মিষ্টি ভাঁপা দইয়ের রেসিপি!Sweet Steamed Yogurt Recipe!
![]() |
---|
আমি মিষ্টি ভক্ত নই! তবে যদি কেউ আমাকে প্রশ্ন করেন, ভক্ত না হলেও যদি কিছু পছন্দের মিষ্টির উল্লেখ করতে তাহলে অবশ্যই দই সেখানে থাকবে।
নবদ্বীপের ক্ষীর দই স্বনামধন্য, তেমনি ভাঁপা দইয়ের নাম হয়তো অনেকেই শুনে থাকবেন।
কারণ, এই দই কিন্তু খুব বেশি পুরোনো আমল থেকে প্রচলিত এমনটি নয়!
মূলত কনডেন্স মিল্ক, এলাচ এর ব্যবহার করে মাটির পাত্রে ভাপিয়ে(steam) তৈরি করা হয় বলে এই মিষ্টির নাম ভাঁপা দই।
পদ্ধতি ভাগ করে নেবার আগেই জানিয়ে রাখি, আমি কিন্তু এই দই তৈরির সময় এলাচের ব্যবহার করে থাকলেও কনডেন্স মিল্ক ব্যবহার করিনি।
এর কারণ? নিজের পছন্দ মত মিষ্টির পরিমাণ সাথে নিজের মতো করে গবেষণা করা!
আশাকরি আমার এই ভাঁপা দইয়ের উপকরণ সহ পদ্ধতি পড়লেই আপনারা বুঝতে পারবেন।
একার হাতে বাজার সহ রান্না, কাজেই অনেক সময় সব ছবি তোলা হয়ে ওঠে না, সাথে কিছু রান্নার সময় সেটা সঠিকভাবে তৈরির দিকে নজর রাখতে গিয়েও এই ছবি তোলার কথা আমার মাথায় থাকে না!
|
---|
ফুল ফ্যাট মিল্ক | 500ml |
---|---|
গুড়ো দুধ | 100g. |
এলাচের গুঁড়ো | 1/4tsp. |
চিনি | 2tbsp |
টক দই | 200g |
|
---|

- প্রথমে:- আমি একটি পরিষ্কার সুতির কাপড় নিয়ে তারমধ্যে তাক দই দিয়ে, চারপাশ থেকে কাপড়টি বেঁধে একটি ছাঁকনির উপরে রেখে একটি ভারী বস্তু তার উপরে চাপা দিয়ে রেখেছিলাম। এর কারণ হলো, টক দই থেকে সমস্ত জল যাতে বেরিয়ে যায়, আর খালি দই অবশিষ্ট থাকে।


- দ্বিতীয় ধাপ:- এই ফাঁকে আমি ফুল ফ্যাট (আমুল) দুধ জ্বাল দিতে বসিয়ে দিয়েছিলাম। দুধ উষ্ণ গরম হলে তার মধ্যে থেকে খানিক দুধ একটি আলাদা পাত্রে সরিয়ে নিয়ে, ওই দুধের সাথে গুঁড়ো দুধ ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে।
এখানে উল্লেখ্য এই মিশ্রণটি নিখুঁত ভাবে তৈরি করতে হবে, গুড়ো দুধ দলা পাকিয়ে না থাকে সেটি অবশ্যই দেখতে হবে।

- তৃতীয় ধাপ:- এবার এই গুড়ো দুধের মিশ্রণ ঢেলে দিতে হবে লিকুইড দুধের মধ্যে, সঙ্গে এলাচের গুড়ো!
যেহেতু গুঁড়ো দুধ মিষ্টি তাই আমি কনডেন্স মিল্ক ব্যবহার করিনি, সাথে চিনিও কম সম্ভব ব্যবহার করেছি।
এইবার এই লিকুইড দুধের মিশ্রণকে ঘন করে জ্বালাতে হবে। যতক্ষণ ফুটে এই অর্ধেক না হয়ে যায়, কিংবা খানিক লালচে রঙের না গিয়ে যায়।
কাজটি সম্পাদন করা হয় গেলে আঁচ বন্ধ করে দুধ ঠান্ডা হতে দেবেন। আর এই দুধ জ্বালাবার সময় ঘন ঘন নাড়তে হবে, যাতে নিচে লেগে না যায়।

- চতুর্থ ধাপ:- জল ঝরতে দেওয়া দই একটি পাত্রে নিয়ে নিতে হবে। একটি হুইসকার এর সাহায্যে শুকনো টক দই ভালো করে ফেটিয়ে নিতে হবে।
ভালোভাবে ফেটানো হয়ে গেলে পাশে রেখে দিন।

- পঞ্চম ধাপ:- একটি প্যান আঁচে বসিয়ে তারমধ্যে চিনি দিন। আর যে মুহূর্তে চিনি গলতে শুরু করবে, একটি খুন্তি কিংবা spatula দিয়ে অনবরত নেড়ে ক্যারামেল তৈরি করে নেবেন।
লক্ষ্য রাখবেন যাতে পুড়ে না যায়, তাই অধিক জ্বাল করবেন না, ছবির রং এসে গেলে উঁষ্ণ জ্বাল করে রাখা দুধের মধ্যে এই ক্যারামেল দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে।
- ষষ্ঠ ধাপ:- ক্যারামেল ভালোভাবে মেশানো হয়ে গেলে, আরেকটি বড় পাত্রে জল দিয়ে, তারমধ্যে একটি স্ট্যান্ড বসিয়ে জল ফোঁটা পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।
জল ফুটতে শুরু করলে, ক্যারামেল মেশানো দুধে নিজের তর্জনী আঙুল ডুবিয়ে দশ গুনবেন।
যদি দেখছেন দশ সেকেন্ড আপনি নিজের আঙ্গুল রাখতে সক্ষম হয়েছেন, তাহলে বুঝবেন, দুধ ফেটিয়ে রাখা টক দইয়ের মধ্যে দেবার জন্য তৈরি।

- সপ্তম ধাপ:- এরপর টক দই আর দুধের মিশ্রণকে ভালোভাবে মিশিয়ে যে পাত্রে ভাপাতে দেবেন সেই পাত্রে মিশ্রণটি ঢেলে দিতে হবে।
এখানে আমি একটি স্টিলের বাটি ব্যবহার করে বোঝাতে চেয়েছি, যদি আপনার উপকরণ সঠিক থাকে তাহলে মাত্র কুড়ি মিনিটেই আপনার ভাঁপা দই তৈরি সম্ভব যেকোনো পাত্রেই।
অষ্টম ধাপ:- এইবার মিশ্রণের পাত্রটি ফুটন্ত জলের উপর রাখা স্ট্যান্ডের উপর বসিয়ে, মিশ্রণের পাত্রটি ভালকরে ঢেকে দিতে হবে, যাতে মিশ্রণে জল না ঢোকে। পাশাপশি যে পাত্রে জল ফুটছে সেটাও ঢেকে দিতে হবে।

এরপর, মিনিট কুড়ি বাদে একটি পরিষ্কার টুথপিক নিয়ে ঢাকা তুলে দেখে নিতে হবে, যদি টুথপিক পরিষ্কার ভাবে বেরিয়ে আসে, বুঝতে হবে ভাঁপা দই তৈরি।
![]() |
---|
নইলে আঁচ বন্ধ করে ওই অবস্থায় আর মিনিট পাঁচেক রাখলেই হবে।
এরপর, আঁচ থেকে নামিয়ে দইয়ের পাত্র স্বাভাবিক তাপমাত্রায় আসলে, সেটা ফ্রিজে রেখে দিন ঘণ্টা খানেক।
এরপর, জমিয়ে উপভোগ করুন ভাঁপা দই।

