জীবন যেখানে যেমন তেমন মানিয়ে নেওয়া উচিত।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারোকাতুহ।
আমরা জীবনের প্রতিটা ক্ষণে ক্ষণে বাস্তবতার মুখোমুখি হই। জীবনে যেটা কল্পনা করি না, একটা সময় গিয়ে দেখা যায় সেই মুহুর্তটা আমাদের সাথে ঘটে যাচ্ছে। যেই চিন্তাগুলো আমরা কল্পনাতেও আনতাম না, সেটাই আমরা হয়ত বার বার করতে অভ্যস্ত হয়ে যাচ্ছি।
হ্যাঁ! এটাই বাস্তব জীবনের গল্প। ছোট বেলায় আমরা সবাই কত স্বপ্ন দেখতাম কেউ ডাক্তার হবে, কেউ ইন্জিনিয়ার, কেউ বা পুলিশ আরও কত কি। কিন্তু দিন শেষে কি আমরা আদেও বড় হয়ে সেই স্বপ্নটা বাস্তবায়ীত করতে পারি। কখনওই না, আমাদের সবার জীবন প্রতিটা সেকেন্ডে সেকেন্ডে পাল্টে এমন একটা জায়গায় গিয়ে দাড়ায় যেটা হয়ত আমরা কল্পনাও করতাম না।
আমিও এতো দিন আসল বাস্তবতার মুখে পরেছিলাম না। গত কয়েক বছর হলো বেশি বেশি বাস্তবতাকে বুঝতে পারতেছি, হয়ত সামনে আরও বুঝতে পারব। যখন থেকে শিক্ষা জীবনের কিছুটা ইতি ঘটিয়েছি, তখন থেকে যেন দুনিয়াটা আলাদা লাগে। আগের কলেজ জীবন, স্কুল জীবন কতই না ভালো ছিল।
আজকে আমার জীবনের এরকম কিছু বাস্তবতার কথায় আপনাদের মাঝে শেয়ার করব। আপনারা হয়ত অনেকেই জানেন আমি গত ১ তারিখ থেকে নতুন একটা চাকরিতে যুক্ত হয়েছি। যার ফলে আমাকেও ঢাকাতে থাকতে হচ্ছে। কিন্তু সমস্যা হলো আমি যেই বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি পেয়েছি তার আশে-পাশে অনেক খুজাখুজি করার পরও কোন মেস পায় নাই, থাকার মতো। আবার রুম নিতে চাইলাম কিন্তু সাবলেট রুম গুলোর ভাড়া অনেক বেশি তারপর একা একা রান্না করে খাওয়া লাগবে এই ঝামেলায় রুম নেওয়া হয় নাই৷
কি করা যায় চিন্তা করতেছিলাম। কারণ, চাকরি করতে হলো তো কোথায় না কোথায়ও থাকতে হবে,। অবশেষে আমার চাচাতো ভাই বললো আপাতত তাদের বাসায় থেকে যাওয়া আসা করি। তারপর খুজে দেখা যাবে। ভাইয়ারা সাভার ফুলবাড়িয়াতে থাকে, আর আমার চাকরির স্থান হলো মোহাম্মদপুর। চাকরির স্থানে যেতে প্রায় ১ ঘন্টা মতো সময় লাগে। আসা যাওয়া ২ ঘন্টা লাগবে৷
কিছু করার নেই, মেনে নিয়ে আপাতত থাকতে হবে। ৩০ তারিখ আমি চলে আসি ভাইয়াদের বাসায়। আমার চাচাতো দুই ভাই থাকে সেখানে। একটা রুমে দুইজন আপাতত ১০ দিন মতো ছিল, কারণ বড় ভাইয়ারা রুম নিছে সেটা ১ তারিখে উঠতে পারবে৷ এর মধ্যে আবার আমি গিয়ে উঠেছি। মানে এক রুমের মধ্যে এখন সাত জনকে থাকতে হবে।
যদিও ১ তারিখে রুম দুইটা হয়ে যাবে বড় ভাইয়েরা রুমে উঠলে। আমার জন্যও রুম খুজতেছে ভাইয়া। সেরকম রুম পেলে আমিও রুমে উঠে যাব। সত্যি বলতে এভাবে থাকার অভিজ্ঞতা আমার এই প্রথমবার। প্রথম দুই দিন আমি এবাবেই কষ্টে থেকে অফিসে যাওয়া আসা করলাম। তারপর বড় ভাইয়ারা রুম নিলো। তখন আমি আপাতত বড় ভাই দের রুমেই থাকা শুরু করল। রুমের একটা সাইডে আমার সিঙ্গেল খাট এবং অন্য পাশে ভাইয়াদের খাট।
প্রথম কয়েক দিন আমার খুব লজ্জা করত, ভাবিরা আছে, ভাইয়ের ছেলে মেয়ে আছে, তার মাঝে আমি থাকতেছি। কিন্তু কিছু তো করাও নাই। আসলে জীবন যেখানে যেমন তেমনই মানিয়ে নিতে হবে। তা না হলে সমস্যায় পরতে হয়। আমার বড় ভাইয়া প্রথম দিন আমাকে একটা কথা বলেছি, "ঢাকা এসে কখনও তারাহুরো করে কিছু করা যাবে না।" আসলেই কথাটার বাস্তব দিক রয়েছে।
সত্যি বলতে থাকতে কষ্ট হলেও, অন্য সমস্যাগুলো হচ্ছে না, যেমন রান্না করে খাওয়া সকল কাজ নিজে করা, এগুলো আমার কিছুই করা লাগে না। সবই ভাবিরা করে৷ আমি শুধু খাওয়া দাওয়া করে আমার কাজে চলে আসি। আশা করি খুব তারাতারি মানিয়ে নিতে পারব।
আমার কিছু সমস্যা হয় এটা মেস জীবন থেকেই, আলো থাকলে ঘুম হয় না, পাশে কেউ ফোনে লাউড দিয়ে মুভি দেখলে ঘুম হয় না, এরকম আরও অনেক সমস্যা। এজন্য আমি সব সময় সিঙ্গেল রুমে থাকার চেষ্টটা করতাম। তারপর মাইগ্রেনর সমস্যা থাকায় আরও একা থাকতাম। কিন্তু এখন সেটা হচ্ছে না। যদিও আমি ভাইয়াকে বলছি আমার জন্য আলাদা রুম দেখার জন্য।
জীবনের এই পর্যায়ে এসে এই বাস্তবতার মুখোমুখিও হলাম। আমি কি কখনও ভাবছিলাম আমার জীবনেও এমন একটা দিন আসবে। কিন্তু দেখেন নিয়তির টানে আমরা কোথায় না চলে যায়।
যাই হোক, জীবনের কিছু বাস্তবতা আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আবারও দেখা হবে আমার নতুন কোনো পোষ্ট নিয়ে।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.