হাসি দিয়ে প্রতিটি পরিস্থিতি মেনে নাও
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগ পরিবার। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি আপনার সবাই অনেক ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে আমিও ভালো আছি। আমাদের সকলের জীবনে চ্যালেঞ্জিং এবং এই চ্যালেঞ্জিং জীবনে বেঁচে থাকতে হলে নিজের মনোবল থাকাটা খুবই জরুরী। আজ আমি একটি ছোট্ট বিষয়বস্তু আপনাদের সাথে শেয়ার করব, আশা করছি আপনাদের ভালো লাগবে।
আমি যেখানে চাকরি করি সেখানে রিফাত নামের একটি ছেলে আছে এবং সেই ছেলেটা একটু অলস প্রকৃতির। কাজের কারণে প্রতিনিয়ত সে স্যারদের কাছেও বকাবকি খায় এবং মাঝে মাঝে আমার কাছে ও বকাবকি খায়। কারণ একটি বিষয়ে তাকে বারবার বোঝার পরেও সে বুঝতে পারে না। এছাড়াও প্রত্যেকটি কাজের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ভুল করে রাখে। যেকোনো কাজের কথা বলা হলেই সেই প্রথমেই না বলে দেবে। যে স্যার এই কাজটি আমি করতে পারব না। আমার এই সমস্যা ওই সমস্যা এভাবে করেই তার দিন কয়েক দিন ধরেই চলছিল। তবে রিভার যতবারই কাজের জন্য বারণ করে তত বেশি করেই তাকে আরো কাজ করতে হয় এবং বেশি সময় অফিসে কাটাতে হয়।
সেই ছেলেকে দেখে আমার অনেক মায়া হয়। বিশেষ করে ছেলেটি খুবই ভদ্র স্বভাবের এবং সে বিয়েও করেছে যদিও সে আমার থেকে বয়সে আরও তিন চার বছরে ছোট হবে। কিন্তু তার একটা এক বছরের বাচ্চা রয়েছে। সে অনেক শান্তশিষ্ট এবং অনেক ভদ্র স্বভাবের একটা ছেলে। কিন্তু সে মাঝে মাঝে কাজগুলো করতে অনেকটাই ভয় পেয়ে যায় কারণ সে আগে কখনো এমন জায়গায় চাকরি করেনি এবং এ সম্বন্ধে তার খুব একটা বেশি নলেজ নেই। এই ছেলেকে নিয়ে আমাদের অফিসের সবাই প্রায় হাসাহাসি করে। তাকে অনেক ধরনের কথা শুনায় কিন্তু সবার কথা শুনেও সে মুখ বুঝে সহ্য করে একটি কথার উত্তর দেয় না। বিষয়টি আমার কাছে অনেক খারাপ লেগেছিল। তাই গত বৃহস্পতিবার তাকে আমি একটু নিজস্ব পরামর্শ দেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম।
এই ছেলেকে দেখে আমার অতীতের কথা মনে পড়ে গিয়েছিলো, যখন ২০১৫ সালের ঢাকায় আসি আমি অনেকটা এর মতই ছিলাম। বৃহস্পতিবার রিফাত এবং আমার অফিস টাইম একই ছিল। তাই অফিস থেকে বেরোনোর সময় রিফাত কে ডেকে একটি চায়ের দোকান নিয়ে যেয়ে বসলাম। তাকে আমাদের কাজ সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের বিষয়বস্তুগুলো বোঝানোর চেষ্টা করলাম এবং সর্বশেষে একটি কথা বলেছি যেটা নাকি তার অনেক ভালো লেগেছে। বিষয়টি আমি এমন ভাবে বলেছিলাম, দেখ রিফাত কাজ তো তোমাকে করতেই হবে। ভালো হওয়ার মন্দ হোক যদি তুমি কাজে বারণ করো তাহলে কিন্তু তোমার এই চাকরি ও বেশিদিন থাকবে না। কিন্তু তুমি সেই কাজটি যদি হাসিমুখে করো তাহলে হয়তো তোমার এ বর্তমান সময়টা কেটে যাবে। আমরা সবাই এখানে কাজ করতে এসেছি, কারো দায়িত্ব বেশি কারো দায়িত্ব কম। কিন্তু কাজ সবারই সমান করতে হয়। দেখো মাঝে মাঝে তুমি বিভিন্ন কাজে বারণ করো কিন্তু দিনশেষে সেই কাজটা তোমাকে দিয়েই করানো হয়। স্যারেরা রাগারাগি করে এবং তোমার সম্পর্কে বলাবলি করে যে, একবার বলে কোন কাজ এই ছেলেকে দিয়ে করানো যায় না। সে ক্ষেত্রে স্যারেরা তোমার উপর রাগান্বিত অবস্থায় থাকে। সেই একই কাজ যদি তুমি হাসিমুখে করো তাহলে দেখবে স্যারেরা তোমার প্রতি সন্তুষ্ট থাকবে।
আরো অনেক ধরনের কথাই তাকে বলেছি কিন্তু মূল বিষয়ে কি জানেন? আমাদেরকে পৃথিবীতে বেঁচে থাকতে হলে বিভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জিং এর মোকাবেলা করতে হয়। বিভিন্ন ধরনের পরিস্থিতি আমাদের সামনে চলে আসে। এখন সেটা আপনার উপর নির্ভর করে সেই পরিস্থিতিটাকে আপনি কিভাবে সামলে নেবেন। পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, কাজ কিন্তু আমাদেরকে করে যেতেই হবে। সেটা হোক হাসিমুখে কিংবা রাগান্বিত অবস্থায়। তাই আমাদের সকলের উচিত যেমনই পরিস্থিতি হোক না কেন, সেই পরিস্থিতিতে গুলোকে হাসিমুখে মেনে নেওয়াই হল বুদ্ধিমানের কাজ। আজকের মত এখানেই শেষ করছি, আপনারা সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন, ধন্যবাদ সবাইকে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW8HnxaSZVKBJJ9fRD93ELcrH8wXJ4AMNPhrke3iAj5dX/witness_vote.png)
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
আমি আল সারজিল ইসলাম সিয়াম। আমি বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। আমি বর্তমানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিএসসি-র ছাত্র। আমি স্বতন্ত্র স্বাধীনতা সমর্থন করি। আমি বই পড়তে এবং কবিতা লিখতে পছন্দ করি। আমি নিজের মতামত প্রকাশ করার এবং অন্যের মতামত মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি। আমি অনেক ভ্রমণ পছন্দ করি। আমি আমার অতিরিক্ত সময় ভ্রমণ করি এবং নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে ভালোবাসি। নতুন মানুষের সংস্কৃতি এবং তাদের জীবন চলার যে ধরন সেটি পর্যবেক্ষণ করতে ভালোবাসি। আমি সব সময় নতুন কিছু জানার চেষ্টা করে যখনই কোনো কিছু নতুন কিছু দেখতে পাই সেটার উপরে আকর্ষণটি আমার বেশি থাকে।
বিষয়: হাসি দিয়ে প্রতিটি পরিস্থিতি মেনে নাও
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......
আসলে কিছু কিছু মানুষ কাজ দেখলে প্রথমে ভয় পায়। ভাবে যে কাজটি কি আমি পারবো নাকি। এই ধরনের মানুষদের আত্নবিশ্বাসের অভাব। দেখা যায় কাজটি শুরু করলে সে ঠিকই পারে, কিন্তু প্রথমে ভাবে যে পারবে না। রিফাতের অবস্থা হচ্ছে এরকম। সে যখন বাধ্য হয়ে কাজটি করে, তখন কাজটি ঠিকই করতে পারে ভালোভাবে। তাই অবশ্যই আত্নবিশ্বাসী হতে হবে এবং হাসিমুখে যেকোনো পরিস্থিতি মেনে নিতে হবে। কারণ কাজ করা ছাড়া কেউ টাকা দিবে না। আপনি দারুণ পরামর্শ দিয়েছেন রিফাতকে। যাইহোক পোস্টটি পড়ে খুব ভালো লাগলো ভাই। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
একদম তাই ভাই। আমাদের কে এই পৃথিবীতে বেচেঁ থাকতে হলে সব সমস্যা কে অতিক্রম করতে জানতে হবে। মেনে নিতে হবে সকল সমস্যা গুলো কে হাসি মুখে। রিফাত আসলে শান্ত হলেও মনে হয় সব কাজেই ভয় পায়। আশা করবো রিফাত আগামীতে আপনাদের মনের মত করে নিজেকে গড়ে তুলতে পারবে।
দেখ রিফাত কাজ তোমাকে এখানে করতেই হবে। ভালো হওয়ার মন্দ হোক কাজে যদি বারন করো তাহলে তোমার চাকরিটা নাও থাকতে পারে। আসলে ভাইয়া আপনার এই কথাটি দিয়ে সে তার বাস্তবিকভাবে নিজেকে বুঝতে শিখেছে আমি যেটা মনে করি এজন্যই আপনার এই কথাটি তার কাছে সব থেকে বেশি ভালো লেগেছে। কারণটা হলো আমরা যেখানেই কাজ করেন এখনো সেখানকার মালিকের সন্তুষ্টি জুগিয়ে আমাদের কাজ করতে হয় তাহলে আমরা সেখানে দীর্ঘদিন ধরে চাকরিকে টিকিয়ে রাখতে পারি আমাদের। আর আমাদের জীবন সত্যিই একটা চ্যালেঞ্জিং বিষয় যেখানে বিভিন্ন ঘাত প্রতিঘাত অতিক্রম করে চলতে হয়। আর আসার বউ ২০১৫ সালে প্রথম ঢাকা যাওয়ার অভিজ্ঞতাটি নিয়ে একটি পোস্ট করবেন, যেন সেখান হতে শিক্ষামূলক কিছু অর্জন করতে পারি আমরা।
খুব সুন্দর কথা বলেছেন হাসি দিয়ে যেকোনো পরিস্থিতিকে মানিয়ে নেয়া।আপনি রিফাত নামের ছেলেটিকে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন।সত্যি ই তো কাজ যখন করতেই হবে তবে সবাইকে রাগান্বিত না করে হাসি মুখে করাই তো ভালো। না পারলেও চেষ্টাটা তো সবাই দেখবে।আর তাছাড়া যেকোনো কাজের আগ্রহ থাকা খুব জরুরী।আগ্রহ থাকলে সব কাজই সহজ হয়ে যায়। আর হাসি মুখে কাজে হাত দিলে পাশে থাকা মানুষগুলোর মনেও স্বস্তি থাকে।