"প্রতারণার ফাঁদ" এর প্রথম অংশ।।

আমি আনিসুর রহমান।আমার ইউজার আই ডি @anisshamim।মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি “আমার বাংলা ব্লগ” এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ,আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই ভাল আছেন।আপনাদের দোয়ায় আলহামদুলিল্লাহ আমি ও ভালো আছি।আজ আমি আপনাদের মাঝে একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি।বর্তমানে অনেক ক্ষেত্রে মানুষ প্রতারিত হচ্ছে।কিন্তু যে ভুলের কারনে প্রতারিত হচ্ছে পুনরায় একই ভুল করছে।যার কারনে বারবার প্রতারিত হচ্ছে।প্রতারক চক্রও তাদের প্রতারণার ফাঁদ পরিবর্তন করে নতুন ভাবে মানুষকে প্রতারিত করছে।সেই বিষয়টি আপনাদের মাঝে কয়েক ভাগে তুলে ধরার চেষ্টা করছি। আশাকরি, বিষয়টি পড়ে আপনাদের ভালো লাগবে।

প্রেমের ফাঁদ কথাটি প্রথম কে বলেছে বা কার মাধ্যমে উৎপত্তি তা বের করতে গবেষণা করতে হবে।কিন্ত বর্তমানে একটি কথা লোকমুখে,এমনকি পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হচ্ছে তা হলো প্রতারণার ফাঁদ।অবশ্য প্রতারণার ফাঁদে পড়াও নতুন কিছু নয়।অনেকেই বিভিন্ন ভাবে প্রতারিত হয়ে তার সবকিছু হারিয়ে পথের ফকির হয়েছেন।আমাদের দেশকে বলা হয় জোয়ার-ভাটার দেশ। একেক সময় একেকটা বিষয়ে জোয়ারে আসে। পরে আবার ভাটার টানে চলে যায়।

মানুষকে বারবার ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেওয়ার কথা বারবার বলা হয়। কিন্তু ইতিহাসের শিক্ষা হলেও তা থেকে কেউ শিক্ষা নেয় না।জীবনের চলার পথে মানুষ অনেক ভুল করে। ভুল বা ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়ে মানুষ সামনের দিকে এগিয়ে যাবে এটাই সবাই প্রত্যাশা করে।কিন্তু ইতিহাসের মতো ভুল থেকেও কেউ শিক্ষা নেয় না। ইতিপূর্বে যুবক, ডেসটিনি, ইউনিপেটু,ই-ভ্যালির মতো বড় বড় কেলেঙ্কারি বাংলাদেশের লাখো মানুষকে নিঃস্ব করেছে।

আমরা কিন্তু প্রত্যেকবারই ভাবি, এর থেকে নিশ্চয়ই মানুষের শিক্ষা হবে।কিন্তু অনেক সময় চিন্তার সাথে কাজের মিল থাকে না। যুবকের পর অনেকেই ভেবেছিল ডেসটিনির হবে না,ডেসটিনির পর ভেবেছিল ইউনিপেটুর হবে না,এরপর ভেবেছিল ই-ভ্যালির হবে না।আমাদের চারপাশে প্রতারণার অসংখ্য ফাঁদ পাতা।আমরা মনে করি একজনকে প্রতারিত হতে দেখে আরেকজন সর্তক হবে।কিন্তু বারবার একেকটা ঢেউ আসে,আর হাজার কোটি টাকা নিয়ে হাওয়া হয়ে যায়। লাখ লাখ মানুষ নিঃস্ব হয়ে যায় চোখের পলকে।তারপর আবার ঢেউ আসে, আবার মানুষ নিঃস্ব হয়ে যায়। এ যেন প্রতরণার এক মহাসমুদ্র,যার শুরু আছে শেষ নেই।

ছেলেবেলায় কোন একটা সিনেমার গান শুনেছিলাম-

এখন দেখি সত্যিই টাকার পাখা গজাইছে।শুধু শহর নয়,গ্রামে-গঞ্জেও দেখি উড়ে উড়ে টাকা হাওয়া হয়ে যাচ্ছে। অবশ্য আগে এ প্রতারণার ফাঁদ পাতা কিছুটা কঠিন ছিল।কিন্তু প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে প্রতারণার কাজটাও সহজ হয়ে গেছে। বর্তমানে আপনারা ফেসবুকে ঢুকলেই কোন না কোন অফার পাবেন।কোটিপতি হওয়া যেন কয়েকটি ক্লিকের দূরত্ব। কিছু দিনে টাকা দ্বিগুণ করার ডাক।ফেসবুকে ঢুকলেই মনে হয় বেকারত্ব কোন সমস্যা নয়।হাওয়ায় উড়ে উড়ে টাকা চলে আসবে নিজের পকেটে।

সম্প্রতি বিভিন্ন পত্রিকায় একটি খবর প্রকাশিত হয় এমটিএফই(মেটাল ফরেন এক্সচেঞ্জ) নামে একটি হাওয়াই প্রতিষ্ঠান হুট করে তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে।প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে -এমটিএফইতে বাংলাদেশের লাখ লাখ মানুষের ১১ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করা আছে।দুবাই ভিক্তিক এ প্রতিষ্ঠানের বাংলাদেশে তেমন কোন অবকাঠামো নেই। তাই তাদের ধরারও কোন উপায় নেই। যেন কান্নাকাটি,প্রতিবাদ,বিক্ষোভ ও সরকারকে গালাগাল করা ছাড়া আর কিছুই করার নেই।

যুবক,ডেসটিনি,ই-ভ্যালির মতো যাদের বাংলাদেশে অফিস ছিল,যাদের মূল হোতারা ধরা পড়েছেন,তাদের টাকাই কেউ পায়নি। আর এমটিএফই তো বায়বীয় কোম্পানি। কে, কি আশ্বাস দিবে জানি না,তবে আমি জোর গলায় বলতে পারি এ ১১ হাজার কোটি টাকার এক টাকাও কেউ ফেরত পাবে না। বিভিন্ন পত্রিকার খবরে বিভিন্ন অঙ্কের টাকার কথা বলা হয়েছে। তবে সর্বনিন্ম ১১ হাজার কোটি টাকা। কোন কোন পত্রিকায় ২০ হাজার কোটি টাকার কথা ও বলা হয়েছে।টাকার অঙ্কের কথা শুনলে যেন মাথা ঘুরে যায়।

আজ এ পর্যন্তই।অন্য দিন এর পরবর্তী পর্ব নিয়ে আবারও হাজির হবো।ভালো থাকবেন। সুস্থ থাকবেন। আর লিখার মাঝে ভুল হয়ে থাকলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।