আমার বাংলা ব্লগ প্রতিযোগিতা-৪৫ |"ভেজ পালং বিরিয়ানি"|
হ্যালো বন্ধুরা
সবাইকে আমার নমস্কার,আদাব।আশাকরি আপনারা সকলেই ভালো আছেন,সুস্থ আছেন?ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় আমিও ভালো আছি।
প্রথমেই আমাদের শ্রদ্ধেয় ফাউন্ডার @rme দাদা,কো-ফাউন্ডার ব্ল্যাক্স দাদা,এডমিন ভাইয়া আপু এবং মডারেটর ভাইয়া আপুদের জানাই আন্তরিক শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।আমার বাংলা ব্লগ এ আসার পর থেকেই প্রতিযোগিতা গুলো দেখে আসছি।কখনো নিজে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছি কয়েকবার পুরস্কারও জিতেছি।কখনো বা অসুস্থতার কারনে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে পারিনি,তারপরও প্রতিযোগিতার ফলাফল ঘোষণার দিন খুব এক্সাইটেড থাকি কে প্রথম দ্বিতীয় তৃতীয় হবে জানার জন্য।এটা অন্য রকম ভালো লাগার একটি মুহূর্ত যা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।দেখতে দেখতে আমার বাংলা ব্লগ প্রতিযোগিতা ৪৫ এ পৌঁছে গেছে আর এটা খুবই আনন্দের বিষয়।আমাদের সকলের প্রিয় এডমিন @hafizullah ভাইয়া যখনই শাক নিয়ে প্রতিযোগিতার ঘোষণা দিয়েছেন তখন থেকেই ভাবছিলাম এবার অবশ্যই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবো।তার কারন হলো নতুন নতুন রেসিপি করা আমার একটি প্রিয় শখ বলতে পারেন, তারপর আবারও পছন্দের শাক দিয়ে রেসিপি তৈরি করতে হবে।তাই আর দেরি না করে এই সুযোগ টা লুফে নিতে তৈরি করে ফেললাম আমার প্রিয় পালংশাক দিয়ে বিরিয়ানি রেসিপি টি।
পালংশাক শীতকালীন শাক যা সকলেরই খুব পছন্দের শাক।আমার মনে হয় যে এমন কোনো মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না যে সে পালংশাক পছন্দ করেন না।আমার তো খুবই পছন্দের একটি শাক শীতকালে প্রায় প্রতিদিনই কমবেশি পালংশাক খাওয়া হয়ে থাকে।এখন বাজারে খুব একটা পালংশাক পাওয়া যায় না মাঝে মধ্যে চোখে পড়ে তবে প্রতিদিন নয়।প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য পালংশাক বাছাই করেছি কিন্তু মুশকিল হলো বাজারে তো এখন সচারাচর পালংশাক পাওয়া যাচ্ছে না।তাই @shyamshundor কে বললাম এনে দেওয়ার জন্য।বৃত্ত সকালবেলা গোটা বাজার খুঁজে পালংশাক না পেয়ে,পরে কয়েক কিলোমিটার দূরে একটা বড় বাজার আছে সেখান থেকে আমার পছন্দের পালংশাক এনে দিয়েছে।তার জন্য বৃত্ত কে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।
আমি নিরামিষ খাবার খেতে খুব পছন্দ করি তাই আজকের রেসিপি টি আমি পেঁয়াজ রসুন ছাড়া
সম্পূর্ণ নিরামিষভাবে রান্না করেছি।চলুন তাহলে ভেজ পালং বিরিয়ানি রেসিপি টি জেনে নেওয়া যাক।
উপকরণ | পরিমাণ |
---|---|
পালংশাক | হাফ কেজি |
চিনিগুঁড়া চাল | হাফ কেজি |
আলু | ৩ টা |
কাঁচামরিচ | ৮-১০ টা |
আদাবাটা | ২ চা চামচ |
জিরাগুঁড়া | দেড় চা চামচ |
গোলমরিচগুঁড়া | পরিমাণমতো |
এলাচিগুঁড়া | পরিমাণমতো |
জায়ফল | অর্ধেক |
জয়ত্রী | ২ টুকরো |
পোস্তদানা | ১ চা চামচ |
কিসমিস | ১০-১৫ টা |
বাদাম | ৬-৭ টা |
আলুবোখারা | ৬-৮ টা |
টকদই | হাফ কাপ |
টমেটো সস | ১ চা চামচ |
সয়াসস | হাফ চা চামচ |
কেওরাজল | পরিমাণমতো |
লবণ | স্বাদমতো |
হলুদ | পরিমাণমতো |
বেসন | পরিমাণমতো |
ঘি | ২ টেবিল চামচ |
চিনি | স্বাদমতো |
তেল | ভাজার জন্য |
ধাপ-১
প্রথমে একটা বড় পাত্রে জল বসিয়ে দিয়েছি তারপর সয়াবিন তেল ও গরম মসলা দিয়ে ফুটতে দিয়েছি।জল ফুটে উঠলে ধুয়ে জল ঝরিয়ে রাখা চাল গুলো দিয়ে দিয়েছি।তারপর চাল সিদ্ধ হয়ে আসলে চুলা থেকে নামিয়ে একটা ছাকনির মধ্যে ঢেলে দিয়েছি।ভাতের মার ঝরে গেলে বড় একটা প্লেটে ভাতগুলো ছড়িয়ে দিয়েছি ঠান্ডা হওয়ার জন্য।
ধাপ-২
পালংশাক গুলো কেটে ধুয়ে জল ঝরিয়ে কুঁচি কুঁচি করে কেটে নিয়েছি।
ধাপ-৩
এবার পালংশাক গুলোর মধ্যে মরিচ কুচি স্বাদমতো লবণ পরিমাণ মতো হলুদ গুঁড়া দিয়ে ভালো করে মেখে নিয়েছি।তারপর পরিমাণ মতো বেসন আদাবাটা দিয়ে ভালো করে মেখে নিয়েছি ।
ধাপ-৪
এবার মাখানো পালংশাক গুলো ছোট ছোট বড়ার আকারে তৈরি করে নিয়েছি।তারপর চুলায় একটি কড়াই বসিয়ে দিয়ে পরিমাণ মতো তেল দিয়েছি।তেল একটু গরম হয়ে আসলে বড়ার গুলো তেলের মধ্যে ছেড়ে দিয়েছি।কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর বড়া গুলো উল্টিয়ে দিয়েছি,দুপাশে ভালো করে ভেজে তুলে নিয়েছি।
ধাপ-৫
এবার তেলের মধ্যে কেটে রাখা আলু গুলো দিয়েছি।তারপর নেড়েচেড়ে লাল লাল করে ভেজে নিয়েছি।আলু থেকে তেল কমিয়ে নিয়েছি।এবার পরিমাণ মতো ঘি দিয়েছি।
ধাপ-৬
এবার আদাবাটা কাঁচামরিচ বাটা বিরিয়ানির মসলাবাটা গুলো দিয়ে ভালো করে নেড়ে চেড়ে নিয়েছি।তারপর ফেটানো টকদই দিয়েছি।
ধাপ-৭
টকদই দেওয়ার পর টমেটো সস সয়াসস এলাচি গুঁড়া ও গোলমরিচের গুঁড়া,স্বাদমতো লবণ স্বাদমতো চিনি,আলুবোখারা,কিসমিস দিয়েছি।তারপর অল্প আঁচে নেড়েচেড়ে মসলাগুলো কষিয়ে নিয়ে পরিমাণমতো জল দিয়েছি।
ধাপ-৮
জল দেওয়ার পরে ঝোল ফুটে উঠলে ভেজে রাখা পালংশাকের বড়া গুলো দিয়ে দিয়েছি।তারপর নেড়েচেড়ে একটা ঢাকনা দিয়ে ঢেকে কিছুক্ষণ রান্না করে নিয়েছি।ঝোল শুকিয়ে মাখোমাখো হয়ে আসলে চুলার আঁচ বন্ধ করে দিয়েছি।
ধাপ-৯
এবার কড়াই থেকে অর্ধেক তরকারি তুলে নিয়েছি।তারপর রান্না করা ভাত উপর দিয়ে বিছিয়ে দিয়েছি।
আবার উপর দিয়ে আলু সহ পালংশাকের বড়া এবং ঝোল দিয়েছি।তারপরে আবার এক লেয়ার ভাত দিয়ে ঢেকে দিয়েছি উপর দিয়ে ঘি ছড়িয়ে দিয়েছি।এভাবে কয়েক লেয়ারে সাজিয়ে উপর দিয়ে আবারও ঘি কেওরাজল ছড়িয়ে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দমে দিয়েছি কয়েক মিনিটের জন্য।
শেষ ধাপ
কয়েক মিনিট পর চুলা থেকে নামিয়ে একটা পাত্রে ঢেলে নিয়েছি।
পরিবেশন
নিরামিষ রেসিপি তাই মাছ মাংস ডিম বাদে আলু ভাজা,বেগুন ভাজা,পটল ভাজা,শসা,লেবু দিয়ে একটা প্লেট সাজিয়ে নিয়েছি।আর এভাবেই পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত হয়ে গেলো মজাদার ভেজ পালং বিরিয়ানি রেসিপি টি।
এই ছিলো আমার আজকের রেসিপি আশাকরি আপনাদের সকলের ভালো লাগবে।সবাই ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন এই প্রত্যাশায় শেষ করছি।
ধন্যবাদ সবাইকে।🙏
আমাদের উইটনেস কে সাপোর্ট করুন।
প্রথমে আপনাকে অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ এই কনটেস্টে অংশগ্রহণ করার জন্য,অনেক অনেক ভালো লেগেছে সুন্দরভাবে আপনি আমাদের মাঝে দারুন একটি রেসিপি শেয়ার করেছেন। আসলে এই সমস্ত রেসিপি তৈরি করা নিজের প্রতিভা। আর সেই প্রতিভা দিয়ে আপনি আমাদের মাঝে চেষ্টা করেছেন রেসিপি প্রস্তুত করার সমস্ত কার্যক্রম। সুন্দর এর রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
গঠনমূলক একটি মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই ভাইয়া।
Twitter link
প্রথমেই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য অনেক অনেক অভিনন্দন জানাই আপু। মনে হচ্ছে আপনি প্রথম অংশগ্রহণ করী। বৃত্ত ভাইয়া আপনার কি হয় ? যাইহোক বেশ কষ্ট করতে হয়েছে বৃত্ত ভাইয়াকে। আর তাছাড়া নতুন একটি রেসিপি দেখলাম বেশ ভালো লেগেছে এই নতুন রেসিপিটি।
জ্বি আপু এবারের প্রতিযোগিতায় আমি প্রথম অংশগ্রহণকারী।বৃত্ত আমার ভাতিজা এবং মেয়ের টিচার।হ্যাঁ ও অনেক দূর থেকে পালংশাক সংগ্রহ করে দিয়েছে আপু।ধন্যবাদ আপু।
বিরিয়ানির সাথে আমরা সবাই খুব পরিচিত তবে মটন,চিকেন, এসব বিরিয়ানি সচারাচর খেয়ে থাকি কিন্তুু আজ আপনি পালং শাকের বিরিয়ানি বানিয়ে অবাক করে দিয়েছেন। অসাধার সুন্দর হয়েছে তা পুরা রেসিপিটি দেখেই বুঝতে পারছি। খেতে দারুণ মজা হয়েছে তা রান্নার প্রস্তুত প্রনালি দেখেই বোঝা যাচ্ছে।সব মিলিয়ে অসাধারণ রেসিপি। এতো সুন্দর ইউনিক রেসিপি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।প্রতিয়োগিতায় অংশগ্রহণ করেছে এই সুন্দর রেসিপি দিয়ে খুব ভালো হয়েছে। শুভ কামনা রইলো।
প্রতিযোগিতা মানেই তো নতুন কিছু শেখা বা জানা তাই নতুন একটি রেসিপি শেয়ার করেছি।তোমাদের ভালো লেগেছে জেনে খুবই ভালো লাগলো।অসম্ভব সুন্দর মন্তব্য করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ তোমাকে।
খুবই ইউনিক একটা রেসিপি আপু এটা। আপনার তৈরি রেসিপিটা তো আমার খুবই পছন্দ হয়েছে। দেখে মনে হচ্ছে খুবই সুস্বাদু হয়েছে খেতে। এত ইউনিক এবং লোভনীয় একটা রেসিপি নিয়ে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য আপনার প্রতি রইল অনেক অনেক শুভকামনা। আশা করি এবারের প্রতিযোগিতায় খুব ভালো একটা অবস্থান পাবেন।
আমার রেসিপি টি আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুবই ভালো লাগলো আপু।সত্যিই বিরিয়ানি রেসিপি টি খেতে অসাধারণ হয়েছিলো।শুভকামনা জানিয়ে মন্তব্য টি করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই আপু।
প্রথমেই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য অভিনন্দন আপু। এভাবেও বিরিয়ানি তৈরি করা যায় এটা একদমই জানা ছিল না। বেশ ইউনিক ছিল রেসিপিটি। পালং শাক খুঁজতে তো বেশ কষ্ট করা লাগলো। রেসিপি দেখে মনে হচ্ছে খেতে বেশ সুস্বাদু হয়েছে। নতুন একটি রেসিপি শিখতে পারলাম আপু। ধন্যবাদ আপনাকে।
জ্বি আপু পালংশাক পেতে বেশ কষ্ট হয়েছিলো।হ্যাঁ আপু বিরিয়ানি অনেক ভাবেই তৈরি করা যায়।অনেক সুস্বাদু হয়েছিলো আপু।ধন্যবাদ আপু।
পালং বিরিয়ানি ব্যাপারটি ভাবতেই বেশ ভালো লাগছে। সত্যি দারুন একটি রেসিপি শেয়ার করেছেন। একেবারে নতুন ধরনের একটি রেসিপি দেখতে পেলাম। আশা করছি প্রতিযোগিতায় ভালো কিছু পাবেন। শুভকামনা রইল আপু।
হ্যাঁ এই রেসিপি টি আসলেই অনেক দারুণ হয়েছিলো।আশাকরি আপনার থেকেও নতুন কিছু দেখতে পাবো।ধন্যবাদ আপু।
এবারের রেসিপি টা একেবারেই অন্য ধরনের রেসিপি হয়ে গিয়েছে আপু। ভেজ পালং বিরিয়ানি নামটা দেখেই মনে হয়েছে এটার প্রধান উপাদন পালং শাক। এইধরনের বিরিয়ানি প্রথমবার দেখলাম। তবে দেখে কিন্তু বেশ লোভনীয় লাগছে। দারুণ তৈরি করেছেন। এবং এটার জন্য যে উপাদন প্রয়োজন সেটার লিস্ট তো অনেক বড়। চমৎকার ছিল রেসিপি টা আপু। আশাকরি আপনি প্রতিযোগিতায় ভালো একটা অবস্থানে থাকবেন।।
হ্যাঁ ভাইয়া এবারের রেসিপির প্রধান উপকরণ ছিলো পালংশাক।অনেক বড় লিস্ট হওয়ার কারন হলো আমি প্যাকেটের মসলা ব্যবহার করিনি,সম্পূর্ণ ঘরে থাকা মসলা দিয়ে বিরিয়ানি টি রান্না করেছি।ধন্যবাদ ভাইয়া।
বিরিয়ানি আমাদের সবারই অনেক পরিচিতি। অনেক কিছু দিয়ে বিরিয়ানি খেয়েছি তবে এভাবে শাক দিয়ে যে বিরিয়ানি তৈরি করা যায় আমার জানা ছিল না। আপনার রেসিপি দেখে শিখে নিলাম। খেতে নিশ্চয় অনেক মজা হয়েছিল। প্রতিটি ধাপ অনেক সুন্দর করে দেখিয়েছেন। ধন্যবাদ আপনাকে সুস্বাদু একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য।
জ্বি আপু শাক দিয়ে রান্না করা বিরিয়ানি খেতে খুবই মজাদার হয়েছিলো।আপনাকেও অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু।
"আমার বাংলা ব্লগ" প্রতিযোগিতা-৪৫ এর প্রথম প্রতিযোগী হিসেবে আপনাকে দেখলাম। এখানে পালং শাকের বড়া রেসিপি টাই বেশি আকৃষ্ট করেছে আমাকে। লোভনীয় রেসিপি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
পালংশাকের বড়া খেতেও কিন্তু অনেক সুস্বাদু হয়।ধন্যবাদ ভাইয়া।