কিছু কথা ।।১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

in আমার বাংলা ব্লগlast year

image.png

Image taken from pixabay.com


হ্যালো বন্ধুরা,কেমন আছেন?আশা করি ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন।সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে আমি আমার পোস্ট লেখা শুরু করছি।আজকে আমি কিছু কথা বলতে চলেছি।মাঝে মাঝে আমি একা একা বসে নানান কথা বলি,নিজের সঙ্গে।তখন নানা চিন্তা ভাবনা মাথায় আসে।অধিকাংশ বিষয়ই অদ্ভুত।কিন্তু কিছু কিছু চিন্তা আমাকে খুব নাড়া দেয়।সে গুলোই আপনাদের সাথে ভাগ করে নিতে চাই।আজকে আমি একটি মৌলিক সমস্যা নিয়ে আপনাদের সাথে আলোচনা করবো।আমার চিন্তা ভাবনা ও আপনাদের চিন্তা ভাবনার তুলনামূলক সমন্বয় ঘটলে একটা গঠনগত আউটপুট আসবে।আর সেটাই আলোচনার স্বার্থকতা।


আজকের বিষয়: দক্ষতা ও তার অসম বিন্যাস এবং জাতীয় হতাশা '।

বন্ধুরা সময় বদলাচ্ছে।সরকারি অফিসে নয়টা পাঁচটার কেরানীর চাকরির জন্য পুরো জীবনটা কাটিয়ে দেওয়ার সময় শেষ।আমাদের চিন্তায় ও বিবেচনায় পরিবর্তন আনতে হবে।বাঙালি জাতি একসময় সারা ভারতবর্ষ কে নেতৃত্ব দিতো। বহির্বিশ্বে বাঙালির একটা দাপট ছিলো।কিন্তু আজ বাঙালির সত্যিকারের গর্ব করার মতো কিছুই নেই।তাই সঠিক আইকনের ও বড় অভাব।সঠিক যোগ্যতা সম্পন্ন মানুষ না পাওয়ায় অর্ধ যোগ্যতা সম্পন্ন মানুষকেই আমরা বাঙালির বড় গর্ব হিসেবে প্রচার করছি।এটা আমাদের জন্য বড়ই হতাশার কথা।কেন আমরা জাতীয় ভাবে তো বটেই আন্তর্জাতিক ভাবে এতো পিছিয়ে পড়ছি।আমাদের কি মেধার অভাব?একদমই নয়।বাঙালির মেধা এখনো এই রকম আছে শুধু দুঃখের বিষয় তার উপর মরিচা পড়ে গেছে।তার পিছনে রয়েছে নানা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কারণ।

প্রত্যক্ষ কারণ গুলো:

১.বাঙালি এখনো পুরোনো নিরাপদ জীবন যাপন সর্বস্ব ভাবনা চিন্তা থেকে বেরোতে পারেনি।তাই টিকে থাকাই জীবন মেনে নিয়েছে।শরৎচন্দ্র চট্টপাধ্যায়ের এর বিখ্যাত উক্তি-"অতিকায় হস্তি লোপ পাইয়াছে কিন্তু তেলাপোকা টিকিয়া আছে।”আমরা বাঙালিরা হলাম সেই তেলাপোকা।

২.আমাদের মেরদন্ড একটু বাঁকা হয়ে গেছে।ঝামেলা ও বিপদ কে এড়িয়ে যাওয়ার জন্য আমরা সব অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতিকে নির্দ্বিধায় মেনে নি।আমরা নামতে নামতে অনেক গভীরে নেমে গেছি।কিছুই করার নেই এখন।

৩.নিজেদের মধ্যে ঐক্যের অভাব ও পরশ্রীকাতরতা।বাঙালি আজ নিজেই নিজেদের শত্রু হয়ে গেছে।

৪.খুব সহজে হাল ছেড়ে দেওয়া।তাই সঠিক লক্ষ্যে পৌঁছানোর আগেই বাঙালি নিজেকে ব্যর্থ হিসেবে মেনে নেয়।

পরোক্ষ কারণ গুলো

পরোক্ষ কারণ গুলো দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যা হিসেবেই চিহ্নিত করা যেতে পারে।কারণ ভারত একটা বিশাল দেশ।নানা জাতি ভাষা বর্ণ নিয়েই এই দেশের অখন্ডতা অক্ষুণ্ণ রয়েছে।

১.প্রাদেশিক বিদ্বেষ বাঙালিকে কোণঠাসা করে দিয়েছে।বাঙালিকে এখন অন্য কোনো জাতি একদমই জায়গা দিতে চাইছে না।আর বাঙালির মধ্যে সেই স্পৃহা ও জোশ নেই।তাই তাদের সাথে প্রতিবাদ ও লড়াই করার মত শক্তি ও সাহস বাঙালিরা হারিয়ে ফেলেছে।

২.সহজেই আত্মতুষ্টি।বাঙালি জাতি পরিশ্রম করার ভয়ে অল্পতেই নিজেদের তুষ্ট রাখার অভ্যাস গড়ে তুলেছে।

দক্ষতা কি?

আজকাল সবকিছুই দক্ষতা নির্ভর হয়ে গেছে।আপনার বড় বড় ডিগ্রী থাকলেই যে আপনি দক্ষ এমনটা ভাবার কোনো যৌক্তিকতা নেই।একটা ভালো নম্বর কাউকে যোগ্য হিসেবে পুরোপুরি সিলমোহর দিতে পারে না।এই যুগে বেশি নম্বর পাওয়ার অনেক উপায় আছে।এটা শুনতে খারাপ লাগলে ও সত্যি এটাই যে অনেক অসৎ উপায় ও আছে। যাই হোক সে সব আলাদা বিষয়।কোনো।বিশেষ বিষয়ে সম্যক জ্ঞান ও সেই জ্ঞানের ব্যবহারিক প্রয়োগের সহজ তৎপরতা কে সেই বিষয়ে দক্ষতা বলে।শুধু জ্ঞান থাকলেই তাকে দক্ষ বলা যায় না।কেউ যখন সেই জ্ঞানের সঠিক প্রয়োগ করতে জানে তখনই তাকে সেই নির্দিষ্ট বিষয়ে দক্ষ বলা হয়।

দক্ষতা অসম বন্টন ও তার প্রভাব:

বর্তমান সময়ে সব বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করা সম্ভব নয়।কারণ এখন প্রত্যেকটা শাখা এতো বিস্তৃত ও জটিল যে একটা বিষয়ের বেশি বিষয় নিয়ে দক্ষতা অর্জন করা কঠিন ও সময় সাপেক্ষ।তাই বর্তমান ইন্ডাস্ট্রি ও এমন ভাবে গড়ে উঠেছে যে তারা একটা একটা বিষয়ে দক্ষতা সম্পন্ন লোক নিয়োগ করছে।এইভাবেই ইন্ডাস্ট্রি ৪.০ এগিয়ে যাচ্ছে।

পশ্চিমবঙ্গে চাকরি ও কর্মসংস্থান এর বেহাল অবস্থা।আর দক্ষতার মূল্যায়ন ও সঠিক ভাবে হয়না।দেখা যায় একজন ভালো মেকানিক্যাল জ্ঞান সম্পন্ন লোক কাজের অভাবে বসে থাকছে ঘরে আর সল্প জ্ঞান নিয়ে একে ওকে ধরে কাজে ঢুকে যাচ্ছে অধিকাংশ।এর ফলে সিস্টেম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আর রাজ্য দেশ পিছিয়ে যাচ্ছে।একটা প্রজন্ম যখন নিজের যোগ্যতার কোনো মূল্যায়ন দেখছে না তখন স্বাভাবিক ভাবেই হতাশা তাকে গ্রাস করছে।ফলে তার দক্ষতা ও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।এই ভাবে মানব শক্তির অবক্ষয় হচ্ছে।

আমাদের উচিত এই সিস্টেম টাকে বাঁচাতে হবে।গাছ বাঁচলেই আমরা ফল ছায়া অক্সিজেন পাবো।নিজেদের বেচেঁ থাকার স্বার্থেই গাছ কে বাঁচিয়ে রাখতে হবে।একজন software engineer কে আরো আধুনিক প্রযুক্তিতে দক্ষ করে তুলতে যে অবকাঠামো দরকার তা গড়ে তুলতে হবে।আর তাহলে সঠিক দক্ষতা সম্পন্নতা লোক তৈরি করা যাবে।আর প্রত্যেকটা সেক্টর আরো শক্তিশালী হবে।


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png


ধন্যবাদ।সবাই ভালো থাকবেন।

BoC- linet.png
-cover copy.png

|| Community Page | Discord Group ||


image.png

png_20211106_204814_0000.png

Beauty of Creativity. Beauty in your mind.
Take it out and let it go.
Creativity and Hard working. Discord

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

This post has been upvoted by @italygame witness curation trail


If you like our work and want to support us, please consider to approve our witness




CLICK HERE 👇

Come and visit Italy Community



Hi @blacks,
my name is @ilnegro and I voted your post using steem-fanbase.com.

Come and visit Italy Community

 last year 

আসলে আমাদের মূল সমস্যা হচ্ছে মেধাহীন মানুষ গুলো নানা রকম দূর্নীতি তে জরিয়ে যাচ্ছে যার জন্য সত্যিকারি মেধাবীদের কে মূল্যয়ান করা হয় না।এটা ঠিক ডিগ্রি অর্জন করলেই দক্ষ হওয়া যায় না,প্র্যাকটিক্যালি তাদের অভিজ্ঞতা আছে তিনিই আসল দক্ষ।এটা ঠিক আমাদের মধ্যে মিলের খুব অভাব।ভালো লাগলো কথাগুলো।ধন্যবাদ আপনাকে

 last year 

সঠিক যোগ্যতা সম্পন্ন মানুষ না পাওয়ায় অর্ধ যোগ্যতা সম্পন্ন মানুষকেই আমরা বাঙালির বড় গর্ব হিসেবে প্রচার করছি।

এটি একদম ঠিক বলেছেন দাদা আসলে আমরা সঠিক জায়গায় সঠিক যোগ্যতা সম্পন্ন মানুষ বসাতে পারেনি যার কারণে আমাদের সবথেকে বড় অধঃপতন হচ্ছে। এটা ঠিক যে বাঙালি খুব বুদ্ধিমান কিন্তু বুদ্ধি খাটিয়ে কাজ করতে খুবই অলস।


ঠিকই বলেছেন দাদা দুর্নীতির কারণে বাঙালি আজ সত্যিই মানুষের কাছে অপছন্দের বস্তু হয়ে গেছে। বাঙালি মানে যেন অলস আর দুর্নীতিগ্রস্ত। আসলে গুটিকয়েক মানুষের জন্য সমস্ত বাঙালির বদনাম।।

আমাদের উচিত এই সিস্টেম টাকে বাঁচাতে হবে।গাছ বাঁচলেই আমরা ফল ছায়া অক্সিজেন পাবো।

আপনার এই কথার সাথে আমি সম্পূর্ণ একমত পোষণ করছি এই স্টিমিটটাকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে আমাদের প্রচেষ্টা এবং বুদ্ধিজ্ঞানের মাধ্যমে তাহলে আমরা অবশ্যই সফলতা অর্জন করতে পারব।।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা সঠিক সময়ে সঠিক এবং গঠনমূলক একটি আলোচনা আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য।

 last year 

প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যে কারণ গুলো দেখিয়েছেন, তা একদম চিরন্তন সত্য, ভাই। গতরাতেই পুরো লেখাটা যখন পড়েছিলাম তখন থেকেই শরীরের ভিতর একটু উত্তেজনা কাজ করছিল, যা এখনো বিরাজমান।

 last year 

দাদ আপনার সঙ্গে একমত পোষন করা মানে নিজের জাতিকে ছোট করা কিন্তু তা সত্বেও কোনটাই অস্বীকার ক রার উপায় নেই। জাতি হিসেব বাঙালিরা আজ এত নিচে নেমে গেছে যে আমাদের সঙ্গে অন্যকারো তুলনা করতেও লজ্জা বোধ হয়। আমাদের বাংলাদেশের চিত্র যদি বলি তাহলে বলতে হয় দূর্নীতি আর দেশপ্রেমের অভাব আমাদের প্রধান সমস্যা। সবাই যার যার ব্যক্তি স্বার্থের বাইরে চিন্তাই করতে পারেনা। দেশ আর দশের চিন্তা নিয়ে কারো কোন মাথাব্যাথা নেই। যাইহোক মাঝে মাঝে আপনার এ ধরনের লেখাগুলো বেশ ভালো লাগে। ধন্যবাদ।

 last year 

খুবই গুরুত্বপূর্ণ কিছু কারণ আপনি উল্লেখ করেছেন দাদা, হ্যা এগুলো অস্বীকার করার কোন উপায় নেই। এক সময় পুরো ভারতবর্ষ নেতৃত্ব দেয়া সেই বাঙালী জাতি আজ কেমন জানি অসহায়ত্বের মতো জীবন যাপন করছে।

সত্যি আমাদের মানসিকতা পরিবর্তন হয়েগেছে, আমরা আঞ্চলিকতার সীমনায় নিজেদের আটকে রাখার চেষ্টায় ব্যস্ত, আমরা নিজে ভালো আছি এই তত্বে বেশী বিশ্বাসী হয়ে গেছি। ভালো লাগলো আজকের কথাগুলো।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 58617.29
ETH 3164.87
USDT 1.00
SBD 2.44