এবারেও হলো না।
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
মনে আছে এর আগে বলেছিলাম আমাদের কলেজের ফুটবল টুর্নামেন্টের কথা। আমাদের টিম টা অন্যদের থেকে ভালো হওয়া সত্বেও সেমিফাইনালে আমরা ট্রাইবেকারে হেরে যায়। অথচ টুর্নামেন্টে প্রথম ম্যাচে আমাদের খেলা দেখে সবাই বলেছিল আমরা চ্যাম্পিয়নের দাবিদার। আসলে সেরা দল কখনো চ্যাম্পিয়ন হয় না। যাইহোক সেটা তো চলে গেছে মাস ছয় আগে। এখন শীতের সময়। ফুটবলের থেকে ক্রিকেট টা বেশি খেলা হয় চারিদিকে। বাংলাদেশে ব্যাপার টা এমনই গ্রীষ্ম বর্ষাতে ফুটবল এবং শীতে ক্রিকেট বেশি খেলা হয়। আমরা বতর্মানে কলেজের সিনিয়র। আমার বন্ধু রুহুল এবং শাহিন কিছুদিন পূর্বে আমাকে বলছে ইমন আন্ত ইলেকট্রিক্যাল ডিপার্টমেন্টের একটা ক্রিকেট টুর্নামেন্ট আয়োজন করব। তুই আমাদের সঙ্গে কমিটিতে থাকবি। আমি বললাম ঠিক আছে। কিন্তু সেই সঙ্গে আমাকে আমার ক্লাসের সেরা একাদশ টাও নির্বাচন করতে হবে সেই দায়িত্ব তো আছেই। যাইহোক আমি রুহুল শাহিন এবং আরও কয়েকজন মিলে আমাদের ডিপার্টমেন্টের প্রধান ইয়াকুব আলী স্যার এর কাছে আবেদনপএ দেয়। স্যার আমাদের অনুমতি দেন। অনুমতি পাওয়ার পরে প্রতিটা ক্লাসের টিম নিশ্চিত এন্ট্রি সংগ্রহ এগুলো করে ফেলি।
সব মোটামুটি ঠিকঠাক। সোমবার রাতে ৬ টা টিমের ড্র হয়ে যায়। এবং আমাদের বিদায়ী ব্যাচ বড় ভাইদের কে সম্মান দেখিয়ে তাদের একটা টিমকে আমরা সরাসরি সেমিফাইনালে খেলার আমন্ত্রণ দেয়। তারাও রাজি হয়। খেলা হবে নকআউট সিস্টেমে। ম্যাচ হবে দশ ওভারে।
দল | দিন | সময় |
---|---|---|
4EB1 VS 2EA1 | মঙ্গলবার | সকাল ১০ টা |
6EA1 VS 2EB1 | মঙ্গলবার | দুপুর ১২ টা |
6EB1 VS 4EA1 | মঙ্গলবার | দুপুর ২ টা |
আপনাদের সুবিধার জন্য বলে দেয় 4EB1 এটা হলো ছোট নাম। এটা বলতে ইলেকট্রিক্যাল চতুর্থ সেমিষ্টার বি গ্রুপ প্রথম শিফট বোঝায়। যাইহোক মঙ্গলবার সকালে প্রথম ম্যাচ। আমাকে থাকতে হবে আম্পায়ারের দায়িত্ব। তার আগে রাতেই আমি আমাদের ক্লাসের টিম সিলেক্ট করি। বলে রাখি আমি ক্রিকেট মোটামুটি খেলি। তবে আমি হিটার ব্যাটসম্যান না। আর খেলা যেহেতু টি টেন এবং আমার চেয়ে ভালো খেলোয়ার আছে। সেজন্য আমি আমার নাম একাদশে রাখিনি। মঙ্গলবার সকালে আমি কলেজে গিয়ে ক্লাস করিনি। সরাসরি মাঠে চলে গিয়েছি। গিয়ে দেখি সবকিছু প্রায় তৈরি। আম্পায়ারের দায়িত্বে আমার সঙ্গে ছিল আমার বন্ধু শাহিন। দুই দলের অধিনায়ককে ডেকে আমরা টচ করে নেয়। এরপর পিচের দুই পাশে দুই দলের খেলোয়ার রা এবং আমরা মাঝে দাঁড়ায়। তখন আমাদের ডিপার্টমেন্টের প্রধান ইয়াকুব আলী স্যার টুর্নামেন্টের উদ্ধোধন করেন। শুরু হয় প্রথম ম্যাচ। এবং আমাদের খেলোয়ার রা একে একে মাঠে আসে থাকে। আমি এবং আমার বন্ধু শাহিন খুব ভালোভাবে ম্যাচটা পরিচালনা করি। ম্যাচ হয় প্রথম টা। যেখানে 4EB1 ২৭ রানে পরাজিত করে 2EA1 কে। কিছুক্ষণের মধ্যে আমাদের ম্যাচ। আমাদের ম্যাচে আম্পায়ারের দায়িত্বে থাকবে অন্য ক্লাসের জিতু এবং বাশার।
নাম | ধরন |
---|---|
1.আকাশ | ব্যাটিং |
2.শফিকুল | অল রাউন্ডার |
3.সৈকত | অল রাউন্ডার |
4.বুলবুল | অল রাউন্ডার |
5.মাহফুজ | ব্যাটিং |
6.আসিফ | ব্যাটিং |
7.হারুন | অল রাউন্ডার |
8.শাহিন | কিপার ব্যাটসম্যান |
8.রাসেল | বোলার |
10.রাসেল-2 | বোলার |
11.তুহিন | বোলার |
এটা ছিল আমাদের একাদশ। কী অল রাউন্ডারের সংখ্যা বেশি সেটাই ভাবছেন তো। আসলে লোকাল পর্যায়ে যারা ভালো খেলে তারা ব্যাটিং বোলিং দুইটাই ভালো করে সেজন্য এই অবস্থা। আমি আমাদের দলের অধিনায়ক হলেও আমি যেহেতু খেলছি না। সেজন্য অধিনায়ক হিসেবে সৈকত যায় টচ করতে। আমরা টচে জিতে আমরা ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেয়। আমাদের খেলা দ্বিতীয় সেমিষ্ঠারের বি গ্রুপের সঙ্গে। কিন্তু ওরা ছোট হলেও ওদের টিম কম্বিনেশন টা দারুণ। দারুণ কিছু বোলার ছিল ওদের দলে। ফলে আমাদের দলের ব্যাটার রা সুবিধা করে উঠতে পারছিল না। ৪ ওভার শেষে আমাদের টিমের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩৪ রানে ২ উইকেট। তখন মাঠে নামে আমাদের ক্লাসের সবচেয়ে হিটার ব্যাটসম্যান বুলবুল। এবং অন্য প্রান্তে ছিল সৈকত। আমাদের দুই ওপেনার আকাশ এবং শফিকুলের ব্যর্থতার পর সৈকতও সুবিধা করে উঠতে পারছিল না। কিন্তু ব্যতিক্রম ছিল বুলবুল।
বুলবুলের মারমুখী ব্যাটিংয়ে আমাদের রানের গতি বাড়ে। দশ ওভার শেষে আমাদের দল করে ১১০ রান। এরপর আমাদের বোলিংয়ে পালা। যে করে হোক ১১০ রানের মধ্যে প্রতিপক্ষ কে আটকাতে হবে। কিন্তু আমাদের সবগুলো বোলার রা যেন ঠিক করে নিয়েছিল সবাই আজ একসঙ্গে খারাপ করবে। আমাদের প্রতিপক্ষ তো ভালো খেলেছেই। সঙ্গে আমাদের বোলার রা অনাকাঙ্খিত নো বল এবং ওয়াইড দিয়ে ওদের কাজটা আরও সহজ করে দিয়েছে। শেষে শফিকুল এবং সৈকতের হিসেবী বোলিংয়ে ম্যাচ কিছুটা জমে উঠে। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। শেষ তিন ওভারে লাগে ২৭ রান। হারুনকে দায়িত্ব দেওয়া হলো এই ওভারটা কভার করে দিয়ে আসতে। পরের ওভারে ভালো বোলার আছে। কিন্তু হারুন ছিল অন্য মুডে। এক ওভারেই ২৭ রান দিয়ে দিল সে। ফলে জুনিয়রদের কাছে লজ্জার হার হয় আমাদের। আমাদের খেলোয়ার রা ভালো। কিন্তু কলেজের এইরকম মেজর টুর্নামেন্টে আসলে সবাই যেন তাদের ছন্দ ভুলে যায়। যেমনটা হয়েছিল ফুটবল টুর্নামেন্টের সময়। আশা ছিল এবার ক্রিকেটে অন্তত আমরা চ্যাম্পিয়ন হব। কিন্তু কী আর করার হয়তো কপালে ছিল না। না হলে আমাদের ব্যাটার বোলার সবাই একসঙ্গে খারাপ খেলবে কেন বলেন!!!
------- | ------ |
---|---|
ফটোগ্রাফার | Rasel |
ডিভাইস | redmi note 10 |
সময় | জানুয়ারি ,২০২৩ |
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
ক্রিকেট খেলা হলো অনিশ্চয়তার খেলা বলা যাবে না কে জিতবে ৷ মানে যে দল ভালো খেলবে দিনশেষে তারাই জয়লাভ করবে ৷
তবে ভাই যারা ভালো খেলে ফাইনাল নির্ধারন করে তারা খুব কম চাম্পিয়ান হয় ৷ আর যারা টেনে টুনে যায় তারাই দিনশেষে তারাই জয়লাভ করে ৷ যা হোক এটা আমার বাস্তব অভিজ্ঞতা৷
ঠিক আপনারা যেমন এতো দুর যাওয়ার পর শেষমেশ আর চাম্পিয়ান হতে পারেন নি ৷ যা হোক এতো যেতে পেরেছেন এটাই বড় কিছু ৷
ধন্যবাদ
কথায় আছে না বেশি ভালো ভালো না আসলে প্রত্যেকটা ক্ষেত্রেই আমি দেখেছি যাদের উপর আশা ভরসা থাকে ভালো তারাই বেশি হোঁচট খায় ।বিশ্বকাপের কথা আর বলতে চাই না যেটা অনেকটা কষ্ট দিয়েছে এখান থেকেই শিক্ষা নিতে হবে ।পলিটেকনিকালে আমি অনেকবার গিয়েছি না পড়লেও আমার অনেক বন্ধু সেখানে পড়েছে এই ধরনের টুর্নামেন্ট দেখা হয়নি কখনো। আসলে শেষ মুহূর্তে লজ্জা জনক হার খুবই কষ্ট দিয়েছে। তাহলে তো টুর্নামেন্টের খেলার মাধ্যমে দারুন সময় অতিবাহিত করছেন।