লাইফ স্টাইল :- মাইসুনকে ডাক্তার দেখার মুহূর্ত
হ্যালো বন্ধুরা
হ্যালো বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন। আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই ভাল আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমিও আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। আমি এখন সব সময় ভিন্ন ভিন্ন পোস্ট করার চেষ্টা করি। সেক্ষেত্রে লেখালেখির পোস্টগুলো লিখতে ভীষণ ভালো লাগে। ইতিমধ্যে সবার লেখার পোস্ট পড়ে অনেক বেশি উৎসাহ পেয়েছি। তেমনি আজকে আপনাদের সাথে একটি বিষয় শেয়ার করব। পরিবারের কোন সদস্যের যদি হঠাৎ করে অসুস্থতা দেখা যায় তাহলে নিজের কাছে অনেক খারাপ লাগে। আর সেটি যদি নিজের মেয়ে হয় তাহলে তো আরো কষ্ট পেতে চাই। কিছুদিন আগে মাইসুনকে একটি ডাক্তার দেখিয়েছিলাম। ডাক্তার আমাদেরকে তো অনেকটা ভয় পাইয়ে দিয়েছিল। তাই ভাবলাম আজকে আমার এই দুঃসময়ের গল্পটাও আপনাদের সাথে শেয়ার করি।
আমি আমার ভাইয়া বিদেশে যাওয়ার সময় আপনাদেরকে বলেছিলাম আমাদের বাড়িতে গিয়েছি। ওই নিয়ে শপিং করার একটি পোস্টও শেয়ার করলাম। আবার মাইসুনকে ও ডাক্তার দেখিয়েছি তাই আজকে শেয়ার করতে যাচ্ছি। আমাদের বাড়িতে যাওয়ার পরে আমি তিন চার দিনের বেশি থাকতে পারলাম না। কারণ আপনারা জানেন আমার শ্বশুর অনেক অসুস্থ। তাই তাড়াতাড়ি চলে আসতে হয়েছে। কিন্তু আমি আমাদের বাড়িতে গিয়ে দেখতে পেলাম মাইসনের পেটটা কিছুটা ফুলে ফুলে আছে। তাই যখন রকি ভাইয়া এসেছিল তখন রকি ভাইয়াকে বললাম মাইসুনকে একটি ডাক্তার দেখাবো। তখন রকি ভাইয়াও দেখে বল ঠিক আছে কালকে তাহলে যাওয়া যাক।
তারপর আমরা সবাই মিলে আমাদের বাড়ির থেকে কিছুটা দূরে সরকারি হসপিটালে গেলাম। ওখানেই ভালোই চিকিৎসা হয় তাই। আর রকি ভাইয়া অন্য হসপিটাল থেকে বেশিরভাগ সরকারি হসপিটালগুলো বেশি কেয়ারফুলি মনে করে। তাই আমরা ওখানে গিয়ে একটি মহিলা শিশু ডাক্তার দেখানোর সিদ্ধান্ত নিলাম। ওখানে যাওয়ার পরে রকি ভাইয়া পুরুষদের সিরিয়ালে দাঁড়িয়ে একটি টিকেট নিয়ে নিল। আমাদের সাথে আমার বড় বোনও গিয়েছিল। আমরা তিনজন আর মাইসুন গিয়েছিলাম। তারপর টিকেট নেওয়ার পরে ওখানে দেখতে পেলাম অনেক জমে গিয়েছে। কিন্তু আমরা তাড়াতাড়ি যাওয়ার কারণে ভাগ্যিস টিকিটটা পেয়ে গেলাম। না হলে অনেক বড় লাইনের মধ্যে ফেঁসে যেতে হতো।
তারপর আমরা সেই মহিলা ডাক্তারের কাছে গিয়ে আমাদের প্রবলেমের কথাগুলো বললাম। তারপর ডাক্তার মাইসুনের পেট দেখে একটি সিরাপ দিয়েছে। বলেছে এই সিরাপ খাওয়াল পেট ফোলা কমে যাবে। গ্যাস্ট্রিকের কারণে নাকি পেট ফুল গিয়েছে। আমরা তো ভেবেছিলাম এই সিরাপ খাওয়ালেই পেট ফুলা ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু হঠাৎ করে ডাক্তার মাইসুনের জিব্বা দেখে বলল এই শিশু কি সবসময় জিব্বা বের করে রাখে। আমরা বললাম হ্যাঁ কখনো কখনো বের করে রাখে। তারপর ডাক্তার আমাদেরকে কিছু প্রবলেমের কথা বলল। কারণ জিব্বা বের করে রাখলে কিছু কিছু প্রবলেম হতে পারে। আমরা তো এইসব কথা শুনে ভীষণ ভয় পেয়ে গেলাম।
তারপর আমাদেরকে ডাক্তার দুটি টেস্ট দিল। বলল এই টেস্টগুলো তাড়াতাড়ি করানোর জন্য। ওই হাসপাতালে নাকি এই টেস্টগুলো করানো যায় না। তাই আমরা দ্রুত মাইসুনকে নিয়ে অন্য হসপিটালে গিয়ে এই টেস্ট গুলো করিয়ে নিলাম। ওখানে গিয়ে আমরা জানতে পারলাম এইস টেস্ট গুলো করতে প্রায় ২২০০ টাকার মত খরচ হবে। কিন্তু আমরা তখন এত টাকা নিয়ে যায়নি। আমরা ভেবেছিলাম হয়তো সরকারি হসপিটাল থেকে কিছু ওষুধ লাগবে তাই। কিন্তু আমাদের ওই হসপিটালে একজন পরিচিত ভাইয়া থাকার কারণে আমাদেরকে টেস্টগুলো করাতে দিল। আমরা তখন বিল হিসেবে ৪০০ টাকা দিয়েছিলাম। ভাইয়া কিছু কমিয়ে আমাদেরকে ১৭৫০ টাকা বিল করে দিয়েছে। বলেছে দুদিন পরে আসতে টেস্ট পেয়ে যাব। তারপর আমরা মাসুমকে নিয়ে বাড়িতে চলে আসলাম।
তারপর দুদিন পরে মাইসুনকে নিয়ে আমরা ওই হসপিটাল থেকে টেস্টগুলো আনতে গেলাম। তখন আমরা বাকি টাকা গুলো দিয়ে টেস্ট গুলো নিয়ে আসলাম। আমি তো ভীষণ ভয় পেয়ে গেলাম টেস্টের মধ্যে কি আসবে ভেবে। তারপর আমরা আবার সরকারি হসপিটালে গিয়ে ওই মহিলা ডাক্তারকে আবার টেস্টগুলো দেখলাম। মহিলা ডাক্তার টেস্ট গুলো দেখে একটু মুচকি হাসলো। আমি তো তাড়াতাড়ি জিজ্ঞেস করলাম কি হয়েছে আমার মেয়ের। ডাক্তার হেসে বলল কোন সমস্যা নেই এটি ধীরে ধীরে বড় হতে হতে ঠিক হয়ে যাবে। ছোট বাচ্চারা সাধারণত এরকম করে। কিন্তু কখনো কখনো সাধারণ ভেবে হয়তো মা-বাবারা চিকিৎসা করে না। এগুলো চিকিৎসা করিয়ে রাখলে বাচ্চাদের জন্য ভালো হয়। তারপর আমরা ডাক্তারকে বললাম তাহলে তার কোন সমস্যা হবে না।
ডাক্তার বলল না আপনার মেয়ে একদম সুস্থ আছে। শুধুমাত্র গ্যাস্ট্রিক এর কারণে পেট ফুলে গিয়েছে। এই সিরাপ খেলে ঠিক হয়ে যাবে তাড়াতাড়ি। তারপর আমরা হাসিমুখে মাইসুনকে নিয়ে বাড়িতে চলে আসলাম।মাইসুন সুস্থ আছে জেনে সবাই অনেক খুশি হল। ওর বাবা আমার শ্বশুরের অসুস্থতার কারণে আসতে পারল না। কিন্তু যখন শুনেছি মাইসুন একবারে সুস্থ আছে সেদিন বিকেলে আমাদেরকে নিয়ে যাওয়ার জন্য চলে এসেছে। আমরাও হাসিমুখে আমার শ্বশুর বাড়িতে কয়েকদিন পরে চলে আসলাম। আসলেই নিজের মেয়ে যখন অসুস্থ থাকে তাহলে মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে যায়। আমিও আমার ছোট্ট মেয়েটার অসুস্থতার কথা শুনে খুব ভয় পেয়ে গেলাম।
কিন্তু ডাক্তার আর পরিবারের সবার সাপোর্ট পেয়ে আমি স্বাভাবিক হয়ে গেলাম। প্রথমে অনেক ভয় পেয়ে আমার ভীষণ খারাপ লাগলো। কিন্তু আমার ছোট্ট মেয়েটার হাসি মুখটা দেখার পর থেকে ই আমার মনটাও বল হয়ে গেল। আমি সকলের উদ্দেশ্যে একটি কথাই বলবো শিশুদের কে কখনোই কোন অসুবিধা দেখে ঘরে বসিয়ে রাখবেন না। কারণ যখন তখন শিশুদের অনেক প্রবলেম হতে পারে। কারণ শিশুরা ছোট্ট তাই কখনোই মুখ ফুটে কিছু বলতে পারেনা। আমাদের মা-বাবার এই খেয়াল রাখা উচিত আমাদের শিশুদের কোথায় প্রবলেম হচ্ছে। আমিও চেষ্টা করি আমার মেয়ের সব ধরনের খেয়াল রাখার জন্য। আশা করি আপনারাও আপনাদের বাচ্চাদের খেয়াল রাখার চেষ্টা করবেন। আর সবাই আমার মেয়ের জন্য অনেক অনেক দোয়া করবেন যাতে আমি আমার মেয়েকে মানুষের মত মানুষ তৈরি করতে পারি। সবাই অনেক অনেক ভালো থাকবেন।
আমার নাম আকলিমা আক্তার মুনিয়া। আর আমার ইউজারনাম@bdwomen আমি বাংলাদেশে বসবাস করি। বাংলা ভাষা হল আমাদের মাতৃভাষা আর আমি মাতৃভাষা বলতে পারি বলেই অনেক গর্বিত। আমি বিভিন্ন ধরনের ছবি এবং পেইন্টিং আঁকতে খুবই পছন্দ করি। তার পাশাপাশি কবিতা আর গল্প লিখতেও আমার অনেক ভালো লাগে। আমি প্রায় সময় বিভিন্ন ধরনের পেইন্টিং এঁকে থাকি। আবার রঙিন পেপার এবং বিভিন্ন রকমের জিনিস দিয়ে নানা ধরনের কারুকাজ তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে। আবার নিজের বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে ছবি তুলতে খুবই ভালো লাগে। আমি চেষ্টা করি সব ধরনের জিনিস কখনো না কখনো একবার করে করার জন্য। আবার বিভিন্ন ধরনের আইডিয়া মাথায় আসলে সেগুলো ও করার চেষ্টা করি।
https://twitter.com/bdwomen2/status/1668462359944531969?t=wG8BRlf-rZqvD5pizsUmuw&s=19
জ্বী আপু এ সময় বাচ্চাদের অনেক রকম সমস্যা হয়ে থাকে ,তবে সব বাবা মায়েরা প্রথমে ভয় পেয়ে যায়। আবার অনেকেই দেখা যায় গুরুত্ব দেয় না ,কিন্তু বাচ্চাদের এসব প্রবলেম ডাক্তারের কাছে দেখিয়ে নিশ্চিত হয়ে নেওয়া দরকার। যাইহোক টেস্ট রিপোর্ট ভালো এসেছে শুনে খুবই ভালো লাগলো। আমিও প্রথম এ ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম এত টেস্ট না জানি কি হয়েছে। অবশেষে বুঝলাম এটা গ্যাস্টিকের প্রবলেম। দয়া করি আপনার মেয়ে যেন তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যায়।
সত্যি প্রথম টেস্ট গুলো দেওয়ার কারণে আমি অনেক ভয় পেয়ে গেলাম। দোয়া করবেন আমার মেয়ে যেন সুস্থ হয় ধন্যবাদ আপনাকে।
প্রথমে একটু চিন্তায় পরে গিয়েছিলাম। যে আপনার মেয়ের কি হয়েছে। যাক গ্যাস্ট্রিক এর সমস্যা যেয়েতু যে ওষুধ দিয়েছে এতে ঠিক হয়ে যাবে ইন শা আল্লাহ। ওর জন্য অনেক অনেক দোয়া রইলো।
অবাক করা বিষয় হচ্ছে ছোট বাচ্চারও গ্যাস্ট্রিক হয়। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
সরকারি হাসপাতালগুলোতে ডাক্তার দেখানো খুবই কষ্টকর। বিশেষ করে টিকিট কাটতে গেলে এরকম লম্বা লাইনে চক্করে পরতে হয়। তাছাড়া ডাক্তাররা ঠিকমতো দেখে না। এই সরকারি হসপিটালের ডাক্তার দেখছি ভালোই আবার টেস্টও দিয়েছে। যাই হোক কোন কিছু সন্দেহ হলে টেস্ট করে শিওর হয়ে নেওয়াই ভালো ভালো লাগলো জেনে যে আপনার মেয়ের টেস্টের রিপোর্ট ভালো এসেছে। আশা করি এতদিনে সুস্থ হয়ে গিয়েছে। দোয়া রইলো।
প্রথমে অনেক ভয় পেয়ে গেলাম আপু। আল্লাহর কাছে লাখো শুকরিয়া রিপোর্ট ভালো এসেছে। ধন্যবাদ আপনাকে আমার মেয়ের জন্য দোয়া করবেন।
ঐদিন মাইসুনকে ডাক্তার দেখানোর পরে ডাক্তার যখন বলেছিল, সে পুরোপুরিভাবে সুস্থ রয়েছে, সত্যি খুব ভালো লেগেছিল এটা শুনে। টেস্ট করানোর কথা যখন বলেছিল তখন আমার কাছেও ভয় লেগেছিল। টেস্ট করানোর পরে যখন সব ভালো এসেছিল, তখন তার সুস্থতা দেখে অনেক বেশি ভালো লেগেছিল আমার কাছেও। সত্যি আমাদের উচিত শিশুদের ভালো খারাপ দিক দেখা। তাদের প্রতি খেয়াল রাখা উচিত। দোয়া করি মাইসুন যেন বড় হয়ে মানুষের মত মানুষ হতে পারে। আর তার জন্য ভালোবাসা এবং দোয়া তো অবশ্যই রয়েছে।
আপনার মন্তব্য শুনে অনেক ভালো লাগলো। আমার মেয়ের জন্য সব সময় দোয়া করবেন।
সরকারী হাসপাতালে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকলেও ভালো ভালো ডাক্তারের সন্ধান মেলে।আপনি আপনার মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালে গেলেন।ডাক্তার টেস্ট ও দিল।কিছু বোঝার সুবিধার্থে টেস্ট দিল।যাক টেস্টের রিপোর্ট ভালো এসেছে জেনে খুব ভালো লাগলো। আশাকরি এতোদিনে মেয়ে সুস্থ হয়ে গেছে।ধন্যবাদ আপু অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য।
সরকারি হাসপাতালে এই একটি ঝামেলা লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। আলহামদুলিল্লাহ আমার মেয়ে এখন ভালো আছে দোয়া করবেন।
এটা কিন্তু ঠিক বলেছেন, পরিবারের কোন সদস্যের অসুস্থতা দেখলে অনেক বেশি খারাপ লাগে। মাইসুনের অসুস্থতার ব্যাপারটা শুনে অনেক বেশি খারাপ লেগেছিল ওই দিন আমার কাছেও। আপনি আপনার ছোট্ট মেয়েটার অসুস্থতার কথা শুনে অনেক বেশি ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন, তা দেখেই বুঝতে পেরেছিলাম। আর ডাক্তার যখন অবশেষে সবকিছু আমাদেরকে বুঝিয়ে বলেছিল তখন খুব ভালো লেগেছিল। মাইসুনের জন্য অনেক অনেক দোয়া এবং ভালোবাসা রইলো।
ঐদিন আপু আমি নিজে অনেক ভয় পেয়ে গেলাম। কি করবো বুঝে উঠতে পারতেছি না। আমার মেয়ের জন্য সব সময় দোয়া করবেন আপু ধন্যবাদ আপনাকে।
আসলে বাচ্চাদের কোন সমস্যা হলে মা-বাবা খুব ভয় পেয়ে যায়। যা আপনিও প্রথমে ভয় পেয়ে গিয়েছেন। আসলে বাচ্চাদের এ ধরনের সমস্যা গুলো তে ডাক্তার দেখিয়ে নিশ্চিত হওয়ায় ভালো। যাই হোক মাইসুনের কোন সমস্যা নেই শুনে আমার কাছে ভালো লাগলো।
ছোট বাচ্চারা একটু অসুস্থ হলে মা-বাবা অনেক ভয় পায়। কথাটা ঠিক বলেছেন। সুন্দর মন্তব্য করে আমার মেয়েকে নিয়ে ধন্যবাদ আপনাকে।