ে দীর্ঘদিন একই পোস্টে কাজ করছে। তারা তাদের কাজের প্রতি বেশী মনোযোগী কিন্তু এদেরই দিন শেষে কোন উন্নতি হয় না। আপনার লেখাটি পড়ে খুব ভালো লাগলো।
আপনার পোস্টটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো বেশ সুন্দর একটি বিষয় নিয়ে আপনি লিখেছেন। বর্তমান সমাজে যা হচ্ছে তাই লিখেছেন বাস্তবতার সাথে মিল রেখে । আসলে আমাদের সমাজে তেলের মাথায় সবাই তেল ঢালে। কিন্তু কিছু অসুস্থ মস্তিষ্ক আছে যারা শুধু মানুষকে বিপদে ফেলে মজা দেখতে বেশি ভালোবাসে। আসলে এরকম অসুস্থ মস্তিষ্ক থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে এবং মানুষকে ভালবাসতে হবে মানুষ মানুষের জন্য। ধন্যবাদ ভাই সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আপু মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
আসলে কথাগুলো না বলে পারলাম না, এটা এখনকার সময়ের চরম বাস্তবতা।