স্মৃতিচারণ || ছোটবেলার ঈদ উৎসব
ঈদ মানেই আনন্দ, ঈদ মানে খুশি তবে যতই বড় হচ্ছে ততই যেন খুশিটা আস্তে আস্তে হারিয়ে যাচ্ছে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে অনেক দায়িত্ব এবং কর্তব্যবোধে এসে পরেছে। কিন্তু তারপরও আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে এখন অনেক ভালো আছি। তবে বর্তমান সময় দাঁড়িয়ে অতিতের স্মৃতি গুলো বেশ মনে পড়ে, মনে পড়ে কতই না ভালো দিনগুলো ছিল, কতই না ইনজয় করেছি সে সব সময় গুলো। তাই আজকে কিছু অতিতের স্মৃতি গুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করে নেব।
ছোটবেলায় ঈদ শুরু হওয়ার বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই ঈদের আনন্দ উপভোগ করতাম, উপভোগ করতাম সেই সময় গুলো, বন্ধু-বান্ধবের সাথে ঘুরে বেড়ানো, ঈদের কোথায় কোথায় যাব সে সব বিষয় নিয়ে বিভিন্ন ধরনের প্লান করা এসবের মধ্যেই ছিল মূল আনন্দ। বাবা মার সাথে বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে মার্কেট করা এবং কেনাকাটা করার মধ্যে ছিল আলাদা একটি আনন্দ। যেটা আসলে ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।
আমাদের এলাকায় আমাদের একটি টিম ছিল। টিম বলতে আমরা কয়েকজনের বন্ধুর একটি গ্রুপ ছিল। আমরা সবসময় একসাথে খেলাধুলা করতাম। কোথাও যেতে হলে একসাথেই যেতাম, কোন ফল চুরি করতে হলেও একসাথেই করতাম। হাহাহা। মূলত যে কোন কাজেই আমরা সব সময় একসাথেই ছিলাম। ঈদের সময় ও আমরা একসাথে ঘুরাঘুরি করতাম এবং এর আগেই আমরা পরিকল্পনা করতাম, কোথায় কোথায় যাব।
ঈদ যত কাছে আসতে থাকে তত আনন্দের অনুভূতিটা আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে ঈদের আগের দিন রাতেই আমরা সব বন্ধুরা মিলে অনেক ধরনের ফটকা বাজি বোমা এগুলো কিনে আনতাম এবং সারারাত ধরে সেগুলো ফোটাতাম। আবার মাঝে মাঝে ঈদের আগের দিনে আমরা পিকনিক করতাম। সবাই মিলে একটি পিকনিকের আয়োজন করে সেখানে সব ধরনের পরিকল্পনা করতাম। ছোটবেলার সব থেকে মজার মুহূর্ত হচ্ছে ঈদের দিন সকালে নামাজ পড়ে এসে সব ধরনের আত্মীয়-স্বজনের বাসায় যাওয়া এবং তাদের কাছ থেকে ঈদের সালামি সংগ্রহ করা। এর মধ্যে একটি আলাদা আনন্দ কাজ করতো, সেই সাথে কিছুটা ইনকাম হয়ে যেত। হাহাহা।
আমরা যখন ছোট ছিলাম আমাদের এলাকার বড় ভাইরা মিলে আবার বড় বড় পিকনিকের আয়োজন করত। সেখানে আমাদের পরিবারের সবাইও অংশগ্রহণ করতে। এলাকার সবাই মিলেই বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে আসতাম এবং পিকনিকের আয়োজন করতাম। সেটা কয়েক বছর একবার করে হলেও সেটা কিন্তু অনেকটাই মজাদার ছিল। আবার আমরা বন্ধুবান্ধবরা মিলে একটি গাড়ি ভাড়া করতাম এবং বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে যেতাম। তার মধ্যে স্বপ্নপুরী এবং ভিন্ন জগৎ অন্যতম ছিল। আবার মাঝে মাঝে বড় বড় সাউন্ড বক্স এনে এলাকার মধ্যে আমরা গান বাজাতাম, যেগুলো অনেক ছোটবেলায় করতাম।
এই ঈদের আনন্দ গুলো প্রায় ৪-৫ দিন ধরে চলতো। পরবর্তীতে ঈদের আমেজ শেষ হতো। ছোটবেলায় যে সকল মজা করেছিলাম সেই সব মজা গুলো এখন আর করা হয় না। তবে সেই দিনগুলোকে অনেক বেশি মিস করি। আবার যদি সেই শৈশবের দিনগুলোতে ফিরে যেতে পারতাম তাহলে মন্দ হতো না। আপনারা ঈদের সময় গুলোতে ছোটবেলায় কিভাবে কাটিয়েছেন সেটা দু চার লাইনে কমেন্টে লিখতে পারেন। আজকের মত এখানেই শেষ করছি ধন্যবাদ সবাইকে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
আমি আল সারজিল ইসলাম সিয়াম। আমি বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। আমি বর্তমানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিএসসি-র ছাত্র। আমি স্বতন্ত্র স্বাধীনতা সমর্থন করি। আমি বই পড়তে এবং কবিতা লিখতে পছন্দ করি। আমি নিজের মতামত প্রকাশ করার এবং অন্যের মতামত মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি। আমি অনেক ভ্রমণ পছন্দ করি। আমি আমার অতিরিক্ত সময় ভ্রমণ করি এবং নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে ভালোবাসি। নতুন মানুষের সংস্কৃতি এবং তাদের জীবন চলার যে ধরন সেটি পর্যবেক্ষণ করতে ভালোবাসি। আমি সব সময় নতুন কিছু জানার চেষ্টা করে যখনই কোনো কিছু নতুন কিছু দেখতে পাই সেটার উপরে আকর্ষণটি আমার বেশি থাকে।
বিষয়: স্মৃতিচারণ || ছোটবেলার ঈদ উৎসব
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......
ছোটবেলায় ঈদের সময় সত্যিই ভীষণ আনন্দ করতাম। আপনাদের মতো আমাদেরও কয়েকজনের গ্রুপ ছিলো এবং আমরা খেলাধুলা থেকে শুরু করে ঈদের শপিং, ঘুরাঘুরি সবকিছুই একসাথে করতাম। সেই দিনগুলো আসলেই খুব মিস করি। আপনার পোস্টটি পড়ে কিছুক্ষণের জন্য ছোটবেলার স্মৃতিতে হারিয়ে গিয়েছিলাম ভাই। যাইহোক এতো চমৎকারভাবে আপনার ছোটবেলার মধুর স্মৃতি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
ঠিক বলেছেন ভাই, ছোটবেলায় অনেকটা উপভোগ করতাম তবে বড় হওয়ার সাথে সাথেই সেই আনন্দ গুলো কোথায় যেন হারিয়ে যাচ্ছে।
ছেলেবেলার ঈদ আনন্দ সত্যি ই ভীষণ আনন্দের ছিল।এখন সেই আনন্দ অনেকটা ই মলিন হয়ে গেছে।আসলে দায়িত্বের বোঝা মাথায় পরলে সেই রকম আনন্দ আর করা হয়ে উঠে না।তারপরেও সবকিছুর মধ্যে দিয়ে আনন্দকে উপভোগ করে নেয়াই হয় আজকাল।সুন্দর অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
ঈদ মানে আনন্দ তবে এই আনন্দটা ছোটবেলার মধ্যেই যেন সীমাবদ্ধ হয়ে থাকে!
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া খুবই সুন্দর একটি স্মৃতিময় অনুভূতি আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। ছোটবেলায় ঈদের আগের দিনটি ছিল আমাদের জন্য খুবই স্পেশাল। সন্ধ্যার ঘর থেকে বের হতাম, রাতে অনেক খেলা খেলতাম বন্ধুরা সহ। কে কি জামা কিনলো সেটা নিয়ে চলত কতনা বিতর্ক। কার হাতের মেহেদী ডিজাইন কত সুন্দর হল তা নিয়েও চলত জমজমাট আনন্দের বিতর্ক। সব কিছু মিলিয়ে অসাধারণ দিন ছিল, সেই ফেলে আসা দিনগুলো। বর্তমান সে আনন্দগুলো হারিয়ে গেল। আপনার পোস্টটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো। কিছু মুহূর্তের জন্য সেই শৈশবে ফিরে গেলাম। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া এমন একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
ছোটবেলায় ঈদ আসার আগে থেকেই কত ধরনের যে প্লান পরিকল্পনা ছিল সেগুলো আসলে ভাষায় প্রকাশ করার মত নয়।