সব সেরার হয়ে উঠা হয় না সেরা।
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
"কালের যাএাপথে কত সম্ভাবনাময় প্রতিভা হারিয়ে যায়। কেই বা রাখে তার খবর।" এই কথাটা বলার যথেষ্ট কারণ আছে। আমাদের পৃথিবী হয়তো সব কিংবদন্তি কে ইতিহাসে জায়গা করে দিতে পারেনি। কেউ কেউ চাপা পড়ে গেছে সেজন্য অনেকেই সর্বকালের সেরা হয়েও এক কোণে পড়ে আছে। এখনকার জেনারেশনের কেউ তার সম্পর্কে জানে না। কিছুদিন আগে শেষ হলো ফিফা বিশ্বকাপ। মেসি বিশ্বকাপ টা নিয়ে চলে গেল পেলে মারাদোনার কাতারে। কিন্তু কিছু সেরা সবসময়ই গোপনে থেকে যায় বা তাদের গোপনে রেখে দেওয়া হয়। পেলে মারাদোনা,গারিঞ্চা, ম্যারিও ক্যাম্পাস, এরা ঐ সময়ের খেলোয়ার হলেও এখনকার ছেলে মেয়েদের মুখে মুখে তাদের নাম ঘোরে। কিন্তু এমন একজন আছে যে এদের সারির খেলোয়ার যাকে বলা হয় মর্ডান ফুটবলের কারিগর তাকে এখনকার জেনারেশন চিনে না বললেই চলে। ইতিহাসের কোনো এক কোণে রয়ে গেছে তার নাম।
"ইয়োহান এনড্রিক ক্রুইফ" নামটা অনেকেই চিনতে পারেন শুনে থাকতে পারেন। ক্রুইফ ছিলেন আধুনিক শৈল্পিক ফুটবলের জনক অনেকেই বলে থাকে। ক্রুইফ নেদারল্যান্ডসে জন্মগ্রহণ করেন এবং তিনি বার্সেলোনার সাবেক লিজেন্ডারি খেলোয়ার। ১৯৭১,১৯৭৩,১৯৭৪ সালে ইউরোপের সেরা খেলোয়ারের পুরষ্কার মানে ব্যালন ডিঅর অর্জন করে ক্রুইফ। এছাড়া নিজের দলকে তুলেছিলেন ১৯৭৪ বিশ্বকাপের ফাইনালে যদিও চ্যাম্পিয়ন হওয়া হয়নি। কিন্তু সেই আসরের সেরা খেলোয়ার ছিল ক্রুইফ। ক্রুইফ এমন ফুটবল খেলত যেটা তার আগে কেউ খেলার কথা চিনতাও করনি। ক্রুইফ ছিল একজন ক্রিয়েটিভ প্লেমেকার। বার্সেলোনার অলিতে গলিতে ঘুরলে হয়তো এখনো কিছু স্মৃতি পাওয়া যাবে ক্রুইফের। কিন্তু ক্রুইফের যেটা প্রাপ্য ছিল সেটা সে পায়নি এবং রয়ে গেছে আড়ালে।
১৯৭৮ সালের বিশ্বকাপ আয়োজন করা হয় আর্জেন্টিনায়। তার আগে দলটা বেশ ভালো ফুটবল খেললেও চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি। ঠিক তার আগের বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডের পারফরম্যান্স ছিল অসাধারণ। গতবারের রানার্সআপ ছিল তারা। এবং সেই দলের প্রাণভোমরা ছিল ইয়োহান ক্রুইফ। তার সমসাময়িক ঐরকম প্রতিভাবান খেলোয়ার আর ছিল না। যথারীতি ১৯৭৮ বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডস বিশ্বকাপ দলে জায়গা করে নেন ইয়োহান ক্রুইফ। কিন্তু তার বিশ্বকাপ টা খেলা হয়ে উঠেনি। কারণ তার বউ ছেলে মেয়েকে আটকে রাখা হয় এবং চাপের মুখে ফেলা হয় ক্রুইফকে। অবশেষে ক্রুইফ তাদের শর্ত মেনে নেয় এবং বিশ্বকাপের আগ মূহুর্তে অবসর নিয়ে নেয়। সেই সময়ে তার কাছে কারণ জিজ্ঞেস করা হলেও তিনি কোনো উওর দেননি। কারণ তার পরিবারের সদস্যদের জীবন ছিল সংকটে। যদিও পরে তিনি স্বীকার করেন কী কারণে বিশ্বকাপের আগে অবসর ঘোষণা করেন।
পরবর্তীতে ধারণা করা হয় সেটা ছিল তৎকালীন বিশ্বকাপ আয়োজক দেশ আর্জেন্টাইন স্বৈরাচারী সরকারের একটা কৌশল মাএ। কারণ তারা চেয়েছিল যেকোন মূল্যে বিশ্বকাপ টা নিজেদের দেশেই রাখতে। আশ্চর্যজনকভাবে সেই আসরে পেরুর বিপক্ষে আর্জেন্টিনার বিতর্কিত ৬-০ গোলের জয়ের পরে ফাইনালে যায় নেদারল্যান্ডস এবং আর্জেন্টিনা। যেহেতু ১৯৭৮ টুর্নামেন্ট টা ছিল রাউন্ড রবিন সিস্টেমে সেজন্য হয়তো আর্জেন্টাইন সরকার জানতো ফাইনালে তারা প্রতিপক্ষ হিসেবে নেদারল্যান্ড কেই পাবে। অন্য গ্রুপে নেদারল্যান্ড ছিল ফেভারিট। সেজন্যই দলের সবচেয়ে বড় তারকা ক্রুইফকে কৌশলে সরিয়ে দেয়। বিশ্বকাপ না খেলে ক্রুইফ তার জাতির কাছে বিশ্বাসঘাতকে পরিণত হয় এবং পরবর্তীতে নেদারল্যান্ডস ছেড়ে স্পেনে চলে আসে। কী আশ্চর্য না যে ক্রুইফের হওয়ার কথা ছিল জাতীয় নায়ক কিন্তু সে হয়ে যায় ঘৃণার পাএ। হয়তো ঐরকম একটা আত্মঘাতি ঘটনাই ক্রুইফের নামকে ক্রমেই মুছে দিচ্ছে ফুটবল ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মুখ থেকে। দিনশেষে সত্যি সব সেরার, সেরা হয়ে উঠা হয় না।
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
যারা ফুটবল দেখে কিংবা অল্প হলেও খোঁজ রাখে তাদের কাছে ক্রয়েফ চিরকালের সেরার মধ্যে একজন। অনেক তথ্য পেলাম।
ঠিক বলেছেন দাদা💕💕।।