হারিয়ে যাওয়া দিনগুলো, ( পর্ব :3 )
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
২০২২ সালের মে মাসের কথা। এইতো সপ্তাহখানেক হলো ইদুল ফিতর এর। ঐসময়ে আমি এবং আমার বন্ধু লিখন প্রচুর ঘোরাঘুরি করতাম। আমার পরীক্ষাও শেষ হয়ে গিয়েছিল এবং তখনও নতুন সেমিষ্টার শুরু হয়নি। সেজন্যই একটু বেশি ঘোরাঘুরি হতো। আমাদের বাড়ি থেকে মোটা দশ কিলোমিটার দূরেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়ি। প্রতিবছর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মজয়ন্তী ২৫ শে বৈশাখ বা ৮ ই মে সেখানে মেলা হয়। কিন্তু তার আগে আমি কখনোই সেই মেলায় যায়নি। ঐদিন ছিল রবিবার। একেবারে সন্ধ্যার সময় আমার বন্ধু লিখন আমাকে বলে ইমন চল মেলায় যায়। লিখনের কথাটা শোনার পর আমি আর দ্বিতীয় বার ভাবিনি। আমি বললাম ঠিক আছে চল। ঠিক আছে ২০ মিনিট পর কুমারখালী বাসস্ট্যান্ডে দেখা হচ্ছে। যেমন কথা তেমন কাজ। কিন্তু প্রতিবারের মতো লিখন সেদিন দেরি করেছিল হা হা। যেটা ও সবসময়ই করে থাকে। কিন্তু এটা এখন আমার অভ্যাস হয়ে গিয়েছে।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাড়ির রাস্তায় ঢুকতেই দেখি বিশাল একটা গেট। এবং অসংখ্য মানুষ। নিরাপত্তার জন্য বেশ ভালো সংখ্যক পুলিশ থাকে এইখানে। মোটামুটি ৮ টার দিকে আমরা মেলায় প্রবেশ করি। প্রথমে আমরা মেলার দিকে না গিয়ে কুঠিবাড়ির আঙ্গিনায় যায়। দেখি ফাকা জায়গা টাই একটা গানের অনুষ্ঠান হচ্ছে। যেখানে অনেক ভালো গায়ক গায়িকা রবীন্দ্র সংগীত পরিবেশন করছিল। আর রবীন্দ্র সংগীত ভালো লাগে না এমন বাঙালি খুব কম আছে। ঐসময়ে পুরো এড়িয়া টা রঙিন আলো দিয়ে সাজানো হয়। সেদিন বেশ লাগছিল জায়গা টা। ওখানে ঘোরাঘুরি করে আমার এবং লিখনের বেশ ক্ষুদা লেগে গিয়েছিল। সেজন্যই আমরা কিছু খাওয়ার জন্য এবং ঘুরে দেখার জন্য বাইরে এসে আসল মেলার মধ্যে ঢুকেছিলাম। আমরা দুজন খাওয়ার শুরু করেছিলাম চিকেন ফ্রাই দিয়ে। যদিও সেটা আমার খুব একটা ভালো লাগছিল না
তারপর একে একে ফুসকা, গরম জিলেপি সফট ড্রিংকস সবকিছুই খেতে থাকি। সাধারণত মেলায় গেলে অনেক হাবিজাবি খাওয়া হয়ে যায়। যেটা চেষ্টা করলেও আমরা আটকাতে পারিনা নিজেদের। এরপর আমরা যায় কেনাকাটা করতে। যদিও আমার সেরকম কেনাকাটার কিছু ছিল না। কিন্তু লিখন বেশ অনেক কিছুই কিনেছিল। লিখন তার গার্লফ্রেন্ডের জন্য চুড়ি দেখছিল বার বার। চুরি গুলো আমারও বেশ ভালো লেগেছিল। কিন্তু ওগুলো আমার নেওয়া এবং পানিতে ফেলে দেওয়া একই কথা। দুইটাই অপচয় হবে কোন কাজে লাগবে না। কিন্তু লিখন কিনছিল চুড়িগুলো ওর গার্লফ্রেন্ডের জন্য। তারপর আমরা অনেক কিছুই কেনার চেষ্টা করেছিলাম মাথার ক্যাপ চশমা বা খেলার ব্যাট। কিন্তু কোন কিছুই আমাদের চাহিদা এবং দামের সঙ্গে সমন্বয় ঘটেনি। সেজন্য সেরকম কিছু আমি ক্রয়ও করিনি সেদিন।
এরপর লিখন নাগরদোলা দেখে বলে আমি উঠব। আমি বলি ঠিক আছে উঠ সমস্যা নেই। কিন্তু সেদিন ও বলে তোকেও উঠতে হবে। ওঠাতে আমার বেশ ভয় করে। সেজন্য আমি এড়িয়ে যেতাম। কিন্তু সেদিন আর এড়িয়ে যেতে পারিনি। লিখনের জোড়াজুড়িতে উঠলাম নাগরদোলাতে। কিছু টা ভয় করেছিল। কিন্তু বিশ্বাস করেন যতটা ভয় করছিল তার চেয়ে বহুগুণ বেশি আনন্দ পেয়েছিলাম। যদিও তারপর আর আমি কখনো নাগরদোলায় উঠিনি। ওইটাই প্রথম এবং শেষবার ছিল। সেদিনের ঐ মূহূর্তটা আমার আজকেও মনে আছে। তারপর আমরা মেলা থেকে বের হয়ে যায়। সেদিন আমার বাড়ি বাড়ি ফিরতে ফিরতে রাত ১২ টা অতিবাহিত হয়ে গিয়েছিল। এখনো প্রতিবছর ৮ ই মে নিয়মতান্ত্রিকভাবেই ওখানে মেলা হয়। লোকজনের সমাগম হয়। সবকিছু আগের মতোই আছে। কিন্তু আমার এবং লিখনের আর যাওয়া হয়না। দুজন আর একএিত হতে পারিনা। আবার আমি থাকলে একা একা যেতেও ইচ্ছা করে না। ছবিগুলো দেখলে যতটা ভালো লাগে। ঠিক দিনগুলো হারিয়ে যাওয়ার জন্য ততটাই খারাপ লাগে আমার কাছে।
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।
রাতে এত সুন্দর লাগে আমি ও কখনো দেখিনি রবীন্দ্র কুঠিবাড়ি। আমি দুইবার গিয়েছিলাম। আমার দুই বার ঈ ভালো লেগেছে আবারও যেতে মন চায়। খুব শীঘ্রই যাব রবীন্দ্র কুঠিবাড়ি। আপনি ও আপনার বন্ধু মিলে যে রাত্রে এত সুন্দর মুহূর্ত উদযাপন করেছেন বেশি ভালই লাগল এবং অনেক সুন্দর ভাবে ছবিগুলো ফুটে উঠেছে।
আসলে নাগরদোল্লায় চড়ার অভিজ্ঞতা আমার রয়েছে আমি রাজশাহী চিড়িয়াখানাতে একবার উঠেছিলাম। যাইহোক সুন্দর একটি পোস্ট আজকে আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। অবশ্য আজ পর্যন্ত এই কুঠিবাড়িতে যাওয়া হয়নি অনেকে যা আশা করছে রবি ঠাকুরের স্থানটা দেখে আসে কিন্তু বাড়ির পাশে হওয়া সত্বেও যাওয়া হয়নি। চেষ্টা করব যে কোন মুহূর্তে দেখার জন্য। বেশ ভালো লাগলো সুন্দরভাবে আপনি উপস্থাপন করেছেন সমস্ত বিষয়গুলো, তাই খুশি হলাম অনেক।
যে দিন যায় তা কখনো ফিরে আসে না।সবকিছুর যেমন শুরু আছে তেমনি পরিসমাপ্তিও রয়েছে।আপনার বাড়ি থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়ি মাত্র দশ কিলোমিটার জেনে ভালো লাগলো।আসলে মেলা দেখতে আমারও খুবই ভালো লাগে।সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সবকিছু কেমন যেন ফ্যাকাসে হয়ে যায়!গরম জিলিপির ছবি দেখে লোভ সামলানো দায় হয়ে পড়ছে,ছবিগুলি ভালো ছিল।ধন্যবাদ ভাইয়া।