টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রি

হ্যালো আমার বাংলা ব্লগ। পরিবার আপনারা সবাই কেমন? আছেন আশা করছি আপনার সবাই অনেক ভালো আছেন। প্রতিনিয়তই বিভিন্ন ধরনের ব্লগ লিখে আপনাদেরকে বিভিন্ন ধরনের তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করছি তবে আজ আমি টেক্সটাইল সম্পর্কে বেসিক বিষয় নিয়ে আপনাদের সাথে আলোচনা করব অর্থাৎ কিভাবে কাপড় তৈরি হয় এবং এই কাপড়গুলো ব্যবহার উপযোগী করার জন্য কতগুলো ধাপ অতিক্রম করতে হয় সেই বিষয়ে একটি প্রাথমিক ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব, তবে চলুন শুরু করি।।

টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিকে শুধুমাত্র একটি ইন্ডাস্ট্রির বললে হয়তো ভুল হবে কারণ এখানে অনেকগুলো বড় বড় ইন্ডাস্ট্রিকে একত্রি করে একটি ইন্ডাস্ট্রির নাম দেওয়া হয়েছে সেটা হচ্ছে টেক্সটাইল। কিন্তু এর মধ্যেও অনেক বড় বড় ইন্ডাস্ট্রি রয়েছে সেই বেসিক বিষয়গুলো আলোচনা করব।

স্পিনিং ইন্ডাস্ট্রি। যে ইন্ডাস্ট্রিতে তুলা থেকে সুতা পর্যন্ত তৈরি করতে যাবতীয় প্রসেস মেইনটেইন করে নির্দিষ্ট মানের সুতা তৈরি করা হয় সেই ইন্ডাস্ট্রিকেই স্পিনিং ইন্ডাস্ট্রি বলে থাকি। আসলে আগের তুলনায় বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের সুতার চাহিদা বেড়েছে যেমন বিভিন্ন ধরনের বাহারি পোশাক আপনারা দেখতে পারেন ঠিক তেমনিভাবে বাহারি রকমের সুতা তৈরি হয়।

Source

আজ থেকে ২০ বছর আগেও এত ধরনের বাহারি সুতা ছিল না বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের তুলা ব্যবহার করে সেই তুলা থেকে সুতা উৎপাদন করা হয়। আগে শুধুমাত্র ২-৩টি প্রসেস চলিয়ে সুতা তৈরি হত। এখন একটি সুতার মধ্যেই দুই তিনটা তুলা তৈরি মিক্সিং করে একটি সুতা তৈরি হয় যাতে করে বিভিন্ন ধরনের সুতা তৈরি হতে পারে এবং সেই সুতা দিয়েই বিভিন্ন ধরনের বাহারি বাহারি পোশাক তৈরি করতে হতে পারে। যেমন শীত প্রধান দেশের জন্য ১০০% কটনের সুতা তৈরি করা হয় এবং গ্রীষ্ম প্রধান দেশের জন্য এর ব্যতিক্রম সুতা তৈরি করা হয়।

তবে এই সুতার অর্ডার কোথা থেকে আসে জানেন আপনারা সেটা হচ্ছে অ্যাপারেল ইন্ডাস্ট্রি অর্থাৎ পোশাক তৈরির যে ইন্ডাস্ট্রি রয়েছে সেখানে। এই পোশাক বলতে শুধুমাত্র আমরা থান কাপড়কে বলি। একদম নির্দিষ্ট পরিমাণের প্যান্ট শার্ট কিংবা ইত্যাদি এ ধরনের কিছু বুঝাচ্ছি না। শুধুমাত্র আমাদের ওভেন ফেব্রিক কিংবা নিটিং ফেব্রিক তৈরির ক্ষেত্রে যেসব সুতার প্রয়োজন প্রয়োজন সেখান থেকেই অর্ডার করা হয়। মার্কেটে এখন কোন ধরনের পোশাকের চাহিদা রয়েছে সেই কথা বিবেচনা করেই সেই ধরনের সুতা অর্ডার দেওয়া হয় এবং সুতা গুলো তৈরি হয়ে গেলে সেই সুতা গুলো অ্যাপারেল ইন্ডাস্ট্রিতে পাঠানো হয়। সেখানেই তারা বিভিন্ন ধরনের মেশিনের সাহায্যে তুলার সুতা থেকে কাপড় তৈরি করেন, থান কাপড়। কিন্তু আরও একটি বিষয় রয়েছে যেসব টি-শার্ট পরে থাকি সেগুলো কিন্তু আবার নিটিং পদ্ধতিতে তৈরি করা হয়।

আবার কিছু কিছু পোশাকের ক্ষেত্রে সুতা রং করা হয়ে থাকে আবার কিছু কিছু কাপড়ের ক্ষেত্রে কাপড় তৈরি হওয়ার পর রং করা হয়ে থাকে। অর্থাৎ চাহিদা অনুযায়ী এই বিষয়গুলো করা হয় তবে। ইয়ান ডাইনিং এর ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে এবং এটা অনেক পুরনো একটি প্রযুক্তি। বর্তমানে কিন্তু কাপড় তৈরি করার পরেই সেখানে ডাইং কিংবা প্রিন্টিং করা হয়। তবে আর যাই বলেন না কেন পুরনো প্রযুক্তি হলেও এই প্রযুক্তির ব্যবহার করে কিন্তু অনেক দামি দামি শাড়ি তৈরি করা হয়ে থাকে। যেটা এখনো বাংলাদেশের অনেক জায়গায় হাতেই তৈরি করা হয়। একটি শাড়ি তৈরি করতে প্রায় ২০ থেকে ৩০ দিনের মতো সময় লাগে এবং সেই শাড়িটা প্রায় ৫০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকায়ও বিক্রি হতে পারে।

যাইহোক আমরা তো প্রায় তিনটা ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্কে জানতে পারলাম। একটি হচ্ছে স্পিনিং ইন্ডাস্ট্রি, একটি হচ্ছে ডাইং এবং প্রিন্টিং ইন্ডাস্ট্রি আরেকটি হচ্ছে অ্যাপারেল ইন্ডাস্ট্রি। এর পরেই আসছে মূলত মূল আকর্ষণ অর্থাৎ গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রি। গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্কে কি আর বলব সেই বিষয়ে আপনারাও অনেক ভালো জানেন। তবে একটি বিষয় লক্ষ্য করার মতো রয়েছে বাংলাদেশে কিন্তু খুব কম সুতার ইন্ডাস্ট্রি রয়েছে কারণ ভালো মানের সুতা তৈরি করতে পারে না বাংলাদেশ। কিন্তু এই বিষয়টা কেউ পিছনে ফেলে দিয়েছে কিছু কিছু নামিদামি ইন্ডাস্ট্রি। যেমন ফকির গ্রুপের কথাই বলি না কেন। এখানে কিন্তু অনেক কোয়ালিটি সম্পন্ন সুতা তৈরি হচ্ছে যা দশ বছর আগেও হয়তো বাংলাদেশ তৈরি করতে পারত না। এখানে একদম মেডিন জাপান, মেড ইন ইন্ডিয়া এসব জায়গা থেকে একদম অত্যাধুনিক মেশিন এনে সেখান থেকে সুতা তৈরি করছে।

Source

যেমন Vortex লাইনের ভটেক্স মেশিন কিন্তু মেড ইন জাপান যা এক একটা মেশিনের দাম ২ কোটি টাকার উপরে। আবার রিং স্পিনিং মেশিন মেড ইন ইন্ডিয়া থেকে তৈরি করা হয়েছে এবং সেই রিং স্পিনিংটা বর্তমানে পৃথিবীর অত্যাধুনিক একটি রিং স্পিনিং মেশিন। vortex লাইনের মোট ছয়টি মেশিন রয়েছে এবং রিং স্প্রিনিং এর সর্বমোট ১৩ টি মেশিন রয়েছে।

এসব কথা বাদ দিয়ে মূল কথায় আসি আমাদের গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রি কিন্তু অনেক বড় একটি ইন্ডাস্ট্রি এবং এই ইন্ডাস্ট্রির গুণগত মান অনেকটাই বেশি অন্যান্য দেশে তুলনায়। বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের চাহিদা এবং মূল্য দুটোই বেশি। কোন এক মহান ব্যক্তি একটি কথা বলেছিল মেড ইন বাংলাদেশ পোশাক যে তৈরি হয় সেই পোশাক কিনে পড়ার মতো সামর্থ্য বাংলাদেশের অনেক নাগরিকেরই নেই। একদিক থেকেই এই কথাটাই সঠিক এই বলেছেন কারণ গত ফুটবল বিশ্বকাপের যে জার্সি গুলো তৈরি করা হয়েছিল সেই জার্সির এক একটা মূল্য ছিল প্রায় ৩০ হাজার টাকা।

আরেকটি মজার তথ্য দিয়ে আজকের এই পোস্টটি শেষ করব। আমরা যেমন বাংলাদেশে কোন কিছু কিনতে গেলে মেড ইন জাপান লেখাটা দেখলে সেই বিষয়ের উপর ভরসা পাই যে, সেই মেশিনটা বা সেই বস্তুটি অনেকটা টেকসই হবে ঠিক তেমনিভাবে বিদেশে যদি মেড ইন বাংলাদেশের কোন পোশাক দেখতে পায় তাহলেও তারা একটা ভরসা পায়। বাংলাদেশের পোশাকের এমন একটি গুণগত মার্কেট তৈরি হয়েছে।

এইছিলাম সর্বমোট চারটি ইন্ডাস্ট্রি এর বাইরেও কিন্তু ছোটখাটো দুই একটা ইন্ডাস্ট্রি রয়েছে সেই বিষয়ে আর গেলাম না কারণ তুলা থেকে একদম পোশাক তৈরি পর্যন্ত যেসব ইন্ডাস্ট্রির প্রয়োজন হয় সেসব নিয়েই আলোচনা করেছি এবং প্রাথমিক ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আজকের মতো এখানেই সমাপ্ত করছি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন ধন্যবাদ সবাইকে।

VOTE @bangla.witness as witness

OR

SET @rme as your proxy

---

---

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP	500 SP	1000 SP	2000 SP	5000 SP

---

|| Join the Discord Server for more Details ||

---

আমি আল সারজিল ইসলাম সিয়াম। আমি বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। আমি বর্তমানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিএসসি-র ছাত্র। আমি স্বতন্ত্র স্বাধীনতা সমর্থন করি। আমি বই পড়তে এবং কবিতা লিখতে পছন্দ করি। আমি নিজের মতামত প্রকাশ করার এবং অন্যের মতামত মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি। আমি অনেক ভ্রমণ পছন্দ করি। আমি আমার অতিরিক্ত সময় ভ্রমণ করি এবং নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে ভালোবাসি। নতুন মানুষের সংস্কৃতি এবং তাদের জীবন চলার যে ধরন সেটি পর্যবেক্ষণ করতে ভালোবাসি। আমি সব সময় নতুন কিছু জানার চেষ্টা করে যখনই কোনো কিছু নতুন কিছু দেখতে পাই সেটার উপরে আকর্ষণটি আমার বেশি থাকে।

---

---

বিষয়: টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রি

কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ

আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......