**গল্পের বিষয়: "বন্ধুত্বের সেতু"** গল্পের শুরু
বন্ধুত্বের সেতু
একটি ছোট্ট গ্রামে দুটি ভিন্ন পরিবার বাস করত। এক পরিবারের নাম ছিল দাস পরিবার, আর অন্যটির নাম ছিল মণ্ডল পরিবার। দাস পরিবার ছিল কৃষক, আর মণ্ডল পরিবার ছিল ব্যবসায়ী। তাদের মধ্যে সামাজিক অবস্থান এবং জীবনযাত্রার কারণে একে অপরের সাথে খুব একটা সম্পর্ক ছিল না।
একদিন, গ্রামের স্কুলে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হতে চলেছিল। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য ছাত্রদের মধ্যে উন্মাদনা ছিল। দাস পরিবারের ছেলে, রবি, এবং মণ্ডল পরিবারের মেয়ে, সুমি, দুজনেই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে চেয়েছিল।
রবি ছিল খুব ভালো দৌড়বিদ, আর সুমি ছিল চমৎকার একজন নৃত্যশিল্পী। কিন্তু দাস পরিবারের আর্থিক অবস্থার কারণে রবি খেলার জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনতে পারছিল না। অন্যদিকে, সুমি তার নৃত্য পরিবেশনের জন্য প্রস্তুতি নিতে গিয়ে কিছুটা হতাশায় ভুগছিল, কারণ তার নৃত্যশিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় পোশাকের অভাব ছিল।
একদিন, রবি মাঠে দৌড়ানোর সময় সুমিকে দেখে। সুমি তখন তার নৃত্যের জন্য অনুশীলন করছিল। রবি তার দিকে এগিয়ে গিয়ে বলল, "তুমি কি আমার জন্য দৌড়ানোর কিছু টিপস দিতে পারো? আমি প্রতিযোগিতায় ভালো করতে চাই।" সুমি হাসি দিয়ে বলল, "অবশ্যই! আর তুমি কি আমাকে নৃত্যের কিছু কৌশল শেখাতে পারো?"
এভাবে, তাদের মধ্যে শুরু হলো একটি অদ্ভুত বন্ধুত্ব। তারা একে অপরকে সাহায্য করতে লাগল। রবি সুমিকে দৌড়ানোর কৌশল শিখাল, আর সুমি রবিকে নৃত্যের বিভিন্ন পা শিখাল। দিন দিন তাদের বন্ধুত্ব আরও গভীর হতে লাগল।
ক্রীড়া প্রতিযোগিতার দিন এসে গেল। রবি তার দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নিল এবং সুমি তার নৃত্য পরিবেশন করল। দুজনেই তাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করল। রবি দৌড়ে প্রথম স্থান অধিকার করল, আর সুমি তার নৃত্যের জন্য সেরা পুরস্কার পেল।
গ্রামের মানুষ তাদের এই বন্ধুত্ব দেখে অবাক হয়ে গেল। তারা বুঝতে পারল, সামাজিক অবস্থান এবং পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও বন্ধুত্বের শক্তি সবকিছুকে অতিক্রম করতে পারে।
এভাবে, দাস এবং মণ্ডল পরিবার একে অপরের সাথে বন্ধুত্বের সেতু গড়ে তুলল। তারা একসাথে আনন্দ-দুঃখ ভাগাভাগি করতে লাগল এবং গ্রামে একটি নতুন বন্ধুত্বের উদাহরণ স্থাপন করল।
বন্ধুত্বের এই সেতু শুধু তাদের জীবনকেই পরিবর্তন করেনি, বরং পুরো গ্রামকেও একত্রিত করেছে। তারা বুঝতে পারল, সত্যিকারের বন্ধুত্বের কোনো সীমানা নেই।
এভাবেই বন্ধুত্বের সেতু গড়ে উঠল, যা আজীবন টিকে থাকবে।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.