ভালোবাসার মৃত্যু

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago

ভালোবাসার মৃত্যু

image.png

image source

সকাল হলেই মায়ের চিল্লাচিল্লিতে আমার ঘুম ভাঙ্গে। প্রতিদিন এই কাহিনী আর ভাল্লাগেনা। ইচ্ছে করে আব্বার মতো আমিও হাওয়া হইয়া যাই। বুঝবার পারছি ঠিক এই কারণেই আব্বা হাওয়া হইয়া গেছে। সত্যি কথা কইতে মায়েরও কোন দোষ নাই, আমার মা ছোট বেলা থেকে আমারে মানুষ করছে মানুষের বাড়ি বাড়ি কাম কইরা। আইজকা আমি বড় হইয়া যদি মাইরে দুইটা ভাত না খাওয়াতে পারি তাইলেতো মা চিল্লাইবই। ছোটবেলায় আব্বা চইলা গেছে, কই গেছে কেমনে গেছে কেউ কিছু কইবার পারে না। তবে আমিও যে খালি বইয়া থাকি হেইডাও না, কাম খুঁজতে প্রতিদিনি যাই কিন্তু কি কপাল আমার কোন কাজেই আমার কপালে জুটে না, জাগ্গা এতো কিছু ভাইব্বা নাই, মুখ ধুইয়া যায় বাজারে।

বলতে বলতেই বাজারের দিকে রওনা হই শিমুল। প্রতিদিন এই সময়ে বাজারে যাওয়া তার একটা স্বভাবে পরিণত হয়েছে। বন্ধুদের সাথে আড্ডা আর নাস্তা খাওয়া ছাড়া আর কোন কাজ নাই তার, কিন্তু শিমুল আজ কেন যেন গ্রামের মেঠো পথ ছেড়ে বাড়ির ভেতর দিয়ে বাজারে যাচ্ছে। হয়তো নিজে নিজে এত কথার ফাঁকে ভুলেই গিয়েছে সে কোন রাস্তায় বাজারে যাচ্ছে।

কিছুটা দূর যেতেই তার সামনে দিয়ে কেউ একজন মুখ লুকিয়ে দৌড় দিল কান্নারত অবস্থায়। সে পিছনে তাকাতে তাকাতে ভাবতে লাগল এইডা কি হইল! মাইয়া মানুষ কানতাছে নাকি, এইভাবে দৌড় দিয়া গেল কেন ! একটি গাছের আড়ালে গিয়ে পুরোটা বিষয় বুঝতে চাইল শিমুল। মেয়েটা নদীর পাড়ে একটি গাছের নিচে গিয়ে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে। আহারে কি কাঁদায় না কানতাছে মাইয়াটা। মাথার লম্বা কালো চুলের কারণে চেহারাটা ও দেখা যায় না। এমনি পিছন থেকে এক মহিলা ডাকতে লাগল কিরণ.... ও কিরণ।...... কই তুই ? এবার শিমুল জানতে পারল মেয়েটির নাম কিরণ। তবে কেনইবা এভাবে কাঁদছে বিষয়টা জানার জন্য এখনো সে দাঁড়িয়ে আছে।

মহিলাটি মেয়েটিকে খুঁজতে খুঁজতে সেই গাছের নিচে গিয়ে বলতে লাগলো কান্দেনা মা আমার। কেমনে তরে সান্তনা দিমু আমি জানিনা। তোর এই কষ্ট আমি আর সহ্য করতে পারতাছি না। এই কথা বলতেই মেয়েটা ঘুরে তাকায় আর বলে বুবু তুমি কষ্ট পাইবা কেন? আমার কপালে এমন দুঃখই ছিল। শিমুল দূর থেকে মেয়েটির চেহারা দেখতে পাই আর বিশমিত হয়ে বলতে থাকে এত সুন্দর মাইয়া মানুষ ওয় নাকি !! জীবনেও আমি এত সুন্দর মাইয়া দেখি নাই আগে। বিড়বিড় করে বলতে বলতেই কেউ যেন হঠাৎ তার পিছন থেকে বলল এই মিয়া কেডা আফনে ? আর এহানে কি করেন ? রাস্তা ফালাইয়া বাড়ি ঘরের ভেতর দিয়ে ঢুকছেন কেন ? শিমুল মুহূর্তে যেন থমকে গেল, আর বলতে লাগল না না আমি আমার একটা আত্মীয়র বাড়িতে জাইতাছিলাম। অহন রাস্তা ভুইল্লা গেছি , এদিকেই মনে হয়,বলে সজোরে হাটতে লাগল শিমুল।

(চলবে..........)

1.png


VOTE @bangla.witness as witness

witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_vote.png


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

_

Heroism_3rd.png

Sort:  
 3 years ago 

এই মিয়া কেডা আফনে ? আর এহানে কি করেন ? রাস্তা ফালাইয়া বাড়ি ঘরের ভেতর দিয়ে ঢুকছেন কেন ?

শিমুল রাস্তা ভুলে হয়তো সেখানে চলে গিয়েছে। তবে মেয়েটিকে দেখে তার ভালো লেগেছে বোঝা যাচ্ছে। মনে হচ্ছে নতুন কিছুর সূচনা হতে চলেছে। তবে মেয়েটি কিসের দুঃখে কাঁদছিল সেটা বুঝতে পারছিনা। পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম। আশা করছি পরবর্তী পর্বে সবকিছু জানতে পারবো। আপনার লেখা গল্পটির এবারের পর্বটি দারুন হয়েছে আপু। লেখার ধরন অসাধারণ ছিল।

 3 years ago 

শিমুল তার মায়ের উপরে অভিযোগ করছে তারপর আবার নিজের দোষ স্বীকার করছে। যেহেতু তার বাবা চলে গিয়েছে কি কারনে গিয়েছে সে তো জানেনা। তাছাড়া সে বাজারে উল্টো পথেই যাচ্ছে অন্য চিন্তা করতে করতে। মেয়েটিকে দেখে যে তার ভালো লেগে গেছে এটা তো বোঝাই যাচ্ছে গল্পের মধ্যে। আর একদিক থেকে সে নামটাও জানতে পারল। যাইহোক আপু প্রথম পর্ব পড়লাম পরবর্তী পর্বগুলোর অপেক্ষায় থাকলাম।

Coin Marketplace

STEEM 0.08
TRX 0.29
JST 0.037
BTC 105923.77
ETH 3592.38
USDT 1.00
SBD 0.55