একটু চালাক না হলে দুনিয়ায় টেকা খুবই মুশকিল।
হ্যালো বন্ধুরা
সবাইকে আমার নমস্কার,আদাব।আশাকরি আপনারা সকলেই ভালো আছেন,সুস্থ আছেন?ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় আমিও পরিবারের সবাইকে সাথে নিয়ে ভালো আছি।
প্রত্যেক মানুষেরই বুদ্ধি জ্ঞান রয়েছে। তবে অনেকেই বুদ্ধি সঠিক কাজে লাগাতে পারে আবার অনেকেই পারে না। বুদ্ধিমানরা কখনো নিজেকে বুদ্ধিমান বলে গেয়ে বেড়ায় না তারা কাজকে প্রাধান্য দেয়। চালাকি করে অন্যদেরকে ঠকানো চেষ্টা করেনা। বুদ্ধিমানরা নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী কাজ করে যায় এবং জীবনের সফলতা অর্জন করতে পারে।তাই বুদ্ধিকে সঠিক কাজে লাগাতে হবে। বুদ্ধি সঠিক কাজে লাগিয়ে নিজের ও অন্যের ভালো করতে হবে। নিজের বুদ্ধি দ্বারা অন্যের ভালো করতে পারলে অন্যের যেমন উপকার হবে তেমনি নিজের উপকার হবে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে অন্যের ভালো করতে গিয়ে নিজেদের ক্ষতি করে ফেলি সেদিকটাতেও নজর দেওয়া দরকার,তা না হলে আমরা প্রতি পদে পদে ঠকে যাবো।
এইতো সেদিনের কথাই যেমন আমি আমার দুই মেয়েকে নিয়ে গাইবান্ধা সদরে যাচ্ছিলাম,মেয়েদের গানের প্রতিযোগিতা ছিলো।সকাল সাড়ে সাতটায় বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে আছি অপেক্ষা করছি কখন বাস আসবে।কিছুক্ষণের মধ্যেই দেখি আমার পরিচিত একজন তার দুই মেয়েকে নিয়ে এসে হাজির উনিও বাসে করে গাইবান্ধা যাবেন আমাদের গন্তব্য একই ছিলো।তার কারন হলো তার দুই মেয়েও প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবে।আমি ভাবলাম টিকিট টা কেটেই ফেলি কখন আবার হুট করে বাস চলে আসবে।টিকিট কাউন্টারে গেলাম আমার পিছনে পিছনে উনিও টিকিট কাটতে গেলেন।আমি আমার তিনটা টিকিট কাটলাম ৫শত টাকার একটা নোট দিলাম।উনিও টিকিট কেটে ৫শত টাকার একটা নোট এগিয়ে দিলেন তখন কাউন্টারের লোকটি বললেন আমার কাছে ভাঙতি টাকা নেই তাহলে তখন উনি আমাকে বললেন তাহলে তুমি আমার টাকা টা দিয়ে দাও আমি তোমাকে পরে টাকা টা দিয়ে দিবো।আমি ভাবলাম টাকা টা আমি কিভাবে নিবো উনি আমার পরিচিত লোক আর আহামরি কোনো টাকা না যে নিতেই হবে এটা আমি মনে মনে ভাবছি।যাইহোক একসাথে সবাই গন্তব্যে পৌঁছালাম সাড়ে সাত টা থেকে তিন টা পর্যন্ত একসাথে থাকলাম এর মধ্যে উনি বেশ কয়েকবার টুকিটাকি জিনিসপত্র কেনাকাটা করলেন কিন্তু একবারও আমার টাকা টা দিতে চাইলেন না।আমি তখনই ভেবেছি যে উনি আর আমাকে টাকা টা দিবেন না কারন ওনারা একটু বাটপার টাইপের লোক সেটা আমি জানি যাইহোক মাত্র ২৫০ টাকা কোনো ব্যাপার না কতভাবেই তো টাকাপয়সা আমরা খরচ করে থাকি এই ক'টা টাকা না হয় নাই পেলাম এইসব ভেবে নিজের মনকে শান্তনা দিলাম।
তিনটার সময় প্রতিযোগিতা শেষ হলো ফলাফল চার টার পর ঘোষণা করা হবে।সকাল থেকে দীর্ঘ সময় বসে থেকে বাচ্চারা বোরিং ফিল করছে তাই ভাবলাম পাশেই পৌর পার্ক ওখান থেকে মেয়েদের ঘুরিয়ে নিয়ে আসি তাহলে ওদের ভালো লাগবে সেই সাথে একটু কিছু খেয়েও আসি।আমরা তিনজন পার্কে গেলাম এবং ঘোরাঘুরি করে দোসাহাট নামে একটা রেস্টুরেন্ট আছে সেটাতে গিয়ে বসলাম আর মেনু কার্ড নিয়ে দেখতে লাগলাম কি খাওয়া যায়!সবগুলো আইটেম ইন্ডিয়ান ফুড ছিলো তাই কোনটা ছেড়ে কোনটা খাবো বুঝতেই পারছিলাম না সবগুলো খাবার অনেক লোভনীয় লাগছিলো।আর রেস্টুরেন্টের কিচেন থেকে অনেক সুঘ্রাণ পাচ্ছিলাম তাতে করে খাওয়ার চাহিদা টা আরও বেড়ে গেলো।আমরা মেনু ঠিক করতে না করতেই ওনারা তিন মা মেয়ে পার্কে এসে হাজির আমাদের দেখে ওরা আমাদের দিকেই এগিয়ে আসছে সাথে আরও দুজন ছিলো তার মানে মোট পাঁচজন।আমি তো দেখেই মনে করলাম আর এখানে বসে থাকা ঠিক হবে না কারন আমরা যদি কিছু খাই তাহলে ওদেরকেও খাওয়াতে হবে আর বিলটা আমাকেই দিতে হবে আর পাঁচজন মানুষের বিল সাথে আমরা তিনজন সবমিলিয়ে কম করে হলেও ১৫শ টাকা যাবেতাই মেয়েদের ইশারা দিলাম তাড়াতাড়ি উঠে পড়ো আমারা এখান থেকে কেটে পড়ি।বড় মেয়ে বুঝতে পেরে তাড়াতাড়ি উঠে পড়লো কিন্তু ছোট মেয়ে তো কিছুতেই উঠবে না ও খেয়েই উঠবে আমি একটু চোখ বড় বড় করে ওর দিকে তাকালাম তখন ও উঠে আসলো আর চোখমুখ কেমন করলো।ওর দিকে তাকিয়ে আমার খারাপ লাগলো তারপরও কিছু করার নেই।মেয়েদের যেকোনো প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার সময় ওনার মেয়েরাও প্রতিযোগিতায় থাকে আর প্রতিবার তাদের সাথে দেখা হয় বা একসাথেই যাতায়াত হয় তাই চিন্তা করে দেখলাম যে প্রতিবার তো এরকম করে টাকা খরচ করা সম্ভব নয়।
আমারা উঠে আসছি সাথে সাথে ওনারাও আমাদের সাথে ঘুরছে আমরা যেখানে যাই ওনারাও সেখানে যাচ্ছে কি একটা বিপদ!যাইহোক আমরা আবার প্রতিযোগিতার স্থানে চলে আসলাম কিছুক্ষণ পর ফলাফল ঘোষণা করা হলো বড় মেয়ে প্রথম হলো ছোট মেয়ে তৃতীয় হলো হাসি মুখে আমারা বেড়িয়ে পড়লাম বাসার উদ্দেশ্যে।আবারও একসাথে বাসে উঠলাম আমি তাকে দেখে গা বাঁচিয়ে টিকিট কেটে বাসে উঠে পড়লাম একসাথে গোটা রাস্তা আসলাম একসাথে নামলাম এর মধ্যে সে একবারও আমাকে টাকা টা দিতে সাধলো না। আমি খুব ভালো করেই জানি টাকা সে দিবে না কিন্তু তারপরও মনে মনে ভেবে বেশ অবাক লাগলো মানুষ এরকম কেন!
বাস থেকে নেমে একটা রিক্সা নিয়ে চাটনী রেস্টুরেন্টে গেলাম।ছোট মেয়েটা খুব মন খারাপ করেছিলো তখন তাই কিছু খাওয়াতে হবে।চাটনী রেস্টুরেন্টের বার্গার ওরা খুব পছন্দ করে তাই বার্গার অর্ডার দিলাম আর সাথে একটা চিকেন পপকর্ন।বার্গার চিকেন পপকর্ন চকলেট মিল্কশেক আসলো ওরা দুজন মজা করে খেলো সবমিলিয়ে ৪৮০ টাকা বিল দিয়ে বাসায় চলে আসলাম।অল্প কিছু টাকা দিয়ে বাচ্চাদের মন খুশি করে বাসায় আসতে পেরে আমারও অনেক ভালো লাগলো।কিছু কিছু জিনিস মনের বিরুদ্ধে গিয়ে করতে খুব খারাপ লাগে কিন্তু কিছু করার সেই বর্তমান সময়ে যে পরিস্থিতি তাতে করে অন্যের পিছনে শুধু শুধু পয়সা খরচ করে কোনো লাভ নেই এতে করে নিজেরই ক্ষতি হয়।আর মানুষ বিশেষে খরচ করতেও ভালো লাগে।যে মানুষ গুলো সবসময়ই অন্যের ক্ষতি করে এবং সবসময় পিছনে লেগে থাকে সেইসব মানুষের জন্য পয়সা খরচ করা নেহাতই বোকামি ছাড়া আর কিছুই না।
আজ এখানেই শেষ করছি আবার দেখা হবে অন্য কোনো সময়ে অন্য কোনো নতুন ব্লগ নিয়ে সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন এই প্রার্থনা করি।
ধন্যবাদ সবাইকে।
আপনি ঠিক বলেছেন, যে মানুষের পেছনে খরচ করে কোন লাভ নেই সেখানে খরচ না করাই ভালো। আবার কিছু মানুষ তো কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতেও চায় না। সবমিলিয়ে আপনার বিচার বিশ্লেষণ ঠিক রয়েছে। আপনার মেয়েরা অনেক লক্ষী ওদের দিকে খেয়াল রাখবেন, দোয়া রইল।
হ্যাঁ ভাইয়া এখনকার বেশিরভাগ মানুষই কেমন জানি, একটু কৃতজ্ঞতা বোধ দেখাতেও তাদের অনেক সমস্যা।আমার মেয়েদের জন্য অনেক অনেক দোয়া করবেন ভাইয়া।ধন্যবাদ।🙏
দিদি আমার পিছনে খরচ করলে কিন্তু কোন লস নাই। হি হি হি। এটা কিন্তু একেবারে সত্য একটু চালাক না হলে দুনিয়াতে টেকা অনেক মুশকিল। কঠিন হয়ে যাচ্ছে দুনিয়া আর এখানকার মানুষগুলো। সবাই কেমন যেন নিজের স্বার্থ ছাড়া কিছুই বুঝে না। অসাধারন ছিল আজকের পোস্টে টি।
কঠিন স্বার্থপরের দুনিয়ায় নিজেকে একটু চালাক না বানালে সত্যিই অনেক লস হয়ে যাবে।আপনি চলে আসেন আপনাকে অনেক সুন্দর একটা ট্রিট দিবো।😁ধন্যবাদ আপু।
আসলে এটা কিন্তু সত্যি আমাদেরকে চালাক হতে হবে, তবেই আমরা দুনিয়াতে ঠিকমতো টিকে থাকতে পারবো। এটা কি রকম একটা অভ্যাস ওই মহিলাটির। উনি তো আপনাদের পেছন পেছনে ছিলেন সারাক্ষণ তাহলে। এটা কিন্তু অনেক বেশি মুশকিলের ব্যাপার ছিল। তবে বাস থেকে নামার পরে আপনি রেস্টুরেন্টে গিয়েছিলেন আপনার মেয়েদেরকে নিয়ে এবং খাওয়া-দাওয়া করেছিলেন এটা জেনে ভালো লাগলো।
হ্যাঁ আপু আমাদের একটু চালাক হতে হবে তা না হলে পদে পদে ঠকে যাবো।উনি ঐরকমই সবসময়ই চেষ্টা করে পরের উপর দিয়ে চলতে।মেয়েদের রেস্টুরেন্টে নিয়ে ওদের পছন্দসই খাবার খাওযাতে পেরে আমারও ভালো লেগেছে।ধন্যবাদ আপু।
আসলে আমাদের পৃথিবীতে এরকম অনেক মানুষ রয়েছে যারা যে কোন কিছু অন্যের উপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। তেমনি এই মহিলাটিও চেষ্টা করেছে আপনার উপরে সবকিছু চাপিয়ে দেওয়ার। আপনি বাসের টিকেট কেটে দিয়েছিলেন এটা ঠিক আছে, আবার খাবার খাওয়ার জন্য ও আপনাদের পেছন পেছন চলে গিয়েছিল। মহিলাটির উদ্দেশ্য ভালো ছিল বলে আমার মনে হচ্ছে না। গানের প্রতিযোগিতায় আপনার বড় মেয়ে প্রথম এবং ছোট মেয়ে তৃতীয় হয়েছিল এটা জেনে খুব ভালো লেগেছে। তাদের জন্য অনেক অনেক দোয়া এবং ভালোবাসা রইলো।
ঠিক বলেছেন ভাইয়া এরকম মানুষের অভাব নেই যারা অন্যের উপর দিয়ে চলার চেষ্টা করে।হ্যাঁ আমরা যেখানেই যাই উনিও সাথে সাথে সেখানে যাচ্ছিলো তার মানে আসার ভাড়াটা আমার উপরে চাপানো যায় কি-না সেই ধান্দা।দোয়া করবেন ভাইয়া আমার মেয়েরা যেনো অনেক বড় পর্যায়ে যেতে পারে।ধন্যবাদ।
ঠিক বলেছেন আপু আপনি একটু চালাক না হলে এই দুনিয়াতে এত মানুষের মধ্যে টিকে থাকা খুবই মুশকিল। আসলে এখন পৃথিবীতে সব মানুষ তার নিজের স্বার্থ ছাড়া আর কিছুই বোঝে না। যেমন এই মহিলাটি আপনার উপরে সবকিছু ছাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল জেনে বেশ খারাপ লাগলো। আসলে বাসের টিকিট কেটে দিয়েছেন আবার খাবার জন্য আপনাদের পিছন পিছন চলে গিয়েছিল এটা কিন্তু খুব একটা বেশি ভালো বিষয় না। গানের প্রতিযোগিতায় আপনার বড় মেয়ে প্রথম স্থান অধিকার করেছে এবং ছোট মেয়ে তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে জানতে পেরে বেশ ভালো লাগলো আপু। আপনার মেয়েদের জন্য আমার পক্ষ থেকে শুভকামনা রইল।
সত্যিই তাই একটু চালাক না হলে স্বার্থপরের দুনিয়ায় টেকা খুবই মুশকিল। উনি সবকিছু আমার উপর চাপাতে চেয়েছিলেন ভালো ব্যবহার করার ফল এটা।দোয়া করবেন মেয়েরা যেনো আগামীতে আরও অনেক ভালো কিছু করতে পারে।ধন্যবাদ।
আপনার টাইটেল এর কথার সাথে আমি কিন্তু একমত।কারণ এই দুনিয়াতে ভালো মানুষের কোন স্থান নেই। যে যত বেশি ভালো মানুষ হয়ে চলতে চাইবে সে তত অন্যর দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আজকে যাকে আপনি উপকার করবেন সে কখনো আপনার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে না বরঞ্চ যে কোন মুহূর্তে ক্ষতি করার চেষ্টা করবে আর এটাই বাস্তব রূপ বর্তমান দুনিয়ার।
একদম ঠিক বলেছেন ভাইয়া বর্তমান সময়ে ভালো মানুষের পদে পদে বিপদ। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতেও মানুষ লজ্জা পায়।যাদের দ্বারা আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হবো তাদের থেকে দূরে থাকাই বুদ্ধিমানের কাজ।ধন্যবাদ ভাইয়া।