Better Life With Steem | The Diary game ,July , 5 , 2025।বড় বাজারের চক্করে জঙ্গলবাড়ি দূর্গ ভ্রমণ বাতিল ।

in Incredible Indiayesterday (edited)

IMG_1263.jpeg

সকালে ঘুম ভেঙে চোখ মেলে তাকিয়ে দেখি প্রায় ৭টা বেজে গেছে। দেখে কিছুটা মন খারাপ লাগলো। কারণ শুক্র থেকে রবিবার এই তিনদিন আমার হাসবেন্ড ছুটি পেয়েছে। ঈদ ছাড়া সাধারণত এমন ছুটি সে কমই পায়। আর ছুটি না পেলে ব্যাংক থেকে সে ছুটি নেয় না বললেই চলে ,এটা আমি আমার বিয়ের পর থেকেই দেখে এসেছি।

এই ছুটিতে আমাদের প্ল্যান ছিল আমরা শুক্রবার ভোরে বাসা থেকে বের হয়ে যাবো। রবিবার ছেলের থাকা সম্ভব হবে না তাই এবং শনিবার রাতে চলে আসবো। কিন্তু মাঝখানে আমার দুই ভাই আমাদের সাথে যাবে বলে ঝামেলা পাকিয়েছে ।

বড়ো ভাই অবশ্য বৃহস্পতিবারই মানা করে দিয়েছে। ছোট ভাই শনিবার যাবে বলেছিলো কিন্তু আমার ভাতিজি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পরার কারণে ওরাও আমাদের সাথে যেতে পারবে না। মাঝখান থেকে আমাদের একটা দিন নষ্ট হয়ে গেছে।যার কারণে আমাদের কোথাও যাওয়াটাও অনির্শ্চিত হয়ে পরেছে অনেকটাই।

IMG_1222.jpeg

রাতে ওদেরকে জিজ্ঞেস করেছিলাম পরেরদিন কোথাও যাবে কিনা কিন্তু কেউই কোনো কিছু ক্লিয়ার বলে নাই। তাই সকালে উঠে আমিও কিছুটা সময় চুপচাপই ছিলাম। কিছুটা সময় পরে ছেলেদের রুমে গিয়ে বড়ো ছেলেকে ডেকে বললাম কোথাও যাবে কিনা। উত্তরে সে জানালো যে যাওয়া যায়।

এরপরে সবাইকেই ডেকে তুললাম এবং দ্রুত রেডি হলাম কোথাও যাওয়ার উদ্দেশ্যে ,যদিও তখন আমরা জানি না যে আমরা আসলে কোথায় যাবো। বাসা থেকে বের হতে হতে ৮টা বেজে গেলো তারপরও। গাড়িতে বসে আমরা ঠিক করলাম যে আমরা কিশোরগঞ্জ যাবো। ঐদিকে আমাদের আগে কখনো যাওয়া হয় নাই।

কিশোরগঞ্জের মূল আকর্ষণ হলো ,মিঠামইন ,ইটনা ,অষ্টগ্রাম ও নিকলীর হাওয়র। দিগন্তবিস্তৃত এই হাওরের মাঝখান দিয়ে রাস্তা চলে গেছে। বর্ষাকালে এই হাওয়ার পানিতে ডুবে যায় এবং বছরের বাকি ছয়মাস বিভিন্ন ধরণের ফসলের চাষ করা হয়ে থাকে। ফলে বর্ষার সময় বাদ দিয়ে অন্য সময় রাস্তার দুইপাশ সবুজে ভরে যায়।

IMG_1223.jpeg

অবশ্য এছাড়াও কিশোগঞ্জে দেখার মতো অনেককিছুই আছে। যেমন ,ঈশা খাঁর জঙ্গলবাড়ি দুর্গ ,এগারোসিন্ধু দুর্গ ,চন্দ্রাবতী মন্দির , শাহ মখদুম মসজিদ ,দিল্লির আখড়া ইত্যাদি আরো অনেক কিছু।

আমরা গাজীপুরের হোটেল নিরিবিলিতে নাস্তা করে আবারো রওনা দেই। আমরা সরাসরি কিশোরগঞ্জে গিয়ে পৌঁছাই আর এটাই আমাদের ভুল ছিল। কিশোরগঞ্জ সম্পর্কে আসলে আমাদের কোনো ধারণাই ছিল না। আমাদের প্ল্যান ছিল আমরা আগে জঙ্গলবাড়ি দুর্গ দেখতে যাবো কারণ এটা আমাদের থেকে মাত্র ১৮ কিলোমিটার দূরে ছিল।

IMG_1221.jpeg

রাস্তা সম্পর্কে কোনো ধারণা না থাকায় আমরা গুগল ম্যাপ ফলো করে কিশোরগঞ্জ বড়ো বাজারে গিয়ে ঢুকি। বড়ো বাজার আসলেই বড়ো বাজার। মাঝখান দিয়ে সরু রাস্তা এবং দুইপাশ দিয়ে নানা ধরণের দোকান ও রাস্তার উপরে বাজার বসেছে আর সেই সাথে বাজারের মানুষের সংখ্যা দেখে মনে হচ্ছিলো যে আজকে কিশোরগঞ্জের সব মানুষই বাজার করতে এসেছে।

সেই সাথে রয়েছে প্রচুর রিক্সা ,অটোরিকশা , সিএনজি ,বাইক সব মিলিয়ে ভয়াবহ অবস্থা। না যায় সামনে যাওয়া আবার না যায় পিছিয়ে আসা। এখানে ঢুকে মনে মনে হলো যে আমরা আমাদের জীবনের সবচাইতে বড়ো ভুল করেছি কিশোরগঞ্জে এসে। এই বড়ো বাজার পার করতেই আমাদের এক ঘন্টার উপরে কেটে গেলো। এরপরে আবার গিয়ে পরলাম এক পানি জমে থাকা ভাঙা রাস্তায়।

IMG_1257.jpeg

সেখানেও একই অবস্থা ,রিক্সা ,বাস ,সিএনজি ,বাইক অটোরিকশা এবং সেই সাথে এগুলোর ভয়াবহ জ্যাম। সবচাইতে বিরক্তিকর হলো কেউ কাউকে বিন্দুমাত্র ছাড় দিতে রাজি না এবং সবাই আগে যেতে চায়। শহরের রাস্তায় যতই জ্যাম থাকে না কেন সেখানে সবাই কিছুটা হলেও রুলস মেনে চলে কিন্তু গ্রামের জ্যাম এককথায় মারাত্মক।

একপর্যায়ে আমার ছেলে রাস্তায় নেমে ট্রাফিক পুলিশের ভূমিকা নিলো। ওকে আরো দুই একজন সাহায্য করতে এগিয়ে আসলো। ফলে জ্যাম কিছুটা কন্ট্রোলে আসায় আমরা ঐখান থেকে বের হয়ে আস্তে পারলাম। ততক্ষনে আমাদের জঙ্গলবাড়ি দুর্গ দেখার শখ মিটে গেছে। আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম আমরা শহর থেকে বের হবো।

IMG_1260.jpeg

এই চিন্তা করে আমরা নিকলীর উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। এর পরে অবশ্য রাস্তা দেখে আমাদের সব অভিযোগ নিমিষে মুছে গেলো। এত্ত সুন্দর দুইপাশটা। আমরা যদি ঢাকা থেকে সরাসরি নিকলীর দিকে যেতাম তাহলে আমাদের রাস্তা প্রায় আড়াই ঘন্টা কমে যেত।

আমরা নিকলীতে কিছুটা সময় কাটিয়ে ঢাকার পথে রওনা দিলাম। নিকলীতে থাকাকালীন সময়েই গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি শুরু হয়েছিল। এরপরে আর থামাথামি নেই। পুরোটা পথই বৃষ্টি ছিল। তবে গাজীপুরে আসার পর থেকেই কমতে শুরু করে। এখানে এসে ডিসকর্ডে ঢুকে দেখতে পায় যে আমাদের শম্পা দিদি ৮টার সময় সবাইকে উপস্থিত থাকতে বলেছেন।

IMG_1252.jpeg

ভেবেছিলাম যে , বাসায় পৌঁছাতে পারবো কিন্তু সেটা সম্ভব না হবার কারণে গাড়িতে বসেই ডিসকোর্ড এ যোগ দেই। বাসায় পৌঁছাতে পৌঁছাতে প্রায় ৯টা বেজে যায়। আর এভাবেই দিনটা কেটে যায়।

Post Details

CameraiPhone 14
Photographer@sayeedasultana
LocationDhaka,Bangladesh


Thank You So Much For Reading My Blog

HfhigaP72YBd6w1Kgyw9eMoDygDx869D1PKa6jG8D9C9MQ5rA8UuUvaGRermEeDs8YYv1jb4TX4QUAAbRoaAJFmmUaGZUojU1gWvH66zbc...wdYfZe5zwHZgv7fSFyfX5YWvwFGCJXq8EuycKeaUaXARJjpb61mUGxLAjp1XsJ6PQbzF28Bu6LQTgryC3MSekzsBvnPpE3TAcMAMTMQbf9uvFuTHezySGMDKr6.png

Sort:  
 yesterday 

আপনার ছেলে ট্রাফিক পুলিশের ভূমিকা নিয়ে বেশ ভালো কাজ করেছে। নতুন জায়গায় প্রথমবার গেলে কিছু অসুবিধা হয় তাও তো আপনারা একটু ঘুরে আসতে পারলেন। আমার তো শ্বশুরবাড়ি ছাড়া আর কোথাও যাওয়াই হচ্ছে না।

 yesterday 

ওইখান থেকে বের হতে কাউকে না কাউকে ট্রাফিক পুলিশ এর ভুমিকা নিতেই হতো , আর সেই কাজটিই আমার ছেলে করেছে ।এটা না করলে কত সময় ওই জায়গাতে আটকে থাকতে হতো কে জানে ।
আপনিও সময় করে ঘুরে আসুন বৌদি ও মেয়েকে নিয়ে কয়েকটা দিন।ভালে লাগবে সবারই ।

 yesterday 

চেষ্টা করছি অনেকদিন ধরে কিন্তু আমার স্ত্রী মেয়েকে একা সামলাতে ভয় পায়। আমার মেয়ের দিদা আর মাসী ওকে সামলায়।

Loading...

Coin Marketplace

STEEM 0.13
TRX 0.29
JST 0.035
BTC 109075.25
ETH 2621.02
USDT 1.00
SBD 0.76