ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্যুর (পর্ব:১)।
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
ডিপ্লোমা প্রায় শেষ পর্যায়ে। আর দুই সেমিষ্ঠার তবে কলেজে থাকব আর মাএ এক সেমিষ্টার। কিন্তু এখন পযর্ন্ত আমরা কোনো ট্যুরে যায়নি। এজন্য আমাদের মন যেমন খারাপ ছিল স্যার রাও কথা শোনাত। কিন্তু সবমিলিয়ে আর হয়ে উঠেনি যাওয়া। ১২ জানুয়ারি আমাদের ইলেকট্রিক্যাল ডিপার্টমেন্টের রফি উদ্দিন বাবলু স্যার ক্লাসে এসেই বলেন আগামী ১৭ জানুয়ারি তোমাদের ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্যুর। বেশি না ৩০০ টাকা করে চাঁদা। এবং যাব খুব কাছেই হার্ডিঞ্জ ব্রীজ সংলগ্ন একটা জায়গা এবং সেখান থেকে ভেড়ামারা পিজিসিবি(পাওয়ার গ্রীড কোম্পানি অব বাংলাদেশ ) বিদ্যুৎ সঞ্চালন কেন্দ্রে। স্যারের এইরকম ঘোষণাই আমরা বেশ খুশি হয়। যাইহোক পরে আমাদের ম্যাসেনজার গ্রুপে সবাইকে জানিয়ে দেওয়া হয় যেন সবাই আগামী ১৫ জানুয়ারি টাকা জমা দেয়। বলতে গেলে সবাই উৎসাহী ছিল। সবাই অনেক উৎসাহের সঙ্গে টাকা জমা দেয়। আমাদের গ্রুপে ছিল ৪২ জন। আমাদের প্রথম শিফটের বি গ্রুপে ছিল ৫০ জন। এবং দ্বিতীয় শিফটের দুই গ্রুপ মিলে ছিল ৬০ জন এর মতো। আমরা তিনটা বাস ভাড়া করি।
১৬ জানুয়ারি সোমবারের দিন আমার কিছু বন্ধু এবং বাবলু স্যার মিলে সমস্ত আয়োজন শেষ করে। রাতে আমাদের টাইম দেওয়া হয় ৯:৩০ টার মধ্যে সবাইকে কলেজে আসতে হবে। আমাদের বাস ছাড়বে ১০ টার সময়। আমি সকালে ঘুম থেকে উঠি ৮ টার সময়। যেহুতু শীতের সময় সেজন্য কিছুটা দেরী হয়ে যায়। যাইহোক ঘুম থেকে উঠে আমি ফ্রেশ হয়ে হালকা গরম পানি দিয়ে গোসল করে ফেলি। এরপর তৈরি হয়ে বাসা থেকে বের হয় ৯ টার সময়। আমার সঙ্গে ছিল আমার বন্ধু তুহিন নাভিদ এবং ইকরা। যথারীতি আমরা কলেজে চলে যায় ৯:৪৫ এর সময়। গিয়ে দেখি আমাদের বাস দাঁড়িয়ে আছে এবং আমাদের অধিকাংশ ফ্রেন্ড চলে এসেছে। প্রথমে আমি কলেজের মধ্যে যায়। এরপর সবাই মিলে কলেড মাঠে গ্রুপ ফটো উঠি। দেখতে দেখতে সবাই চলে আসে আমাদের গ্রুপের। একে একে আমরা সবাই বাসে উঠতে থাকে। আমাদের বাসে সংখ্যার থেকে সিট বেশি ছিল সেজন্য অসুবিধা হয়নি। সিট থাকায় আমাদের ডিপার্টমেন্টের প্রধান ইয়াকুব আলী স্যার সহ আরও কয়েকজন স্যার আমাদের বাসে উঠে।
ঠিক ১০:১৫ এর সময়ে আমাদের বাস ছাড়া হয়। বাসের মধ্যে একটা সাউন্ড বক্স ছিল। আমার অনেক ফ্রেন্ড গানের তালে তালে নাচছিল। কারণ এটা আমাদের কলেজ লাইফের প্রথম ট্যুর সেজন্য কোনো বাধ্যবাকতা ছিল না। তবে আমি আমার সিটে চুপচাপ বসে ছিলাম। আমি আবার ওসব নাচ টাচ পারি না। শুধু দেখছিলাম। রাস্তা কিছুটা খারাপ ছিল। যাইহোক আমরা আমাদের প্রথম স্পটে পৌঁছে যায় ১১:৩০ টা এর সময়। বাস থেকে নেমেই আমরা সকালের নাস্তা করে নেয়। এরপর আমার বন্ধুরা স্যারদের সঙ্গে ফটোগ্রাফি করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। আমিও কিছু ছবি উঠি। আমার বেশ কিছু ফ্রেন্ড ডিএসএলআর ক্যামেরা নিয়ে গিয়েছিল। এখানে আমরা বেশিক্ষণ থাকব না। আমরা এখানে এসেছি অনেক কাজে। যাইহোক জায়গাটা হলো হার্ডিঞ্জ ব্রীজ সংলগ্ন। ব্রিটিশ শাসনামলে লর্ড হার্ডিঞ্জ এই ব্রীজটা নির্মাণ করেন। এটা বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রেলসেতু হিসেবে পরিচিত। এবং নদীর ওপারে রয়েছে রুপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। যদিও কাজ চলমান রয়েছে।
যাইহোক আমরা এখানে এসেছি থিওডেলাইট দিয়ে ২৩২ কেভি লাইন বহনকৃত টাওয়ারের উচ্চতা পরিমাপ করতে। আমাদের থিওডেলাইট টা ছিল অ্যানালগ। সেজন্য একটু বেশিই সময় লাগে। তব শেষমেশ আমরা টাওয়ারের উচ্চতা পরিমাপে সফল হয়। তবে আমরা হাতে গোনা কয়েকজন করেছিলাম কাজটা। এবং বাকিরা সবাই নিজেদের মতো ঘোরাঘুরিতে ব্যস্ত ছিল। যাইহোক সেটা যার যার ব্যাপার। এরপর ১ টার সময় আমরা আমাদের বাসের কাছে ফিরে যায়। এখান থেকে এখন আমাদের আবার যাএা শুরু হবে। আমাদের পরবর্তী গন্তব্য ভেড়ামারা পিছিসিবি বিদ্যুও সঞ্চালন কেন্দ্র। আমাদের বাস ছেড়ে দেয়। এখান থেকে পিজিসিবির দূরত্ব বেশি না। মোটামুটি ৩০ মিনিট মতো লাগবে। ঠিক সময়ে আমাদের বাস পৌছে যায় সেখানে।।
------- | ------ |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @emon42 |
ডিভাইস | VIVO Y91C |
সময় | জানুয়ারি ,২০২৩ |
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
কোথাও শিক্ষা সফরে গেলে বাসের মধ্যে লাফালাফি করাটা বোকামি ছাড়া কিছুই নয়। হয়তো অনেকে বলে থাকে এটা আনন্দ কিন্তু আমার কাছে আনন্দ মনে হয় না। আপনি চুপচাপ ছিলেন এটাই বেটার কারণ মাথা ধরার ভয় ছিল না। আর শিক্ষা সফরে গেলে পারে অনেক বিষয় সম্পর্কে অবগত হওয়া যায়, মন ভালো থাকে, নতুন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হওয়া যায়। যা ভবিষ্যতে কাজে লাগে। বিস্তারিত পরে বুঝতে পারলাম সুন্দর একটা আনন্দঘন মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন বন্ধুদের সাথে।