আড়াই তালাক || বাংলা নাটকের রিভিউ
আড়াই তালাক বাংলা নাটকের রিভিউ
সবাই কেমন আছেন ? আশাকরি সবাই ভালো আছেন। আজকে আমি আবারো একটি বাংলা নাটককে রিভিও করার চেষ্টা করেছি ও আপনাদের সাথে নাটকের সম্পূর্ণ কাহিনী সুন্দর ভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।
মোশারফ করিমের নাটক মানেই হাসির নাটক। একটা সময় মোশারফ করিমের প্রচুর নাটক দেখেছি। আমার দেখা অনেক ভালো একজন অভিনেতা তিনি। মোশারফ করিমের নাটক আমার কাছে বেশ ভালো লাগে। আমি প্রায় সময় উনার নাটকগুলো দেখি বিনোদর নেয়ার জন্য। আজকের এই আড়াই নাটকটিও ছিল তেমনি হাস্যকর ও মজাদার কিছু কাহিনী দিয়ে ঘেরা। আজকে আমি আমার এই পোস্টের মাধ্যমে নিজের মতো করে নাটকটির রিভিউ করার চেষ্টা করেছি। আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।
নাটকের গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য |
---|
নাটকের নাম | আড়াই তালাক |
---|---|
প্লাটফর্ম | ইউটিউব |
পরিচালক | শাকিল আহমেদ |
অভিনয়ে | মোশাররফ করিম, তানিয়া বৃস্টি ও আরো অনেকেই। |
প্রকাশিত | ৫ জুলাই ২০২৩ |
সময় | ৪২:৩০ মিনিট |
নাটকের মূল কাহিনী শুরু |
---|
তিনি হচ্ছেন এলাকার একজন সম্মানিত মেম্বার। তিনি বিয়েটা করেছেন মেম্বরের ক্ষমতা দেখিয়ে। এলাকার অনেক গরিব ঘরের একটি মেয়েকে পছন্দ করেন কিন্তু মেয়ের পছন্দের বিরুদ্ধে বাবাকে লোভ দেখিয়ে বিয়ে করে আনে ঘরে। প্রতিনিয়তই তাদের মধ্যে খুঁটিনাটি ঝগড়া হয়ে থাকে। তবে নাটকের শুরুতে যে ঝগড়া দেখছি এই ঝগড়া যেন একটু বেশি হয়ে যাচ্ছে। আর এই ঝগড়ার এক মুহূর্তে গিয়েই একতালা দুই তালাক ও আড়াই তালাক পর্যন্ত গিয়ে থেমে যায়। মেম্বার সাহেব। আড়াই তালাক দিয়ে তিনি ফিট হয়ে পড়ে যায় একটি চেয়ারে। বউ যেন অপেক্ষা করছিল কখন সে তিন তালাক দিবে ও সেখান থেকে চলে যাবে কিন্তু তিন তালাক আর দেওয়া হলো না আর আধা তালাকের জন্য সে যেন আটকা পড়ে যায় স্বামীর বাড়িতে।
বিয়ের আগে মেয়েটিকে পছন্দ করত এক ফেরিওয়ালা ও এক ঝালমুড়িওয়ালা। তারা দুজন বাড়ির পাশে আড়ি পেতে শুনছিল ও বাকি আধা তালাক দেয়ার অপেক্ষায় ছিল। তালাক হয়ে গেলেই তারা মেয়েটিকে বিয়ে করার জন্য প্রস্তুতি নিবে এই ভেবে।
এদিকে মেম্বার সাহেব ফিট হয়ে পড়ে গিয়েছে ঠিকই কিন্তু উনি ইচ্ছাকৃতভাবেই ফিট হয়েছে। যাতে করে তার আশেপাশে কে কি করছে, কে কি বলছে ও তার বউয়ের চরিত্র কেমন সবকিছু বাছাই করার জন্য ফিট হয়ে পড়ে আছে। সবাই বুঝতে পারছে যে সে স্বাভাবিক নয়, সে কোন কিছুর স্মরণ করতে পারছে না ও কোন কিছুই বুঝতে পারছে না কিন্তু সে মনে মনে সবকিছুই খেয়াল করছে ও সবার কথা ও কর্মকান্ড খেয়াল করছে।
স্বামী ফিট হয়ে যাওয়ার কথা শুনে এদিকে ঝাল মুড়িওয়ালা ও ফেরিওয়ালা দুজনেই বাড়ির আশেপাশে ঘুরঘুর করতে থাকে। আর এদিকে স্ত্রী বলে আর মাত্র আধা তালাক দেওয়া বাকি আছে আধা তালাক দিয়ে দিলেই আমি তোমার কাছে চলে এসব ঝালমুড়ি ওয়ালাকে যে কথা বলে এবং ফেরিওয়ালাকে সেই একই কথা বলে। যে এখন আধা তালাক দেওয়ার জন্য হলেও তাকে সুস্থ করতে হবে আর এই সুস্থ করতে হলে ডাক্তার বলেছে বেশি বেশি ফল কিনে আনার জন্য ও তাকে খাওয়ানোর জন্য। এই কথা শুনে ফেরিওয়ালা ও ঝাল মুড়িওয়ালা দুজনেই বেশি বেশি ফল কিনে তার বাসায় দিয়ে যায় ও অপেক্ষায় থাকে তার সুস্থতার।
ফল কিনে আনার পথে ফেরিওয়ালা ও ঝালমুড়িওয়ালার সাথে দেখা হয়। একজন আরেকজনকে বলে যে সে আমার, সেও বলে না সে আমাকে কথা দিয়েছে সে আমার। আর এগুলো নিয়ে তর্কাতর্কি করতে গিয়ে দুজনের মধ্যে মারামারি লেগে যায় রাস্তায়। এখানে প্রথমে ভেবেছিলাম মেয়েটি সবার সাথে লাইন মারছে হয়তো মেয়েটির চরিত্র খারাপ হবে কিন্তু নাটকের এক পর্যায়ে বুঝা গেলো মেয়েটি যা করেছে তার স্বামীর অসুস্থতার জন্য করেছে। এখানে খারাপ কোনো উদ্দেশ্য ছিল না।
একটা সময় স্ত্রী নামাজের পরে মোনাজাত তুলে আল্লাহর কাছে স্বামীর জন্য দোয়া করছে। স্বামীকে যেন আল্লাহ তাড়াতাড়ি ভালো করে দেয়। আর এই কথা স্বামী শুনে হতবাক হয়ে স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে থাকে ও স্ত্রীকে যেমনটা ভেবেছিল আসলে সে এমনটা না চিন্তা করতে লাগলো। তারপর সে সুস্থ হয়ে আবার সকলের সামনে হাজির হয় আর এই দেখে স্ত্রী বেশ আনন্দিত হয়।
তার সুস্থতার কথা শুনে এলাকার সকলেরই ছুটে আসে ও আর বাকি আধা তালাক দেয়ার কথা বলে। কিন্তু সে বলে না আমি আমার স্ত্রীকে তালাক দেয়ার জন্য সুস্থ হয়নি। আমি অসুস্থ ছিলাম না, আমি সকলের কর্মকান্ড ও কথাবার্তা গুলো শোনার জন্যই আমি ফিট হয়ে সকলের সাথে একরকম অভিনয় করলাম। আমার বউকে আমি যেমন ভেবেছিলাম সে আসলে তেমন না, আর আমি এলাকার মানুষের সাথে সত্যিই অনেক খারাপ কাজ করেছি ও অন্যায় করেছি। সকলের কাছে আমি ক্ষমা চাচ্ছি। আর ঝাল মুড়িওয়ালা ও ফেরিওয়ালা দুজনের কর্মকান্ডের কথা সকলের সামনে উপস্থাপন করবে না বলে সে বলে। আর বলে তোমরা যে টাকা খরচ করেছো সেগুলো আমি তোমাদেরকে দিয়ে দিব। আর এভাবেই খুব সুন্দর ভালো একটি এন্ডিং এখানে হয় নাটকের।
ব্যক্তিগত মতামত |
---|
একটা সুন্দর গোছানো সংসার কখনো তালাক দিয়ে নষ্ট করে দেয়াটা মোটেও উচিত নয়। আমাদের আগে বুঝতে হবে ও জানতে হবে সে যে কাজটি করছে সে কাজটি কি সঠিক করছে কিনা বা কার জন্য করছে। সেই বিষয়গুলি বুঝতে হবে এবং তারপরে এত বড় একটি সিদ্ধান্তে যাওয়া উচিত বলে আমি মনে করি। হুটহাট করেই সুন্দর সম্পর্ক নষ্ট করে দেওয়া মোটেও উচিত নয়, তবে এই নাটকে বেশ কিছু মজার দৃশ্য ছিল। আর আমি মনে করি মোশারফ করিমের নাটক মানে মজার কিছু দৃশ্য ও সুন্দর কিছু কাহিনী। নিচে দেয়া লিংক থেকে আপনারা চাইলে নাটকটি দেখে নিতে পারেন।
নাটকটির ইউটিউব লিংক |
---|
মোশাররফ করিম এর নাটক গুলো দেখলে ভীষণ হাসি পায়। আসলে কোন সিদ্ধান্ত নিতে হলে ভেবে নেওয়া উচিত। তালাক নাম শুনলেই কেনো জানি ভীষণ খারাপ লাগে। নাটকটির গল্প শিক্ষা মূলক ও সামাজিক। আপনার রিভিউ পোস্ট দেখে ভালো লাগলো ধন্যবাদ আপনাকে আপু।
আপু মোশাররফ করিমের নাটক আমি খুব পছন্দ করি।মনটা খারাপ হলেই মোশাররফ করিমের নাটক খুঁজে দেখি।আর তখন মন এমনিতেই ভালো হয়ে যায়। আপনি আজ খুব সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ পোস্ট শেয়ার করেছেন। আপনি ঠিক বলেছেন কোন বিষয় ঠিকমতো না জেনে কোন কঠিন সিদ্ধান্ত নেয়া ঠিক নয়।আপনার রিভিউ পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো। সুযোগ পেলে নাটকটি অবশ্যই দেখবো আশাকরি। ধন্যবাদ আপনাকে।
মোশারফ করিমের নাটক গুলো আমার কাছেও দেখতে খুব ভালো লাগে। খুব সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ দিয়েছেন আপনি। পুরো নাটকের রিভিউটি পড়ে আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে যদিও নাটকটি এখনো দেখা হয়নি। তবে রিভিউ পরে নাটকটি দেখার অনেক ইচ্ছে জাগলো। সময় করে নাটকটি দেখার চেষ্টা করব। এত সুন্দর নাটকের ভিডিও শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
আপনি একদম ঠিক বলেছেন আপু, হুটহাট করে একটা সম্পর্ক নষ্ট করে দেওয়া ঠিক নয়।জেনে বুঝে যেকোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে,নইলে পরে সমস্যায় পড়তে হবে।নাটকটি থেকে বেশ কয়েকটি শিক্ষণীয় বিষয় রয়েছে।সময় করে দেখে নিব নাটকটি।অনেক ভালো লেগেছে রিভিউ পোস্টটি।ধন্যবাদ আপু সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
নাটকটা কিন্তু অনেক হাস্যকর এবং মজার ছিল। মোশারফ করিমের নাটক গুলো আমারও একসময় প্রচুর দেখা হতো। তবে এখন তো সময়ের জন্য নাটক তেমন দেখা হয় না। তবে আপনার রিভিউ পোস্টের মাধ্যমে নাটকটার সম্পূর্ণ কাহিনী পড়ে খুব ভালো লেগেছে আপু। অনেক সুন্দর করে আপনি নাটকটার সম্পূর্ণ কাহিনী আমাদের মাঝে ভাগ করে নিয়েছেন দেখে ভালো লাগলো। আমি তো সময় পেলে অবশ্যই চেষ্টা করব নাটকটা দেখার জন্য।