স্মৃতিময় অতীত ; সাইকেল চালানো।
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
গতকাল পোস্ট পড়ছিলাম হঠাৎ শুভ ভাইয়ের একটা পোস্ট। শুভ ভাই অনেকদিন পর গ্রামে গিয়ে সাইকেলে উঠেছিল। সেই অভিজ্ঞতা উনি শেয়ার করেছিল। পোস্ট টা পড়ে আমার ছোটবেলার সাইকেল চালানোর কথা মনে পড়ে গেল। খুব কম ছেলেই আছে বলতে গেলে নেই যারা সাইকেল চালাতে পারে না। কিন্তু আপনি জিজ্ঞেস করতে গেলে জানতে পারবেন সেই সাইকেল চালানো শিখতে গিয়ে কতশত কান্ড ঘটে গিয়েছে। সেজন্যই আজ আমি ঠিক করেছি আমার সাইকেল চালানো নিয়ে ছোটবেলার স্মৃতি গুলো আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করে নেব। ছোটবেলার এইসব ঘটনা স্মৃতি কখনো ভুলে যাওয়া যায় না। এগুলো সারাজীবন অনুপ্রেরণা দিয়ে যায়। ছোটবেলায় যেটা আপনি ভয় পেতেন বা করতে চাইতেন না সেটা যদি এখন আপনার মনে পড়ে যায় আপনি আনমনে হেঁসে উঠবেন। এটা হওয়াই স্বাভাবিক।
ছোটবেলা থেকেই আমি বেশ ভীতু। মানে এগুলো থেকে সবসময়ই দূরে থাকতাম। বিশেষ করে সাইকেল চালানো টা শিখতে বেশ ভয় পেতাম। আমার বড় ভাইয়ের একটা সাইকেল ছিল কিন্তু সেটা আমি চালানোর সাহস করতাম না। এভাবে চলছিল। কিন্তু তারপর বেঁধে গেল এক বিপওি। ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয় আমি। আমি ভর্তি হয় আমাদের থানার সবচাইতে ভালো স্কুলটাতে। কিন্তু স্কুলটা আমাদের বাড়ি থেকে প্রায় ৬-৭ কিলোমিটার দূরে। সাইকেলে যেতে গেলেও ২৫-৩০ মিনিট লাগে আর হেঁটে যেতে গেলে প্রায় ১ ঘন্টা লেগে যায়। প্রতিনিয়ত তো হেঁটে স্কুলে যাওয়া আসা প্রায় অসম্ভব। সেজন্য সাইকেল চালানো শেখাটা আমার জন্য বাধ্যতামূলক হয়ে গেল। শীতের সময় একদিন সকালে উঠেই শুরু হলো আমার সাইকেল চালানোর মিশন। কিন্তু কী বলব আমি কখনো প্যাডেল মারতাম না আবার প্যাডেল মারলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলাতাম। সবমিলিয়ে একসপ্তাহ অতিবাহিত হয়ে গেল কিন্তু আমার সাইকেল চালানো শেখা হলো না।
আমার চেয়ে ছোট ছেলেরা সাইকেল চালাতে পারতো। একপর্যায়ে তারাও আমাকে নিয়ে মজা করতো। একপর্যায়ে গিয়ে আমার এক চাচাতো ভাই নাজমুল বলল ঠিক আছে চল এবার আমি তোকে সাইকেল চালানো শেখাব। প্রথমদিকে আমার ঐ চাচাতো ভাই শুধু পেছনে বসে সাইকেল নিয়ন্ত্রণ করত এবং আমি শুধু প্যাডেল মারতাম। একদিন এভাবে চলল। পরেরদিন ও প্যাডেল মারল এবং আমি নিয়ন্ত্রণ করলাম। পরের দিন নাজমুল ভাইয়া পেছনে বসে থাকল এবং বলল ভয় নেই পড়বি না আমি আছি পেছনে। তুই নিয়ন্ত্রণ কর হাত দিয়ে এবং পা দিয়ে প্যাডেল মার। আমি সেটাই করতে থাকলাম। এইরকম করতে করতে আমি বেশ অভ্যস্ত হয়ে গেলাম। একপর্যায়ে গিয়ে আমি এইরকম চালাচ্ছি সাইকেল এবং নাজমুল ভাই কখন পেছন থেকে নেমে গিয়েছে আমাকে বলে নাই। কিন্তু আমি নিজেই চালাচ্ছি সাইকেল। আমি জানি না নাজমুল ভাই পেছনে নাই হা হা।
কিছুক্ষণ পর যখন আমি বুঝতে পারলাম হ্যা পেছনে কেউ নেই ভয় পেয়ে সাইকেল দিলাম ফেলে। আমার পায়েও প্রচণ্ড লাগল। তখন নাজমুল ভাই দৌড়ে এসে বলল আরে তুই সাইকেল চালানো শিখে গিয়েছিস হা হা। শুনে বেশ খুশি হয়েছিলাম আমি। তারপর থেকে একা একাই চালানো শুরু করি। আস্তে আস্তে হাইওয়ে তে উঠতে শুরু করলাম। আরও দক্ষ হলাম। তবে প্রথম দিকে অনেক ভয় করত। এবং যখন প্রথম সাইকেল চালানো শিখেছিলাম তখন প্রচুর সাইকেল চালাতাম হা হা। সারাদিন সাইকেল নিয়ে পড়ে থাকতাম। কোথাও যেতে গেলেই সাইকেল নিয়ে চলে গেলাম। কিন্তু একসময় গিয়ে সাইকেলের সঙ্গে আর ঐরকম সম্পর্ক থাকে না হা হা। তখন শুধু যখন দরকার পড়তো তখনই সাইকেল চালাতাম। প্রায় দুইবছর হলো সাইকেল চালানো পুরোপুরি বাদ দিয়েছি। তবে এখন সাইকেল চালানো টা অনেক মিস করি । মনে হয় আবার কবে বাড়ি যাব কোনো এক ছোট ভাইয়ের থেকে সাইকেল টা নিয়ে বলব দে আমি একটা চক্কর মেরে আসি।।
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
আসলে আপনার থেকে ছোট বাচ্চারা সাইকেল চালাতে পারতো তাই আপনাকে নিয়ে হাসাহাসি এবং মজা করত। তার জন্য আপনি আপনার চাচাতো ভাই নাজমুলের সাথে সাইকেল চালাতে গিয়েছিলেন। প্রথম দিন আপনার ভাই সাইকেলের নিয়ন্ত্রণ করা শিখিয়েছেন। পরের দিন পেছনে বসে আপনাকে পেডেল মারানো শিখিয়েছেন এবং পরবর্তীতে আপনি মোটামুটি সাইকেল চালানো শিখে গেছেন। ধন্যবাদ আসলে কোন কিছু শেখার আগে লজ্জায় এবং জড়তা না থাকাই উচিত শুভকামনা রইল পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
ভাইয়া আপনার সাইকেল চালানোর পোস্ট পড়ে তো ছোট বেলায় মধুর স্মৃতি মনে পড়ে গেলো। আমি তো ছোট বেলায় সাইকেল চালানো শিখতে গিয়ে পুকুরে সাইকেল নামিয়ে দিয়েছিলাম। যাক আপনি বেশ মোটা মুটি খুব তাড়াতাড়ি সাইকেল চালানো শিখে ছিলেন। আপনার লেখা গুলো পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো ধন্যবাদ আপনাকে।
দারুন স্মৃতি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন ভাইজান। সাইকেল চালানোর স্মৃতি কিন্তু আমার জীবনেও রয়েছে। আর আমিও বেশ ভয় পেতাম যখন সাইকেল চালানোর শিখতে বলতো বাড়ি থেকে। অবশ্য বেশ বড় হয়ে সাইকেল চালানো শিখেছিলাম। আর এটা ছিল ভয়ের কারণ। তবে প্রথম যখন সাইকেল চালাতে পেরেছিলাম তখন কিন্তু লাগেনি পরবর্তীতে প্র্যাকটিস করতে গিয়ে একবার পড়ে গেছিলাম পায়ে লাগছিল। আপনার স্মৃতি পড়তে গিয়ে আমার স্মৃতি মনে চলে আসলো।
আপনি বেশ অল্প সময়ের মধ্যেই সাইকেল চালানো শিখে গিয়েছিলেন জেনে ভালো লাগলো।অন্যদের তুলনায় একটু দেরীতে শিখলেও আপনার চাচাতো ভাই আপনাকে সাহায্য করেছে এজন্য কদিনেই শিখে গিয়েছিলেন।নিজের চেয়ে ছোটরা কোনো কাজ পারলে সেটা জিদ তৈরি করে।যেমনটি আপনার ক্ষেত্রে হয়েছিল তাই তাড়াতাড়ি শিখেছেন।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
শুভ ভাই এর সাইকেল চালানোর অভিজ্ঞতার কথা শুনে আপনারও অতীতের সাইকেল চালানোর অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে ইচ্ছা হলো জেনে ভালো লাগলো ভাই। ছোটবেলায় প্রত্যেকের কমবেশি সাইকেল চালানোর দারুন অভিজ্ঞতা থাকে। আপনার সাইকেল চালানোর দারুন অভিজ্ঞতাটা জেনে ভালো লাগলো ভাই। আমিও ভাই যখন প্রথম প্রথম সাইকেল চালানো শিখেছিলাম সাইকেল নিয়ে পড়ে থাকতাম । অল্প একটু জায়গা যেতে হলেও সাইকেলে করে যেতাম সেই সময়টাতে।