জীবনের কঠিনতম সিদ্ধান্ত || 10% Beneficiaries @shy-fox

প্রত্যেকটি মানুষের জীবনে একাধিকবার বিপদ সংঘটিত হয় এবং সেই বিপদ মোকাবেলার জন্য আপনাকে কঠোর থেকে কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হয়।যে সিদ্ধান্ত নেওয়া সত্যিই অনেক কঠিন। আপনার সেই সিদ্ধান্তই ঠিক করে দেবে আসলে আপনি কোন পথে যাচ্ছেন বা আপনার ভবিষ্যতে কি হতে চলেছে!! যখন কোন মানুষ বিপদে পড়ে তখন স্বাভাবিকভাবেই তার চিন্তা করার চেতনাটি সে হারিয়ে ফেলে। আমি অনেকের ক্ষেত্রেই দেখেছি এবং আমি নিজেও এই বিষয়টি অনুধাবন করেছি। তারপরও সেই মানুষগুলো যদি মাথা ঠান্ডা রেখে জীবনে এগিয়ে চলার পথে কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে তাহলে সেই দিন শেষে বিজয়ী হয়।

বিষয়টা আমরা যতটুকু সিম্পল ভাবি ততটা শুধু সিম্পিল নয় কারণ যদি কোন মানুষ রাগান্বিত থাকে বা তার মন যদি উত্তেজিত থাকেন তাহলে কখনোই সে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না। যদিও সব মানুষের ক্ষেত্রে এই থিউরিটি সমানভাবে কাজ করে না কিন্তু ম্যাক্সিমাম মানুষের ক্ষেত্রেই এই থিউরিটি মোটামুটি কাজ করে।

এখানে অনেকেই আমার সিনিয়র এবং আমার বয়স খুব একটা বেশি নয় কিন্তু তারপরও আমার জীবনে কিছু কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তার মধ্যে একটি আজকে আমি আপনাদের সামনে শেয়ার করব। বিশেষ দ্রষ্টব্য: আমাদের এলাকায় সেরকম গুণগতমানের কোন কলেজ ছিল না। তখন ঢাকায় আমার পরিবারের কেউ বসবাস করত না। আমাকে একটি হোস্টেলে থাকতে হতো এবং প্রতিনিয়ত সেখান থেকেই কলেজ করতে হতো। মানে অনেকটা একাকীত্ব একটি জীবনের মধ্যে পড়ে গিয়েছিলাম। যেখানে আমার পরিবারে, আত্মীয়স্বজনদের মধ্যে কেউ ছিল না শুধুমাত্র আমি একা।

সব কিছু নতুন, নতুন পরিবেশ, নতুন জায়গা খাপ খাইয়ে নিতে খুব বেশি একটা সমস্যা হয়নি কিন্তু তারপরও পরিবারের সবার কথাই মনে পরতো। মাঝখানে আমি শুনলাম আমার মা নিজের গলার হার বিক্রি করে আমাকে এখানে পড়তে পাঠিয়েছেন। বিষয় টা শোনার পরে অত্যন্ত খারাপ লাগল এবং মনে মনে একটা জিদ চাপলো পরিবারের উপর প্রেসার ক্রিয়েট না করে আমার নিজে কিছু একটা করা উচিৎ। তখন আমাদের পারিবারিক অবস্থা সত্যিই ভাল ছিল না এবং ঢাকা শহরে তখন পড়ানোর খরচ ও অনেক বেশি। যাইহোক এভাবে দিন কাটতে থাকলো এবং আমিও একটি পার্টটাইম জবের আশায় ছুটাছুটি করতে থাকলাম। কলেজে ভর্তি হওয়ার ছয় মাস পরে আমি জবের সন্ধান পেলাম।

মাত্র মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরীক্ষা দিয়েছি এই সার্টিফিকেট নিয়ে তেমন কোন ভাল জব আশা করা মোটেও ঠিক নয়। তারপরও আমি কোন কাজ কে ছোট করে দেখি নি। একটি বেসরকারি ইউনিভার্সিটিতে একটি ছোটখাটো পদের জবটা কনফার্ম করি। আমার মাথায় তখন একটি বিষয় খুব জোরালোভাবে ঘুরবা করতে থাকল। আসলে জীবনের মানে টা বুঝতে হলে ছোট থেকেই শুরু করতে হবে এবং এটাই উপযুক্ত সময় নিজেকে বিলিয়ে দেওয়া এবং নিজের সক্ষমতা অন্যের কাছে তুলে ধরা।

বাসায় জবের কথা জানিয়েছিলাম কিন্তু বাসা থেকে এত কম বয়সে জব করার অনুমতি দেয় নাই। কিন্তু আমি তো বুঝি আমার পরিবার গত অবস্থা,, হ্যাঁ এটা মানছি তাদের সক্ষমতার ছিল আমাকে ওভাবে পড়ানোর মতো কিন্তু তাদের আসলে কষ্ট হয়ে যেত। এই জায়গা থেকে আমি একটি গুরুতর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। যার কারণে হয়তো আমি আজকে জীবনের মানেটা বুঝতে পেরেছি, সেখান থেকে এক বছর পরে পদোন্নতি পেয়ে আমি একটি বেসরকারি ইউনিভার্সিটিতে একটি আইটি সেক্টরে এসিস্টেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেয়। সেখানে তিন বছর জব করি, পাশাপাশি আবার আমি আমার ডিপ্লোমা কমপ্লিট করি। জবটি মূলত পার্ট টাইম ছিলোনা ফুল টাইমই ছিল। দিনের বেলা জব করতাম এবং রাতের বেলা টুকটাক পড়াশোনা করতাম, তারপরও আলহামদুলিল্লাহ রেজাল্ট অনেক ভালো করতে পেরেছি। দিন শেষে একটা কথাই বলবো, মায়ের দোয়া কাজ করেছে। জব করার সময় কি কি বিপদ আপদ পোহাতে হয়েছে এবং কত কিছু শুনতে হয়েছে সেটা না হয় নাই বললাম....

|| Join the Discord Server for more Details ||

---

আমি আল সারজিল ইসলাম সিয়াম। আমি বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। আমি বর্তমানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিএসসি-র ছাত্র। আমি স্বতন্ত্র স্বাধীনতা সমর্থন করি। আমি বই পড়তে এবং কবিতা লিখতে পছন্দ করি। আমি নিজের মতামত প্রকাশ করার এবং অন্যের মতামত মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি। আমি অনেক ভ্রমণ পছন্দ করি। আমি আমার অতিরিক্ত সময় ভ্রমণ করি এবং নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে ভালোবাসি। নতুন মানুষের সংস্কৃতি এবং তাদের জীবন চলার যে ধরন সেটি পর্যবেক্ষণ করতে ভালোবাসি। আমি সব সময় নতুন কিছু জানার চেষ্টা করে যখনই কোনো কিছু নতুন কিছু দেখতে পাই সেটার উপরে আকর্ষণটি আমার বেশি থাকে।

---

---

বিষয়: জীবনের কঠিনতম সিদ্ধান্ত

কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ

আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......