চকোলেট এর ইতিহাস।।১১ এপ্রিল ২০২৪
চকোলেটের ইতিহাস হল একটি সমৃদ্ধ ইতিহাস যা ৩০০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রসারিত। মেসোআমেরিকার প্রাচীন সভ্যতায় এর উৎপত্তি। এই সুস্বাদু খাবারটি এক সময় একটি তিক্ত পানীয় হিসাবে শুরু হয়েছিল যা পরে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে মিষ্টি খাবার হিসেবে রূপান্তরিত হয়েছে।আর আজকে চকোলেট হিসেবে সারা বিশ্বের লক্ষ লক্ষ মানুষের পছন্দ এটাকে পছন্দ করে।
চকোলেটের যাত্রা প্রাচীন ওলমেকদের সাথে শুরু হয়েছিল।মেক্সিকোতে ১৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের প্রথম দিকে কোকো গাছ থিওব্রোমা ক্যাকাও চাষ করেছিলেন বলে মনে করা হয়। মায়ানরা ২৫০ থেকে ৯০০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত উন্নতি লাভ করে আর এই চাষ উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছিল।এটা বিশ্বাস করা হয় যে দেবতাদের কাছ থেকে উপহার হিসাবে চকোলেট পাওয়া গিয়েছিল।এটি একটি বিশ্বাস যা তাদের সংস্কৃতিতে গভীরভাবে নিহিত ছিল।মায়ানরা চকলেটকে ফেনাযুক্ত, তিক্ত পানীয় হিসেবে গ্রহণ করত।প্রায়শই মশলা বা কর্ন পিউরির সাথে মিশ্রিত করে এই পানীয়টি পান করা হয়।এই পানীয় রন্ধনসম্পর্কীয় একটা আনন্দ তৈরি করে।এটি মায়ান আচার-অনুষ্ঠানেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল যার মধ্যে বিবাহের অনুষ্ঠান এবং ধর্মীয় অনুষ্ঠান ও ছিলো।
মায়ানদের অনুসরণ করে অ্যাজটেকরা মধ্য মেক্সিকোর শুষ্ক উচ্চভূমিতে কোকো গাছ জন্মাতে না পারলেও চকোলেট খাওয়ার ঐতিহ্য অব্যাহত রেখেছে।তারা মায়ানদের কাছ থেকে বাণিজ্য এবং উপহারের মাধ্যমে কাকো পেয়েছিলেন।অ্যাজটেকদের জন্য চকলেট বা "xocolatl" যেমনটি তারা বলে থাকে। অ্যাজটেকরা বিলাসবহুল পানীয় হিসাবে চকোলেটও গ্রহণ করত এবং প্রায়শই এতে ভ্যানিলা এবং মরিচ যোগ করে খেতো।
১৬ শতকে স্প্যানিশ বিজয়ীদের আগমনের সাথে সাথে চকোলেটের ইতিহাসে মোড় আসে।হার্নান কর্টেস এবং তার লোকেরা অ্যাজটেকদের মাধ্যমে চকোলেটের সাথে পরিচয় করে নেয়। এবং তারা এটিকে স্পেনে নিয়ে আসে।ইউরোপীয় স্বাদ অনুসারে এটিকে চিনি এবং মধু দিয়ে মিষ্টি রূপে তৈরি করা হয়েছিল।চকোলেটের এই নতুন সংস্করণটি দ্রুত স্প্যানিশ অভিজাতদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেছিলো।১৭ শতকের মধ্যে চকোলেট ইউরোপের বাকি অংশে ছড়িয়ে পড়ে এবং অভিজাতদের মধ্যে একটি ফ্যাশনেবল পানীয় হয়ে ওঠে যা জমকালো চকোলেট হাউসে বসে বসে খাওয়া হতো।
১৮ এবং ১৯ শতকের শিল্প বিপ্লব চকোলেটের ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক। চকোলেট একটি বিলাসবহুল আইটেম থেকে একটি গণ-উৎপাদিত খাবারে রূপান্তরিত করে যা সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য ছিলো।১৮২৮ সালে ডাচ রসায়নবিদ কোয়েনরাড জোহানেস ভ্যান হাউটেন কোকো প্রেস উদ্ভাবন করেন যা রোস্ট করা কোকো মটরশুটি থেকে কোকো মাখন বের করে একটি শুকনো কেক তৈরি করে যা কোকো নামে পরিচিত।এই আবিষ্কারটি মসৃণ ও আরও সামঞ্জস্যপূর্ণ চকোলেট উৎপাদনের দিকে পরিচালিত করে এবং কঠিন জাতীয় চকোলেট তৈরির সম্ভাবনা খুলে দেয়।
সুইসরা আধুনিক চকোলেটের বিকাশে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।১৮৭৫ সালে ড্যানিয়েল পিটার, হেনরি নেসলে-এর সাহায্যে, চকোলেট মিশ্রণে গুঁড়ো দুধ যোগ করে প্রথম মিল্ক চকলেট তৈরি করেন।কিছু বছর পরেই ১৮৭৮ সালে রডলফ লিন্ডট কনচিং মেশিন আবিষ্কার করেন যা চকলেটকে মসৃণ, মখমলের টেক্সচারে আরও পরিমার্জিত করে যা আজকের চকোলেট এ পরিণত হয়েছে।
প্রাচীন সভ্যতার মধ্যে একটি পবিত্র পানীয় হিসাবে এর উৎপত্তি থেকে শুরু করে বিশ্বব্যাপী ভোগের বাজারে বর্তমান অবস্থা পর্যন্ত চকোলেট একটি অসাধারণ পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে গেছে। আজ এটি শুধুমাত্র তার স্বাদের জন্যই নয়,এর সাংস্কৃতিক তাৎপর্য এবং বিভিন্ন যুগ এবং ভৌগোলিক অবস্থান জুড়ে মানুষকে সংযুক্ত করার ক্ষমতার জন্যও উৎপাদিত হয়।চকোলেটের ইতিহাস মানুষের উদ্ভাবনের এবং এই প্রিয় খাবারের স্থায়ী আবেদনের প্রমাণ।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Take it out and let it go.
Creativity and Hard working. Discord
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
বাহ্! ব্যাপারটা দারুণ তো। চকোলেট এর ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পেরে ভীষণ ভালো লাগলো দাদা। চকোলেট আসলে কমবেশি সবাই পছন্দ করে। বরাবরের মতো আজকেও বেশ তথ্যবহুল একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন দাদা। সেজন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
ইতিহাস খুব একটা পড়া হয় না। বর্তমানে আপনার পোস্টগুলো পড়ে অনেক কিছুই জানতে পারছি। তবে চকলেটের সাথে মরিচ মিশিয়ে খেতো ব্যাপারটা পরে সত্যিই কেমন অদ্ভুত লাগলো। আসলে আমরা বর্তমানে যে খাবারগুলো খাই। সে খাবারগুলো অতীতে যে কতো বৈচিত্র পূর্ণ ছিল। তা এই লেখাগুলো পড়লেই বুঝতে পারি।
দারুণ কিছু তথ্য জানলাম ভাই, এই পোস্টের মধ্য দিয়ে। তারমানে বলতেই হয়, চকলেট আগে পানীয় জাতীয় খাবার ছিল, যা পরবর্তীতে বর্তমান অবস্থার রূপ নেয়।
দারুণ উপভোগ করলাম ব্লগটি ।