ভালো কাপড় চেনার কৌশল
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগ পরিবার। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আজ আমি কাপড় কিভাবে কিনতে হয় এবং কোন কোন বিষয়গুলো দেখে কাপড় গুলো নিতে হয় সেই বিষয়গুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করব। তবে চলুন কথা না বাড়িয়ে শুরু করি।
এই বাজারে অনেক ধরনের কাপড় পাওয়া যায় তার মধ্যে কোন কাপড়টা ভালো কোন কাপড়টা পড়লে আরাম সে বিষয়গুলো আমরা অনেকেই বুঝি আবার অনেকেই বুঝিনা যার কারণে মাঝে মাঝে দেখা যায় কাপড় কিনে আনার পরে একটি ধোয়াতেই কাপড়ের রং উঠে যায় এবং কাপড়গুলো ছোটখাটো হয়ে যায়। এই বিষয়ের সাথে আমরা পরিচিত রয়েছি।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে বাজারে এত এত কাপড় রয়েছে এদের মধ্যে ভালো কাপড় কোনটা এবং মন্দ কাপড় কোনটা সেটা বুঝব কিভাবে? আসলে একটি বিষয় শুনে আপনার অনেক অবাক হবেন. বাংলাদেশ পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম কাপড় রপ্তানি কারক দেশ কিন্তু এই এত বৃহৎ এবং লার্জ স্কেলে কাপড় তৈরি হওয়ার পরেও মেড ইন বাংলাদেশের কাপড় বাংলাদেশের ব্যবহার হয় না বললেই চলে।
বাংলাদেশের লেবার কস্ট অনেক কম কিন্তু বাংলাদেশের চেয়েও লেবার কস্ট কম হচ্ছে চায়নাতে এবং সেই চায়নায় অনেক কম দামে অনেক বেশি পরিমাণ কাপড় তৈরি হয়। যার কারণে তাদের প্রোডাকশন খরচ অনেক কমে। আসে তাই আমাদের বাংলাদেশের বেশিরভাগ পোশাকি হচ্ছে মেড ইন চায়না।
বাংলাদেশের কাছে অনেকগুলো নামিদামি ব্র্যান্ড প্রতিনিয়তই কাপড় তৈরি করে যাচ্ছেন এবং সেই কাপড়ের গুনগত মান অন্যান্য দেশের গুণগত মানের থেকে অনেক বেশি তাই এর মূল্য অনেক বেশি হয়ে যায়। তাছাড়াও বাংলাদেশের কাছে যেসব অর্ডার আসে সেই কাপড়গুলো আমরা বাংলাদেশের লোকাল মার্কেটে বিক্রি করতে পারি না। যার দরুন সেই ব্রান্ডের কাছ থেকেই আমাদের সেই কাপড় গুলো কিনতে হয়। যার কারণে প্রাইস অনেক বেশি হয়ে যায়। ধরুন একটি টিশার্ট তৈরি করতে মোট কস্ট দাঁড়ায় ২০ টাকা কিন্তু সেই টাকা টি-শার্টে যদি এইচ এন এম কিংবা জারা বা আরো অন্যান্য নামিদামি ব্রান্ডের লোগো লাগানো হয় তাহলে সেই টি-শার্টটি হয়ে যাবে দুই থেকে তিন হাজার টাকা।
এই সবগুলোই মার্কেটিং পলিসি। আসলে এখানে আমাদের করার কিছু নেই তারপরও বাংলাদেশের বাজারে অনেক ভালো কাপড় রয়েছে অনেক নামিদামি ব্রান্ড রয়েছে এদের মধ্যে কোন গুলো ভালো এবং কোনগুলো মন্দ সেই বিষয়গুলো আমরা এখন জানবো।
বাংলাদেশের মোটামুটি কিছু ব্র্যান্ড রয়েছে। যেমন Yellow, Easy ইত্যাদি। সেইসব কাপড়ের নিচে দেখবেন এটি সিল লাগানো থাকে এবং সেই কাপড়ের মধ্যে এই সিলটি দেখলেই বুঝতে পারবেন সেই কাপড়ের গুনগত মান কেমন এবং সেই কাপড়টি কিভাবে আমরা ব্যবহার করব। কারণ আমরা সব ধরনের কাপড় কিন্তু ব্লিচিং পাউডারে পরিষ্কার করি কিন্তু এটা আসলে সঠিক নিয়ম নয়। সেই কাপড় ব্লিচিং করা যাবে কিনা কিংবা কত ডিগ্রি তাপমাত্রায় আয়রন করতে হবে, কাপড় ধোয়ার পরে কিভাবে শুকাতে হবে সম্পূর্ণ ডিটেলস সেই সিলের মধ্যে দেওয়া থাকে।
তাছাড়াও কাপড় কিনতে গেলে কাপড় গুলোকে আমরা হাত দিয়ে ধরে স্পর্শ করি এই বিষয়গুলো আসলে অভিজ্ঞতার কিষয়।এগুলা বলে কখনো বোঝানো সম্ভব না তবে ১০০% কটনের ক্ষেত্রে আপনারা এই বিষয়গুলো খুব সহজেই বুঝতে পারবেন। আবার কোন কোন সময় দেখতে পারবেন একই বিছানা চাদরের দাম ৫০০ টাকা এবং একই ডিজাইনের আরো একটি ডিজাইনের চাদরের দাম ৩০০০ টাকা। কিন্তু তাদের মধ্যে কোন পার্থক্য খুঁজে পাচ্ছেন না। আসলে এই দামের মধ্যে পার্থক্য হওয়া কিন্তু একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে। এর একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ রয়েছে একটি কাপড় মার্সেরাইজিং করা এবং অন্য কাপড়টি মার্সেরাইজিং ছাড়া। মার্সেরাইচিং করা কাপড়ের দাম অন্যান্য কাপড়ের তুলনায় বেশি হবে এবং এর স্থায়িত্বকাল অনেক বেশি হবে, এই কাপড়ের থেকে কোন ধরনের রং উঠবে না। এবার থেকে কাপড় কিনতে গেলে অবশ্যই দোকানদারকে বলবেন এই কাপড় কি মার্সেরাইজিং করা না কি মার্চেরাইজিং ছাড়া! এই বিষয়টি জেনে কাপড় কেনার চেষ্টা করবেন।
আমরা সকলেই দেখি বাজারে কাপড়ের দাম অনেক বেশি কিন্তু উৎপাদন করতে এত বেশি টাকা খরচ হয় না. মূলত একটি জিন্সের প্যান্ট তৈরি করতে সর্বোচ্চ ১০০ থেকে ১১০ টাকা লাগে। কিন্তু সেই প্যান্টগুলো আমরা হাজার বারোশো টাকা দিয়ে কিনি, এটাই হচ্ছে মার্কেটিং পলিসি।
ডিজাইন ভালো হলেই যে কাপড় ভালো হবে এমন কিন্তু নয়। মার্কেটে অনেক অসাধু ব্যবসায়ীরা রয়েছে তারা অল্প টাকাই অনেক কম দামি কাপড় কিনে এনে সমস্ত মানুষদেরকে ঠকাচ্ছে। কাপড় কেনার সময় অবশ্যই সেই কাপড়ের ব্যাচ আছে কিনা সেই বিষয়টি লক্ষ্য রাখবেন। কিছু টাকা বেশি রাখলেও ভালো কাপড় কেনার চেষ্টা করবেন। সে ক্ষেত্রে স্থায়িত্বকাল অনেক বেশি পাবেন।
আরো অনেক ধরনের বিষয় বস্তু রয়েছে যেগুলো আসলে অভিজ্ঞতার বিষয়।। এভাবে বললে আপনারা কখনো বুঝতে পারবেন না। তাই এই প্রাথমিক বিষয়গুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। যদি আপনাদের ভালো লাগে তাহলে পরবর্তী পর্বে সেই বিষয়গুলো উপস্থাপন করব।আজকের মত এখানেই শেষ করছি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন ধন্যবাদ।
নামিদামি ব্রান্ড হলেও অনেক সময় কাপড়ের গুণগত মান ভালো হয় না। বর্তমান সময়ে ভালো কাপড় নির্বাচন করা অনেক কঠিন। অনেক সময় কাপড়ের গুণগত মান আমরা বুঝতে পারি না। দেখতে সুন্দর হলেই কাপড় ভালো হবে এটা ভাবলে আমরা ঠকে যেতে পারি। ভাইয়া আপনার পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লাগলো।
কি করে বুঝবো ভালো কাপড় কি। অনেক নামি দামি কোম্পানীই কিন্তু তাদের কাপড় সঠিক ভাবে তৈরি করে না। তাই ভালো কাপড় বেছে নেওয়াও কিন্তু বেশ কঠিন। তবে আপনার পোস্ট পড়ে যদি কিছু বুঝতে পারি।
ভালো কাপড় চেনা আসলেই মুশকিল। ইজি থেকে টি-শার্ট কিনে কয়েকদিন ব্যবহার করার পর কালার নষ্ট হয়ে গিয়েছে। বেশ অবাক হয়েছিলাম তখন। আমার ওয়াইফ এর জন্য সুতি থ্রিপিস কিনলাম কয়েকমাস আগে ভালোমানের দোকান থেকে। দুই মাস ব্যবহার করার আগেই গুটি উঠে গিয়েছিল। যাইহোক আপনার পোস্ট পড়ে মনে হচ্ছে এখন থেকে মোটামুটি বুঝতে পারবো। এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
একই কাপড় দেখতে অথচ দাম বেশি কম হওয়ার কারণ আগে জানা ছিলনা।আপনার পোস্টটি পড়ে জেনে নিতে পারলাম।এটা আমিও শুনেছি যে কাপড় তৈরি করতে যা খরচ হয় তার থেকে বেশি দামে বিক্রি করে এটা মার্কেটিং পলিসি।আমার মনে হয় কাপড়ের ব্যাবসায় লাভ বেশি অন্যান্য ব্যাবসার তুলনায়।যাইহোক ভালো লেগেছে পোস্টটি।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
এককথায় সময়উপযোগী উপকারী একটা পোস্ট ছিল ভাই। কাপড় সম্পর্কে এতো তথ্য আমার জানা ছিল না। বাংলাদেশের কাপড়ের মান অনেক ভালো সেজন্য প্রতিবার ফিফা বিশ্বকাপের অফিশিয়াল জার্সির অর্ডার পাই বাংলাদেশ। কিন্তু আমরা যে অধিকাংশ মেইড ইন চায়না এর কাপড় ব্যবহার করি এটা জানতাম না।
আজকের পোস্ট থেকে অনেক কিছুই শিখলাম। অনেক সময় বেশি দাম দিয়ে কিনেও আমরা ঠকে যাই। একদম ঠিক কথা যে সেম একই করম কিন্তুু দামের কমবেশি মানেই কাপড়ের তারতম্য অবশ্যই থাকে।ধন্যবাদ সুন্দর পোস্টের মাধ্যমে আমাদের অনেক কিছু শেখানোর জন্য।
ভাইয়া খুবই উপকারি একটি পোষ্ট করলেন। আমি তো মার্চেরাইজিং বিষয়টা জানতাম না। আজকে আপনার পোষ্ট পড়ে জানলাম। কতবার কাপড় কিনে ধরা খেয়েছি,বলে বুঝানো যাবে না। তবে ধীরে ধীরে অভিজ্ঞতা হচ্ছে। ১০০% কটন কাপড় গুলো সব থেকে বেশি ভালো। ধন্যবাদ।