মানবিক ডাক্তার শেষ পর্ব
হ্যালো বন্ধুরা,
মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি "আমার বাংলা ব্লগ"এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সকল সদস্যগণ,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি আপনারা সকলেই ভালো আছেন,সুস্থ আছেন?পরম করুণাময় ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় আমিও পরিবারের সবাইকে সাথে নিয়ে ভালো আছি সুস্থ আছি।
আমি @bristychaki "আমার বাংলা ব্লগ"এর আমি একজন নিয়মিত ইউজার। আমি বাংলাদেশের গাইবান্ধা জেলা থেকে আপনাদের সাথে যুক্ত আছি। প্রতিদিনের মতো আমি আজও নতুন একটি ব্লগ নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি।আশাকরি আজকের ব্লগ টি আপনাদের সবার ভালো লাগবে।
গত পোস্টে আপনারা সকলেই ডাক্তার সম্পর্কে কিছু কথা জানতে পেরেছেন,আজ আমি বাকি কথা গুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করছি।
সেদিন আসিফ রব্বানী স্যারের কথা শোনার পর আমিও চিন্তা করে দেখলাম যে প্রাইভেট এ ডাক্তার দেখানোর চেয়ে সরকারি মেডিকেল এ ডাক্তার দেখানো টা আমার জন্য খুবই ভালো হয়।এতে করে বেশকিছু টাকা বেঁচে যাবে। তারপর থেকে আমি যখনই স্যারের কাছে যেতাম তার আগেরদিন স্যার কে মেসেজ এ জানাতাম যে স্যার আগামীকাল আমি আপনার সাথে সাক্ষাৎ করতে চাই!স্যার সাথে সাথে না হলেও পরবর্তী সময়ে উত্তর দিতেন। কখনো হয়তো বলতেন যে আমি থাকবো না আপনি অন্য দিন আসেন বা আছি কালকেই আসেন।স্যারের কথামতো খুব সকাল সকাল বাসা থেকে বের হয়ে বগুড়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে যাই।সকাল ৮ টার মধ্যে বগুড়ায় পৌঁছে লাইন ধরে টিকিট কেটে আবার ডাক্তার দেখানোর লাইনে দাঁড়িয়ে পড়ি।সকাল ৯ টায় স্যার আসেন যদি লাইনে আমাকে চোখে পড়ে তাহলে স্যার সাথে সাথে আমাকে ডেকে নেন এবং খুবই যত্নসহকারে সকল বিষয় গুলো জেনে কি করতে হবে পরামর্শ দেন।তারপর টেস্ট করতে সোজা মেডিকেল এর ল্যাবে চলে যাই তারপর ব্লাড দিয়ে তিন ঘন্টা অপেক্ষা করি যাতে করে একদিনের মধ্যে সবকিছু সেরে বাসায় ফিরতে পারি।মেডিকেল এ বসে সময় কাটানো টা খুবই কষ্টদায়ক কিন্তু তারপরও থাকতে হয় তা না হলে পরে আবারও যেতে হবে এই ভেবে।
অনেক কষ্টে সময় পার করে কাঙ্ক্ষিত টেস্ট এর রিপোর্ট হাতে পাই। তারপর আবার দৌঁড়ে স্যারের কাছে গিয়ে সেগুলো দেখাই।রিপোর্ট দেখে কি কি ঔষধ লাগবে সেগুলো স্যার লিখে দেন তারপর আমি আবার বাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে যাই।এভাবেই চলে আমার চিকিৎসা।মাঝে মাঝে এমনো হয়েছে টেস্ট এর রিপোর্ট পেতে খুবই দেরি হয়ে যাচ্ছে কিন্তু স্যারের অফিস টাইম শেষ হয়ে যাবে।তখন স্যার কে ফোন দিয়ে যদি আমার সমস্যার কথা বলতাম তখন স্যার বলতো টেনশন করতে হবে না,আমি আরও কিছুক্ষণ অপেক্ষা করবো আপনার রিপোর্ট দেখেই তবে বের হবো। তখন কি যে শান্তি লাগতো তা বলার মতো না।
হঠাৎ একদিন জানতে পারি স্যার এখান থেকে বদলি হয়ে জয়পুরহাট মেডিকেল এ চলে যান।তারপর খুবই চিন্তায় পড়ে গেলাম কিভাবে কি করবো।তারপর স্যারকে মেসেজ দিলাম বগুড়ায় কোথায় কিভাবে দেখানো যায়।তখন স্যার বললেন ইবনে সিনা অথবা বগুড়া নার্সিং হোমে দেখাতে হবে।তখন আমি বগুড়া নার্সিং হোমে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম।তার কারণ এখানে বিকেল ৪ টায় বসেন তাহলে দেখানোর পর তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরতে পারবো রাত হবে না। আর ইবনে সিনা হলে অনেক টা রাত হয়ে যায় বাসায় ফিরতে।প্রায় বছরখানেক বগুড়া নার্সিং হোমে স্যারকে দেখাতাম। কিন্তু সেদিন হঠাৎ জানতে পারি স্যার আর বগুড়া নার্সিং হোমে বসেন না তাই বাধ্য হয়েই ইবনে সিনায় দেখাতে হবে।
কয়েকদিন আগে ইবনে সিনায় স্যারকে দেখাতে গেলাম। সবকিছু দেখে স্যার বললেন মোটামুটি ভালোই আছি এখন আগের থেকে শুনে বেশ ভালোই লাগলো।স্যারের পরামর্শ ফি ৭'শ টাকা কিন্তু স্যার আমার প্রেসক্রিপশন এর উপরে পরামর্শ ফি ৪'শ টাকা লিখে দিলেন এবং টেস্ট এর উপরে ৩৫% ডিসকাউন্ট লিখে দিয়েছেন যাতে করে আমার অনেক গুলো টাকা বাঁচে।আমি জীবনে বহু ডাক্তার দেখেছি কিন্তু আসিফ রব্বানী স্যারের মতো মানবিক ডাক্তার কখনো দেখিনি।স্যারের চিকিৎসা যেমন ভালো তেমনি তার গুণ স্যারের কাছে গেলেই কেমন জানি শান্তি অনুভব করি।তার কথা শোনার পর মনে যে শান্তি পাই তাতে করে অনেক টা রোগ কমে যায়।স্যারের উন্নত মানসিকতা যা আর দশজন ডাক্তারের সাথে কোনোভাবেই যায় না। এখনকার দিনে বেশিরভাগ ডাক্তার নামক কষাই আর সেই জায়গা থেকে আসিফ রব্বানী স্যার সম্পূর্ণ আলাদা।
আমি সবসময়ই মন থেকে স্যারের জন্য অনেক অনেক প্রার্থনা করি যাতে করে স্যার অনেক অনেক ভালো থাকেন এবং এভাবেই সারাজীবন মানুষের সেবা দিতে পারেন।আপনারা সকলেই স্যারের জন্য আশীর্বাদ দোয়া করবেন যাতে সুস্থভাবে মানুষের সেবা করতে পারেন।সবাই ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন এই প্রত্যাশা করে এখানেই শেষ করছি।
ধন্যবাদ।
আমাদের উইটনেস কে সাপোর্ট করুন।
OR
দারুন একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন দিদি। আসলে মানুষের ব্যবহারে কিন্তু মানুষের পরিচয়। আপনি খুব সুন্দর করে ডাক্তার সাহেবের বিষয়টি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। বাংলাদেশের সব ডাক্তার এ ধরনের মন মানসিকতায় গড়ে উঠুক।
জ্বি আপু মানুষের ব্যবহারে তার পরিচয়।বাংলাদেশের প্রতিটি ডাক্তারের মানসিকতা যদি এরকম হয় তাহলে মানুষের ভোগান্তি অনেকটাই কমে যাবে।ধন্যবাদ আপু।