আমার নিজের লেখা গল্প।। মায়ের নিঃস্বার্থ ত্যাগ ও ভালোবাসা।। পর্ব-০৫

in #blog11 days ago

আসসালামু আলাইকুম
প্রিয়, পাঠকগণ,

সে কী গান! সেই একঘেয়ে হেঁড়ে গলায় আঁতকে উঠত মানুষ। কুৎসিত আওয়াজটা গলা থেকে বেরিয়ে এসে গোঁফের সঙ্গে যেন জড়িয়ে যেত, খাওয়া রুটির গুঁড়োগুলো বেরিয়ে আসতে চাইত ওর গানের ঠেলায়। বসে বসে মোটা মোটা আঙুল দিয়ে দাড়ি-গোঁফে বিলি কাটত আর গান গেয়ে যেত একমনে। গানের কথা একটিও বোঝা যেত না। টানা টানা সুরটা শীতের রাতে নেকড়ে বাঘের কান্নার কথা মনে পড়িয়ে দিত। যতক্ষণ বোতলে ভদ্‌কা থাকত ততক্ষণ গান চলত। তারপর হয় বেঞ্চিতে এলিয়ে পড়ত, নয়তো টেবিলে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়ত; গভীর একটানা ঘুম, সেই যতক্ষণ না ভোরবেলায় কলের বাঁশি বাজে। কুকুরটা ওর পাশে শুয়ে ঘুমোত।
লোকটা মারা গেল একটা নাড়ি ছিঁড়ে। পাঁচদিন বিছানায় পড়ে ছটফট করল। মুখটা কালি মেরে গিয়েছিল। চোখ সজোরে বন্ধ করে দাঁতগুলো কড়মড় করত আর থেকে থেকে বৌকে বলত:

IMG20240803122748.jpg

'দে, দে আর্সেনিক দে... মেরে ফেল্ আমায়...'

ডাক্তার বলে গেল, পুলিশ লাগাও। আর একটা অপারেশন করতে হবে, আজই রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া দরকার।

হাঁপাতে হাঁপাতে মিখাইল বলল, 'শালা কুত্তীর বাচ্চা! তোর কেরদানি ছাড়াই মরতে পারব। ভাগ শালা!'

ডাক্তার চলে গেলে স্ত্রী চোখের জলে ভেসে বহু কাকুতি-মিনতি করল অপারেশন করাবার জন্য। মিখাইল স্ত্রীর দিকে মুঠি বাগিয়ে বলল শুধু, 'দাঁড়া ভালো যদি হই, তোকে মজাটা দেখাব!'

সকালবেলা কারখানার বাঁশিও বাজল, আর মিখাইলও চোখ বুজল চিরদিনের মতো। কফিনে শুল মিখাইল, মুখটা খোলা, ভুরু দুটো রাগে কোঁচকানো। ওর বৌ, ছেলে, কুকুরটা, দানিলো ভেসভশ্চিকভ (একটা দাগী চোর, মাতাল; কারখানা থেকে বিতাড়িত), আর বস্তি থেকে জনকয় ভিখারি গিয়ে ওকে কবর দিয়ে এল। বৌটা নিঃশব্দে একটুখানি কাঁদল। পাভেল কাঁদল না। রাস্তায় কফিন দেখে লোকে থেমে পড়ে বুকের ওপর ক্রুশচিহ্ন করে বলাবলি করতে লাগল:

'পেলাগেয়া এবার বাঁচল!'

কয়েকজন বলল, 'যেমন কুকুর ছিল, তেমনি কুকুরের মতোই টেসে গেছে!' কবর দেওয়া হয়ে গেলে সবাই চলে গেল; কিন্তু কুকুরটা সেই খোঁড়া মাটির ওপর বসে বসে অনেকক্ষণ ধরে কবরটা শুঁকতে লাগল। কদিন পরে কে যেন মেরে ফেলল কুকুরটাকে...

IMG20240803122739.jpg

For work I use:


মোবাইল
realme C25s
ফটোগ্রাফার
@dreamlife10
লোকেশন
ঝিনাইদহ, বাংলাদেশ
ছবি তোলা
মাঠে

বাপ মারা যাবার সপ্তাহ দু-এক পরে এক রবিবার সাংঘাতিক মাতাল হয়ে বাড়ি ফিরল পাভেল ভাসভ। টলতে টলতে ঘরে ঢুকে ঘরের মাথার দিককার চেয়ারটায় ধপ্ করে বসে পড়ে বাপের মতো করে টেবিল পিটিয়ে চিৎকার করে হুকুম করল মাকে, 'খানা লাও!'

কাছে এসে পাশের চেয়ারে বসে মা দুইহাতে ছেলেকে বুকে জড়িয়ে ধরল। মা'র কাঁধে ঠেলা মেরে সরিয়ে দিয়ে পাভেল বলে উঠল:

চলবে..........

ধন্যবাদ জানিয়ে আজ এখানে শেষ করছি। দেখা হবে আগামী পর্বে। আল্লাহ হাফেজ।।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 59605.49
ETH 2607.69
USDT 1.00
SBD 2.42