"সাহিত্য ও পদক বানিজ্য" এর দ্বিতীয় ও শেষ পর্ব।।
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি অবারাকাতুহু।
হ্যালো বন্ধুরা ?
আমি আনিসুর রহমান।আমার ইউজার আই ডি @anisshamim।মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি “আমার বাংলা ব্লগ” এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ,আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই ভাল আছেন।আপনাদের দোয়ায় আলহামদুলিল্লাহ আমি ও ভালো আছি।গত পর্বে আমি আপনাদের মাঝে বর্তমান সময়ে সাহিত্য ও পদক বানিজ্য নিয়ে যে নৈরাজ্য চলছে তার উপর আমার কিছু মতামত তুলে ধরার চেষ্টা করেছিলাম।আজ আমি তার বাকি অংশটুকু দ্বিতীয় ও শেষ পর্বের মাধ্যমে তুলে চেষ্টা করবো। আশাকরি আমাদের পড়ে ভালো লাগবে।
সাহিত্য ক্ষেত্রে লেখকের জন্মদিন পালনের কালচারের দিন দিন ব্যাপ্তি ঘটেছে।কখনো লেখকরা নিজেরাই জন্মদিন পালন করছেন,কখনো কখনো সংগঠনকে কিছু টাকা পয়সা দিয়ে করাচ্ছেন।জন্মদিন উপলক্ষে নিজের নামে গ্রন্থ বের করছেন বন্ধুদের দিয়ে লিখিয়ে।পত্রিকায় নিজের উপর লেখা ছাপাচ্ছেন। পত্রিকাগুলোও ছাপছে।এতে কি লাভ হয় আমার জানা নেই!হ্যাঁ ফেসবুকের কারণে কিছু লোক দেখে,লাইক দেয় এই তো!এর বেশি কি কিছু হয়?
এখন শুধু বেশি লেখকদের নয়, বিদেশি লেখকদেরও জন্মদিন পালিত হচ্ছে এদেশের মাটিতে।কেন তাদের দেশে কি তার জন্মদিন পালনের সুযোগ নেই?তাহলে আমার দেশে কেন?আর আমার মনে হয় এর কারণ একটাই,যিনি পালন করছেন পরেরবার তার জন্মদিন পালিত হবে ও দেশের মাটিতে।এ এক রকম সমঝোতা।তখন কষ্ট পায় যখন এ দেশের ভালো ভালো কবি ও লেখক অন্য দেশের তদাপেক্ষা ছোট কবি ও লেখকের স্তুতি করেন। নিজের ওজনটাও তারা বোঝেন না।এ বড় বেদনার!
আগে সাহিত্য সম্মেলন বলতে আমরা জানতাম সার্ক সম্মেলন,হলদিয়া সাহিত্য উৎসব,টাঙ্গাইল সাহিত্য সম্মেলন,ফরিদপুর সাহিত্য সম্মেলনসহ আরো দু-একটা।সার্ক সম্মেলনে প্রায় প্রতিবছর একই কবি লেখকরা যেতেন।তারাই ছিলেন নির্বাচকদের আশীর্বাদ পুষ্ট।যেন ওই কয়েকজন ছাড়া দেশে আর কোনো কবি সাহিত্যিক নেই!ওরাই দেশ উদ্ধার করে দিচ্ছেন।তাদের সঙ্গে অনির্বাচিত কয়েকজন যেতেন নিজেদের পয়সা খরচ করে।ধরে পড়ে একটা কবিতা বা গল্প পড়ার জন্য তাদের এই যাত্রা।মূল উদ্দেশ্য হল কতিপয় বিদেশির সঙ্গে পরিচিত হওয়া,ছবি তোলা।পরে সেই পরিচয় ঝালিয়ে বিভিন্ন দেশে যাওয়া। হলদিয়ার ব্যাপারটাও অনেকটা তাই। আয়োজকদের সঙ্গে যারা ব্যক্তিগত যোগাযোগ করতেন তারাই যেতেন। এখনো নিশ্চয়ই একই তালিকা বজায় আছে।আজকাল আর এসবের খবর রাখতে মন চায় না।
কতগুলো সংগঠন আছে যারা নিজেরাই নিজেদের পুরস্কার দেয়। নাম শুনলে মনে হয় বিরাট কিছু তারা। কিন্তু এসব সংগঠনের সদস্যদের লেখাপড়া,লেখাজোখা কিছুই নেই।এরাও দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন।আবার কোন কোন সংগঠন গড়ে উঠেছে একক ব্যক্তির স্তুতি করার জন্য।
এই তো শেষ হলো বাংলা একাডেমির বইমেলা।এখানেও একই চিত্র। লেখক মঞ্চে এমন কিছু লেখক/কবি/গবেষক কথা বললেন যাদের নাম অনেকেই জানে না।অবশ্য এটা ঠিক,সবার নাম জানা থাকবে এমন কথা নেই। কিন্তু সেই মানের লেখা তো থাকতে হবে।আছে কি তেমন সবার! কাটপিস গবেষক ও কথা বললেন।অথচ অনেক প্রতিষ্ঠিত লেখকও কথা বলার সুযোগ পেলেন না।ওই যে পছন্দের লোক নেওয়া হয়েছে।আর প্রকৃত আত্মমর্যাদা সম্পন্ন লেখক তো বললেন বলবে না 'আমাকে লেখ মঞ্চে কথা বলার সুযোগ দাও'।অবশ্য কয়েকজন সত্যিকার লেখক কথা বলার সুযোগ পেলেও অনেকেই বঞ্চিত হলেন।
এই যদি হয় অবস্থা,সত্যিকারের লেখকরা কি করবেন।যতই তারা ভাবেন না কেন,এসব দেখবো না, নিজের মনে লিখে যাব,স্বীকৃতির দরকার নেই,পাঠকের স্বীকৃতিই বড় স্বীকৃতি কিন্তু সমাজ তা ভাবতে দেয় না।তারাও তো সমাজে বাস করেন।চারপাশে যখন এসব ঘটে, পরিবার থেকে যখন বলে,সবাই পায় তুমি পাও না কেন,সবাইকে ডাকে তোমাকে ডাকে না কেন,তুমি বোধহয় অযোগ্য।তখন সে উপেক্ষা বুকে বড় লাগে!এসব সয়ে লিখে যাবে এমন মনের জোর সবার থাকে না। তাই কিছু প্রকৃত লেখক হতাশায় নিমজ্জিত হন। একসময় ভাবতে থাকেন লিখে কি হবে!
সমস্যা গোড়ায়।কি ভুঁইফোড় সংগঠন,কি প্রতিষ্ঠিত সংগঠন কোথায় নিরপেক্ষতা নেই।শর্ষের মধ্যে ভূত। নির্বাচকমন্ডলীকে হতে হবে সৎ।তবেই না যোগ্য ব্যক্তি পুরষ্কৃত হবে।কদাচিৎ সেটা ঘটে দৈবক্রমে। অযোগ্যরাই বেশি নির্বাচিত হয়ে ধরাধরি করে। তার মাঝে যোগ্যতার ভিত্তিতে যে দু-চারজন হন তাদের জোর কপাল।
সাহিত্য নিয়ে এই বেসাতি ভালো লাগে না।লেখকরা সমাজের বিবেক। তাদের লেখা পড়ে মানুষ অনুপ্রেরণা পাবে,সত্য মিথ্যার তফাৎ বুঝতে পারবে, মঙ্গলের পথ হাঁটবে। সেই লেখকরা যদি ভুল পথে পা বাড়ান তাহলে সমাজের ভবিষ্যৎ অন্ধকার।তখন মহৎ সৃষ্টি সম্ভব হবে কিভাবে!
কাজেই সময় এসেছে সঠিক পথ অনুসন্ধানের।আত্মমর্যাদা নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার।সবাই এক হলে দূর হবে এসব অনাচার।
আমার পরিচিতি
আমি আনিসুর রহমান। আমার স্টিমিট আইডি @anisshamim।আমার জন্মস্থান মুন্সিগঞ্জ জেলার বিক্রমপুরে।আমি বাংলা ভাষার মাধ্যমে মনের ভাব প্রকাশ করতে স্বাচ্ছন্দ্যেবোধ করি এবং বাঙালি হিসেবে নিজেকে খুব গর্বিত মনেকরি।দেশকে খুবই ভালোবাসি।দেশের জন্য নিজের যেকোনো কিছু বির্সজন দিতে সদা সর্বদা প্রস্তুত।ভ্রমন করা আমার খুব সখ।তাছাড়া সময় পেলেই চিত্রাঙ্কন করা,কবিতা লিখা এবং মজার মজার রেসিপি তৈরি করা।গল্পের বই পড়তে ও খুব ভালো লাগে।অন্যের কষ্টে নিজেকে বিলিয়ে দিতে খুব ভালোলাগে।
VOTE @bangla.witness as witness

OR

.png)


সাহিত্যের ক্ষেত্রে লেখকেরা জন্মদিন পালন করছে আবার তারা টাকা পয়সা দিয়েও জন্মদিন পালন করাচ্ছে, আর জন্মদিনে উপলক্ষে নিজের বই বের করছে এবং সেগুলোকে বিক্রি করছে আসলে এগুলো লাভ কি? এই কথাগুলোর সাথে আমি একমত।জি ভাই এ ধরনের সংগঠন আছে যারা নিজের কোন কাজ করে না অথচ তারা নিজে নিজেদের পুরষ্কৃত করে। আসলে সাহিত্য বই মেলা যেন হয়ে গেছে এখন ছেলে খেলার মত। তারা তাদের নিজের ইচ্ছামতো সবকিছু করে থাকে। লেখক হলো সমাজের বিবেক, আজকে সমাজে লেখকদের সে বিবেক টা মরে গেছে। তাদের সেই বিবেক জাগ্রত হচ্ছে না বলে আজ আমাদের সমাজের এই দুর্দশা। যাহোক ভাইয়া খুবই সুন্দর লিখেছেন আপনার লেখাগুলো পড়ে আমার খুবই ভালো লাগলো আপনাকে ধন্যবাদ।
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া,পোস্টটি পড়ে এত সুন্দর মন্তব্য করার জন্য। আপনার জন্য শুভকামনা রইল ভাইয়া।
ভাইয়া আপনি সাহিত্য ও পদক বাণিজ্য নিয়ে খুব সুন্দর একটি ব্লগ তৈরি করেছেন। আপনার প্রথম পর্বটি যদিও আমি পড়তে পারি নাই। তবে দ্বিতীয় পর্বটি পড়ে আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। আপনার এই সত্য কথাগুলো হয়তো অনেকের কাছে খারাপ লাগবে। তবে আপনি আপনার পোস্টের মাধ্যমে বাস্তব চিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন। সেজন্য আমার অন্তর থেকে আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া, পোস্টটি পড়ে এত চমৎকার মন্তব্য করে আমাকে উৎসাহিত করার জন্য।