!! অসমাপ্ত উপন‍্যাস!! পর্ব-১। ১০% বেনিফেসায়ারি @shy-fox এর জন্য।

বিজু বাবু ভালো নাম বিজেন্দ্রলাল বিহারী। গ্রামের সবাই তাকে বিজু বাবু বলে থাকে। যদিও গ্রামের মানুষের সাথে তার কালে ভদ্রে মানে বছর ছ'মাসে একবার দেখা হয়। বিজু বাবুর পূর্বপুরুষ জমিদার ছিল। যদিও সেই জমিদারি এখন নেই থাকার মধ্যে শুধু রাজপ্রাসাদের মতো বাড়িটা। তাও আবার একটু জংলা এবং অপরিষ্কার। এই বাড়িতে সেরকম কারো চলাচল নেই। শুধু বিজু বাবু তার চাকর হীরালাল এবং তার পোষা বিড়াল সাইমন এখানে থাকে। হীরালালের বাড়ি এই গ্রামে না সে অনেকদূরের গ্রামে থাকে। বিজু বাবু সংসার ধর্ম করেন নাই। সেজন্য তার ছেলে মেয়েও নাই। তার বাবা রঘুদেব বিহারী বেঁচে থাকতে অনেক চেষ্টা করেও ছেলেকে বিয়ে দিতে পারেননি। বিজু বাবু একজন লেখক। বাপ দাদার জমিদারি ছিল সেজন্য তাকে ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করতে হয় নি। লেখালেখি হৃদয় থেকে ভালোবাসতেন তাই লিখতেন। এবং বাপ দাদার যা সম্পওি আছে তাই বিক্রি করছে চলছে। মোটামুটি বেশ নাম করে উঠেছেন লেখালেখি করে। বেশ কয়েকটা উপন‍্যাস কয়েকটি প্রকাশনী ছেপেছিল বটে। মোটামুটি যারা বইপোকা আছে তারা বিজেন্দ্রলাল বিহারীকে চিনেন। অনেক বড় বাড়িতে মাএ তিনটা প্রাণ। হীরালাল চাকর হলেও বিজু বাবু তাকে অনেক কাছের মানুষ মনে করে হীরালালও তাই। হীরালালের কাজ হলো তিনবেলা খাবার তৈরি আর বিজু বাবুর যখন দরকার হয় ঘন্টায় ঘন্টায় চা কফি এইসব দেওয়া। এতোবড় বাড়িতে তিনটা প্রাণ। তাই বাড়ির এক কোণের কয়টি রুম এখন ব‍্যবহারযোগ‍্য আর বাকিগুলো নোংরা অপরিষ্কার। হীরালাল একা মানুষ পেরেও উঠে না।

---

---

বিজু বাবুর ঘরে একটা খাট, খাটের পাশেই টেবিল এবং টেবিলের সামনে একটা জানালা এবং জানালার বাইরে একটা নিমগাছ। বিজুবাবু শুধু রাতে ঘুমানো এবং বিকেলে হাঁটতে যাওয়ার সময় ব‍্যতিত সবসময়ই টেবিলে বসে থাকেন। লেখক বলে কথা অভ‍্যাসও আছে। তার বয়স এই ষাট পাড় হয়ে গেল। তার পোষা বিড়াল সাইমন তার অনেক পছন্দের। তিনি যখন লেখালেখি করেন সাইমন পাশেই বসে থাকে। এবং বিজুবাবু মাঝে মাঝে সাইমনের গায়ে হাত বুলিয়ে দেয় আর বলে সাইমন..... সাই....মন এবং সেই সময়ে তার বসে থাকা চেয়ার দুলতে থাকে। বিজুবাবু মোটামুটি সুখি মানুষ। তাকে বাড়ি থেকে বের হতে হয় না বাজার যা করা লাগে এবং কোনো প্রকাশক কে চিঠি দিতে হলে সেটা হীরালাল দিয়ে আসে। ইদানিং বিজুবাবু বেশ গম্ভীর ভাব নিয়ে থাকে। এবং তিনি একটি নতুন উপন‍্যাস লিখছেন। হীরালাল বিষয়টি খেয়াল করে এই উপন‍্যাস টা লেখা শুরু করার পর থেকেই মোটামুটি বিজুবাবু একেবারে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছে। আগে যাও বা বিকেলে ঘর থেকে বের হতো এখন তাও বের হয় না।

---

---

ও এই বাড়িতে আরও একজন মাঝে মাঝেই আসে। তিনি হলেন বিজু বাবুর বাল‍্যবন্ধু গনেশ মজুমদার। তিনি সপ্তাহে এই একবার আসে। যখন গনেশবাবু এখানে আসে তখন বিজুবাবু ও গনেসবাবু দুজন একসঙ্গে দাবা খেলে। গনেশ বাবুর অবশ‍্য পরিবার আছে তার বাড়িও এই গ্রামেই তবে একটু দূরে। সেজন্য সে সপ্তাহে ঐ একদিন আসে। গনেশবাবু অবশ‍্য ওইসব উপন‍্যাস খুব একটা বুঝে না। এইজন্য বিজুবাবু প্রায়ই বলে কী রে গনশা সারাজীবন মূর্খ হয়েই থেকে যাবি। তোদের মতো যদি সবাই হয় তাহলে বাঙালির সাহিত্যচর্চা গোল্লায় যাবে এবং বক্রিমচন্দ্র শরৎচন্দ্র আর আসবে না। এসব শুনে গনেশবাবু শুধু হাসে। যাইহোক বেশ কয়েক সপ্তাহ গনেশবাবু বিজুবাবুর সাথে দেখা করতে আসে না দাবাও খেলে না। হীরালাল ভাবে এই জন‍্যই হয়তো বাবুর মন খারাপ। তাই হীরালাল গনেশ বাবুর বাড়ি যায়। এবং তাকে বলে সে যেন গিয়ে বিজু বাবুর সাথে দেখা করে। পরের দিন গনেশ বাবু গিয়ে বলে কী রে ব‍েটা বিজু তোর কী হয়েছে হীরালাল বলল তোর নাকী মন খারাপ। বিজুবাবু একটা দীর্ঘ নিশ্বাস ফেললেন কোনো কথা বললেন না..........

চলবে........

---

---

সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।

---

---

---

---

---

---