নয় বছরে এক পোষাকে।
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
পোষাক মানুষের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আপনার পোষাক পরিচ্ছেদ আপনার অনেক কিছু প্রকাশ করে থাকে। মানব সভ্যতার শুরুতে মানুষ শুধু নিজের লজ্জাস্থান ঢাকার জন্য বিভিন্ন রকম জিনিস পোষাক ব্যবহার করত। সভ্যতা যতটা এগিয়েছে মানুষ যতটা আধুনিকতার ছোয়া পেয়েছে মানুষের পোষাক ততই পাল্টে গেছে। এছাড়াও জাতি, দেশ, ধর্ম, বর্ণ, সংস্কৃতি ইত্যাদির ভিত্তিতেও মানুষের পোষাক ভিন্ন হয়ে থাকে। যেমন ইউরোপ আমেরিকার মানুষের পোষাক একরকম আবার ভারত উপমহাদেশের মানুষের পোষাক একরকম। আবার লিঙ্গের ভিত্তিতে নারী পুরুষের ও পোষাক আলাদা হয়। ধর্মীয় দিক থেকেও পোষাকের বেশ ভিন্নতা রয়েছে। সাধারণত মানুষ তার সংস্কৃতি অনুসরণ করে তার পোষাক নির্ধারণ করে থাকে। একটা পোষাক আপনার রুচি আপনার ব্যক্তিত্ব অনেক কিছু প্রকাশ করতে পারে।
একটা সময় ছিল যখন মানুষ শুধু নিজের প্রয়োজনে শরীরের আবরণ হিসেবে পোষাক ব্যবহার করত। কিন্তু এখন মানুষ পোষাক ব্যবহার করে ফ্যাশন হিসেবে। মানুষ পোষাক ব্যবহার করে নিজেকে সুন্দর দেখানোর জন্য। এছাড়াও পোষাকের মধ্যেও শালীন অশালীন একটা ব্যাপার থাকে। বর্তমানে তো অধিকাংশ মানুষ অপর মানুষের চরিএ যোগ্যতা এসব বিচার করে বসে ঐ পোষাক দেখেই। কিন্তু বর্তমানে সাধুর বেশে শয়তানের মতোই ভদ্র পোষাকের আড়ালে অনেক খারাপ মানুষ আছে। যাইহোক আজ আমার আলোচনার বিষয় এসব না তবে আমি পোষাক নিয়েই কথা বলব। পোষাকের বিভিন্ন ধরণ শ্রেণিবিভাগ এর কিছুটা বর্ণনা আমি দিয়েছি। কিন্তু এমন একটা জায়গা আছে যেখানে জাতি, ধর্ম,বর্ণ,দেশ এসবের কোনো পরোয়া করা হয়না। সেখান সবাই এক পোষাক পরিধান করে। সেটা হলো স্কুল কলেজ। সাধারণত স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে থেকে এই ব্যাপারগুলো মুছে ফেলার জন্য এটা বোঝানোর জন্য যে সব মানুষ এক এখানে সবাই সমান, নির্দিষ্ট একটি পোষাকের প্রচলণ করা হয়। আবার এখানে নিয়ম শৃংখলা সৌন্দর্যেরও একটা ব্যাপার থাকে।
সেই ২০১৪ সালের কথা আমি ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয়। তখন আমাদের কুমারখালী এম এন পাইলট মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের পোষাক ছিল সাদা শার্ট কালো প্যান্ট এবং জুতা বা কেটস। আমাদের স্কুলটা তখন ছিল বয়েজ স্কুল। এটা বেশ ইউনিক একটা ড্রেস ছিল। বিশেষ করে গরমের সময় সাদা শার্ট পড়লে গরম কম লাগে তবে সাদা শার্ট টা আবার নোংরা বেশি হয়। আমাদের স্কুল কতৃপক্ষ স্কুল ড্রেস নিয়ে অনেক কঠোর ছিল। সাধারণত ড্রেস পরিধান না করে আসলে ক্লাসে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হতো না। যাইহোক সে তো প্রায় ৫ বছরের বেশি সময় পড়লাম ঐ সাদা শার্ট আর কালো প্যান্ট। এসএসসি পাশ করলাম এখন কলেজে ভর্তি হবো। সাধারণত বাংলাদেশে স্বনামধন্য বা ভালো কলেজ গুলো ব্যতিত অধিকাংশ কলেজে কোনো নির্দিষ্ট ড্রেস নেই। তবে আমি যেহেতু পলিটেকনিক এ ভর্তি হয় সেজন্য আমাদের একটা ড্রেস বা পোষাক ছিল নির্দিষ্ট।
আমি কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এ ভর্তি হওয়ার পর জানতে পারি ওখানের ড্রেস ও ঐ সাদা শার্ট এবং কালো প্যান্ট। এটা দেখে বেশ ভালো লেগেছিল কারণ ঐ পোষাকের সঙ্গে তো আমি অনেক আগে থেকেই পরিচিত হা হা। তারপর আর কী কলেজ লাইফের চার বছর চলল ঐ সেই পোষাক। প্রায় ৯ বছরের বেশি সময় সেই ২০১৪-২০২৩ পর্যন্ত এই একই পোষাক পরিধান করে সবচাইতে বেশি সময় কাটিয়েছি আমি। কিন্তু সবকিছুরই শেষ আছে। শেষমেশ আমার ঐ সাদা শার্ট পড়ার সময় টা শেষ হয়েছে। গত মঙ্গলবার শেষ ব্যবহারিক পরীক্ষা দেওয়ার মধ্যে শেষবার পরিধাণ করলাম ঐ সাদা শার্ট আর কালো প্যান্ট টা। এরপর হয়তো কোনো ইউনিভার্সিটি তে ভর্তি হবো কিন্তু সেখানে তো আর নির্দিষ্ট পোষাকের বিধান নেই। আর থাকলেও কী সেই সাদা শার্ট আর কালো প্যান্ট হবে। যাইহোক শেষ পযর্ন্ত নয় বছরের যাএা শেষ হলো।
------- | ------ |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @emon42 |
ডিভাইস | VIVO Y91C |
সময় | আগষ্ট,২০২৩ |
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.