---

কেমন আছেন আপনারা সবাই? আশা করছি সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সকলেই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন।আজকে আমি আপনাদেরকে অ্যাক্রেলিক রঙে একটি পাহাড়ি দৃশ্য এঁকে দেখাবো, যা দার্জিলিং-এ দেখা পাহাড়গুলো থেকে অনুপ্রাণিত। আমি আমার অনুপ্রেরণাকে যথাযথভাবে কাগজে ফুটিয়ে তোলার যথাসম্ভব চেষ্টা করেছি।

---

---

প্রয়োজনীয় উপকরন ও ব্যাবহৃত সামগ্রী:

ধাপ ১

আঁকতে আমাদের প্রথমেই লাগবে আঁকার কাগজ। আমি এখানে সাদা বর্ণের জলরঙের কাগজ ব্যবহার করেছি, কারণ আমি অ্যাক্রেলিক মাধ্যমে আঁকছি। আপনি চাইলে যেকোন সাদা কাগজ ব্যবহার করতে পারেন, তবে কাগজ যেন একটু শক্ত হয়।

ধাপ ২

তুলি। আমি এখানে সাইজ ২ (সূক্ষ্ম), ৪ (সুক্ষ্ম), ১” ফ্ল্যাট তুলি, সাইজ ১১ ফিল্বার্ট তুলি, আর সাইজ ৮ গোল তুলিগুলো ব্যবহার করেছি।

ধাপ ৩
মাস্কিং টেপ। যাতে আমার ছবির চারিপাশের অংশগুলো পরিষ্কার থাকে ও রঙ না লাগে।

---

অংকনের বিবরণ :

প্রথমেই আমি আমার কাগজের একটি নির্দিষ্ট অংশ মাস্কিং টেপের সাহায্যে আলাদা করে নিই।

এবার সেখানে হালকা নীল (সেরুলিয়ান ব্লু), সাদা (টাইটেনিয়াম হোয়াইট), ও উজ্জ্বল হলুদ (লেমন ইয়েলো) রঙ ব্যবহার করে আমার আকাশের একটি ব্যাকগ্রাউন্ড তৈরি করি। আমি এখানে শুরু করেছি হালকা নীল দিয়ে, তা থেকে ধীরে ধীরে রঙ মেশাতে মেশাতে সাদা পর্যন্ত নিয়ে আসি। এবার আগের নীল রঙের সাথে অল্প লাল (ব্রিলিয়ান্ট রেড) ও হলুদ ব্যবহার করে দূরের আভা তৈরি করি, যাতে সেখানে একটু হলদে ভাব ও গোলাপি আভা দেখা যায়। এখানে সাবধান থাকতে হবে এই বিষয়ে যাতে রংগুলো ভালোভাবে ফুটে ওঠে ও লাল বা হলুদ যাতে বেশি বোঝা না যায়।

এবার আমি তিন ধরনের নীল (সেরুলিয়ান ব্লু- হালকা নীল, ডিপ সায়ান- মধ্যম নীল, ফিথ্যালো ব্লু- গাঢ় নীল) ব্যবহার করে পাহাড়ের তিনটি আলাদা আস্তরণ তুলে ধরেছি। খেয়াল রাখত এহবে যাতে তিন ধরণের নীল একই রকম না লাগে, আবার যাতে রঙের মধ্যে খুব বেশি পার্থক্য-ও না থাকে। বেশি পার্থক্য দূরীকরণে সাদা রঙ ব্যবহার করতে হবে। পাহাড়ের দৃশ্য তৈরিতে আরেকটা জিনিসের খেয়াল রাখতে হবে, যাতে পাহাড়ের আকৃতি নষ্ট না হয়ে যায়, এজন্যে আগেই আমি সবচেয়ে সুক্ষ্ম তুলি দিয়ে পাহাড়গুলো কাগজে এঁকে নিয়েছি। আপনারা হয়তো খেয়াল করেছেন যে আমি পেন্সিল দিয়ে কোনকিছু আগে এঁকে নিই নি, তাতে কোন সমস্যা নেই। যদি আপনারা চান তাহলে আপনারা তা আগে এঁকে নিতে পারেন। আমি আমার পাহাড় রঙ করা শেষ করে কালো (ল্যাম্প ব্ল্যাক) দিয়ে নিচের একটি অংশ আগেই রঙ করে নিয়েছি, যা আমাদের পাহাড়ি ভূমি হিসেবে কিছুক্ষণ পর ফুটে উঠবে। এরপর আমরা রংগুলো শুকানোর জন্যে অপেক্ষা করবো।

এই রংগুলো শুকানোর পর আমি আবার সুক্ষ্ম তুলিটি নিয়ে কালো অংশে কিছু অসমানতা তুলে ধরেছি। এবার একই তুলি দিয়ে একই জায়গায় কিছু পাহাড়ি পাইন গাছ এঁকে নিয়েছি আমি। আপনারা চাইলে অন্য কোন গাছ-ও আঁকতে পারেন, তা সম্পূর্ণ আপনার ইচ্ছার উপর নির্ভর করে। আমার নিজের পাইন গাছ পছন্দ কারণ তা দেখতে সুন্দর লাগে এবং আঁকা অপেক্ষাকৃত বেশ সহজ। গাছ আঁকা শেষে সুক্ষ্ম তুলিটি ধুয়ে পরিষ্কার করে তাতে একটু সাদা রঙ আমি ভরে নিয়েছি, আর পাহাড়ের একটু দূরে সুন্দর একটি ছোট্ট চাঁদ এঁকে দিয়েছি। এটাও গাছের মতই আপনাদের ব্যক্তি-সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করে, আমি এখানে এটা এঁকেছি কারণ এই চাঁদটি ছবিটির সৌন্দর্য বহুগুণে বাড়িয়ে তুলবে।

গাছ ও চাঁদ আঁকা শেষ করলে আমাদের মূল ছবি অঙ্কন শেষ। এবার আমরা আবার রঙ শুকানোর জন্যে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে শুকানোর পর রঙের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করবো। আমার ক্ষেত্রে, শুকানোর পর রঙ অনেকটা হালকা হয়ে যাওয়ায় আমি আকাশে হাল্কা নীলের পাতলা একটি আস্তরণ যোগ করেছি, পেছনে হলুদের মাত্রাটা একটু বারিয়ে আবার ৪ নং সুক্ষ্ম তুলি দিয়ে আরেকটু রঙ করেছি, একদম সামনের নীল রঙের ওখানে নীলের সাথে কালোর একটি হালকা সংমিশ্রণ ঘটিয়ে একতি গাঢ় নীল তৈরি করে পাহাড়ের চূড়ার অংশগুলো ফুটিয়ে তুলেছি। সব কিছু ঠিক-ঠাক করা হলে আমি টেপগুলো সরিয়ে নিয়েছি। ব্যাস, আমার পাহাড়ের দৃশ্য অঙ্কন সমাপ্ত।

বিষয়	নাম
ডিভাইস	Realme Narzo 20
অঙ্কনের তারিখ	২৩/১১/২৩

---

ধন্যবাদ

_{Posted using SteemPro Mobile}