শৈশবের স্মৃতি
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগ পরিবার। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি আপনারা সবাই অনেক ভালো আছেন। আজ আমি আপনাদের সাথে আমার ছোটবেলার কিছু শৈশবের স্মৃতি নিয়ে আলোচনা করব। দেখুন তো আপনাদের শৈশবের স্মৃতির সাথে মিলে যায় কিনা! তবে চলুন শুরু করছি।
আমরা যারা নব্বই দশকে জন্মগ্রহণ করেছি তারা অনেক চমৎকার একটি সময় অতিবাহিত করেছি. বিশেষ করে তখন কোন ইন্টারনেট ছিল না, না ছিল ফোন, না ছিল এত ধরনের টেকনোলজি। তবে মানুষের মধ্যে আন্তরিকতা এবং বন্ধু-বান্ধবের সাথে নিয়ম করে খেলাধুলা বিভিন্ন জায়গায় পিকনিকে যাওয়া এবং ঈদের সময় গান বাজানো এসব কিছুই যেন আমাদের মনের মাঝে আনন্দ বয়ে দিত।
আমাদের ঠিক বাসার সামনেই ছিল একটি বড় মাঠ। প্রতিদিন বিকেল বেলা করে নিয়মমাফিক সেই মাঠে খেলাধুলা করতাম। স্কুল থেকে এসে খাওয়া-দাওয়া করে ফ্রেশ হয়ে বিকেল বেলা যখন মা ঘুমানোর কথা বলতো তখন মাকে কোনভাবে বুঝিয়ে বন্ধু-বান্ধবের সাথে সেই মাঠে যে বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলা করতাম। আগে তো কত রকম বাহারি খেলাধুলা ছিল যার নাম গুলো এখন হয়তো সবগুলো বলতে ও পারব না। তবে কানামাছি খেলা, দৌড়াদৌড়ি খেলা, লুকোচুরি খেলা, লাটিম ঘোড়ানো, কেরাম বোর্ড খেলা এছাড়াও শীতের সময় ব্যাডমিন্টন খেলা অনেক উপভোগ করতাম।
তবে শীতকাল ছাড়া বাকি সব সময়ই আমরা বেশিরভাগ সময় ক্রিকেট খেলতাম। ক্রিকেট আমাদের সকলেরই অনেক প্রিয় একটি খেলা ছিল। তাই আমাদের মাঠের মধ্যে বিকেল হলেই আগে বল ব্যাট নিয়ে যে খেলাধুলা করতাম। যদি কোন কারণে বৃষ্টি হয়ে যেত মাঠ ভিজে থাকতো তখন ফুটবল খেলতাম। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে আমরা বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলা করেছি, বিশেষ করে বিভিন্ন টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করেছিলাম।
শৈশবের দিনগুলো কি আর কখনো ফিরে পাবো? মনে হয় না!! তবে সেই আনন্দ গুলো এখন খুঁজে বেড়াই কোথায় জানেন!! বাসায় গেলে সেই মাঠের সামনে দাঁড়িয়ে থাকি এবং আমাদের এলাকার সেই বাচ্চাদের খেলা গুলো দেখতে থাকি। মনে হয় যেন সেই শৈশবে ফিরে গেছি। সেই খেলাধুলা দেখার মধ্যেও যে আনন্দটা রয়েছে সেই আনন্দটা হয়তো বড় বড় রেস্টুরেন্টে গিয়ে পেট ভরে খাওয়ার মধ্যেও নেই।
শৈশবে তো আমরা সকলেই অনেক আনন্দ করেছি তবে সবথেকে বড় আনন্দ হচ্ছে বিভিন্ন উৎসবে বিভিন্ন ধরনের পিকনিকের আয়োজন করা। তখন তো আমরা অনেক ছোট ছিলাম। আমাদের কারো কাছেই টাকা পয়সা খুব একটা বেশি ছিল না। তবে আমাদের মধ্যে উদ্দীপনা এবং উৎসাহ অনেক বেশি ছিল তাই তো যে যেভাবে পারি বাসা থেকে চাল ডাল একখানে করে এনে আমরা বিভিন্ন সময় পিকনিক করতাম। এছাড়াও একুশে ফেব্রুয়ারি, ১৬ই ডিসেম্বরে আমরা মানুষের বাগান থেকে ফুল চুরি করে সেগুলো আবার শহীদ মিনারে দিয়ে আসতাম, হাহাহা কত মজার দিন ছিলো তাই না!
ছোটবেলায় বেশিরভাগ সময় আমরা ক্রিকেট খেলতাম সেই সময়ে আমাদের এলাকার বড় ভাইরা এসে বলতো দাও তো একটি বল খেলি, একটি ব্যাটিং করি। তখন কেন জানি অনেকটাই বিরক্ত হতাম। তবে আজ বুঝতে পারছি সেই বড় ভাইরা কেন একটি বল খেলতে চাইতো! এখন বাসায় গেলে আমিও সেই একই কাজ করি। মাঝে মাঝে নিজের আবেগ এবং আনন্দকে কোন ভাবে আটকে রাখতে পারে না। যেয়ে বলি একটি বল করো তো একটি বল খেলেই তোমাদেরকে ব্যাট ছেড়ে দেবো।
আজ হঠাৎ করেই কেন যেন শৈশবের কথা অনেক মনে পড়ছে তাই এই পোস্টটি করলাম। আশা করছি আপনাদের অনেক ভালো লেগেছে। আপনাদের সাথে কি কোন কিছু মিলে গেছে? মিলে গেলে অবশ্যই মন্তব্যে জানাতে ভুলবেন না কিন্তু... আজকেন মত এখানেই শেষ করছি, সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন ধন্যবাদ।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
আমি আল সারজিল ইসলাম সিয়াম। আমি বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। আমি বর্তমানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিএসসি-র ছাত্র। আমি স্বতন্ত্র স্বাধীনতা সমর্থন করি। আমি বই পড়তে এবং কবিতা লিখতে পছন্দ করি। আমি নিজের মতামত প্রকাশ করার এবং অন্যের মতামত মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি। আমি অনেক ভ্রমণ পছন্দ করি। আমি আমার অতিরিক্ত সময় ভ্রমণ করি এবং নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে ভালোবাসি। নতুন মানুষের সংস্কৃতি এবং তাদের জীবন চলার যে ধরন সেটি পর্যবেক্ষণ করতে ভালোবাসি। আমি সব সময় নতুন কিছু জানার চেষ্টা করে যখনই কোনো কিছু নতুন কিছু দেখতে পাই সেটার উপরে আকর্ষণটি আমার বেশি থাকে।
বিষয়: শৈশবের স্মৃতি
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......
আসলে আমাদের সকলেরই ছোটবেলার এরকম কিছু মধুর স্মৃতি থাকে যেগুলো এখন মনে পড়লেই আবারো সেই সময় ফিরে যেতে ইচ্ছে করে। ফুল চুরি করে নিয়ে গিয়ে শহীদ মিনারে দিতেন কথাটা জানতে পেরে বেশ মজা পেলাম। যাইহোক ধন্যবাদ ভাই আপনাকে শৈশবের স্মৃতি নিয়ে এই সুন্দর পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
ভাইয়া আপনার শৈশবের স্মৃতিগুলো পড়ে আমার খুবই ভালো লেগেছে। আসলে ভাইয়া আমাদের সময় বিভিন্ন প্রকারের বিজ্ঞান প্রযুক্তি প্রসারিত না হলেও আমরা পেয়েছি মুক্ত আকাশ, দূষণমুক্ত বাতাস আর খেলা করার জন্য এক ঝাঁক বন্ধু। সত্যি ভাইয়া আমাদের ওই সময়কার মিষ্টি স্মৃতি গুলো কখনোই ভুলে যাবার নয়।
আসলে ভাইয়া আমাদের শৈশবটা সত্যিই অনেক আনন্দের ছিল যা এখনকার ছেলে মেয়েরা এর কিছুই বুঝতে পারে না। তারা মোবাইলে বন্দী থাকলেও সেই আনন্দটা তারা উপভোগ করতে পারে না এবং তারা বুঝতেও পারে না সে আনন্দটা কেমন ছিল। তবে একুশে ফেব্রুয়ারিতে সবসময় আমাদের বাগানের ফুল চুরি হতো ভারি বিরক্তিকর লাগতো ।আপনারাই মনে হয় চুরি করে নিয়ে যেতেন হা হা। বেশ ভালো ছিল ধন্যবাদ।
ভাই আপনার সাথে আমার শৈশবের সবকিছুই মিলে গিয়েছে। দুপুরে খাওয়া দাওয়া করার পর আম্মু ঘুম পাড়াতো, কিন্তু আম্মু ঘুমিয়ে গেলেই বাসা থেকে বের হয়ে সোজা মাঠে গিয়ে ক্রিকেট খেলা শুরু করতাম। তাছাড়া আরো বিভিন্ন ধরনের খেলাও খেলেছি। বৃষ্টি আসলে ফুটবল খেলা মিস করতাম না। শীতের সময় দিনের বেলা ক্রিকেট এবং সন্ধ্যার পর ব্যাডমিন্টন খেলতাম। ক্রিকেট খেলার সময় বড় ভাইয়েরা এসে ব্যাট নিয়ে বলতো একটা বল করতে এবং একটার কথা বলতো ঠিকই, কিন্তু বেশ কয়েকটা বল করা লাগতো। তখন মনে মনে বকাবকি করতাম। কিন্তু এখন বুঝি উনারা কেনো এমনটা করতেন। শৈশবের স্মৃতি গুলো আসলেই খুব মনে পড়ে। বারবার মনে হয় যদি শৈশবে ফিরে যেতে পারতাম। যাইহোক পোস্টটি পড়ে সত্যিই খুব ভালো লাগলো ভাই। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।